২৩ জানুয়ারি, ১৯৭১
- পিপলস পার্টির হাই কমান্ড ১৮ সদস্যবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটি আজ সকালে জেড. এ. ভুট্টোর ক্লিফটনের বাসভবনে তাঁর সভাপতিত্বে বৈঠকে মিলিত হয়। বৈঠকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় যে, জনাব ভুট্টো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে সাক্ষাতের জন্য ২৭ জানুয়ারি ঢাকায় ১৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব করবেন। বৈঠকে প্রথম অধিবেশনের পর পিপলস পার্টির করাচী অঞ্চলের চেয়ারম্যান এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আবদুল হাফিজ পীরজাদা সাংবাদিকদের উক্ত তথ্য প্রদান করে বলেন, তাদের দলীয় প্রতিনিধি দল পাঁচদিন ঢাকায় অবস্থান করবে।
- টঙ্গী ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির উদ্যোগে টঙ্গী বোর্ড বাজারে অনুষ্ঠিত এক বিরাট জনসভায় ১১-দফার ভিত্তিতে শাসনতন্ত্র রচনা, বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষের জাতিগত সমস্যা সমাধানের নিশ্চয়তা বিধানের জন্য বিচ্ছিন্ন হওয়ার অধিকারসহ পূর্ণ আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসন প্রদানের দাবি জানানো হয়। জনসভায় ন্যাপ নেতা শ্রী মণীন্দ্র গোস্বামী সভাপতিত্ব করেন। এছাড়া প্রাদেশিক ন্যাপ সম্পাদক সৈয়দ আলতাব হোসেন ১১-দফা আন্দোলনে শহীদদের প্রতি গভীর শদ্ধা নিবেদন করে বলেন যে, ন্যাপ এর লক্ষ্যে উপনীত হওয়ার জন্য বিরামহীন সংগ্রাম চালিয়ে যাবে। সভায় গৃহীত প্রস্তাবে মণি সিংসহ সকল রাজবন্দীর অবিলম্বে মুক্তি দাবি করা হয়।
- পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন আহূত ১১-দফা সপ্তাহের আজ শেষ দিন। এ উপলক্ষে ঢাকায় ছাত্র ইউনিয়নের উদ্যোগে ‘মশাল মিছিল’ বের করা হয়। ‘মশাল মিছিল’ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে বের হয়ে বিভিন্ন রাজপথ প্রদক্ষিণ করে। মিছিল ‘১১-দফার সংগ্রাম চলবেই’ ‘শোষক গোষ্ঠীকে খতম কর’, ‘বিপ্লবী সংগ্রাম গড়ে তোলো’, ‘জেলের তালা ভাঙবো রাজবন্দীদের আনবো’, ‘জননেতা মণি সিং-এর মুক্তি চাই’, কমুনিস্ট পার্টিকে বেআইনী রাখা চলবে না’,‘চাল ডাল তেলের দাম কমাতে হবে’, ‘অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা চাই নইলে এবার রক্ষা নাই’ ইত্যাদি শ্লোগান প্রদান করে। সবশেষে মিছিলটি বাহাদুর শাহ পার্কে এসে সংক্ষিপ্ত সভায় মিলিত হয়। সেখানে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি নুরুল ইসলামের ভাষণের মধ্য দিয়ে ১১-দফা সপ্তাহের কর্মসূচি সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়।
- ১১-দফা সপ্তাহের শেষ দিনে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের উদ্যোগেও ঢাকার বায়তুল মোকাররম থেকে ‘মশাল মিছিল’ বের করা হয়। মিছিল শহরের বিভিন্ন রাস্তা প্রদক্ষিণ করে।
তথ্যসূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর
Post a Comment Blogger Facebook