২১ মে, ১৯৭১
- কুমিল্লার
দক্ষিণে গৌড়ীপুর নামক স্থানে মুক্তিবাহিনীর কমান্ডোরা পাকসেনাদের ওপর
অকস্মাৎ আক্রমণ চালায়। এতে পাকবাহিনীর ৯ জন সৈন্য নিহত হয়।
- মুক্তিবাহিনীর একটি গেরিলা দল দেবীদ্বার থানা আক্রমণ করে। এ অভিযানে ছয়জন দালাল পুলিশ নিহত হয়।
- মুক্তিবাহিনীর অপর গেরিলা দল হাজীগঞ্জ থানা আক্রমণ করে। এ অভিযানে একজন পুলিশ সাব-ইন্সপেক্টর ও দুইজন দালাল পুলিশ নিহত হয়।
- কুমিল্লার শালদা নদী এলাকায় পাকবাহিনী রেশন ও এমুনিশন-বাহী একটি রেলওয়ে
ট্রলির ওপর মুক্তিযোদ্ধারা আক্রমণ চালায়। এতে মুক্তিযোদ্ধারা বেশ কিছু
অস্ত্রশস্ত্র দখল করে।
- পাকবাহিনী বেপরোয়া গুলিবর্ষণসহ ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগের মধ্যে দিয়ে
ঝালকাঠির রমানাথপুর এলাকা আক্রমণ করে। পাক বর্বরদের পৈশাচিকতায় আবদুল মাঝি,
আহম্মদ মাঝি, আ.হালিম মাঝি, এনাজুদ্দিন মাঝি, তককি মাঝিসহ অনেক গ্রামবাসী
নিহত হয়।
- পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ও প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক জেনারেল আগা
মোহাম্মদ ইয়াহিয়া খান করাচিতে এক বিবৃতিতে বলেন, গোলযোগের পুর্ব পাকিস্তান
থেকে যে সব পাকিস্তানি নাগরিক দেশত্যাগ করেছেন আমি তাদের রাষ্ট্রবিরোধী
ব্যক্তিদের মিথ্যা প্রচারণায় বিভ্রান্ত না হয়ে নিজ নিজ বাড়িঘরে ফিরে এসে
স্বাভাবিক কাজকর্ম শুরু করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। আমার বিশ্বাস, পূর্ব
পাকিস্তানের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে বিঘ্নিত করার উদ্দেশ্যে ভারত তাদের
দেশত্যাগে প্রলুব্ধ করে। তিনি আরো বলেন, দেশের পূর্বাংশে আইনশৃঙ্খলা
পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং জীবন যাত্রা দ্রুত স্বাভাবিক হয়ে আসছে।
- খুলনার প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী খান এ. সবুর, প্রাক্তন প্রাদেশিক
মন্ত্রী এস.এম. আমজাদ হোসেন ও প্রাক্তন জাতীয় পরিষদ সদস্য এ.কে.এম ইউসুফ এক
যৌথ বিবৃতিতে বলেন, আমাদের সেনাবাহিনী আওয়ামী লীগের জাতীয় সংহতি বিরোধী
কার্যকলাপ ব্যর্থ করে দিয়েছে। আমরা রাষ্ট্রদ্রোহীদের নির্মূলের কাজে
নিয়োজিত পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা করার জন্য প্রদেশের জনসাধারণের
প্রতি আহ্বান জানাই।
- ঢাকাস্থ চীনের কনসাল জেনারেল চ্যাং ইং বলেন, পূর্ব পাকিস্তানে যা ঘটেছে তা পাকিস্তানের ঘরোয়া ব্যাপার ।
- সাবেক প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য ও পিডিবির যুগ্ন সম্পাদক শামসুর রহমান
মাদারীপুর সফর করে সেখানকার শান্তি কমিটির সদস্যদের বলেন, ‘পাকিস্তানের
অখন্ডতা রক্ষা করতে ঐক্যবদ্ধভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের ধ্বংস করতে হবে।’
- কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির সদস্য ও কৃষক-শ্রমিক পার্টির সভাপতি এ.এস.এম
সোলায়মান পিরোজপুরে শান্তি কমিটির সভায় মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে সজাগ
দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানান।
- আবুল হোসেনকে সভাপতি ও আবদুল খালেককে সম্পাদক করে বরিশাল জেলা শান্তি কমিটি গঠন করা হয়।
- দেশের বিভিন্ন এলাকায় স্বাধীনতা বিরোধীরা শান্তি কমিটি গঠন করে। শান্তি
কমিটি গুলো হচ্ছে: ময়মনসিংহ জেলা-সাবেক মন্ত্রী ফখরুদ্দিন আহমদ ও সাবেক
সদস্য এম.এ হান্নান, নেত্রকোণা মহকুমা-এ্যাডভোকেট ফজলুল হক, কিশোরগঞ্জ
মহকুমা-মওলানা মোসলেহউদ্দিন, আবদুল আওয়াল জান, সাবেকএম.এন.এ শরিফ উদ্দিন,
মওলানা আতাহার আলী, টাঙ্গাইল জেলা-হাকিম হাবিবুর রহমান, হালুয়াঘাট থানা-
সাবেক এম.পি.এআবদুল জলিল মিয়া ও আবদুল হান্নান দাদুমিয়া, কক্সবাজার থানা-
এ্যাডভোকেট মইদুর রহমান, সাবেক এমপিএ জাফর আলম চৌধুরী, ফতুল্লা থানা-
পান্ডে আলী মিয়া ও এম.এ খালেক, হিজলা থানা- মোহাম্মদ ইসমাইল খান ও ডা.এ
মুকিত খান।
তথ্যসূত্র: মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর
Post a Comment Blogger Facebook