২৩ জুলাই, ১৯৭১
- লেঃ মাহবুবের নির্দেশে মুক্তিবাহিনীর ১৫ জনের একটি কমান্ডো প্লাটুন পাকসেনাদের মিয়া বাজার ক্যাম্পের ওপর অতর্কিত আক্রমণ চালায়। একঘন্টা ব্যাপী যুৃদ্ধে ২০ জন পাকসেনা নিহত ও ১০ জন আহত হয়। সফল অভিযান শেষে মুক্তিযোদ্ধারা নিরাপদে নিজ ঘাঁটিতে ফিরে আসে।
- কসবায় মুক্তিবাহিনীর একটি এ্যামবুশ দল কল্যাণ সাগরের কাছে পাকসেনাদের একটি বড় দলকে আক্রমণ করে। এই আক্রমণে ২০ জন পাকসেনা ও ১ জন দালাল নিহত হয়এবং ৮ জন আহত হয়। ২/৩ ঘন্টা যুদ্ধের পর পাকসেনারা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় এবং মুক্তিযোদ্ধারা অবস্থান ত্যাগ করে নিজ ঘাঁটিতে চলে আসে।
- মুক্তিবাহিনীর একটি গেরিলা দল কুড়িগ্রামে পাকবাহিনীর বড়খাতা ঘাঁটি আক্রমণ করে। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে তুমুল যুদ্ধ হয়। এ যুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর সিপাহী আনোয়ার হোসেন ইপিআর শহীদ হন।
- ডেমোক্র্যাট দলীয় সিনেটের স্টুয়ার্ট সিমিংটন মার্কিন সিনেটে প্রশাসনের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃতভাবে পাকিস্তানে অস্ত্রশস্ত্র সরবরাহ বন্ধ না করার অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, পাকিস্তানে যে অস্ত্র প্রেরণ শুরু হয়েছে তা আইনসঙ্গত অধিকার বলেই বন্ধ করা যেত। কিন্তু প্রশাসন ইচ্ছা করেই সে সিদ্ধান্ত নেননি।
- মুসলিম লীগ নেতা কাজী কাদের বলেন, ‘পাকিস্তান চিরদিন অবিভাজ্য থাকবে, কোনো শক্তি নেই পাকিস্তানকে বিভক্ত করে। শেখ মুজিব পাকিস্তানকে বিভক্ত করতে চেয়েছিলো। তাই মুসলিম লীগ সব সময়ই আওয়ামী লীগের বিরোধীতা করেছে। পাকিস্তানের মাটিতে শেখ মুজিবের ‘জয় বাংলা’ ধ্বনি টিকবে না।’
- স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের নিয়মিত কথিকামালা বিশ্ব জনমতঃ
সিয়েয়া লিওনের ফ্রিটাউন থেকে প্রকাশিত ‘মেইল’ পত্রিকার প্রথম পৃষ্ঠা জুড়ে এক দীর্ঘ রিপোর্ট বের হয়। বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ শরণার্থী সম্পর্কে লিখতে গিয়ে সংবাদদাতা সোম সোর্ট প্রশ্ন করেন: বাংলাদেশে যা ঘটেছে তার চেয়ে বেশী কিছু কি ঘটতে পারতো?
তিনি লেখেন, বাংলাদেশে যে ভয়ঙ্কর একটা কিছু ঘটেছে এবং এখনও ঘটছে, তা বোঝার জন্য বা তা বিশ্বাস করার জন্যে এব চেয়ে বেশী প্রমাণের প্রয়োজন আছে বলে আমার মনে হয় না।
বাংলাদেশের ঘটনাবলীর প্রত্যক্ষদর্শী সংবাদদাতা সোম সোর্ট আরো লেখেন, পাকিস্তান সরকারের নীতি ও কার্যকলাপের পশ্চাতে যে একটা ভীষণ ষড়যন্ত্র বা ভয়াবহ একটা কিছু আছে তা আমি বুঝতে পেরেছি। পশ্চিম পাকিস্তানিদের বর্বরতা ক্রমে বেড়েই চলেছে, যুদ্ধ যতো দীর্ঘস্থায়ী হবে বাংলাদেশে ধ্বংস ও মৃত্যু ততো বেড়ে যাবে। পৃথিবীর সকল দেশের মানুষই তো এখন এখানকার ঘটনাবলীর অল্প বিস্তর জানতে পেরেছে কিন্তু তবু আমরা আমাদের নিজ নিজ দেশের সরকারকে পাকিস্তানের ওপর চাপ সৃষ্টিতে বাধ্য করতে পারছি না কেন?- এই রক্তস্নানের কি কোন শেষ নেই?
তথ্যসূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর।
Post a Comment Blogger Facebook