১২ অক্টোবর, ১৯৭১
- ২নং সেক্টরে মুক্তিবাহিনী রকেট লাঞ্চার ও মেশিনগানের সাহায্যে পাকবাহিনীর কালিরবাজার গ্রামস্থ হেডকোয়ার্টার আক্রমণ করে। এই আক্রমণে পাকবাহিনীর ১২ জন সৈন্য নিহত ও ৪ জন আহত হয় এবং দু’টি বাঙ্কার সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়। মুক্তিযোদ্ধারা আক্রমণ শেষে নিরাপদে নিজেদের অবস্থানে ফিরে আসে।
- ৭নং সেক্টরে মুক্তিবাহিনী পাকসেনাদের গডাগড়ি ও সুলতানপুর অবস্থানের ওপর তীব্র আক্রমণ চালায়। এই আক্রমণে পাকবাহিনীর ৫০ জন সৈন্য নিহত ও ৩০ জন আহত হয়। অপরদিকে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা আহত হন।
- ৮নং সেক্টরের বয়রা সাব-সেক্টরে মুক্তিবাহিনী পাকবাহিনীর একদল সৈন্যকে কাগমারীতে এ্যামবুশ করে। পাকসেনারা পাল্টা আক্রমণ চালালে উভয় পক্ষের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ হয়। এই সংঘর্ষে পাকবাহিনীর ২ জন সৈন্য নিহত ও অনেক আহত হয়।
- শিমলায় এক জনসভায় বক্তৃতাকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বলেন, বাংলাদেশ থেকে ভারতে যে শরণার্থী চলে আসছে তাতে এশিয়া মহাদেশে শান্তির ব্যাপারটি এক বিরাট ঝঁকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে পাকিস্তান এক মারাত্মক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় ভারত প্রস্তুত।
- পাকিস্তানের প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান জনগণের উদ্দেশে বেতার ভাষণে বলেন, পাকিস্তানি সেনাবাহিনী দেশের প্রতিরক্ষার জন্য পাহাড়ের মতো অটল রয়েছে। তিনি ২৭ ডিসেম্বর জাতীয় পরিষদের অধিবেশন আহ্বান ও শাসনতন্ত্র প্রকাশের কথা ঘোষণা করেন।
- ঢাকা সফররত পিপলস পার্টির প্রতিনিধি দলের সাথে স্থানীয় রাজনৈতিক হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে সাক্ষাৎ করে নিজেদের পিপলস পার্টিতে যোগদান ও পিপিপি-র টিকেটে উপ-নির্বাচনে অংশগ্রহণের ইচ্ছা ব্যক্ত করেন। তারা হলেন, পিপিপি-র সাবেক প্রাদেশিক প্রধান আব্দুস সালাম খান, কাইয়ুম লীগের কাজী কাদের, জমিয়তে ওলামায়ে ইসলামের প্রাদেশিক প্রধান পীর মোহসীন উদ্দিন দুদু মিয়া, কনভেনশন লীগের হাসিম উদ্দিন, মস্কোপন্থী ন্যাপের আহমেদুল কবীর ও মিয়া মনসুর আলী এবং ভাসানী ন্যাপের আনোয়ার জাহিদ।
- জাতিসংঘে পাকিস্তানের স্থায়ী প্রতিনিধি সাধারণ পরিষদে অভিযোগ করে বলেন, ভারত পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছে এবং পূর্ব পাকিস্তানি উদ্বাস্তুদের নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে।
- জামায়াতে ইসলামীর সাধারণ সম্পাদক আব্দুল খালেক পশ্চিম পাকিস্তান সফর শেষে ঢাকা ফেরার আগে সাংবাদিকদের জানান, রাজাকার বাহিনী কোনো দলীয় বাহিনী নয়। রাজাকাররা সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থেকে কাজ করছে। রাজাকাররা দেশের জন্য অকাতরে জীবন বিলিয়ে দিচ্ছে। তিনি ভারতীয় প্রচারণার মোকাবেলার জন্যে বিদেশে সর্বদলীয় প্রতিনিধিদল পাঠানোর সুপারিশ করেন।
তথ্যসূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর।
Post a Comment Blogger Facebook
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.