![]() |
- ঢাকায় কারফিউর মেয়াদ ভোর পাঁচটা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত শিথিল করা হয়। এ সময় দলে দলে লোক ঢাকা ত্যাগ করে।
- ঢাকায় পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করে, ‘প্রদেশের পরিস্থিতি সশস্ত্র বাহিনীর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণাধীন রয়েছে। সশস্ত্র অনুপ্রবেশকারীদের (মুক্তিযোদ্ধাদের) বিরুদ্ধে ব্যবস্থা অবলম্বন করা হচ্ছে। পাকিস্তান বিরোধীদের বিরুদ্ধেও যথোচিত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’
- করাচীতে পাকিস্তান পিপলস পার্টি প্রধান জুলফিকার আলী ভুট্টো এক বিবৃতিতে জানান যে, শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন পূর্ব পাকিস্তান গঠন করতে চেয়ে ছিলেন। সেজন্যেই তিনি জাতীয় পরিষদের দুটি কমিটি গঠনের সুপারিশ করেছিলেন।
- পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একটি পদাতিক কোম্পানি যশোর থেকে কুষ্টিয়ার পথে বিশাখালিতে মুক্তিবাহিনীর এ্যামবুশে ট্রেপ বা ফাঁদের গর্তে আটকে যায়। সামরিক বহরটিতে ৯টি ট্রাক ২টি জীপ ছিল। সৈন্যদের সবাই স্থানীয় কৃষকদের আক্রমণে প্রাণ হারায়।
- মেজর চিত্তরঞ্জন দত্ত তাঁর দুই কোম্পানিসহ শেরপুর-শাদীপুর থেকে প্রধান সড়ক হয়ে এবং ক্যাপ্টেন আজিজের নেতৃত্বে দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গলের নিয়মিত সৈনিকরা শ্রীমঙ্গল-কুলাউড়া-কমিগঞ্জএবং চরখানাই-এর পথ ধরে সিলেটের দিকে তৎপরতা শুরু করে।
- পাকবাহিনী যশোর সেনানিবাস থেকে বিশাখালিতে মুক্তিযোদ্ধাদের ঘাঁটি আক্রমণ করে। মুক্তিবাহিনীর নির্ভীক যোদ্ধারা পাল্টা আক্রমণ চালিয়ে পাকসেনাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
- শেরপুর-শাদীপুর এলাকায় পাকসেনা ও মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ বাধে। উভয় এলাকায় মুক্তিযোদ্ধারা অসীম সাহসের সাথে যুদ্ধ করে এবং পাকবাহিনীর কাছ থেকে এলাকা দুটি মুক্ত করে। এ যুদ্ধে তিন প্লাটুন পাকসৈন্যের অধিকাংশই মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে নিহত হয়। ইলাশপুর গ্রামের জনৈক দালাল ছাওলা মিয়ার ধানের গোলায় একজন পাকসেনা লুকিয়ে আত্মরক্ষার চেষ্টা করলে গ্রামবাসীরা তাকে খঁজে বের করে এবং হত্যা করে। এ যুদ্ধে শহীদ হন তিনজন মুক্তিযোদ্ধা এবং আহত তন অসংখ্য।
- সিলেটের সুরমা নদীর দক্ষিণ পারে এক খন্ড যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে পাকবাহিনী পরাজিত হয় এবং তারা পালিয়ে গিয়ে শালুটিকর বিমান ঘাঁটিতে একত্র হয়।
- সুরমা নদীর সমগ্র দক্ষিণাঞ্চল এবং উত্তর সিলেট শহর শত্রুমুক্ত হয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের হস্তগত হয়।
- রাত আটটায় মুক্তিযোদ্ধারা যাত্রাবাড়ি রোডে পাকসেনা বোঝাই একটি গাড়ি সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দেয়। সাথে সাথে ঢাকা এবং ডেমরা থেকে পাকসেনাদের বহর ঘটনাস্থলের দিকে অগ্রসর হয় এবং গোলাবর্ষণ শুরু করে। তবে মুক্তিযোদ্ধাদের কোন ক্ষয়-ক্ষতি হয়নি। তাঁরা আক্রমণ চালিয়েই সাথে সাথে গ্রামের দিকে চলে যায়।
- দিনাজপুরের ৮উইং সুবেদার আবদুল মজিদের নেতৃত্বে এক কোম্পানি ইআর, ৯ উইং-এর আরেক প্লাটুন ইপিআরসহ সৈয়দপুর- নীলফামারী সদর রাস্তায় সৈয়দপুরের অদূরে দারোয়ানির নিকট প্রতিরক্ষা ঘাঁটি গড়ে তোলে।
- পাকবাহিনী ১১টি গাড়ি নিয়ে ভূষিরবন্দর অবস্থানরত মুক্তিযোদ্ধাদের ঘাঁটির দিকে অগ্রসর হলে মুক্তিযোদ্ধাদের গুলির সম্মুখীন হয়। এতে পাকসেনারা আর সামনে অগ্রসর না হয়ে সৈয়দপুরে পিছু হটে।
- দশ মাইল এলাকায় পাকিস্তানিদের সাঁজোয়া এবং গোলন্দাজ বাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের উপর অতর্কিতে হামলা চালায়। এত অনেক বাঙালি ইপিআর শাহাদাৎ বরণ করেন এবং অনেকে আহত হন।
- তউলন (ফ্রান্স)-এ পাকিস্তানি সাবমেরিন ‘মনগ্রো’র বাঙালি নাবিকরা ‘বিদ্রোহ’ ঘোষণা করে। ‘মনগ্রো’-এর ৪৫ জন নাবিকের মধ্যে ১৩ জন বাঙালি নাবিক পাকিস্তান নৌবাহিনী ত্যাগ করে গোপনে সাবমেরিন থেকে সরে পড়ে। পরে তারা সুইজারল্যান্ডের দিকে যাত্রা করে।
- পাহারতলী রেলওয়ে এলাকাতে পাকসেনারা রেলের চীফ ইঞ্জিনিয়ার মোজাম্মেল চৌধুরী, একাউন্টস অফিসার আব্দুল হামিদ, এল.আর.খান এবং তাঁদের পরিবারের সদস্য ও ভৃত্ যসমেত মোট ১১ জন বাঙালিকে জবাই করে হত্যা করে। এটি পাকসেনাদের নৃশংসতার একটি প্রকাশ।
Post a Comment Blogger Facebook
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.