১ মে, ১৯৭১
- মেজর শফিউল্লাহর নির্দেশে দ্বিতীয় বেঙ্গল রেজিমেন্টের লেফটেন্যান্ট গোলাম হেলাল মোরশেদ খান এক প্লাটুন যোদ্ধা নিয়ে তেলিয়াপাড়া থেকে মাধবপুর হয়ে শাহবাজপুরে পাকিস্তানি সৈন্যদের রেইড করার জন্যে রওয়ানা হন।
- পাকহানাদার বাহিনী চট্টগ্রামের রামগড়ের আশেপাশের এলাকার ওপর গোলা বর্ষণ শুরু করে। পাকবাহিনীর একটি দল মূল সড়ক ধরে ও অন্য একটি দল রামগড়ের পূর্ব-দক্ষিণে পাহাড়ের দিকে অগ্রসর হয়।
- কুমিল্লার বগাদিয়া সেতুর কাছে নায়েক সিরাজ এক প্লাটুন যোদ্ধা নিয়ে এ্যামবুশ করে। পাকবাহিনীর একটি জীপসহ তিনটি ট্রাক কাছাকাছি এলে মুক্তিযোদ্ধারা প্রচন্ড আক্রমণ চালায়। এ যুদ্ধে ১৫-২০জন পাকসেনা নিহত ও তাদের একটি লরি নম্পূর্ন ধ্বংস হয়। নায়েক সিরাজ অসীম সাহস ও বীরত্বের সাথে এ যুদ্ধ পরিচালনা করেন। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এই যুদ্ধ ‘বগাদিয়ার যুদ্ধ’ নামে খ্যাত।
- ৩০ এপ্রিলের পরাজয়ের ঝাল মেটাতে পাকহানাদার বাহিনী পুনরায় কুমিল্লার বড়কামতা আক্রমণ করে। পাকসেনারা গ্রামে ঢুকে বাড়িঘর আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়।
- ভারতের শিল্পমন্ত্রী মইনুল হক চৌধুরী আগরতলার শরণার্থী শিবির পরিদর্শনকালে বলেন, বাংলাদেশ একটি বাস্তব ঘটনা। এর ভবিষ্যৎ সম্পর্কে কোনো সন্দেহ নেই। বাঙালিরা শেষ পর্যন্ত জয়ী হবেনই। বিশ্ববাসীর উচিত একে স্বীকার করে নেয়া।
- ঢাকায় সামরিক কর্তৃপক্ষ নগরীর রেল লাইন ও সড়কের উভয় পাশের অননুমোদিত বাড়িঘর ও বস্তি সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেয়।
- ময়মনসিংহ থেকে নির্বাচিত প্রাদেশিক সদস্য এস.বি. জামান আওয়ামী লীগের সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করেন। তিনি পাকিস্তানের অখন্ডতা বজায় রাখার লক্ষ্যে সশস্ত্র বাহিনীকে সহযোগিতা করার জন্য ময়মনসিংহবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
- পাকিস্তানি বাহিনীর অত্যাচারের হাত থেকে বাঁচার জন্যে লাখ লাখ বাঙালি ভারতে গিয়ে আশ্রয় নেয়। অন্যদিকে পাকিস্তান সরকার জানায়, ‘কিছু সংখ্যক লোক সমাজ-বিরোধীদের দ্বারা বিভ্রান্ত হয়ে সীমান্তের ওপারে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে ভারত উদ্বাস্তুর ধুঁয়া তুলে ব্যবসা করছে।’
- মুসলিম লীগ (কাইয়ুম) প্রধান খান আবদুল খান কাইয়ুম খান শাসনতন্ত্র প্রণয়ের দাবী তুলে জানান, পূর্ব পাকিস্তানের দুঃখজনক পরিস্থিতির উদাহরণ সামনে রেখে শাসনতন্ত্র প্রণয়ন করলে এ ধরনের অবস্থা আর সৃষ্টি হবে না। এটাই হচ্ছে শাসনতন্ত্র প্রণয়নের উপযুক্ত সময়।
Post a Comment Blogger Facebook