image

image
 

A+ A-
Voice of 71 Voice of 71 Author
Title: মুক্তিযুদ্ধ প্রতিদিনঃ ১০ এপ্রিল, ১৯৭১
Author: Voice of 71
Rating 5 of 5 Des:
১০ এপ্রিল, ১৯৭১ মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের সহকারী পররাষ্ট্র সচিব জোসেফ সিসকো বলেন, দ্বিপাক্ষিক চুক্তি অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্ত...
১০ এপ্রিল, ১৯৭১
  • মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের সহকারী পররাষ্ট্র সচিব জোসেফ সিসকো বলেন, দ্বিপাক্ষিক চুক্তি অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানকে যে অস্ত্র দিয়েছে তা তারা আভ্যন্তরীন নিরাপত্তার জন্য ব্যবহার করতে পারবে।
  • শেরে বাংলার পুত্র ও জাতীয় পরিষদ সদস্য (আওয়ামী লীগ) এ. কে. ফয়জুল হক ঢাকায় এক বিবৃতিতে বলেন, পূর্ব পাকিস্তানের সশস্ত্র ভারতীয়দের নগ্ন অনুপ্রবেশ ও অসাধু উদ্দেশ্যের নিন্দা জানানোর ভাষা আমার জানা নেই। আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিকে দ্বিখন্ডিত করার জন্য ভারতের স্থির প্রতিজ্ঞা আমাদের প্রতি তাদের শত্রুাতামূলক মনোভাবের প্রমাণ।
  • লাকসামে পাকবাহিনীর সাথে বাংলার মুক্তিকামী যোদ্ধাদের মুখোমুখি লড়াই শুরু হয়। মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে পাবাহিনীর দুজন লেফটেন্যান্টসহ ২৬ জন সৈন্য নিহত এবং ৬০ জন সৈন্য আহত হয়। এ সংঘর্ষের পর মুহূর্তে পাবাহিনীর সৈন্যরা নিজেদের সামলে নিয়ে মেশিনগান, মর্টার ও আর্টিলারীর গোলাগুলি শুরু করে। চার ঘন্টা গুলি বিনিময়ের পর মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটে। ফেলে পাকবাহনিী লাকসাম দখল করে নেয়।
  • মুক্তিযোদ্ধারা পাকবাহিনীর আক্রমণ প্রতিহত করার লক্ষ্যে দৌলতগঞ্জ সেতু বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে উড়িয়ে দেয়। এতে লাকসাম-নোয়াখালী সড়কের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
  • সিলেটে পাকবাহিনী মুক্তিযোদ্দাদের অবস্থান গুলিতে প্রচন্ড হামলা করে। হামলার মুখে মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটে সুরমা নদীর দক্ষিণ পাড়ে অবস্থান নেয়।
  • দিনাজপুরের দশমাইলে মুক্তিবাহিনীর ঘাঁটিতে পাকসেনারা ট্যাঙ্ক ও গোলন্দাজ বহর নিয়ে প্রত্যুষে তীব্র আক্রমণ চালায়। মুক্তিযোদ্ধারা সাহসিকতার সাথে তাদের প্রতিহত করে। বেলা ২টায় দ্বিতীয় বারের মতো আক্রমণ করলে মুক্তিযোদ্ধারা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পিছু হটে। দিনাজপুরের যোদ্ধারা দিনাজপুরের দিকে ঘঁঅটি পরিবর্তন করে ও ঠাকুরগাঁয়ের যোদ্ধারা ঢেপা নদীর ভাতগাঁও পুলের নিকট অবস্থান নেয়। এ যুদ্ধে চার জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হনএবং বেশ কজন লোক আহত হয়।
