১১ নভেম্বর, ১৯৭১
- ন্যাপ, কমিউনিস্ট পার্টি ও ছাত্র ইউনিয়নের যৌথ বাহিনীর একদল গেরিলা যোদ্ধা সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে প্রবেশের পথে কুমিল্লার অদূরে বেতিয়ারা নামক স্থানে পাকসেনাদের দ্বারা আকস্মিকভাবে আক্রান্ত হন। গেরিলা যোদ্ধারা চরম বিপদের মুখে বীরত্বের সাথে পাকসেনাদের প্রতিহত করে। এই যুদ্ধে বীর মুক্তিযোদ্ধা নিজামইদ্দিন আজাদ ও সিরাজুম মুনিরসহ ৯ জন যোদ্ধা শহীদ হন।
- কুমিল্লায় মুক্তিবাহিনী কামালপুর পাকসেনা ঘাঁটির ওপর মর্টারের সাহায্যে তীব্র আক্রমণ চালায়। এই সংঘর্ষে পাকবাহিনীর ৫ জন সৈন্য নিহত ও ১২ জন আহত হয়। অপর এক ঘটনায় মুক্তিবাহিনীর আরেক দল যোদ্ধা চাওড়া নামক স্থানে পাকসেনাদের এ্যামবুশ করে। এতে ২ জন পাকসেনা নিহত ও ৩ জন আহত হয় ।
- দুপুরে বায়তুল মোকাররম বিপণী কেন্দ্রের সামনে গেরিলাদের পুঁতে রাখা গাড়িবোমা বিস্ফোরণে ৬ জন নিহত ও ৫৫ জন আহত হয়। অপরদিকে সামরিক কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থল থেকে একজন গেরিলাকে গ্রেফতার করে।
- ৮নং সেক্টরের মুক্তিবাহিনী নাস্তি-গুগরি সড়কে পাকসেনাদের এ্যামবুশ করে। এই এ্যামবুশে মাইন বিস্ফোরণে পাকবাহিনীর ১০ জন সৈন্য ও একজন রাজাকার নিহত হয়।
- পাকবাহিনীর ৩টি জঙ্গী বিমান বেলা ৩-৫০মিনিটে মুক্তিবাহিনীর বেলুনিয়া এবং পরশুরাম অবস্থানের ওপর আক্রমণ চালায়। বিমানগুলো এক সময় এল.এম.জি-র আওতায় এলে মুক্তিযোদ্ধারা পাল্টা আক্রমণ চালায়। এতে একটি বিমান ভূপতিত হয়।
- বন-এ ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ও পশ্চিম জার্মান চ্যান্সেলার উইলি ব্রান্টের মধ্যে আলোচনা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে ইন্দিরা গান্ধী সাংবাদিকদের বলেন, ভারত পূর্ববঙ্গের অধিবাসীদের নিজের পছন্দ মতো একটি রাজনৈতিক সমাধান আশা করে।
- প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক জেনারেল ইয়াহিয়া খান বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ অথবা সাহায্য করার অভিযেগে আটক ব্যাক্তিদের বিচারের জন্য বিশেষ আদালত গঠনের নির্দেশ দেন।
- ঢাকার সামরিক কর্তৃপক্ষ এক ঘোষণায় প্রদেশের সকল বেসামরিক এলাকায় ট্রেঞ্চ খননের নির্দেশ জারি করে।
- বিবিসি-র চীন বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ডেভিড ক্লার্ক পাকিস্তানি প্রতিনিধিদলের চীন সফরের ওপর বিশেস পর্যালোচনা করেন । ক্লার্ক জানান, পাকিস্তান প্রতিনিধিদলের চীন সফরের উদ্দেশ্য হচ্ছে চীনের কাছ থেকে আরো বেশি সাহায্য লাভ করা । পাকিস্তান জঙ্গী বিমান এবং আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র সরবরাহের জন্যে চীনকে বিশেষভাবে অনুরোধ করেছে।
- তিনি জানান, সিনকিয়াং এবং করাচীর সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষাকারী পথে চীনের অস্ত্রশস্ত্র পাকিস্তানে পৌঁছতে শুরু করেছে।
তথ্যসূত্র: মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর
Post a Comment Blogger Facebook
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.