- লড়াইয়ের তৃতীয় দিনেই স্বাধীন বাংলার আকাশ শত্রুমুক্ত হয়। বাংলাদেশে পাকবাহিনীর প্রায় সব বিমান এখন বিধ্বস্ত। সারাদিন ধরে ভারতীয় জঙ্গীবিমানগুলো অবাধে আকাশে উড়ে পাক সামরিক ঘাঁটিগুলোতে প্রচন্ড আক্রমণ চালায়, অকেজো করে দেয় বিমান বন্দরগুলো।
- ভারতের বিমানবাহিনীর হিসাব মতে বারো ঘন্টায় দু’শ বত্রিশবারে তেজগাঁও এবং কুরমিটোলা বিমানঘাঁটিতে পঞ্চাশ টনের মত ফেলা হয়েছে। পাকবাহিনীর কনভয়ের ওপর ভারতীয় জঙ্গী বিমানগুলি আক্রমণ চালায়।এতে পাকবাহিনীর নব্বইটা গাড়ি ধ্বংস হয়। এছাড়াও পাকবাহিনীর সৈন্য বোঝাই কয়েকটা লঞ্চ এবং স্টীমারও ধ্বংস হয়।
- সাবমেরিন গাজী পাক নৌবহরের গর্বের বস্তু। বঙ্গোপসাগরে নৌবাহিনীর যৌথকমান্ডের সফল আক্রমণে তা ধ্বংস হয়। সাবমেরিনটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হতে পাকিস্তান ধার হিসেবে পেয়েছিল।
- নৌবাহিনীর যৌথ কমান্ড চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরের সকল নিরপেক্ষ রাষ্ট্রের জাহাজগুলোকে বন্দর ত্যাগের পরামর্শ দেয়। তারা নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতেও তাদের অপারগতা প্রকাশ করে। বিশ্বের সব দেশ বুঝতে পারে বাংলাদেশের বন্দরগুলো রক্ষা করার ক্ষমতা আর পাক বাহিনীর নেই।
- মিত্রবাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট স্থলপথে এগিয়ে আসতে থাকে। প্রধান সড়ক দিয়ে না এগিয়েও মিত্রবাহিনী বিভিন্ন সেক্টরের প্রধান প্রধান সড়কের কতগুলি এলাকায় অবরোধ সৃষ্টি করে। ফলে ঢাকার সঙ্গে কুমিল্লা, চট্টগ্রাম ও সিলেটের, নাটোরের সঙ্গে ঢাকা ও রংপুরের এবং যশোরের সঙ্গে নাটোর ও রাজশাহীর যোগাযোগ পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
- ভারতের ৫৭ মাউন্টেন ডিভিশন আখাউড়ার যুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর সাথে মিলিত হয়। ভারতীয় সেনাবাহিনী আখাউড়ার দক্ষিণ এবং পশ্চিমাংশ দিয়ে অবরোধ করে। এখানে পাকবাহিনী মিত্র বাহিনীর সাথে যুদ্ধে টিকতে না পেরে অবশেষে আত্মসমার্পন করে। ফলে আখাউড়া সম্পূর্ণরূপে শত্রু মুক্ত হয়। এই যুদ্ধে সুবেদার আশরাফ আলী খান, সিপাহী আমির হোসেন, লেফট্যানেন্ট বদিউজ্জামান, সিপাহী রুহুল আমীন, সিপাহী সাহাব উদ্দীন, সিপাহী মুস্তাফিজুর রহমান শহীদ হন। আখাউড়া মুক্ত হওয়ার পর কিছু পাকসৈন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় এবং ১৬০ জন মিত্রবাহিনীর হাতে নিহত হয়।
তথ্যসূত্র: মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর।
Post a Comment Blogger Facebook