০১ ডিসেম্বর, ১৯৭১
- শেষরাতে মুক্তিবাহিনী সিলেটের শমসেরনগরে অতর্কিত আক্রমণ চালিয়ে পাকবাহিনীকে নাজেহাল করে তোলে। মুক্তিবাহিনীর তীব্র আক্রমণে পাকবাহিনী এই এলাকা থেকে পালাতে শুরু করে। মুক্তিবাহিনী টেংরাটিলা ও দুয়ারাবাজার মুক্ত ঘোষণা করে। মুক্তিবাহিনীর অপারেশন অব্যাহত থাকায় পাকবাহিনী এই জেলার গারা, আলিরগাঁও, পিরিজপুর থেকে তাদের বাহিনী গুটিয়ে নিতে বাধ্য হয়।
- রাওয়ালপিন্ডিতে জনৈক সরকারি মুখপাত্র জানায়-অধুনালুপ্ত আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ মুজিবুর রহমানের বিচার এখনও শেষ হয়নি। তিনি বলেন, পূর্ব পাকিস্তানের চারটি রণাঙ্গনে যে আক্রমণাত্মক চাপ সৃষ্টি হয়েছিলো তা এখনো অব্যাহত রয়েছে।
- ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী পার্লামেন্টের উচ্চ পরিষদে বক্তৃতাকালে উপমহাদেশে শান্তি প্রতিষ্ঠার স্বার্থে বাংলাদেশ থেকে পাকিস্তানি সৈন্য অপসারণের নির্দেশ দেয়ার জন্য প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে পাকিস্তানি সৈন্য অপসারণই সমস্যার শ্রেষ্ঠ সমাধান। তিনি ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার জন্য বাংলাদেশ ও ভারতের জনসাধারণকে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান।
- জাগ্রত বাংলার রিপোর্টে বলা হয়- কালিয়াকৈর থানার এক পরিত্যক্ত বাঙ্কারে ডিফেন্স নেবার সময় ৫ জন খানসেনা ভেতরে প্রবেশ করলে একটি বিষধর সাপের ছোবলে ৫ জনই প্রাণ হারায়।
- মুক্তিযোদ্ধারা অপারেশন চালিয়ে ঢাকার দু’জন মুসলিম লীগ কর্মীকে হত্যা করে। বাকী দু’জনকে বুলেট বিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
- এএফপি’র এক খবরে প্রকাশ, ঢাকায় পিপলস পার্টির অফিস বোমা বিস্ফোরণের ফলে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই অফিস দু’মাস আগে জুলফিকার আলী ভুট্টো উদ্বোধন করেন।
- নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকার এক রিপোর্টে বলা হয়- বাংলাদেশের অভ্যন্তরে গেরিলা তৎপরতা বৃদ্ধি পাবার ফলে পশ্চিম পাকিস্তানী সামরিক জান্তাদের নির্দেশে সামরিক বাহিনীর লোকেরা পুনরায় গ্রামবাসীদের হত্যা এবং বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেবার বর্বর অভিযান শুরু করেছে। গেরিলা সন্দেহে জিঞ্জিরার কতজন যুবককে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে হত্যা করেছে তার ইয়াত্তা নেই। বুড়িগঙ্গার অপর পারের এই গ্রামটিতে অন্তত ৮৭ জনকে সামরিক বাহিনীর লোকেরা হত্যা করেছে। এদের অধিকাংশই যুবক। নারী এবং শিশুরাও ওদের হাত থেকে রেহাই পায়নি।
- রাঙ্গামাটি ব্যাপটিস্ট মিশনে হানাদার বাহিনী কর্তৃক আক্রান্ত হয়ে চার্লস আর. হাউজার নামে একজন ধর্মযাজক এবং বহু বাঙ্গালি সন্ন্যাসিনী নিহত হন।
তথ্যসূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর।
Post a Comment Blogger Facebook
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.