৮ মে, ১৯৭১
- কর্নেল
এম.এ.জি ওসমানী, ক্যাপ্টেন নজরুল হক, ক্যাপ্টেন নওয়াওজম, সুবেদার মেজর
কাজিমউদ্দিন এবং কয়েকজন ভারতীয় অফিসার ভারতের কদমতলায় এক জরুরি সভায় মিলিত
হন। সভায় মুক্তিবাহিনী প্রধান কর্নেল এম.এ.জি ওসমানী বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ
থেকে যুদ্ধের পরিকল্পনা ব্যাখ্যা করে সেই অনুসারে নির্দেশ দেন।
- মুক্তিবাহিনী
প্রধান মুক্তিবাহিনী প্রধান কর্নেল এম.এ.জি ওসমানী সন্ধ্যায় দিনাজপুরের
ভজনপুরে অবস্থানরত মুক্তিযোদ্ধাদের ঘাঁটি পরিদর্শন করেন এবং
মুক্তিযোদ্ধাদের উৎসাহ উদ্দীপনা যোগান।
- ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে বাংলাদেশের আশ্রয়প্রার্থীদের সংখ্যা দাঁড়ায় ১৫,৭২,২২০ জন।
- গভর্নর টিক্কা খান দালালদের খুশি করতে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য দেয়ার
অজুহাতে ১২ লাখ ৯০ হাজার টাকা বরাদ্দ করে। এই অর্থ পরে বিভিন্ন এলাকায়
বাঙালি নিধনে পাকসেনাদের প্রত্যক্ষ সহায়তাকারী পাকিস্তানের সেবক শান্তি
কমিটির দালাল ও রাজাকারদের ভাগ্যে জোটে।
- প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া মাতৃভূমি পাকিস্তান রক্ষার জন্যে জনগণকে
আত্মোৎসর্গের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, মাতৃভূমির ঘাতকরা পাকিস্তানকে ধ্বংস
করতে চায়, তাদের ধ্বংস করতে না পারলে ইসলামকে রক্ষা করা সম্ভব হবে না ।
- ঢাকায় সামরিক কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করেন, খুলনা থেকে আওয়ামী লীগের প্রাদেশিক
পরিষদ সদস্য পীরজাদা মোহাম্মদ সাঈদ সামরিক কর্তৃপক্ষের কাছে আত্মসমর্পণ
করেছেন। সামরিক কর্তৃপক্ষ আরো জানান, জনাব সাঈদ পাকিস্তানের ঐক্য ও সংহতিতে
বিশ্বাস স্থাপন করে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করেন। তিনি প্রেসিডেন্টের গৃহীত
ব্যবস্থার প্রতি সমর্থন জানান এবং পাকিস্তানকে ধ্বংসের চেষ্টায় লিপ্ত
রাষ্ট্রদ্রোহী শক্তিসমূহের নিন্দা করেন ।
- শিল্প ও বণিক সমিতির অনারারী অ্যাডমিনিস্ট্রেটর আশরাফ ডব্লিউ তাবানী
জানান, সেনাবাহিনী দুষ্কৃতকারীদের চক্রান্ত নস্যাৎ করেছে, সময়োচিত ব্যবস্থা
গ্রহণের ফলে তারা পিছু হটেছে, এবার সবাইকে দেশ পুনর্গঠনের কাজে অংশ নিতে
হবে। তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশ’ সম্পর্কে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের
(মুক্তিযোদ্ধাদের) মোহ কেটে যাচ্ছে। এরা নিশ্চিহ্ন হবে।
- কেন্দীয় সিরাত কমিটি বায়তুল মোকাররম মসজিদে এক সেমিনারের আয়োজন করে ।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, আল্লাহর দরবারে অশেষ শুকরিয়া বিদ্রোহীরা
(মুক্তিযোদ্ধারা) ধ্বংস হয়েছে। ভারত তার গুপ্তাবাহিনীর সহায়তায় এদেশকে
ধ্বংস করতে চেয়েছিল, কিন্তু শান্তিপ্রিয় জনগণ ও সেনাবাহিনী তাদের বিতাড়িত
করেছে। সেমিনারে জামায়াত নেতা গোলাম আযমসহ মওলানা শামসুদ্দিন কাসেমী,
আলাউদ্দিন আল আজাহারী, ড.মোস্তাফিজুর রহমান, ব্যারিস্টার আখতার উদ্দিন,
অধ্যাপক আবদুল্লা গফুর ও ড. হাবিবুল্লাহ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
- ফরিদপুর জেলার কানাইপুরে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালায় এদেশীয় রাজাকার ও বিহারীরা।
তথ্যসূত্র: মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর
Post a Comment Blogger Facebook
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.