আজ উঠোনে বিরাট ও গতীর গর্ত করে লেবুগাছ লাগানো হলো। গতকাল বিকেলে অফিসের একটা পিক-আপ নিয়ে অনেক হুজ্জত করে গাছটা আনা হয়েছে। আনতে আনতে সন্ধ্যে পেরিয়ে গেছিল বলে গতকাল আর পোঁতা হয় নি, গ্যারেজের পাশে রেখে দেওয়া হয়েছিল। এমনই-যত্ন করে বিরাট পরিধি নিয়ে মাটি কেটে তোলা হয়েছিল এবং আজকে এমনই নিখুঁত, অনড় অবস্থায় গাছটা লাগানো গেছে যে আশা হচ্ছে, গাছটার একটা পাতাও মরবে না।
অবশেষে শরীফ নিউজউইক, টাইম ম্যাগাজিনের সেই দুর্লভ সংখ্যাগুলোর টাইপ করা কপি বাড়ি আনতে পেরেছে। আমরা সবাই হুমড়ি খেয়ে পড়লাম। তিনটে কপি- দুটো নিউজউইকের ৫ এপ্রিল আর ১২ এপ্রিল সংখ্যা। টাইম ম্যাগাজিনের ৩ মে সংখ্যা। পাতলা টাইপ কাগজে টাইপ করা ম্যাগাজিনে নিশ্চয় ছবিটবি ছিল, টাইপ কাগজে তার স্বাদ পাওয়া গেল না। তবু যে পড়তে পারছি, এটাই বা কম কি?
পাঁচ এপ্রিলের নিউজউইকের প্রবন্ধটার শিরোনাম হলো- পাকিস্তান প্লাঞ্জেস ইন টু সিভিল ওয়ার- পাকিস্তান গৃহযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে। ভেতরে রয়েছে নিউজউইকের সাংবাদিক লোরেন জেংকিনসের রিপোর্ট। পড়ে অবাক হলাম, হোটেল ইন্টারকনে গৃহবন্দি থাকা অবস্থাতেও লোরেন জেংকিনস ঢাকার আর্মি ক্র্যাকডাউনের পুরো ঘটনা কি করে জেনে সেগুলো হুবহু তার কাগজে তুলে দিয়েছে সারা বিশ্বকে জানাবার উদ্দেশ্যে। এই ঘটনা জানার পর তো আর কোনো দেশের বলা উচিত নয় যে পূর্ব বাংলায় যা ঘটেছে, তা পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার; কিংবা পাকিস্তান ভাঙার যড়যন্ত্রে কিছু বিচ্ছিন্নতাবাদী রাষ্ট্রদ্রোহী দলকে সামরিক সরকার যোগ্য শাস্তি দিয়েছে?
বারো এপ্রিলের সংখ্যায় লোরেন জেংকিনস আরো চমৎকার করে বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামের চিত্র ফুটিয়ে তুলেছে। শিরোনাম দিয়েছে- দি অ্যাওয়েকনিং অব এ পিপল- একটি জাতির জাগরণ। টাইম ম্যাগাজিনের কপিটা আরো পরের, ৩ মে তারিখের। টাইমের সংবাদদাতা ড্যান কোগিন তার প্রবন্ধের নাম দিয়েছে, ঢাকা, সিটি অব দ্য ডেড- লাশের শহর ঢাকা।
সবাই মিলে ভাগাভাগি করে এইগুলো পড়তেই আজ সারা দিন কাবার!
- শহীদ জননী জাহানারা ইমামের বই থেকে
Post a Comment Blogger Facebook
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.