১৩ অক্টোবর, ১৯৭১
- সুনামগঞ্জের উত্তরে মুক্তিবাহিনীর সাথে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দু’টি পৃথক সংঘর্ষ হয়। প্রায় এক হাজার মুক্তিযোদ্ধা দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে সীমান্তের আধমাইল ভেতরে ঢুকে পাকসেনাদের ঘাঁটিতে আক্রমণ চালায়। এই সংঘর্ষে বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন আব্বাস শহীদ হন।
- সাবেক প্রাদেশিক গভর্নর আব্দুল মোমেন খান সন্ধ্যায় বনানীস্থ নিজ বাসভবনে গুলিবিদ্ধ হন। দু’জন মুক্তিযোদ্ধা একটি প্রাইভেট কারে মোমেন খানের বাসভবনে আসেন এবং ড্রইংরুমে ঢুকে তাকে স্টেনগানের সাহায্যে ব্রাস ফায়ার করে গাড়ি নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। মোমেন খান শেষ রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
- ময়মনসিংহের ভালুকা থেকে পাকবাহিনী ও রাজাকারের একটি দল মেদুয়ারী গ্রামের সরকার বাড়ীতে ক্যাম্প করে। একদল মুক্তিবাহিনী তাদের ওপর অতর্কিতে আক্রমণ চালায়। প্রায় আড়াই ঘন্টা গুলি বিনিময়ের পর পাকবাহিনীর ৮ জন সৈন্য নিহত হয় এবং বাকি সৈন্য পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
- ময়মনসিংহে মুক্তিবাহিনী গৌড়িপুর থানায় অবস্থানরত পাকসেনাদের ওপর অতর্কিতে আক্রমণ চালায়। এতে মুক্তিযোদ্ধারা পাকসেনাদের কাছ থেকে কিছু অস্ত্র দখল করে।
- রংপুর জেলায় মুক্তিবাহিনী ভ’রঙ্গমারী সড়কে পাকবাহিনীর একদল সৈন্যকে এ্যামবুশ করে। এই এ্যামবুশে ৩ জন পাকসৈন্য নিহত ও ৪ জন আহত হয়।
- লেঃ জেনারেল নিয়াজী কুমিল্লাসহ পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্ত এলাকায় সেনাবাহিনী, রাজাকার ও দালালদের কর্মতৎপরতা সরেজমিনে তদারক করেন। কুমিল্লায় সেনাবাহিনী ও রাজাকারদের সমাবেশে তিনি বলেন, আমরা আমাদের বংশধরদের দাসত্বের শৃঙ্খলে আবদ্ধ হতে দিতে পারি না।
- খুলনায় রাজস্বমন্ত্রী মওলানা এ.কে.এম. ইউসুফ দালালদের আয়োজিত এক সভায় রাজাকার বাহিনীর কাজের প্রশংসা করতে গিয়ে বলেন, দুষ্কৃতকারী ও ভারতীয় চরদের উৎখাতে রাজাকাররা যেভাবে কাজ করছে তাতে দেশে শান্তি ফিরে আসতে বাধ্য। জীবন বাজি রেখে তারা দুষ্কৃতকারদের হামলা প্রতিহত করছে।
- জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে যোগদানকারী পাকিস্তান প্রতিনিধি দলের সদস্য মাহমুদ আলী করাচী ফিরে আসেন। করাচীতে সাংবাদিদের তিনি জানান, বিশ্ববাসীর কাছে ভারত ও দালালদের চক্রান্ত ফাঁস হয়ে গেছে।
তথ্যসূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর।
Post a Comment Blogger Facebook