![]() |
- কুমিল্লার পাকসেনাদের তিনটি দল মুরাদনগর থেকে হোমনার দিকে নৌকায় অগ্রসর হয়। মুক্তিবাহিনীর গেরিলা দল মুরাদনগর থেকে ৮ মাইল দূরে পাকসেনাদের নৌকাগুলোকে এ্যামবুশ করে। গেরিলাদের গুলিতে দু‘টি নৌকা পানিতে ডুবে যায় এবং এবং একজন ক্যাপ্টেনসহ ২৯ জন পাকসেনা ও ৫ জন রাজাকার নিহত হয়। এ অভিযানে মুক্তিবাহিনী প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ দখল করে।
- বরিশালে পাকবাহিনীর ৪খানা গান বোট শরণখোলা রেঞ্জঅফিস অতিক্রম করে উত্তরদিকে যাবার পরে পরবর্তী ৩খানা গানবোর্টের ওপর ভোলা নদীর দুই পার থেকে মুক্তিযোদ্ধারা প্রবল গুলি বর্ষণ করে। এতে একটি গান বোর্ট বিধ্বস্ত হয় ও ৪ জন পাকসেনা নিহত হয়। ভোর থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত যুদ্ধ করেও নদীর পাড়ে অবতরণে ব্যর্থ হলে পাকসেনারা পিছু হটে। এ যুদ্ধের পর মুক্তিযোদ্ধারা ত্যারাবাকা হাট নামক স্থানে একত্র হয়।
- মুক্তিবাহিনী সিলেট শহরের কদমতলী ঝালোপাড়ার কাছে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর একটি জীপ এ্যামবুশ করে। এতে একজন পাক অফিসারসহ ৩ জন পাকসেনা নিহত হয়। সফল অভিযান শেষে মুক্তিযোদ্ধারা নিরাপদে নিজ ঘাঁটিতে ফিরে আসেন।
- নওগাঁর কুলফতেপুর পাকহানাদাররা মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর হামলা চালায়। এতে ৬ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন ও ১২ জন আহত হন।
- স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের নিয়মিত কথিকা ‘বিশ্বজনমত’:
বিশ্ব জোড়া প্রতিবাদ, ঘৃনা ও কোটি ধিক্কার উপেক্ষা করে পাক সামরিক চক্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিচার প্রহসন অব্যাহত রেখেছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আন্ডার সেক্রেটারী ও প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত মিঃ চেস্টার বোলস শেখ মুজিবুর রহমানের তথাকথিত বিচারের কঠোর সমালোচনা করে বলেছেন: পাকিস্তানি সামরিক জান্তার সামরিক আদালতে শেখ মুজিবুর রহমানের যে গোপন বিচার চালাচ্ছে তা আগাগোড়া একটি প্রহসন মাত্র। পাকিস্তানি সামরিক জান্তার এটা একটা চরম ধৃষ্টতা। এ বিচার সকল রীতিনীতি ও আইন-কানুনের সম্পূর্ণ পরিপন্থি।
‘ওয়াশিংটন পোষ্ট’-এ একটি তথ্যপূর্ণ প্রবন্ধে মিঃ চেস্টার বোলস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে অতীতের সব ভুলত্রুটি সংশোধন করে পাকিস্তানের কাছে সামরিক অস্ত্র ও সমরসম্ভার বিক্রয় সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করা এবং পাকিস্তানকে সর্বপ্রকার অর্থনৈতিক সাহায্য দান একেবারে বন্ধ করে দেবার আহ্বান জানান।
মার্কিন সিনেটের উদ্বাস্তু বিষয়ক কমিটির সভাপতি সিনেটর এডওয়ার্ড কেনেডী বলেন: পাকিস্তানি সামরিক জান্তার কাছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একমাত্র অপরাধ হলো তিনি নির্বাচনে জয়লাভ করেছেন। তাঁর বিচার আন্তর্জাতিক আইনের দিক থেকে বিচারের ব্যাভিচার ও ন্যায়বিচারের প্রহসন মাত্র।
আদ্দিস আবাবা বেতার থেকে প্রচারিত এক খবরে বলা হয়: রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি ব্যাপারে সাহায্য করার জন্যে গঠিত আন্তর্জাতিক সংস্থা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তি জন্যে সারাবিশ্বে এক প্রচার অভিযান শুরু করবে।
বিশ্ব জোড়া এই বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সত্ত্বেও পাকিস্তানি সামরিক জান্তার কাছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের গোপন বিচার প্রহসন অব্যাহত রেখেছে। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ এই প্রহসন মেনে নেয়নি। বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ আজ হানাদার উৎখাতে বদ্ধপরিকর।
তথ্যসূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ।
Post a Comment Blogger Facebook
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.