১৫ অক্টোবর, ১৯৭১
- সকাল ৮ টায় মুক্তিবাহিনীর এক প্লাাটুন যোদ্ধা কমিল্লার দক্ষিণে পাকসেনাদের একটি অবস্থানের আধমাইল দূরে বারচর গ্রামে এ্যামবুশ পাতে। এক ঘন্টা অবস্থানের পর পাকসেনাদের একটি দল তাদের ঘাঁটিতে ফেরার পথে এ্যামবুশের আওতায় এলে মুক্তিযোদ্ধারা তীব্র আক্রমণ চালায়। এতে পাকবাহিনীর ১২ জন সৈন্য নিহত ও ৩ জন আহত হয়।
- ৮নং সেক্টরে মুক্তিবাহিনী ক্যাপ্টেন মুস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে ধোপাখালীতে অবস্থানরত পাকসেনাদের আক্রমণ করে। এই সংঘর্ষে পাকবাহিনীর ৭ জন সৈন্য নিহত হয় ও অনেক আহত হয়। অপরদিকে বীর মুক্তিযোদ্ধা হাবিলদার আবদুল গফুর, নায়েক শহীদ আলী শহীদ ও ক্যাপ্টেন মুস্তাফিজুর রহমান আহত হন।
- ১১ নং সেক্টরে ক্যাপ্টেন জিয়ার নেতৃত্বে ১০০ জন মুক্তিযোদ্ধার একটি দল রাজাকার ক্যাম্প আক্রমণে মোড়লগঞ্জ অভিমুখে যাত্রা করে। বিকেল তিনটায় মোড়লগঞ্জ পৌঁছালে মুক্তিযোদ্ধারা ৫টি ভাগে বিভক্ত হয়ে রাজাকারদের ওপর আক্রমণ চালায়। এই আক্রমণে রাজাকারদের ব্যাপক ক্ষতি হয়।
- ৯নং সেক্টরে মুক্তিবাহিনী ক্যাপ্টেন হুদার নেতৃত্বে ঝিকরগাছার কাছে দোশাতিনাল নামকস্থানে পাকিস্তানি টহলদার দলকে এ্যামবুশ করে। এই এ্যামবুশে পাকবাহিনীর ৩০ জন সৈন্য নিহত হয়। মুক্তিযোদ্ধারা পাকসেনাদের কাছ থেকে অনেক অস্ত্র ও গোলাবারুদ দখল করে।
- মুক্তিবাহিনীর বিমান সেনারা সকালে দু’টি হালকা বিমান নিয়ে রংপুর সীমানা অতিক্রম করে মোগলহাটে পাকসেনাবাহিনীর অবস্থানের ওপর গোলাবর্ষণ করে। সফল আক্রমণ শেষে বিমান সেনারা নির্বিঘেœ নিজেদের ঘাঁটিতে ফিরে আসে।
- তেহরানে পাকিস্তান প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া ও ইরানের শাহ রেজা পাহলভীর মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
- গভর্নর ডাঃ এ.এম. মালিক সিলেটে এক সমাবেশে বলেন, এক শ্রেণীর লোক ভারতীয় প্রচারণায় বিভ্রান্ত হয়ে পাকিস্তান ধ্বংসের কাজে লিপ্ত রয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘এরা দেশের শত্রু। চরমপন্থী ছাত্ররা দুষ্কৃতকারীদের দলে ভিড়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বর্জন করে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করেছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা, উৎপাদন ব্যবস্থাসহ অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দিয়েছে। ধ্বংসকালীরা কখনো দলের মঙ্গল চাইতে পারে না। সেনাবাহিনীর সামনে দাঁড়াবার সাহস না থাকায় তারা গোপনে লুটপাট করছে। এসব তথাকথিত মুক্তিযোদ্ধারা হচ্ছে ভারতীয় সেবাদাস।’
- লেঃ জেনারেল নিয়াজী দেশের উত্তর-পূর্ব সীমান্ত এলাকায় সফরে গিয়ে সেনাবাহিনীকে সর্বাত্মক সহায়তা করার জন্যে রাজাকার ও দালালদের ভুয়সী প্রশংসা করেন। তিনি রাজাকারদেরকে সেনাবাহিনীর সাথে সম্মিলিতভাবে অথবা স্বাধীন সংস্থা হিসেবে কাজ করার নির্দেশ দেন।
তথ্যসূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর।
Post a Comment Blogger Facebook
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.