![]() |
- আওয়ামী লীগ প্রধান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ন্যাপ প্রধান মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর মধ্যে সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। বিকেলে পল্টন ময়দানের জনসভায় তুমুল করতালির মধ্যে মওলানা ভাসানী ঘোষণা করেন: ইয়াহিয়া সাহেব অনেক হয়েছে, আর নয়। তিক্ততা বাড়িয়ে লাভ নেই। ‘তোমার ধর্ম তোমার, আমার ধর্ম আমার’ নিয়মে পূর্ব বাংলার স্বাধীনতা মেনে নাও। তিনি আরো বলেন, শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশ মতো আগামী ২৫ তারিখের মধ্যে কোন কিছু না করা হলে আমি মুজিবের সাথে মিলে ১৯৫২ সালের মতো তুমুল আন্দোলন শুরু করবো।
- আওয়ামী লীগ প্রধান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক ঘোষিত আন্দোলনের কর্মসূচি অনুযায়ী সচিবালয়-সহ সারাদেশে সকল সরকারি ও আধাসরকারী অফিস, হাইকোর্ট ও জেলাকোর্ট প্রভৃতিতে সর্বাত্মক হরতাল পালিত হয়। বঙ্গবন্ধু যেসব সরকারি অফিস খুলে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন কেবল সেসব অফিস চালু থাকে।
- গভীর রাতে ইসলামাবাদে লে. জেনারেল টিক্কা খানকে ‘খ’ অঞ্চলের সামরিক শাসক নিয়োগ করা হয়। এই নিয়োগ ৭ মার্চ থেকে কার্যকর করা হয়েছে বলে ঘোষণা করা হয়। টিক্কা খান ৭ মার্চ ঢাকা আসেন। ৬মার্চ তাঁকে পূর্বাঞ্চলের গভর্নর নিয়োগ করা হয়। আজ তাঁর গভর্নর হিসেবে কাররর্যভার গ্রহণের কথা ছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে হরতাল চলাকালে ঢাকা হাইকোর্টের কোনো বিচারপতি নবনিযুক্ত সামরিক গভর্নরের শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করতে অস্বীকার করেন।
- জাতিসংঘের মহাসচিব উ থান্ট প্রয়োজনে পূর্ব পাকিস্তান থেকে জাতিসংঘের স্টাফ ও তাঁদের পরিবারবর্গকে প্রত্যাহারের জন্য ঢাকাস্থ জাতিসংঘের উপ আবাসিক প্রতিনিধিকে নির্দেশ দেন। জাপানের পররাষ্ট্র দফতর পূর্ববঙ্গে অবস্থিত তার দেশের নাগরিকদেরও প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয়। পশ্চিম জার্মান সরকার তার দেশের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেয়ার জন্য সামরিক বিমান পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
- সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জেন্ট জহুরুল হক হল ক্যান্টিনে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদের এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের সভাপতি নূরে আলম সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় গৃহীত রাজনৈতিক প্রস্তাবে ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় অনুষ্ঠিত ছাত্রলীগ ও ডাকসুর নেতৃত্বে গঠিত ‘স্বাধীন বাংলাদেশ ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ’ এর ছাত্রসভায় গৃহীত ‘স্বাধীন বাংলাদেশ’ ঘোষনার প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়।
- সামরিক কর্তৃপক্ষ রাত ৯টা থেকে রাজশাহী শহরে ৮ ঘন্টার জন্য কারফিউ জারি করেন। রাজশাহীতে অনির্দিষ্টকালের জন্য প্রতিদিন নৈশ কারফিউ জারির পর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, সেনাবাহিনীকে ছাউনিতে ফিরিয়ে নেয়া হয়েছে বলে ঘোষণার পর রাজশাহীতে হঠাৎ সান্ধ্য আইন জারির কারণ বোধগম্য নয়। এই সান্ধ্য আইন জারি জনসাধারণের জন্য উস্কানি ছাড়া আর কিছু নয়। বিবৃতিতে অবিলম্বে কারফিউ প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।
- সকালে পিআইএ-র বাঙালি কর্মচারীরা তেজগাঁও বিমানবন্দর থেকে মিছিল করে ধানমন্ডিস্থ বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে এলে তিনি তাঁদের সাক্ষাৎদান করেন।
তথ্যসূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর
Post a Comment Blogger Facebook
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.