গতকাল সন্ধ্যার পর রেড়িও স্টেশনের লনে কারা যেন বোমা ছুঁড়েছে।
কাল রাতে রেডিও বন্ধ থাকার পর আজ সকাল থেকে আবার চালু হয়েছে। সকাল সাড়ে আটটায় শেখ মুজিবের বক্তৃতা প্রচারিত হল।
শরীফের খালাতো ভাই আনোয়ার সকালে ফোন করে জানাল, গত পরশু তার মেজ মেয়ে ইমন আগুনে পুড়ে গেছে। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনতলা নিউ কেবিনে রাখা হয়েছে।
বিকেলে মেডিক্যালে গেলাম ইমনকে দেখতে। কপাল ভালো খুব বেশি পোড়ে নি। মুখটা বেঁচে গেছে। কেবিনে টুনটুনি আপা, ছবি আপা, ডলি আপার খালা এবং আরো অনেকের সঙ্গে দেখা হল। এরা সবাই ইমনকে দেখতে এসেছে। কিন্তু ইমনের প্রতি মিনিট পাঁচেক মনোযোগ দেয়ার পরই সবাই মশগুল হয়ে গেলেন শেখের গতকালের বক্তৃতার আলোচনায়। তবে রক্ষে, এঁরা কেউ স্বাধীনতা-স্বাধিকারের তর্কের দিকে গেলেন না। এঁরা লোকমুখে এবং রেডিওতে শোনা বঙ্গবন্ধুর বজ্রকন্ঠে উচ্চারিত বক্তৃতা লোকজনকে কি রকম সম্মোহিত এবং উদ্বুদ্ধ করেছে- সে কথাই বলে গেলেন।
আজ আশুরা। হোসেনী দালান থেকে মহররমের মিছিল বেরিয়ে এতক্ষণে আজিমপুর গোরস্থানের রাস্তায় গিয়ে উঠেছে মনে হয়। আজিমপুর কলোনির এক নম্বর বিল্ডিংয়ের সামনের রাস্তা দিয়ে মহররমের মিছিল গোরস্থানে যায়, এই রাস্তার ওপরই মহররমের মেলা বসে। প্রতি বছর আমরা মেলায় যাই বাচ্চাদের নিয়ে। বাচ্চারা তাদের মনোমত খেলনা কেনে, আমরা বঁটি, দা, বেলনুপিড়ি ইত্যাদি গোরস্থালির জিনিস কিনি।
কিন্তু এ বছর ছেলেদেরও মিছিল বা মেলা দেখতে যাওয়ার ইচ্ছে নেই, আমাদের তো নেই-ই। গত এক সপ্তাহ ধরে বাংলার ঘরে ঘরেই কারবালার ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। কত মা ফাতেমার বুকের মানিক, কত বিবি সখিনার নওজোয়ান স্বামী পথে-প্রান্তরে গুলি খেয়ে ঢলে পড়ছে-বাংলার ঘরে ঘরে এখন প্রতিদিনই আশুরার হাহাকার, মর্সিয়ার মাতম। কিন্তু কবি যে বলেছেন,“ ত্যাগ চাই, মর্সিয়া, ক্রন্দন চাহি না”, তাই বুঝি বাংলার দুর্দান্ত দামাল ছেলেরা “ত্যাগ চাই” বলে ঘরের নিশ্চিন্ত আরাম ছেড়ে পথে-প্রান্তরে বেরিয়ে পড়েছে। গত সন্ধ্যায় বায়তুল মোকাররম থেকে এমন লম্বা মশাল মিছিল বেরিয়েছিল যে বলবার নয়। আমরা দেখি নি- রুমী, ফকির, শরীফ এরা তর্কের কচকচির মধ্যে রাত এগারোটা করে ফেলেছিল। খবরটা জানা গেল আমার বান্ধবী রোকেয়ার টেলিফোনে। ওদের বাড়ি ধানমণ্ডি আট নম্বর মেইন রোডের ওপর। ওদের বাড়ি সামনে মিরপুর রোড দিয়েই সব মিছিল বঙ্গবন্ধুর বাড়ির দিকে যায়। রোকেয়া বলল, “জানিস মশাল মিছিল দেখে আমারও রাস্তায় নেমে যেতে ইচ্ছে করছিল।”
- শহীদ জননী জাহানারা ইমামের বই থেকে
কাল রাতে রেডিও বন্ধ থাকার পর আজ সকাল থেকে আবার চালু হয়েছে। সকাল সাড়ে আটটায় শেখ মুজিবের বক্তৃতা প্রচারিত হল।
