১৯ জুলাই, ১৯৭১
- কুমিল্লায় মুক্তিবাহিনীর গেরিলা দল বাবুরহাটে পাকহানাদারদের একটি গাড়ীর ওপর গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এই আক্রমণে ৫ জন পাকসেনা নিহত ও ৭ জন আহত হয়।
- সুবেদার মেজর লুৎফর রহমানের নির্দেশে সুবেদার ওয়ালীউল্লাহ, হাবিলদার মতিন ও শাহাবউদ্দিনের মুক্তিযোদ্ধা দল রাজাকারসহ হানাদার বাহিনীর এক কোম্পানী সৈন্যের মান্দারীবাজার ক্যাম্প আক্রমণ করে। এ যুদ্ধে ২ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।
- পাকিস্তানিদের পাঞ্জাব রেজিমেন্টের একটি কোম্পানী একজন মেজরের কমান্ডে করুইয়াবাজার অবস্থানে ভারতে গমনরত প্রায় দুইশত শরণার্থীকে আটকে রেখে পাশবিক নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছিল। ক্যাপ্টেন মাহফুজের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদল পাকহানাদারদের অবস্থানের ওপর আক্রমণ চালালে উভয় পক্ষের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ হয়। এই সময় ক্যাপ্টেন মাহফুজ শরণার্থীদের পালিয়ে আসতে বললে প্রায় দেড়শ শরণার্থী নিরাপদ আশ্রয়ে সরে আসে ও কিছু শরণার্থী গোলাগুলিতে নিহত হয়। এ যুদ্ধে পাকবাহিনীর ৩০ জন সৈন্য নিহত হয়। মুক্তিবাহিনী কোনো ক্ষতি স্বীকার না করে নিরাপদে নিজ ঘাঁটিতে ফিরে আসে।
- মুক্তিবাহিনী পাকবাহিনীর ভালুকা থানার বাজার ঘাঁটি আক্রমণ করে। এ আক্রমণে হানাদারদের ঘাঁটি বিধ্বস্ত হয় এবং ২২ জন পাকসেনা নিহত ও ১১ জন আহত হয়।
- ভারত সরকারের তথ্যানুযায়ী ভারতে বাংলাদেশের শরণার্থীদের সংখ্যা দাঁড়ায় ৭০ লাখ ২১ হাজার ৪শ‘ ৯০ জন।
- কাউন্সিল মুসলিম লীগ প্রধান মিয়া মমতাজ মোহাম্মদ খান দৌলতানা রাওয়ালপিন্ডিতে বলেন, জাতীয় জীবনের এ সঙ্কটকালে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি দেশদ্রোহিতামূলক।
- পাকিস্তান মুসলিম লীগের সভাপতি খান আবদুল কাইউম খান বলেন, দেশের রাজনৈতিক দল হিসেবে শুধুমাত্র পাকিস্তান মুসলিম লীগই প্রথম থেকে ৬ দফার বিরোধীতা করে এসেছে, ৬ দফাকে একটি ‘টাইম বোমা’ হিসেবে বর্ণনা করেছে।
- পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক এ.এন.এম. ইউসুফ নারায়ণগঞ্জে শান্তি কমিটি ও রাজাকারদের কর্মতৎপরতা দেখতে যান। তিনি জানান, নারায়ণগঞ্জে রাজাকাররা দুষ্কৃতকারী (মুক্তিযোদ্ধা) দমনের জন্য কঠিন পরিশ্রম করছে এবং যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য ট্রেনিং নিচ্ছে।
- মুসলিম লীগ সেক্রেটারী লুন্দখোর গাফফার খান ও ওয়ালী খানের বিদেশ যাওয়া বন্ধ করার দাবি জানায়। তিনি বলেন, ‘এসব লালকোর্তাধারীরা বিদেশে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালায়।’
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে অনুষ্ঠিত ইসলামী ছাত্র সংঘের সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তফা শওকত ইমরান। সভায় মুক্তিযুদ্ধকে ‘ভারতীয় ব্রাহ্মণ্যবাদের ষড়যন্ত্র’ হিসেবে আখ্যায়িত করে তা প্রতিহত করার নির্দেশ দেয়া হয়।
তথ্যসূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর।
Post a Comment Blogger Facebook