image

image
 

A+ A-
Voice of 71 Voice of 71 Author
Title: একাত্তরের দিনগুলি: ২৫ এপ্রিল, ১৯৭১
Author: Voice of 71
Rating 5 of 5 Des:
২৫ এপ্রিল, ১৯৭১, রবিবার আজ নাসির আমেরিকার পথে জেনেভা রওনা হবে। প্লেন বিকেলে, কিন্তু যাত্রী ছাড়া অন্য কারো এয়ারপোর্টে ঢোকার হুক...


২৫ এপ্রিল, ১৯৭১, রবিবার


আজ নাসির আমেরিকার পথে জেনেভা রওনা হবে। প্লেন বিকেলে, কিন্তু যাত্রী ছাড়া অন্য কারো এয়ারপোর্টে ঢোকার হুকুম নেই। তাই দুপুরেই বাসায় গিয়ে নাসির ও লীনাকে বিদায় জানিয়ে এসেছি।

ঢাকার বিমানবন্দরে এখন কড়া সিকিউরিটি। শুনেছি, বিমানযাত্রীর গাড়িও এয়ারপোর্টের গেট পেরিয়ে ভেতরে যেতে পারে না। গেটের বাইরে রাস্তার ওপর নেমে যেতে হয়। গেটের ভেতরে বাউন্ডারি ওয়াল ঘেরা জায়গাটা কম বড় নয়-আগে এখানে এক সঙ্গে প্রায় ৬০/৭০ টা গাড়ি পার্ক করা যেত। এতটা চৌহদ্দি মালপত্রসহ হেঁটে তারপর এয়ারপোর্ট বিল্ডিংয়ে ঢোকা। যাত্রীদের কষ্টের আর শেষ নেই।

বাসায় ফিরে আমের আচার দিতে বসলাম। এবার আচার অনেক বেশি করে বানিয়ে বয়েম ভরে রেখে দেব। দুর্দিনে আর কিছু নাই পাই, শুধু আচার দিয়েই ভাত খাওয়া যাবে।

নারিন্দা থেকে আতাভাই এসেছিলেন খোঁজখবর নিতে। খোদাভক্ত, পরহেজগার সদাপ্রসন্ন মানুষ, কিন্তু ইসলামের নামে পাকিস্তানিরা যা করছে, তাতে তার প্রসন্নতা, শান্তি এবং ঘুম-সব নষ্ট হয়ে গেছে। বললেন, “বুঝলে জাহানারা, ওদের আর বেশিদিন নাই। ইসলামের নামে ওরা যা করছে তাতে খোদার আরশ পর্যন্ত কেঁপে উঠছে। মসজিদে বসে কোরান তেলাওয়াত করছিলেন ক্বারী সাহেব, তাকে পর্যন্ত গুলি করে মেরেছে। খোদার ঘরে ঢুকে মানুষ খুন! মায়ের সামনে ছোট বাচ্চাকে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে মেরেছে। বয়ঃপ্রাপ্ত ছেলের সামনে মাকে বেইজ্জত করেছে। ভেবেছে খোদাতালা সইবেন এত অনাচার? ওরা নিজেদের ধ্বংস নিজেরাই ডেকে আনছে।

বিহারিরা শেষ পর্যন্ত তাদের মিছিল বের করতে পারেনি, সরকার পারমিশান দেয়নি।

বাঁচা গেল। তবু গতকাল তারার মুখে শোনার পর থেকে রুমী-জামীকে একা কোথাও বেরোতে দিচ্ছি না।

- শহীদ জননী জাহানারা ইমামের বই থেকে

About Author

Advertisement

Post a Comment Blogger

 
Top