image

image
 

A+ A-
Voice of 71 Voice of 71 Author
Title: মুক্তিযুদ্ধ প্রতিদিনঃ ২৪ ডিসেম্বর, ১৯৭১
Author: Voice of 71
Rating 5 of 5 Des:
২৪ ডিসেম্বর, ১৯৭১ শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে আহুত এক সাংবাদিক সম্মেলনে বাংলাদেশ ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ সংকল্প প্রকাশ করে যে, স্বাধীন ...
২৪ ডিসেম্বর, ১৯৭১
  • শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে আহুত এক সাংবাদিক সম্মেলনে বাংলাদেশ ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ সংকল্প প্রকাশ করে যে, স্বাধীন বাঙ্গালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হাত হতে মুক্ত না করা পযন্ত সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে। ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের নেতৃবৃন্দ জানান তা শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে এদেশের তরুণ সমাজ অস্ত্রধারণ করেছিল। যে নেতার আদর্শ প্রতিষ্ঠার জন্য তাঁরা অস্ত্র হাতে নিয়েছিলেন সেই নেতার কাছেই অস্ত্র জমা দেবেন।
  • ছাত্র নেতৃবৃন্দ বলেন আইন শৃংখলা রক্ষা ও জনসাধারণের নিরাপত্তা বিধানের ব্যাপারে মুজিব বাহিনী সরকারের সাথে সহযোগিতা করবে।
  • সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের নেতা বাংরাদেশ ছাত্র লীগের সভাপতি নূরে আলম সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান সিরাজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি আ.স.ম. আব্দুর রব ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল কুদ্দুস মাখন। তাঁরা দেশী-বিদেশী সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন।
  • ৫৪ জন বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী এক যুক্ত বিবৃতিতে ঢাকা নগরীসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে পাকবাহিনী এবং তাদের সহযোগীরা যে নৃশংস হত্যাকান্ড চালিয়েছে তার পূর্ণ তথ্য উদঘাটনের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানোর জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি দাবী জানান। তাঁরা বলেন, যারা প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে এই ব্যাপক হত্যাকান্ড এবং নৃশংস বর্বরতার সাথে জরিত ছিল তাদেরকে কোনমতেই জেনেভা কনভেনশনের ছত্রছায়ায় থাকতে দেয়া যেতে পারে না। যুক্ত বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছেন: কবি সুফিয়া কামাল, সৈয়দ আলী আহসান, জয়নুল আবেদীন, কামরুল হাসান, সমর দাস, এ.বি.এম. মুসা, কামাল লোহানী, ফয়েজ আহমদ প্রমুখ।
  • বুদ্ধিজীবীরা এসব নর পিশাচদের বিচার করার জন্য বিশ্বের প্রখ্যাত আইনবীদ ও মনীষীদের নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক কমিশন গঠনের আবেদন জানান। তাঁরা বলেন, ইয়াহিয়া খানের বর্বর সামরিক জান্তা এবং জেড.এ. ভুট্টো ২৫ মার্চের কালরাতে বাংলাদেশে সন্ত্রাস ও নৃশংস হত্যাযজ্ঞ শুরু করে। সাড়ে সাত কোটি বাঙ্গালিকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার জন্য তারা এক জঘন্য পরিকল্পনার কাজে হাত দেয় যা ছিল সুপরিকল্পিত গণহত্যার ষড়যন্ত্র এবং তা নৃশংসতার সাথে কাযকরী হচ্ছিল। ইসলামের নামে এবং আল-বদর, আল-শামস, রাজাকার, মুজাহিদ, জামাতে ইসলামী, মুসলিম লীগ, পি.ডি.পি ও অন্যান্য গুন্ডাপান্ডাদের সহযোগিতায় চালানো হয় সভ্যতার ইতিহাসের সবচাইতে জঘন্য ও লোমহর্ষক গণহত্যা, লুন্ঠন, ধর্ষণ। এদের কুকীর্তির বিস্তারিত বিবরণ বিশ্ববাসী এখনও সর্ম্পূণভাবে অবহিত হতে পারেনি এবং এ বিষয়ে সমস্ত তথ্য এখনও সংগৃহীতও হয়নি।
  • বিবিসি’র এক খবরে বলা হয়, পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ভুট্টো বাংলাদেশে সামরিক বিপযয় এবং পশ্চিম পাকিস্তান-ভারত সীমান্ত বরাবর যুদ্ধবিরতি সম্পর্কে তদন্তের জন্য বিচারপতি হামুদুর রহমানের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিশন গঠন করেছেন।
  • বিগত ২৫ মার্চ পরবর্তী সময়কার দখলদার পাক বাহিনীর বর্বরতার দোসর শতাধিক চাঁইকে ধরা হয়েছে বলে জানা গেছে। পুলিশ ডিরেক্টরেটের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির বরাতে এপিবি ও বিপিআই আজ গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে নিন্মোক্তদের নাম ঘোষণা করেছেনঃ
  1. ডঃ সৈয়দ সাজ্জাদ হোসেন, ভি,সি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
  2. এস এম নওয়াব, পুলিশের ডিআইজি
  3. ফজলুল হক, এম.এন.এ
  4. লে: কর্ণেল গোলাম আহমদ চৌধুরী, ডেপুটি চীফ ইঞ্জিনিয়ার
  5. মেজর আফসার উদ্দিন, সাবেক পার্লামেন্টারী সেক্রেটারী
  6. জহুরুল হক, ডেপুটি ডিরেক্টর, রাজাকার
  7. ডক্টর এ.এ.বাসেত, ঢাকা মেডিকেল কলেজ
  8. এ. বি. এম. নূরুল ইসলাম, এম.এন.এ
  9. এস. বি. জামান, এম.পি.এ
  10. এ. বি. এম. আব্দুল খালেক মজুমদার, বদর নেতা
  11. মোক্তার গুন্ডা, মিরপুর মুজাহিদ পার্টির কমান্ডার
  12. আশরাফ আলী, বদর সদস্য
  13. চট্টগ্রামের ফজলুল কাদের চৌধুরী
  14. হাকিম ইনতাজুর রহমান আখুনজাদা, কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির সদস্য
  15. ইন্সপেক্টর আব্দুল হালিম সিকদার, সি.আই.এ. কোতোয়ালী
  16. এস. আই. কায়কোবাদ, প্রাক্তন ওসি, লালবাগ থানা
  17. এস. আই. খোরশেদ খাঁ, প্রাক্তন ওসি, লালবাগ থানা এবং
  18. মাওলানা বজলুর রহমান, ফরিদাবাদ মাদ্রাসা, ঢাকা।
তথ্যসূত্র: মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর

About Author

Advertisement

Post a Comment Blogger

 
Top