০৯ অক্টোবর, ১৯৭১
- ভুটান সীমান্ত সংলগ্ন মূর্তি শিবিরে ১৪ সপ্তাহের বাংলাদেশ কোর্স সমাপণকারী প্রথম ব্যাচের সেনা অফিসারদের পাসিং-আউট অনুষ্ঠিত হয়। ৬১ জন তরুন যোদ্ধা এই প্রশিক্ষণ লাভ করেন এবং ক্যাডেট অফিসার সাঈদ আহমেদ প্রধান সেনাপতির ছড়ি লাভের সম্মান অর্জন করেন। সমাপনী অনুষ্ঠানে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ ও প্রধান সেনাপতি জেনারেল এম.এ.জি ওসমানীসহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
- ভারতের শিমলায় অল ইন্ডিয়া কংগ্রেসের সম্মেলনে উদ্বোধনী ভাষণে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ঘোষণা করেন, ভারত সরকার বাংলাদেশের জনগণের ন্যায়সঙ্গত সংগ্রামের পাশে রয়েছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। যে কোনো ধরণের পরিস্থিতিতে তাঁর সরকার বাংলাদেশ প্রশ্নে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। ভারত বাংলাদেশের শরণার্থীদের স্বদেশে ফেরত পাঠাতে চায়।
- খুলনা জেলায় মুক্তিবাহিনী বাগেরহাট পাকসেনা ঘাঁটি আক্রমণ করে। এই আক্রমণে পাকবাহিনীর একজন অফিসারসহ ১০ জন সৈন্য নিহত ও অনেকে গুরুতর আহত হয়। মুক্তিযোদ্ধারা পাকসেনাদের কাছ থেকে অনেক অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ দখল করে।
- ৮নং সেক্টরের বানপুর সাব-সেক্টরে মুক্তিবাহিনীর একদল যোদ্ধা পাকসেনাদের এক প্লাটুন সৈন্যকে কুশডাঙ্গায় এ্যামবুশ করে। এই এ্যামবুশে পাকবাহিনীর ১১ জন সৈন্য নিহত হয়। অপরদিকে একজন মুক্তিযোদ্ধা আহত হন।
- রংপুর জেলার হলিদাবাড়ী অঞ্চলের রাজাকার কমান্ডার হাবিবুর রহমান বিপুল অস্ত্রশস্ত্রসহ মুক্তিবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে।
- গাইবান্দা অঞ্চলের বিপুল সংখ্যক রাজাকার মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে আত্মসমর্পণ করে এবং মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়।
- পাকিস্তানের প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক জেনারেল ইয়াহিয়া খান এক ঘোষণায় ৭৬ নং সামরিক বিধি তুলে নিয়ে ৯৪ নং সামরিক বিধি জারি করে। এ আদেশে পাকিস্তানের সংহতি ও অখন্ডতা বা আদর্শের পক্ষে ক্ষতিকর প্রচার কার্যক্রমের ওপর বিধি নিষেধ আরোপ করে রাজনৈতিক তৎপরতা থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়। গত ২০ মার্চ এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল।
- জাতিসংঘে পাকিস্তানি প্রতিনিধি দলের সদস্য শাহ আজিজুর রহমান বলেন, ভারতে চলে যাওয়া শরণার্থীদের সংখ্যা ৯০ লাখ নয়, ২০ লাখের সামান্য কিছু বেশি।
- মুসলিম লীগ(কাইয়ুম) প্রধান খান আবদুল আইয়ুম খান ঢাকায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে পাকিস্তানের আর্দশে অবিশ্বাসী শিক্ষকদের চাকরিচ্যুত, যুবকদের বাধ্যতামূলক রাজাকার বাহিনীতে যোগদানের ব্যবস্থা ও শ্রমিকদের পরিবর্তে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত রাজাকারদের কল-কারখানায় নিয়োগের জন্য সরকারের কাছে সুপারিশ করেন।
- নির্বাচন কমিশনের এক প্রেস নোটে জানানো হয়, পূর্বঘোষিত উপ-নির্বাচনের মনোয়নপত্র ২০ অক্টোবর এবং বাকিগুলোর মনোয়ন পত্র ১ নভেম্বর জমা দিতে হবে।
- ‘হিন্দুস্থান স্ট্যান্ডার্ড’ পত্রিকায় এক প্রতিবেদনে বলা হয় : সারা সিলেট শহরে মুক্তিবাহিনী অপ্রতিরোধ্যভাবে পাকসৈন্যদের বিরুদ্ধে আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ মহকুমা এবং উত্তর সিলেটের পুরো অংশ মুক্তিফৌজ দখল করেছে। এছাড়া গোয়াইনঘাট, সারি, সালুটিকর, কানাইঘাট, শ্রীমঙ্গল, শমসেরনগর-এ মুক্তিবাহিনী লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত মুক্তিফৌজের ১০,০০০ গেরিলা ঐ এলাকায় পাকসৈন্যদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে।
তথ্যসূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর।
Post a Comment Blogger Facebook