০৬ জুলাই, ১৯৭১
- দাউদকান্দি থানার মাসিমপুর বাজারের আধমাইল পশ্চিমে জয়পুর গ্রামে গোমতীর শাখানদীর পারে হাবিলদার গিয়াসের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদল দাউদকান্দি থেকে আগত পাকসেনাবাহী দুটি লঞ্চকে এ্যামবুশ করে। এতে উভয়পক্ষের মধ্যে তুমুল গোলা বিনিময় হয়। এই সংঘর্ষে ২০/২৫ জন পাকসেনা নিহত হয় এবং পাকবাহিনী পিছু হটে দাউদকান্দি ফিরে যায়।
- কুমিল্লার পাকবাহিনীর এক ব্যাঠালিয়ন সৈন্য মন্দভাগ বাজার থেকে শালদা নদী এনক্লেভ-এর দিকে অগ্রসর হলে ২নং সেক্টরের ‘এ’ ও ‘সি’ কোম্পানী যথাক্রমে মেজর সালেক এবং ক্যাপ্টেন গাফফরের নেতৃত্বে প্রচন্ড বাধা দেয়। এতে পাকসেনারা কামানের সাহায্যে মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থানের ওপর এবং পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলোতে তীব্র গোলাবর্ষণ করে। এই গোলাবর্ষণে ১১ জন মুক্তিযোদ্ধা আহত হয়। এবং ৩২ জন বেসামরিক লোক হতাহত হয়। প্রচন্ড গোলাবিনিময়ের পর পাকসেনারা পিছু হটে মন্দভাগ বাজারে অবস্থান নিতে বাধ্য হয়।
- কুমিল্লার-চাঁদপুর রাস্তায় হবিগঞ্জের নিকট রামচন্দ্রপুর ফেরীঘাটে পাকবাহিনীর একদল সৈন্যকে মুক্তিবাহিনীর একটি কোম্পানী আক্রমণ চালায়। প্রায় একঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষে ৪ জন পাকসেনা নিহত হয়। পরে চাঁদপুর থেকে দু‘কোম্পানী সৈন্য পাকসেনাদের সাহায্য করতে এলে মুক্তিযোদ্দাদের সাথে তুমুল যুদ্ধ হয়। এই যুদ্ধে পাকসেনারা পুরো ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় এবং ৩১ জন পাকসৈন্য নিহত ও ৫৪ জন আহত হয়। অপরদিকে দুইজন মুক্তিযোদ্ধা গুরুতরভাবে আহত হয়।
- মুক্তিযোদ্ধারা সিলেটের দিরাই থানা আক্রমণ করে। এতে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও একজন দালাল নিহত হয়। থানা থেকে মুক্তিযোদ্ধারা প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করে।
- প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার বিশেষ দূত হিসেবে পিপলস পার্টির প্রধান জুলফিকার আলী ভুট্টো ইরান ও আফগানিস্থান সফরের প্রথম পর্যায়ে তেহরানের উদ্দেশ্যে করাচী ত্যাগ করেন।
- পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডার লে. জেনারেল এ.এম. কে. নিয়াজি সিলেট এলাকার সীমান্ত ঘাঁটিসমূহ পরিদর্শন করেন এবং জোয়ানদের মনোবল অটুট রাখার পরামর্শ দেন।
- সিলেটে শান্তি কমিটির নেতা মকবুল আলী চৌধুরী, শাহাবুদ্দিনসহ ৫ সদসস্যে একটি দল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রধান নূরুল আমিনের সঙ্গে দেখা করে কর্ম পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করেন।
- শায়খে জামিয়া ইমদাদিয়া কিশোরগঞ্জ শাখার প্রাক্তন সদস্য সচিব মওলানা আতাহার আলী, পাকিস্তানের অখন্ডতারক্ষায় ‘মুজাহিদ বাহিনী’-তে সকল মাদ্রাসার ছাত্র, শিক্ষক ও পাকিস্তানের আদর্শে বিশ্বাসী ইসলাম প্রিয় যুবকদের যোগ দেয়া অবশ্য কর্তব্য বলে জানান।
- পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সাবেক ডেপুটি স্পীকার এ.টি.এম. আব্দুল মতিন ইয়াহিয়াকে সত্যিকার ‘গণতন্ত্রী’ আখ্যায়িত করে বলেন, পাকিস্তানের অখন্ডতা এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় প্রেসিডেন্টের আন্তরিকতায় তিনি মুগ্ধ হয়েছেন।
তথ্যসূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর।
Post a Comment Blogger Facebook