০১ অক্টোবর, ১৯৭১
- ৮নং সেক্টরের গোজাডাঙ্গা সাব-সেক্টরের একটি মুক্তিযোদ্ধাদল ভারুখালীতে অবস্থানরত পাকসেনাদের ওপর অতর্কিতে আক্রমণ চালায়। এই সংঘর্ষে পাকবাহিনীর ৪ জন সৈন্য নিহত হয়। মুক্তিযোদ্ধারা অক্ষত অবস্থায় নিরাপদে নিজেদের ঘাঁটিতে ফিরে আসে।
- মুক্তিবাহিনী সিলেটের পুট্টিছড়া নামক স্থানে পাকসেনাদের বিরুদ্ধে এক দুঃসাহসিক অভিযান চালায়। এই সংঘর্ষে পাকবাহিনীর ৩ জন সৈন্য নিহত ও একজন আহত হয়।
- ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা, কাশীগঞ্জ ও ত্রিশাল থেকে পাকবাহিনীর তিনটি দল একযোগে বাইন্দা ও বড়াইদ এলাকার দিকে অগ্রসর হয়। এ খবর পেয়ে কোম্পানী কমান্ডার কাশেমের নেতৃত্বে কছিমউদ্দিন, মনেরউদ্দিন ও হাফিজুর রহমানের মুক্তিযোদ্ধাদল পাকসেনাদের পথ রোধ করে। ১৭ ঘন্টা স্থায়ী এ যুদ্ধে পাকবাহিনীর ৭১ জন সৈন্য ও রাজাকার নিহত ও অনেক আহত হয়।
- মুক্তিবাহিনীর ৪১ সদস্যের একটি গেরিলাদল প্রশিক্ষণ শেষে কসবা থেকে দুটি নৌকায় ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়। গেরিলা যোদ্ধারা কসবার দক্ষিণে শাহ সেতুর কাছে পৌঁছালে সেখানে টহলরত পাকসেনারা গেরিলাদের নৌকা দু’টির ওপর অতর্কিতে হামলা চালায়। এই সংঘর্ষে মুক্তিবাহিনীর ৫ জন বীরযোদ্ধা শহীদ ও ৩ জন আহত হন। এতে ১৫টি রাইফেল ও ৫টি স্টেনগান গেরিলাযোদ্ধাদের কাছ থেকে খোয়া যায়।
- পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলে গেরিলা তৎপরতা বৃদ্ধিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বৃটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্যার এ্যালেক ডগলাস হিউম বলেন, নিঃসন্দেহে পাক-ভারত পরিস্থিতি গুরুতর রূপ লাভ করেছে এবং অচিরেই এই পরিস্থিতির নিরসন ঘটবে তা আমি মনে করি না।
- বগুড়ার সুকানপুর রেলস্টেশনে রাজাকার বাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর হামলা চালায়। পরে পাকহানাদাররা রাজাকারদের সঙ্গে যোগ দেয়। হানাদার ও রাজাকারদের সম্মিলিত হামলায় ২০ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ও ২০ জন বন্দি হয়। হানাদাররা শুধু মুক্তিযোদ্ধাদের নয়, মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় দেবার অপরাধে নিরীহ গ্রামবাসীদের ওপর ও হামলা চালায়। পাকহানাদারদের হামলায় অনেক নিরীহ মানুষ নিহত হয়।
- শান্তি কমিটির নেতা পীর মোহসেন উদ্দিনের সভাপতিত্বে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের কার্যনির্বাহক কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে উপ-নির্বাচনে অংশ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
- জামায়াত নেতা এ.টি. সাদী কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পাকিস্তানি ছাত্রদের সাথে বৈঠক করেন। বৈঠকে তিনি পূর্ব পাকিস্তানের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের (মুক্তিযোদ্ধাদের) বিরুদ্ধে সোচ্চার হবার জন্যে ছাত্রদের আহ্বান জানান।
- সমবায়, মৎস্য ও সংখ্যালঘু মন্ত্রী আউং শু প্রু এপিপি'র সাথে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, দেশের সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার করা হচ্ছে বলে ভারত যে প্রচারণা চালিয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। সশস্ত্রবাহিনীর সদস্যরা তাদের জানমালের নিরাপত্তা বিধান করছে।
তথ্যসূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর।
Post a Comment Blogger Facebook
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.