শহীদ
জননী সালেমা বেগম মুক্তিযুদ্ধের ন'মাস ঢাকাতেই ছিলেন। তিনি ঢাকায়
পাকিস্তানি বাহিনীর অনেক ধ্বংসযজ্ঞ ও নির্যাতনের প্রত্যক্ষদর্শী।
তিনি জানান
তিনি জানান
১৯৭১ সালের মার্চ-ডিসেম্বর পর্যন্ত ঢাকাতেই ছিলাম। আমার স্বামী ডা: এম এ শিকদার তখন তেজগাঁস্থ সেন্ট্রাল মেডিক্যাল স্টোরের উপ-পরিচালক। ঐ অফিসের দোতলায় আমাদের বাসা ছিল।
২৫মার্চ রাতে হানাদারদের বর্বর আক্রমণের পর আমার দু'ছেলে ঢাকা শহরের বিধ্বস্থ অবস্থা দেখে ৩১মার্চ মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিতে চলে যায়। এ সময় আমি খুব আতংকে থাকতাম।
এপ্রিলের শেষ দিকে একদিন বাসার কাছে প্রচণ্ড গোলাগুলির শব্দ শুনে, অফিসের পিওন রমজানকে ঘটনা জানার জন্য পাঠালাম। সে ফিরে এসে জানালো, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের পাশের এক বাসায় গোলাগুলি হয়েছে।
ঐ বাসার একটি বাচ্চা বারান্দায় দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের পতাকা নাড়িয়ে 'জয় বাংলা' স্লোগান দিচ্ছিলো। এই স্লোগানের শব্দ শুনে পাকি আর্মি সাথে সাথে ঐ বাড়ির দোতলায় উঠে যায়।
বাচ্চার হাতে তখনও পতাকাটি ধরা ছিল। হানাদাররা পতাকা ছিনিয়ে নিয়ে ছেলেটার মাথার তালুতে পতাকার লাঠিটি ঢুকিয়ে দেয়। বাচ্চাটি তখন যন্ত্রণায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।
এ সময় বাচ্চাটির মা-বাবা ও দাদা-দাদি সেখানে এলে, হানাদাররা মা ও দাদিকে উপর্যুপরি ধর্ষণ করে এবং বাবা ও দাদাকে গুলি করে মারে। এ সময় কারফিউ ও ব্ল্যাক আউট চলছিল।
পৃ: ২৩-২৪
এমন অনেক তথ্যে পরিপূর্ণ একটা মূল্যবান বই। যেখানে সামরিক বাহিনীর বিভাগওয়ারি অপরাধী সদস্যদের নাম ও অপরাধের ধরণ এবং এই সকল ঘটনার সাক্ষীদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
কিছু ঘটনা এত হৃদয়বিদারক, পড়ার পর নিজেকে স্থির রাখা কষ্টকর আর পাকিস্তানিদের মানুষ ভাবতে ঘৃণা হয়। ওরা জাস্ট নামানুষ-নরপশু।
এই পশুদের সম্পর্কে জানুন আর লাল-সবুজে নিজেকে জড়িয়ে নিন।
পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধী ১৯১ জন
ডা: এম এ হাসান
পৃষ্ঠা: ২৩২
মূল্য: ৩২৫ টাকা
প্রকাশক: সময়
লিখেছেন: রাশেদুজ্জামান রণ
Post a Comment Blogger Facebook