  • সিলেটের খাদেমনগরে অবস্থানরত মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর পাকসেনারা একই সঙ্গে স্থল ও বিমান হামলা চালায়। পাকজঙ্গী বিমানগুলো ব্যাপক বোমা নিক্ষেপ করে। ফলে মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটে এসে হরিপুর নামক স্থানে প্রতিরক্ষা গড়ে তোলে।
  • পাবনা অভিমুখে অগ্রসরমান পাকসেনাদের একটি বিশাল বাহিনী অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে নগরবাড়ি ঘাটে এসে পৌঁছায়। মুক্তিযোদ্ধারা নগরবাড়িঘাটে পাকসেনাদের প্রতিরোধ করলে কয়েক ঘন্টা গুলি বিনিময় হয়। এ সংঘর্ষে পাবনার বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী গোলাম সরওয়ার শহীদ হন। পাকসেনারা মুক্তিযোদ্ধোদের প্রতিরোধ ভেদ করে পাবনার দিকে অগ্রসর হয়।
  • পাবনা পুনরায় পাকসেনাদের দখলে চলে যায়। পাক বর্বররা শহরে প্রবেশকালে রাস্তার দুপাশের বাড়িঘর, দোকানপাট ও প্রতিষ্ঠানে আগুন জ্বালিয়ে দেয় এবং গুলি করে অগণিত মানুষকে হত্যা করে।
  • শান্তি কমিটি গঠিত হবার পর নেতৃত্বের কোন্দল দেখা দিলে একটি গোষ্ঠি ফরিদ আহমদকে সভাপতি করে নয় সদস্যের স্টিয়ারিয় কমিটি গঠন করেমূল শান্তি কমিটি থেকে বের হয়ে যায়। স্টিয়ারিং কমিটির ঘোষণায় বলা হয়, এই কমিটি পূর্ব পাকিস্তান শান্তি ও কল্যাণ কাউন্সিল গঠন করে প্রতিটি জেলায় এর শাখা প্রতিষ্ঠা করবে।
  • বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামকে বিছিন্নতাবাদী আন্দোলন ও ভারতীয় ষড়যন্ত্র হিসেবে উল্লেখ করে বিবৃতি দেয়-আবদুল মতিন, মোহাম্মদ ইদরিস, সৈয়দ আলতাফ হোসেন, জালালুদ্দিন আহমদ, কে.এ.এম তৌফিকুল ইসলাম, ফকরুদ্দিন আহমদ, এম. ইকবাল আহমদ, সৈয়দ শহিদুল হক, কলিমুদ্দীন আহমদ, সিরাজুল ইসলাম, শফিকুল ইসলাম, মেসবাহউদ্দিনসহ ঢাকা জেলা বারের ৪১ জন আইনজীবী।
  • যুগান্তর পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ শিরোনাম: ‘ঝিকরগাছায় পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিফৌজের প্রচন্ড লড়াই।’ সংবাদে বলা হয়, পাকিস্তানি বাহিনী ঝিকরগাছা পর্যন্ত রণক্ষেত্র বিস্তৃত করেছে। কামান ও ৬ ইঞ্চি মর্টার নিয়ে পাকসৈন্যরা মালঞ্চ গ্রামের উপর নতুন করে আক্রমণ চালালে মুক্তিফৌজ গ্রাটি ছেড়ে আসে। মুক্তিযোদ্ধাদের মেশিনগানের গুলিতে প্রায় একশত পাকসৈন্য নিহত হয়। মালঞ্চ গ্রাম ছেড়ে মুক্তিফৌজ একদিকে যশোর রোডের উপর লাউজানি লেভেল ক্রসিং গেটে এবং অন্যদিকে ঝিকরগাঝা বাজারের উত্তর দিকে কপোতাক্ষ নদের পূর্ব পারে পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে ‘ব্যাক টু দি ওয়াল’ লড়াই আরম্ভ করেছে।
  • আজ স্বাধীন বাংলা সরকার গঠিত হয়। সরকারের শপথ গ্রহণ অচিরেই বাংলাদেশের মুক্তঞ্চলে অনুষ্ঠিত হবে। শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানটি আকাশবাণী ও বিবিসিতে প্রচারিত হবে।
তথ্যসূত্র: মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর

About Author

Advertisement

Post a Comment Blogger

 
Top