২৬ মে, ১৯৭১
- মুক্তিবাহিনী
কুমিল্লার জগন্নাথদীঘিতে পাকবাহিনীর অবস্থানের ওপর অকস্মাৎ আক্রমণ চালায়।
অভিযানে পাকবাহিনীর ১৯ জন সৈন্য হতাহত হয়। এ অভিযানের নেতৃত্ব দেন লে.
ইমামুজ্জামান।
- মুক্তিবাহিনীর টহলদার দল
ব্রাহ্মণবাড়িয়া- কুমিল্লাসড়কের ওপর উজানিশার সেতুর নিকট পাহাড়ারত
পাকসৈনিকদের ক্যাম্পে আক্রমণ চালায়। এ অকস্মাৎআক্রমণে পাকবাহিনীর ১৩ জন
সৈন্য নিহত ও ৩ জন সৈন্য আহত হয় এবং বিস্ফোরক লাগিয়ে একটি স্প্যান ধ্বংস
করা হয়।
- পাকিস্তানি সৈন্যরা ভারি কামানের সাহায্যে মুক্তিবাহিনীর
পাটেশ্বরীপ্রতিরোধ ঘাঁটিতে তীব্র আক্রমণ চালায়। পাকিস্তারি সৈন্যরা ধরলা
নদীর দক্ষিণ তীর থেকে গোলা বর্ষণ শুরু করে। এ আক্রমণে মুক্তিযোদ্ধারা
ভূরুঙ্গামারীল দিকে ফিরে আসে এবং পাটেশ্বরী প্রতিরোধ ঘাঁটি ভেঙে যায়।
- কুড়িগ্রাম এলাকাতে মুক্তিবাহিনীর একটি টহলদার দলের সঙ্গে পাকবাহিনীর
সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে মুক্তিযোদ্ধারা পাকবাহিনীর বেশ ক্ষতিসাধন করে নিরাপদে
ঘাঁটিতে ফিরে আসে।
- কুড়িগ্রামে কালুর ঘাট নামক স্থানে মুক্তিযোদ্ধাদের ‘রেকি’ দলের সঙ্গে
পাকবাহিনীর সম্মুখ সংঘর্ষ হয়। এ সংঘর্ষে পাকবাহিনীর ২ জন সৈন্য নিহত হয়।
- ছাতকে ১৮ জন যুবক মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিতে যাওয়ার পথে বেতুরার পকির
চেয়ারম্যান ও তার দলের হাতে ধরা পড়ে। এদেরকে তারা পাকহায়েনাদের হাতে তুলে
দেয়। হায়েনার দল এই ১৮ যুবকের ১৭ জনকে ছাতক-গোবিন্দগঞ্জ রাস্তার মাধবপুরের
নিকট সারি বেঁধে দাঁড় করিয়ে ব্রাশ ফায়ার করে। এতে সবাই নিহত হয়। বাকী একজন
পালিয়ে জীবন বাঁচায়।
- সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় পাক বর্বররা ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালায়। বুরুঙ্গাবাজারে বর্বরদের পৈশাচিক নির্যাতনে ৮১ জন নিরীহ মানুষ নিহত হয়।
- মার্কিন পররাষ্ট্র বিভাগের চার্লস ডব্লিউ ব্রে ওয়াশিংটনে বলেন,
যুক্তরাষ্ট্র মনে করে পূর্ব পাকিস্তানের পরিস্থিতি পাকিস্তানের একটি ঘরোয়া
রাজনৈতিক ব্যাপার । যুক্তরাষ্ট্র কামনা করে না এ থেকে উপমহাদেশে কোনো
দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হোক। সে জন্য মার্কিন সরকার পূর্ব
পাকিস্তান পরিস্থিতি সম্পর্কে সংযত মনোভাব গ্রহণ করার জন্য ভারত ও
পাকিস্তানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
- নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী কিথ হেলিয়র্ক সিঙ্গাপুর সফরকালে
উপমহাদেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে সাংবাদিকদের বরেন, নিউজিল্যান্ড পূর্ব
পাকিস্তানের ট্রাজেডিতে নীরব ও নিস্ক্রিয় থাকতে পারে না । নিউজিল্যান্ড
সরকার ও জনগণ মানবিক কারণে বাঙালি উদ্বাস্তুদের প্রতি সহানুভূতিশীল।
- করাচীস্থ চীনা কনসুলেট জেনারেল নিয়েহ বুন চি বলেন, স্বাধীনতা রক্ষার
ন্যায্য সংগ্রামকে চীন সব সময় পাকিস্তানকে সমর্থন জানাবে। বৈদেশিক আক্রমণ ও
হস্তক্ষেপ মোকাবেলায় চীন পাকিস্তানিদের পাশে দাঁড়াতে কুন্ঠাবোধ করবে না।
- মুসলিম লীগের সভাপতি খান আবদুল কাইয়ুম খান পেশোয়ারে বলেন, আওয়ামী লীগের বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন ছিল একটি আন্তর্জাতিক চক্রান্ত।
- কবি বেনজীর আহমদকে সভাপতি করে আড়াইহাজার থানা শান্তি কমিটি গঠন করা হয়।
তথ্যসূত্র: মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর
Post a Comment Blogger Facebook