স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে প্রাত্যহিক 'বজ্রকন্ঠ' অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ প্রচারের পর বাজানো হত 'শোনো একটি মুজিবরের থেকে' গানটি।
গানটির সুরকার ও গায়ক অংশুমান রায়ের ছেলে ভাস্কর রায়ের মুখেই শুনুন সে গানের পেছনের কথা।
১৩ এপ্রিল ১৯৭১। বাংলাদেশের মুক্তিকামী মানুষ তখন আন্দোলনে উত্তাল। দুই বাংলার শিল্পীরা প্রায়ই মিলিত হচ্ছিলেন আড্ডায়। এসব আড্ডায় আলোচনার মূল বিষয় একটাই—মুক্তিযুদ্ধ। ১৩ এপ্রিলের আড্ডায় হাজির ছিলেন গীতিকার গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার, অংশুমান রায়, দীনেন্দ্র চৌধুরী, উপেন তরফদারসহ অনেকে। সেখানে টেপ রেকর্ডারে শোনা হচ্ছিল বঙ্গবন্ধুর ভাষণ। ভাষণের সঙ্গে ভেসে আসছিল জনতার সম্মিলিত কণ্ঠস্বর। সেই সময়ই গানটি লিখে ফেলেন গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার। গানটি রচনার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই হারমোনিয়াম বাজিয়ে সুর দিলেন বাবা (অংশুমান রায়)। বঙ্গবন্ধুর ভাষণের সঙ্গে সেই গান বাজানো হলো আকাশবাণী কলকাতায় সেদিন রাতে প্রচারিত ‘সংবাদ বিচিত্রা’ অনুষ্ঠানে। পরের দিন চারদিকে হইচই পড়ে গেল। যুদ্ধক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধাসহ সবার মুখে মুখে তখন এই গান।
১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু নিজে গানটির জন্য বাবাকে ‘বঙ্গবন্ধু গোল্ড মেডেল’ দেওয়ার ঘোষণা দেন। বাবার কাছে আমন্ত্রণপত্র আসে। কিন্তু এরই মধ্যে আসে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের সেই অন্ধকারাচ্ছন্ন রাত। এরপর বাবার আর বাংলাদেশে যাওয়া হয়নি। অনেক বছর পর ২০১২ সালের ২৭ মার্চ বাংলাদেশ সরকার গানটির জন্য বাবাকে ‘মরণোত্তর রাষ্ট্রীয় সম্মাননা’ ও ‘মরণোত্তর মুক্তিযোদ্ধা সম্মান’ প্রদান করে।
[বাংলা নিউজ থেকে]
শোনো একটি মুজিবরের থেকে
কথা : গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার
সুর ও কণ্ঠ : অংশুমান রায়
শোনো একটি মুজিবরের থেকে
লক্ষ মুজিবরের কণ্ঠস্বরের ধ্বনি প্রতিধ্বনি
আকাশে বাতাসে ওঠে রণি
বাংলাদেশ আমার বাংলাদেশ
বাংলাদেশ আমার বাংলাদেশ
সেই সবুজের বুক চেনা মেঠো পথে
আবার যে যাব ফিরে আমার
হারানো বাংলাকে আবার তো ফিরে পাব
শিল্পে কাব্যে কোথায় আছে হায়রে এমন সোনার খনি
বিশ্বকবির সোনার বাংলা, নজরুলের বাংলাদেশ
জীবনানন্দের রূপসী বাংলা
রূপের যে তার নেইকো শেষ, বাংলাদেশ
জয় বাংলা বলতে মনরে আমার
এখনো কেন ভাবো আবার
হারানো বাংলাকে আবার তো ফিরে পাব
অন্ধকারের পুব আকাশে উঠবে আবার দিনমণি
হারানো বাংলাকে আবার তো ফিরে পাব
অন্ধকারের পুব আকাশে উঠবে আবার দিনমণি
ভিডিও দেখুনঃ
Post a Comment Blogger Facebook