শরীফের খালাতো ভাই আনোয়ার সকালে ফোন করে জানাল, গত পরশু তার মেজ মেয়ে ইমন আগুনে পুড়ে গেছে। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনতলা নিউ কেবিনে রাখা হয়েছে।
বিকেলে মেডিক্যালে গেলাম ইমনকে দেখতে। কপাল ভালো খুব বেশি পোড়ে নি। মুখটা বেঁচে গেছে। কেবিনে টুনটুনি আপা, ছবি আপা, ডলি আপার খালা এবং আরো অনেকের সঙ্গে দেখা হল। এরা সবাই ইমনকে দেখতে এসেছে। কিন্তু ইমনের প্রতি মিনিট পাঁচেক মনোযোগ দেয়ার পরই সবাই মশগুল হয়ে গেলেন শেখের গতকালের বক্তৃতার আলোচনায়। তবে রক্ষে, এঁরা কেউ স্বাধীনতা-স্বাধিকারের তর্কের দিকে গেলেন না। এঁরা লোকমুখে এবং রেডিওতে শোনা বঙ্গবন্ধুর বজ্রকন্ঠে উচ্চারিত বক্তৃতা লোকজনকে কি রকম সম্মোহিত এবং উদ্বুদ্ধ করেছে- সে কথাই বলে গেলেন।
আজ আশুরা। হোসেনী দালান থেকে মহররমের মিছিল বেরিয়ে এতক্ষণে আজিমপুর গোরস্থানের রাস্তায় গিয়ে উঠেছে মনে হয়। আজিমপুর কলোনির এক নম্বর বিল্ডিংয়ের সামনের রাস্তা দিয়ে মহররমের মিছিল গোরস্থানে যায়, এই রাস্তার ওপরই মহররমের মেলা বসে। প্রতি বছর আমরা মেলায় যাই বাচ্চাদের নিয়ে। বাচ্চারা তাদের মনোমত খেলনা কেনে, আমরা বঁটি, দা, বেলনুপিড়ি ইত্যাদি গোরস্থালির জিনিস কিনি।
কিন্তু এ বছর ছেলেদেরও মিছিল বা মেলা দেখতে যাওয়ার ইচ্ছে নেই, আমাদের তো নেই-ই। গত এক সপ্তাহ ধরে বাংলার ঘরে ঘরেই কারবালার ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। কত মা ফাতেমার বুকের মানিক, কত বিবি সখিনার নওজোয়ান স্বামী পথে-প্রান্তরে গুলি খেয়ে ঢলে পড়ছে-বাংলার ঘরে ঘরে এখন প্রতিদিনই আশুরার হাহাকার, মর্সিয়ার মাতম। কিন্তু কবি যে বলেছেন,“ ত্যাগ চাই, মর্সিয়া, ক্রন্দন চাহি না”, তাই বুঝি বাংলার দুর্দান্ত দামাল ছেলেরা “ত্যাগ চাই” বলে ঘরের নিশ্চিন্ত আরাম ছেড়ে পথে-প্রান্তরে বেরিয়ে পড়েছে। গত সন্ধ্যায় বায়তুল মোকাররম থেকে এমন লম্বা মশাল মিছিল বেরিয়েছিল যে বলবার নয়। আমরা দেখি নি- রুমী, ফকির, শরীফ এরা তর্কের কচকচির মধ্যে রাত এগারোটা করে ফেলেছিল। খবরটা জানা গেল আমার বান্ধবী রোকেয়ার টেলিফোনে। ওদের বাড়ি ধানমণ্ডি আট নম্বর মেইন রোডের ওপর। ওদের বাড়ি সামনে মিরপুর রোড দিয়েই সব মিছিল বঙ্গবন্ধুর বাড়ির দিকে যায়। রোকেয়া বলল, “জানিস মশাল মিছিল দেখে আমারও রাস্তায় নেমে যেতে ইচ্ছে করছিল।”
- শহীদ জননী জাহানারা ইমামের বই থেকে
Slot Machine Casino | Visit JammyCity and play at one
ReplyDeleteWelcome to 서귀포 출장마사지 the 천안 출장안마 Slot Machine Casino in Kingston, New Jersey. With over 400 casino 울산광역 출장샵 games and 100+ table games, you're 의왕 출장안마 sure to have 서울특별 출장안마 the perfect