![]() |
- ২নং সেক্টরে মুক্তিবাহিনীর এ্যামবুশ দল পাকসেনাদের একটি দলকে সোনাগাজীর রাস্তায় এন্টি-ট্যাঙ্ক মাইন পেতে এ্যামবুশ করে। মাইনের আঘাতে পাকসেনাদের তিনটি ট্রাক ধ্বংস হয় এবং সেই সঙ্গে ২০ জন পাকসৈন্য নিহত হয়। এ ছাড়াও এ্যামবুশ দলের গুলিতে প্রায় ৪০ জন পাকসেনা ও রাজাকার হতাহত হয়। একঘন্টা যুদ্ধের পর মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ অবস্থান পরিত্যাগ করে নিরাপদে নিজ ঘাঁটিতে ফিরে আসে।
- সুবেদার মেবোসসারুল ইসলামের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধা দল চারঘাট থানার মীরগঞ্জ বি-ও-পি আক্রমণ করে। মুক্তিযোদ্ধাদের অতর্কিত আক্রমণে বি-ও-পি তে অবস্থানরত সকল পাকসেনা নিহত হয়।
- পাকিস্তান পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান জুলফিকার আলী ভুট্টো বলেন, জনগণ চায় পিপলস পার্টির হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হোক। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ বেআইনী ঘোষিত হবার পর তাঁর দলই এখন কেবল পাকিস্তানের বৃহত্তম দল নয়, জাতীয় পরিষদের সংখ্যাগরিষ্ঠ দল।
- গফরগাঁও শান্তি কমিটির সদস্যরা রাজাকার বাহিনীতে দশ দিনের সশস্ত্র প্রশিক্ষণ শেষ করে সশস্ত্র অবস্থায় মিছিল করে।
- সাবেক মন্ত্রী আজমল আলী চৌধুরী সিলেটে বলেন, সিলেট রেফারেন্ডামের মাধ্যমে পাকিস্তানে যোগদান করেছে। কাজেই পাকিস্তানবিরোধী হিন্দুস্তানী চক্রান্ত নস্যাৎ করে পাকিস্তানের অখন্ডতা বজায় রাখা আমাদের পবিত্র দায়িত্ব।
- ‘মুক্তিযুদ্ধ’ পত্রিকার প্রতিবেদন :
সাতক্ষীরায় মুক্তিবাহিনী সীমান্ত এলাকার দুইটি পাকঘাঁটি দখল করিয়া বাংলাদেশের পতাকা উড়াইয়া দিয়াছে। ঘাঁটি দুটি হইল-কাকডাঙ্গা ও বৈকারী। এখান হইতে মুক্তিবাহিনী প্রচুর পরিমাণে অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করিতে সক্ষম হয়।
- স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র প্রচারিত নিয়মিত কথিকা ‘সংবাদ পর্যালোচনা’ :
লন্ডনের ‘ডেইলী টেলিগ্রাফ’ পত্রিকার এক খবরে বলা হয়েছে যে, পশ্চিম পাকিস্তানি জঙ্গীশাহীর সঙ্গে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে আলোচনা পন্থা স্থির করার উদ্দেশ্যে ইসলামাবাদ ও তেহরানে গোপনে গোপনে জোর কুটনৈতিক তৎপরতা চলছে। এই তৎপরতার নায়ক ইরান। আর এর পেছনে সমর্থন রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও রাশিয়ার। খবরে আরো বলা হয়েছে যে, পশ্চিম পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দফতরের সেক্রেটারী ইতিমধ্যেই তেহরান গিয়ে পৌঁছেছেন। সেখানে ইরানের উদ্যোগে তার সঙ্গে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদের গোপন সাক্ষাৎকারের আয়োজন হবে।
বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের প্রচন্ড আক্রমণের মুখে জল্লাদ ইয়াহিয়ার ভারাটিয়া বাহিনী আজ দিশাহারা। প্রতিদিন ওরা মরছে মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে।আর সেই শুন্য স্থান পূর্ণ করতে মাত্র কয়দিন আগে নতুন করে এক ডিভিশন সৈন্য আমদানী করা হয়েছে বাংলাদেশে। আমেরিকা থেকে প্রচুর অস্ত্র আসছে, চীন থেকে সামরিক সরঞ্জাম আসছে, মার্কিন বিশেষজ্ঞ এসেছে। এমন কি জর্দান থেকে ও লোক ভাড়া করে আনা হয়েছে বাংলাদেশের বীর যোদ্ধাদের মোকাবেলা করার জন্য। কিন্তু তবু অবস্থার উন্নতি হয়নি-পায়ের তলা থেকে দ্রুত মাটি সরে যাচ্ছে ইয়াহিয়ার। তবু শেষ চেষ্টা করছে সে। শেখ মুজিবকে ফিরিয়ে দিয়ে হলেও যদি বাংলাদেশকে পশ্চিম পাকিস্তানের সঙ্গে রাখা যায়, সেটাই তার শেষ চেষ্টা। হতে পারে, এই উদ্দেশ্যেই চলেছে তেহরানে গোপন কুটনৈতিক তৎপরতা। আবার এমনও হতে পারে যে, এই তৎপরতা নতুন কোন জালিয়াতি, কোন দুরভিসন্ধি হাসিলের জঘন্য ষড়যন্ত্রের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ।
তথ্যসূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ।
Post a Comment Blogger Facebook
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.