image

image
 

A+ A-
Voice of 71 Voice of 71 Author
Title: মুক্তিযুদ্ধ প্রতিদিনঃ ০৬ জুন, ১৯৭১
Author: Voice of 71
Rating 5 of 5 Des:
০৬ জুন, ১৯৭১ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে জাতির উদ্দেশে প্...
০৬ জুন, ১৯৭১
  • গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে জাতির উদ্দেশে প্রদত্ত ভাষণে বলেন, বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও আটক সকল গণপ্রতিনিধির অবিলম্বে মুক্তিদান, বাংলাদেশের মাটি থেকে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী কর্তৃক বাংলাদেশ থেকে অপহৃত ধনসম্পদ এবং বিগত আড়াই মাসে হানাদার বাহিনী বাংলাদেশের যে ক্ষতি করেছে, একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার মাধ্যমে তা নির্ণয় করে লুন্ঠিত সম্পদ ফেরত ও পূর্ণ ক্ষতিপূরণের মাধ্যমেই কেবল রাজনৈতিক সমাধান আসতে পারে। অন্যথায় রাজনৈতিক সমাধানের কোনো প্রশ্নই উঠতে পারে না। বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষ গোঁজামিলের সমাধান গ্রহণ করবে না। অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে সকল বাঙালি-হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খৃষ্টান এক সাথে লড়েছেন, বুকের রক্ত ঢেলে দিয়ে বাংলার মাটি সিক্ত করে আমরা এটাই প্রমান করেছি, আমরা অসাম্প্রদায়িক, এদেশের প্রতিটি প্রাণ ঐক্যবদ্ধ, অভিন্ন। আমরা এক সাথে লড়েছি, জয়ী আমরা হবোই। সৈয়দ নজরুল ইসলাম তাঁর ভাষণে প্রতিবেশী ভারতে আশ্রয়গ্রহণকারী বাঙালিদের সাহায্য করায় ভারত সরকারের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ইয়াহিয়ার হানাদার বর্বর সৈনিকদের নির্মম অত্যাচারে অসংখ্য মানুষ দেশত্যাগ করে প্রতিবেশী রাষ্ট্রে চলে যেতে বাধ্য হয়েছে। শত্রুকে পরাজিত করার পর মুক্ত স্বদেশে আমরা আবার তাদের আপন ভিটামাটিতে প্রতিষ্ঠিত করবোই। মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বের প্রশংসা করে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি বলেন, বিভিন্ন রণাঙ্গনে মুক্তিবাহিনীর বীর সৈনিকরা যে অসীম অটল মনোবলের পরিচয় দিয়েছেন সেজন্য আজ বাঙালি জাতি গর্বিত। মুক্তিযোদ্ধারা দেশমাতৃকার বীর সন্তান। মুক্তিযুদ্ধে যে সব বীর যোদ্ধা শহীদ ও পঙ্গু হয়েছেন তাঁদের পরিবারবর্গের পুরো দায়িত্ব বাংলাদেশ সরকার গ্রহণ করছেন।
  • মুক্তিবাহিনী লাকসাম-নোয়াখালী মহাসড়কের খিলাতে পাকবাহিনীর দুটি জিপ ও একটি ট্রাক এ্যামবুশ করে। এতে পাকবাহিনীর ৪ জন অফিসার ও ৭ জন সৈন্য নিহত এবং তিনটি গাড়ি ধ্বংস হয়।
  • চট্টগ্রামে মুক্তিবাহিনীর চাঁদগাজী ঘাঁটির ওপর পাকবাহিনীর দুটি কোম্পানি আক্রমণ চালায়। দুঘন্টাব্যাপী ব্যাপক সংঘর্ষে ৭৫ জন পাকসেনা নিহত এবং অনেক আহত হয়। মুক্তিযোদ্ধাদের পাল্টা আক্রমণের মুখে পাকিস্তানিরা চরম ক্ষতি স্বীকার করে ছাগলনাইয়ার দিকে পালিয়ে যায়।
  • ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সরদার শরণ সিং বাংলাদেশের শরণার্থীদের জন্য আন্তর্জাতিক সাহায্যর আবেদন জানাতে বিদেশ সফরের শুরুতে মস্কো গমন করেন।
  • হল্যান্ড বাংলাদেশের শরণার্থীদের জন্য ১৫ লাখ গিল্ডারের খাদ্য ও ঔষধ সাহায্য প্রেরণ করে।
  • জামায়াতে ইসলামীর প্রধান মওলানা সৈয়দ আবুল আলা মওদুদী মুসলিম বিশ্বের নেতৃবৃন্দের কাছে পাঠানো স্মারকলিপিতে উল্লেখ করেন, বাঙালি বিচ্ছিন্নতাবাদী (বাংলাদেশ সরকার) মুসলিম বিশ্বের পূর্ব পাকিস্তানের পরিস্থিতি সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর তথ্য পরিবেশন করছেন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী নিরীহ বাঙালি মুসলমানদের হত্যা করছে বলে যে প্রচারণা চালানো হচ্ছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। এটা সম্পূর্ণ পরিস্কার হয়ে গেছে, পূর্ব পাকিস্তানের মুসলিম জনসাধারণ কখনো বিচ্ছিন্ন হতে চায়নি। এ অঞ্চলের মুসলমানরা ১৯৭১ সালের ১ মার্চ যে বিদ্রোহ শুরু হয় তাতে শরীক হয়নি। বাস্তব কথা হলো, বিচ্ছিন্নতাবাদীদের এই আন্দোলন চরমপন্থীদের একটি অংশবিশেষই আরম্ভ করে-যারা ইসলামী ভাবাদর্শ সম্পর্কে কোনো শিক্ষা পায়নি এবং নাস্তিক।

তথ্যসূত্র: মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর

About Author

Advertisement

Post a Comment Blogger

 
Top