০৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১
- ভারত স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী পার্লামেন্টে এই ঘোষণা দেন।
- বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়ায় পাকিস্তান ভারতের সাথে কুটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে। পাক- ভারত যুদ্ধের প্রেক্ষিতে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন পূর্ব পাকিস্তানে অনুষ্ঠেয় উপ-নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করে। এ নির্বাচন ৭ ডিসেম্বর থেকে অনুষ্ঠিত হবার কথা ছিলো।
- লাকসাম, আখাউরা, চৌদ্দগ্রাম,হিলিতে মুক্তিবাহিনী দৃঢ় অবস্থান নেয়। পাকিস্তানী বাহিনী যুদ্ধে কুলিয়ে উঠতে না পেরে পিছু হটে বিকল্প অবস্থান নেয়। রাতে আখাউরা ও সিলেটের শমসেরনগর যৌথ বাহিনীর অধিকারে আসে।
- মিত্রবাহিনীর বিমানের বোমাবর্ষণে ঢাকা বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়।
- ভোর থেকেই পাক নবম ডিভিশনের পলায়ন পর্ব শুরু হয়। যশোর-ঢাকা সড়কে ভারতীয় বাহিনী ঘাঁটি করায় বাধ্য হয়ে পাক নবম ডিভিশনের একটি অংশ পালায় মাগুরা হয়ে মধুমতি নদী ডিঙ্গিয়ে ঢাকার পথে। কুষ্টিয়ার দিক দিয়েও পালালো ছোট্ট একটা অংশ। পালাবার পথে সবক’টা বাহিনীই রাস্তার ওপরের ব্রীজগুলি ভেঙ্গে দেওয়ার চেষ্টা করে।
- নিরাপত্তা পরিষদে পাক-ভারত যুদ্ধ বিরতি সংক্রান্ত মার্কিন প্রস্তাবের ওপর সোভিয়েত ইউনিয়ন দ্বিতীয় দফা ভেটো দেয়। সোভিয়েত সরকারের একজন মুখপাত্র মস্কোতে বলেন, ভারতীয় উপমহাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে সোভিয়েত ইউনিয়ন উদাসীন থাকতে পারে না। কারণ, এখানে সোভিয়েত ইউনিয়নে নিরাপত্তার স্বার্থ জড়িত রয়েছে।
- পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নরের সামরিক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী ঢাকায় বলেন, ভারতের বিরুদ্ধে বেশ কিছু সময় প্রতিরক্ষামূলক যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী প্রস্তুত আছে। তিনি বলেন, আমাদের বাহিনী বর্তমান পরিস্থিতিতে পূর্ব পাকিস্তান ধরে রাখতে পারবে বলে আমার বিশ্বাস।
- লেঃ নিয়াজি রাতে ঝিনাইদহ অবস্থান থেকে সরে এসে তাঁর বাহিনীকে ঢাকা রক্ষার নির্দেশ দেন। সে অনুযায়ী ঢাকার পথে পেছনে এসে মেঘনার তীরে সৈন্য সমাবেশ করার নির্দেশ দেন তিনি। কিন্তু তা আর তাদের পক্ষে করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। কারণ ততক্ষণে ঢাকা-যশোর সড়ক মিত্রবাহিনীর নিয়ন্ত্রনে চলে গেছে। মধুমতি অতিক্রম করে মিত্রবাহিনীর একটি দল খুলনার দিকে এবং অপর একটি দল কুষ্টিয়ার দিকে অভিযান অব্যাহত রাখে।
- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অবিলম্বে পাক-ভারত যুদ্ধ বিরতির প্রচেষ্টা চালানোর জন্য নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব উপস্থাপন করে। সোভিয়েত ইউনিয়ন ঐ প্রস্তাবে ভেটো দেয়। নিরাপত্তা পরিষদের ১১ জন সদস্য মার্কিন প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়। পোল্যান্ড সোভিয়েত ইউনিয়নের পক্ষে ভোট দেয়। বৃটেন ও ফ্রান্স ভোট দানে বিরত থাকে।
তথ্যসূত্রঃ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর
Post a Comment Blogger Facebook
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.