২ মে, ১৯৭১
- মুক্তিযোদ্ধাদের
একটি নতুন কোম্পানি ‘সি-কোম্পানি’ নাম ধারন করে নায়েক সুসুবেদার হাজী
মুরাদ আলীর নেতৃত্বে পাকবাহিনী অমরখানা ঘাঁটির সন্নিকটে মাগুরায় একটি
প্রতিরক্ষা ঘাঁটি নির্মান করে।
- সকালে
পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কামান ও মর্টারের সাহায্যে রামগড়ে অবস্থিত
মুক্তিযোদ্ধাদের চট্টগ্রাম সেক্টরের সদর দপ্তরে দুধারা আক্রমণ চালায়।
সারাদিন যুদ্ধের পর মুক্তিযোদ্ধারা রামগড় ত্যাগ করে সীমান্ত পার হয়ে ভারতের
সাবরুমেঅবসাথান নেয়। পাকসেনারা রাতে রামগড়ে প্রবেশ করে হত্যা,ধর্ষণ ও
অগ্নিসংযোগের মতো নারকীয় কর্মকান্ড চালায়।
- মুক্তিযোদ্ধারা কিশোরগঞ্জে অবস্থানরত পাকবাহিনীর ওপর তীব্র আক্রমণ
চালায়। অপরদিকে পাকবাহিনী কিশোরগঞ্জ থেকে দশ মাইল দূরে অবস্থিত বিরল নামক
স্থান থেকে দূরপাল্লার আক্রমণ চালায়। ভারত সীমান্তের রাধিকাপুর নামক
স্থানের শরণার্থী শিবিরে পাকবাহিনী বোমা নিক্ষেপ করে। এতে একজন নিহত ও
অনেকে আহত হয়।
- মুক্তিযোদ্ধাদের তেলিয়াপাড়া এলাকাকে নিয়ন্ত্রনে রাখার তৎপরতার প্রাথমিক
পর্যায়ে ক্যাপ্টেন মতিন, ক্যাপ্টেন সুবেদার আলী ভূঁইয়া, একজন নবাগত অফিসার ও
তাঁর দল নিয়ে গ্রামের ভেতর দিয়ে শাহজিবাজার পৌঁছান। ক্যাপ্টেন মতিনের কাজ
হচ্ছে শত্রুপক্ষের চলাচল-পথে এ্যামবুশ করা।
- পিরোজপুরে সিরাজ শিকদার গেরিলা যুদ্ধ পরিচালনার জন্য একটি কমিটি গঠন
করেন। কমিটির সভানেত্রী জাহানারা বেগম (সিরাজ শিকদারের স্ত্রী), শাহনেওয়াজ
প্রধান কমান্ডার, মুজিব গণসংযোগ ও মাহতাব সদস্য নির্বাচিত হণ। ঘাঁটি
এলাকাকে কয়েকটি সেক্টরে বিভক্ত করা হয়।
- ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বাংলাদেশের আশ্রয় প্রার্থীর সংখ্যা দাড়ায় ৮ লাখ ৬৭ হাজার ৪২৮ জন।
- লে. জেনারেল টিক্কা খান বরিশাল ও ফরিদপু সফর করেন। সেখানে সেনাবাহিনীর
সদস্যদের আরো সক্রিয়ভাবে দুষ্কৃতকারীদের দমন করার ব্যাপারে তৎপর হবার
নির্দেশ দেন।
- পাকিস্তানে নবনিযুক্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মি. এইচ. সারাবুর্ক পাকিস্তানের প্রতি তার সরকারের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে বলে ঘোষণা করেন।
- মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীনতাকামী বাঙালিদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে
হানাদার বাহিনীর পক্ষে শেরে বাংলার মেয়ে রইসি বেগম এক বিবৃতি দেন। বিবৃতিতে
তিনি বলেন, কিছু দুষ্কৃতকারী ও ভারতীয় দালাল আমাদের স্বাধীনতা ও সংহতি
বিপন্ন করে তুলেছিলো। কিন্তু আমাদের সেনাবাহিনী শত্রুর সে চেষ্টা সফল হতে
দেয়নি। তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে জানান, আমরা প্রতিশোধ নিতে জানি। শত্রুদের আমরা
রুখবোই।
- শান্তি কমিটির উদ্যোগে খুলনায় এক সভায় সবুর খান বলেন, কতিপয় ব্যক্তি
ব্যতীত ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ’ পাকিস্তানিরা প্রত্যাখ্যান করেছে। এটা কোনো
মতবাদই নয়। বহু ত্যাগ ও রক্তের বিনিময়ে পাকিস্তানের জন্ম হয়েছে।
পাকিস্তানকে আমরা ধ্বংস হতে দিতে পারি না আমরা সবাই পাকিস্তানি
জাতীয়তাবাদের পক্ষে। জীবন দিয়ে হলেও আমরা পাকিস্তানকে রক্ষা করবো।
তথ্যসূত্র: মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর
Post a Comment Blogger Facebook
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.