- রাঙামাটির খাগড়া রেস্ট হাউজে অবস্থানরত পাকবাহিনীর একজন অফিসারসহ এক প্লাটুন সৈন্যের ওপর ক্যাপ্টেন কাদেরের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা আক্রমণ চালায়। এ সংঘর্ষে অফিসারসহ ২০ জন পাকসৈন্য নিহত হয়। বাকি সৈন্যরা পালিয়ে যায়। মুক্তিযোদ্ধারা সংঘর্ষের পর নিরাপদে ঘাঁটিতে ফিরে আসে।
- কুমিল্লার গঙ্গাসাগর ব্রিজে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরক্ষাব্যুহে পাকবাহিনী প্রবল গুলিবর্ষণ করে।
- মেজর আবু ওসমান চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন মুক্তিবাহিনীর সদর দফতর চুয়াডাঙ্গা থেকে মেহেরপুরে স্থানান্তরিত হয়।রাতে আবার মেহেরপুর থেকে ভৈরব নদীর অপর পারে ইছাখালী বিওপিতে সদর দফতর স্থানান্তর করা হয়।এখান থেকে ভারতীয় বিওপির দূরত্ব মাত্র ৬০০ গজ।
- সকাল ১১ টায় পাকসেনারা পার্বতীপুর থেকে ১ টি ট্যাঙ্কসহ ভারী অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের ভবানীপুরের হাওয়া গ্রামের ডিফেন্সের ওপর আক্রমণ চালায়।এ যুদ্ধে ৮ জন মুক্তিযোদ্ধা শাহাদাৎ বরণ করেন। মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটে ফুলবাড়িয়ার দিকে যাত্রা করলে পিছু পিছু পাকসেনারাও ফুলবাড়ির দিকে অগ্রসর হয়।
- ভেড়ামারায় অবস্থানরত মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে পাকবাহিনীর তীব্র সংঘর্ষ হয়।পাকবাহিনীর প্রবল আক্রমণে সুবেদার মোজাফফর তাঁর বাহিনী নিয়ে পিছু হটেন। সামরিক অবস্থানের দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থান ভেড়ামারা পাকবাহিনীর দখলে চলে যায়।
- দিনাজপুর শহর সম্পূর্ণরুপে পাকবাহিনীর নিয়ন্ত্রনে চলে যায়।
- পাকবাহিনী ময়মনসিংহ জেলা দখলে সমর্থ হয়।এরপর পাকবাহিনী হত্যা, লুন্ঠন, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ অবলীলাক্রমে চালিয়ে যেতে থাকে ।
- মুক্তিবাহিনীর কুমিরা থেকে সীতাকুন্ড এসে অবস্থান নেয় এবং প্রতিরক্ষা ব্যুহ তৈরি করে।
- পাকবাহিনী কুষ্টিয়া দখল করে এবং মুক্তিবাহিনীর হাতে বন্দী বিহারীদের জেলখানা থেকে ছেড়ে দিয়ে রাজাকার বাহিনীতে অন্তভূক্ত করে।ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালিয়ে সারা শহরে পাকসেনারা ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে।
- কাপ্তাই জলবিদুৎ কেন্দ্র দখল নিয়ে সারাদিনব্যাপী মুক্তিবাহিনী ও পাকবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
- মুক্তিবাহিনী ও পাকবাহিনীর মধ্যে আশুগঞ্জ বিদুৎ কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ করায়ত্ব করার জন্যে সংঘর্ষ হয়।
- ঢাকায় কারফিউর মেয়াদ সকাল ৫টা থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত শিথিল করা হয়।
- সামরিক কর্তৃপক্ষ ঢাকা বিশ্বদ্যিালয়ের শিক্ষক-কর্মচারিদের অবিলম্বে কাজে যোগদানের নির্দেশ দেন।
- কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যদের নাম ঘোষণা করা হয়। আহ্বায়ক-খাজা খয়েরুদ্দিন,সদস্য-নুরুল আমিন,এ.কিউ.এম শফিকুল ইসলাম,অধ্যাপক গোলাম আজম,মাহমুদ আলী,আবদুল জব্বার খদ্দর,মাওলানা সিদ্দিক আহমদ,আবুল কাশেম, ইউসুফ আলী চৌধুরী,মওলানা সৈয়দ মোহাম্মদ মাসুম,আবদুল মতিন,অধ্যাপক গোলাম সরোয়ার,ব্যারিস্টার আফতাব উদ্দিন আহম্মেদ,পীর মোহসেন উদ্দিন,এ.এস.এম সোলায়মান,এ.কে রফিকুল হোসেন,মওলানা নুরুজ্জামান,আতাউল হক খান,তোয়াহা বিন হাবিব,মেজর (অব.)আফসার উদ্দিন,দেওয়ান ওয়ারেসাত আলী ও হাকিম ইরতাজুর রহমান খান।
- সন্ধ্যায় নুরুল আমিনের নেতৃতে শান্তি কমিটির নেতৃবৃন্দ গভর্নও টিক্কা খানের সাথে দেখা করে জানান, শত্রু নিধনে তারা সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা করবেন এবং নিজেরাও দায়িত্ব পালনে সক্রিয় হবেন।
- লন্ডনে গার্ডিয়ান পত্রিকার সংবাদ :
বাংলাদেশের পরিস্থিতি দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। বিংশ শতাব্দীতে এ ধরনের মুক্তি আন্দোলন খুবই কম দেখা যায়,যার প্রতি সর্বশ্রেণীর জনগনের আকুন্ঠ সমর্থন রয়েছে।আবার এই ধরনের আন্দোলন খুব কম দেখা যায়,যেখানে অধিকার আদায়ের জন্য অস্ত্রশস্ত্রেও এত অভাব। প্রতিটি জায়গায় পুরো প্রশাসন ব্যবস্থা একান্তভাবে মুক্তি আন্দোলনকারীদের সমর্থন দিয়েছে। কয়েকটি শহরে মুক্তি সংগ্রামীরা এখনও প্রশাসন চালিয়ে যাচ্ছে।
তথ্যসূত্র: মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর
Post a Comment Blogger Facebook