৩১ অক্টোবর, ১৯৭১
- মির্জাপুর থানার পাথরঘাটায় মুক্তিবাািহনী পাকবাহিনীর সাথে সম্মুখযুদ্ধে লিপ্ত হয়। এতে উভয়পক্ষের মধ্যে ব্যাপক গোলা বিনিময় হয়। এই সংঘর্ষে পাকবাহিনীর ১৫ জন পাঞ্জাবী সৈন্য নিহত হয়। অপরদিকে ২ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।
- মুক্তিবাহিনী কুমিল্লায় পাকহানাদার বাহিনীর কটেশ্বর ঘাঁটি আক্রমণ করে। এতে পাকসেনা আর্টিলারী ও র্২র্ মর্টারের সাহায্যে পাল্টা আক্রমণ চালালে উভয়পক্ষের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ হয়। প্রায় একঘন্টা ব্যাপী এই যুদ্ধে পাকবাহিনীর ৭ জন সৈন্য নিহত হয়। অপরদিকে মুক্তিবাহিনীর একজন যোদ্ধা আহত হন।
- ২নং সেক্টরে মুক্তিবাহিনীর একদল যোদ্ধা লক্ষ্মীপুরে অবস্থানরত রাজাকারদেও ওপর তীব্র আক্রমণ চালায়। এতে ৪ জন রাজাকার নিহত হয়। মুক্তিযোদ্ধারা নিরাপদে নিজেদের ঘাঁটিতে ফিরে আসে।
- ‘সানডে টাইমস পত্রিকায় বাংলাদেশস্থ প্রতিনিধি জানান, প্রায় ৮ শতাধিক গেরিলা সম্প্রতি ঢাকা শহরের কর্মব্যস্ত অঞ্চলে একের পর এক আক্রমণ চালিয়েছে। গেরিলাদের আক্রমণের ফলে পাকবাহিনী বিমানঘাঁটি যাওয়ার পথে পিল বক্স তৈরী করেছে এবং পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ওয়েজের বিমানগুলি ওঠানামার পদ্ধতিও বদলে গেছে। এতদিন পর্যন্ত বোয়িং বিমানগুলি সব আলো জ্বেলে ঢাকা বিমানঘাঁটিতে বিতরণ করতো। কিন্তু এখন বিমানগুলি যথাসম্ভব বিনা আলোয় জলের উপর দিয়ে উড়ে গিয়ে বিমানঘাঁটিতে অবতরণ করে।
- ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ও বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হিথের মধ্যে পাক-ভারত সঙ্কট ও বাংলাদেশ বিষয়ের ওপর আনুষ্ঠানিক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
- নয়াদিল্লীতে ভারত সরকারের প্রতিরক্ষা দফতরের একজন মুখপাত্র বলেন, সীমান্তে পাকিস্তান ও ভারতের সেনাবাহিনী মাত্র ১/২ মাইলের ব্যবধানে পরস্পরের মুখোমুখি অবস্থান করছে। ইতিমধ্যে ভারতীয় সৈন্যরা পূর্ব সীমান্তে বেশ কয়েকটি পাকিস্তানি হামলা প্রতিহত করেছে।
- পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর ডাঃ এ.এম. মালিক পাকিস্তানের উর্দু ডাইজেস্ট এর সাথে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, আওয়ামী লীগের বর্তমান পরিকল্পনা বাঙালি জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে বেশ কয়েক বছর আগে থেকে পরিচালিত হিসেব করা আন্দোলনেরই ফল। বাঙালি জাতীয়তাবাদ যে পাকিস্তানের আদর্শের পরিপন্থী তা নিশ্চিতভাবে প্রমানিত হয়েছে।
- নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানানো হয়, পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের উপ-নির্বাচনে আরো ১১ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছে। এ নিয়ে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য সংখ্যা দাঁড়ায় ৪৬ জন।
- শিখ নেতা ডঃ জগজিৎ সিং চৌহান লন্ডন থেকে লাহোর আসেন। লাহোরে তিনি বলেন, ‘ইন্দিরা গান্ধী যদি প্রকৃতই ‘বাংলাদেশ’ প্রবক্তাদের সাহায্য করতে চান, তাহলে শেখ মুজিবুর রহমান ও তাজউদ্দিনকে তাদের সরকার গঠনের জন্যে তাঁর পশ্চিমবঙ্গও দিয়ে দেয়া উচিত।’
তথ্যসূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর।
Post a Comment Blogger Facebook