২৯ অক্টোবর, ১৯৭১
- কুমিল্লার পাকবাহিনী শালদার নয়াপুর ও ফুলগাজী থেকে কামানের সাহায্যে মুক্তিবাহিনীর নিলক্ষীঘাঁটির ওপর প্রচন্ড গোলা বর্ষণ করে। মুক্তিযোদ্ধারাও কামানের সাহায্যে পাকসেনাদের অবস্থানের ওপর পাল্টা গোলাবর্ষণ করে। প্রায় পাঁচ ঘন্টা গুলি বিনিময়ের পর পাকসেনাদের আক্রমণ বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। এই সংঘর্ষে পাকবাহিনীর ৪০ জন সৈন্য হতাহত হয়। অপরদিকে ২ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।
- ২নং সেক্টরে পাকবাহিনীর বেলুচ রেজিমেন্ট লাকসাম থেকে কামান ও রকেটের সাহায্যে গুলি করতে করতে সোনাইমুড়ি হয়ে চাটখীল সড়কের দিকে অগ্রসর হয়। মুক্তিবাহিনীর একটি দল ছাত্রদের সহায়তায় পাকসেনাদের বাধা দিলে তুমুল সংর্ষ হয়। প্রায় ২/৩ ঘন্টা যুদ্ধে পাকবাহিনীর কয়েকজন সৈন্য হতাহত হয়। হানাদার বাহিনীর শেলিং-এ একই বাড়ির ৫ জন নিরীহ লোক নিহত হয়।
- ‘বাংলাদেশ’ পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়: মুক্তিবাহিনীর ৮ জন দুর্ধর্ষ গেরিলা নবাবগঞ্জ থানায় আক্রমণ চালিয়ে পাক হানাদার বাহিনীর ৫২ জনকে হত্যা কওে এবং ২৮ জন রাজাকারকে অস্ত্রসহ বন্দী করে। এই যুদ্ধে ১ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন ও এজন যোদ্ধা আহত হন।
- পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান রাওয়ালপিন্ডিতে বলেন, খাঁটি পাকিস্তানিদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন পরীক্ষা করে দেখার জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থাকে গ্রহণ করা হবে। তিনি দাবি করেন, গত মার্চের পর ২০ লাখের কিছু বেশি পূর্ব পাকিস্তানি ভারতে আশ্রয় নিয়েছে।
- ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বৃটিশ নেতৃবৃন্দের সাথে পাক-ভারত পরিস্থিতির গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক বিষয়াদি নিয়ে আলোচনার জন্য লন্ডনে উপস্থিত হন।
- লেঃ জেনারেল নিয়াজী দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্ত এলাকা পরিদর্শন করেন। তিনি সীমান্ত রক্ষায় নিয়োজিত সেনাবাহিনীকে সীমান্তের যে কোন ধরনের হামলা প্রতিহত করার নির্দেশ দেন।
- জামায়াতে ইসলামীর নেতা গোলাম আজম এক বিবৃতিতে সরকার এবং জনগণকে যথাযোগ্য মর্যদায় ‘বদর দিবস’ পালনের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, দিনটি পালনের মাধ্যমে শত্রুদের বিরুদ্ধে জেহাদী মনোভাব জাগ্রত হবে।
- লন্ডনে পাকিস্তান সলিডারিটি নামক সংস্থার স্বাক্ষরকৃত একটি বিজ্ঞাপন‘গাডিয়ান’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। বিজ্ঞাপনে পূর্ব পাকিস্তানকে ধ্বংস করার জন্যে ইন্দিরা গান্ধীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। অভিযোগে বলা হয়, ধ্বংস প্রক্রিয়ায় ভারত উদ্বাস্তুদের জিম্মি হিসাবে ব্যবহার করছে।’
- রাজশাহী জেলা ইফতেহাদুল ওলামার সভাপতি এবং জেলা শান্তি কমিটির সেক্রেটারী আজিজুর রহমান আল আমীনের সভাপতিত্বে দুইশ’ রাজাকার আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ গ্রহণ করে। এই সভায় সভাপতি তার ভাষণে রাজাকারদের জেহাদী মনোভাব নিয়ে ইসলামের শত্রুদের নির্মূলের আহ্বান জানান।
তথ্য সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর
Post a Comment Blogger Facebook
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.