২৮ এপ্রিল, ১৯৭১
- প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আমদ স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারকে বিনাশর্তে অস্ত্র সাহায্য ও স্বাধীন বাংলাদেশকে স্বীকৃতিদানের জন্য প্রতিবেশি দেশসমূহের সরকারের প্রতি আবেদন জানান।
- সোভিয়েত প্রধানমন্ত্রী আলেক্সি কোসিগিন পাকিস্তানি প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের কাছে প্রেরিত এক বার্তায় অবিলম্বে দেশের পূর্বাঞ্চলে গণহত্যা বন্ধ করা আহ্বান জানান।
- পাকবাহিনী মাধবপুরে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধ ব্যুহের ওপর তীব্র আক্রমণ চালায়। সারাদিন প্রচন্ড গোলা বিনিময়ের পর গোলাবারুদ ফুরিয়ে এলে মুক্তিযোদ্ধারা প্রতিরোধ ব্যুহ ত্যাগ করে সিলেটের মনতলা নামক স্থানে চলে আসে এবং নতুন করে প্রতিরক্ষা গঠন করে। এ যুদ্ধে পাকবাহিনীর প্রায় ৩০০ জন হতাহত হয়। যুদ্ধে সিপাহী খালেদ এবং সিপাহী শাহজাহান শাহাদাৎ বরণ করেন।
- মুক্তিযোদ্ধারা চট্টগ্রামের হিকুয়া এলাকা থেকে সরে এসে চিকনছড়া নামক স্থানে শক্ত প্রতিরক্ষা ব্যুহ তৈরি করে।
- ভোরে ঢাকার মিরপুর ও মোহাম্মদপুরে মুক্তিবাহিনীর গেরিলারা টহলদার পাকসেনাদের ওপর আক্রমণ চালায়। বন্দুকযুদ্ধে ৭ জন গেরিলা যোদ্ধা শহীদ হন।
- হানাদার ঘাতকরা মিরপুরে এক পৈশাচিক হত্যাকান্ড চালায়। এ হত্যাকান্ডে হানাদারদের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে অংশ নেয় স্থানীয় বিহারীরা । এ ছাড়াও অসংখ্য বাঙালিকে পাকসেনারা ক্যাম্পে ধরে নিয়ে যায়। এদের অধিকাংশই আর কোনদিন পৃথিবীর আলো দেখেনি।
- পত্রিকায় দেয়া এক বিবৃতিতে শান্তি ও কল্যাণ পরিষদের সেক্রেটারি জেনারেল মওলানা নুরুজ্জামান কল্যাণ পরিষদের সকল সদস্যকে সেনাবাহিনীর পাশে থেকে মুক্তিবাহিনী নামধারী দুষ্কৃতকারীদের সমূলে উৎখাতের নির্দেশ দেন। তিনি জানান, শত্রুদের প্রশ্রয় দিলে বহু ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত পাকিস্তান তারা ধবংস করে দেবে। তাদের প্রচেষ্টা সফল হলে আমরা দাসে পরিণত হবো।
- ভারতীয় হাই কমিশনারকে পাকিস্তানি পররাষ্ট্র দফতরে ডেকে এনে সতর্কতা ও হুমকি দেওয়া হয়।
- বিশ্ব শান্তি পরিষদের সম্মেলনে গৃহীত এক প্রস্তাবে বলা হয়, বাংলাদেশে রক্তগঙ্গা বন্ধ করার জন্য বিশ্ব জনমত ও বিশ্বের সর্বত্র শান্তিকামী শক্তিগুলোকে অবিলম্বে তৎপর হতে হবে। আওয়ামী লীগ নেতৃবর্গ এবং জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের বিশেষ করে শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনরক্ষা করতেই হবে। শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের জনগণের নির্বাচিত নেতা।
তথ্যসূত্র: মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর
Post a Comment Blogger Facebook