- পাকবাহিনী বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে সম্পূর্ণ ভাবে বিছিন্ন ও অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। ঢাকার দিকে পালাবার কোনো পথ তাদের আর নেই। একের সঙ্গে অন্যের যোগ দেওয়ারও কোনো উপায় নেই। এই সুযোগে মিত্র বাহিনীর কর্মকর্তারা তিনটি ব্যবস্থা গ্রহণ করে পুরো পাকবাহিনীকে আত্মসমার্পনের নির্দেশ দেন। জেনারেল জগজিৎ সিংকে অন্তত তিনটি কলাম নিয়ে ঢাকার দিকে দ্রুত অগ্রসর হওয়ার জন্য বলা হয় এবং একটি ব্রিগেডকে হালুয়াঘাটের দিক থেকে ময়মনসিংহের দিকে অগ্রসর হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
- ভরতীয় সেনাবাহিনীর প্রধান বাংলাদেশের দখলদার পাকবাহিনীকে আত্মসমার্পন করতে বলেন এবং সঙ্গে সঙ্গে এই আশ্বাস দেন যে, আত্মসমার্পন করলে পাকবাহিনীর প্রতি জেনেভা কনভেনশনের রীতি অনুযায়ী সম্মানজনক ব্যবহার করা হবে। জেনারেল মানেকশ- এর এই আহ্বান আকাশবানী থেকে নানা ভাষায় বারবার প্রচার করা হয়।
- পূর্বসীমান্ত থেকে জেনারেল সগৎ সিং- এর প্রায় সবকটা বাহিনীই এখন দ্রুত গতিতে পশ্চিমের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। একটা দল এগুচ্ছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া মুক্ত করে আশুগঞ্জের দিকে। অপর একটি বাহিনী আশুগঞ্জের সেতুর দিকে এগুচ্ছিল।
- জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ অবিলম্বে যুদ্ধ বিরতি পালন এবং সৈন্য প্রত্যাহারের জন্য ভারত ও পাকিস্তানের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রস্তাব গ্রহণ করে।
- সাধারণ পরিষদে ভারতীয় প্রতিনিধি শ্রী সমর সেন বলেন, পাকিস্তানের অবশ্যই বাংলাদেশকে স্বীকার করে নিতে হবে। উপমহাদেশে শান্তি পুনঃস্থাপনের জন্য আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ মুজিবুর রহমানকে মুক্তি দিতে হবে। বাংলাদেশ সরকারের কাছে গ্রহণযোগ্য না হলে জাতিসংঘের কোন প্রস্তাবই বাস্তবায়ন করা যাবে না।
- ৫৭তম ভারতীয় মাউন্টেন ডিভিশন ব্রাহ্মণবাড়ীয়ায় পৌঁছয়। পাকবাহিনী এর আগেই ব্রাহ্মণবাড়ীয়া ছেড়ে চলে যায়। যুগপৎভাবে ‘এস’ ফোর্সও বিনা বাধায় সরাইলে পৌঁছয়।
- সন্ধ্যার মধ্যে ১১শ ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্ট আশুগঞ্জের পূর্ব পাশে আজম পুর এবং দুর্গাপুরে সমাবেস করে। সরাইল এবং শাহবাজপুরের মধ্যে ২য় ইস্টবেঙ্গল এবং সেক্টর ভুক্ত এক ব্যাটালিয়ন সৈন্য পেছন দিক থেকে অগ্রসর হতে থাকে। ভারতীয় ৩১১তম মাউন্টেন ব্রিগেডের দশম বিহার রেজিমেন্ট দুর্গাপুরের দক্ষিণে সমবেত হয়।
তথ্যসূত্রঃ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর
Post a Comment Blogger Facebook