মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> <table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody> <tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEiuVH5LFdn6GGlwDHfm4UkbPdtkdEIRNNlwkCPXQ3Y6Ox02S48Z3OgX3sQqoVoHKmnZ6ExQG876VaI4yIexfkkKnDlSJTPMFVr6dVqCv7RmcaVTwK_lGl0wYEYPuVX8isxVdA5MPLQG61U/s1600/np.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img border="0" data-original-height="613" data-original-width="1181" height="332" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEiuVH5LFdn6GGlwDHfm4UkbPdtkdEIRNNlwkCPXQ3Y6Ox02S48Z3OgX3sQqoVoHKmnZ6ExQG876VaI4yIexfkkKnDlSJTPMFVr6dVqCv7RmcaVTwK_lGl0wYEYPuVX8isxVdA5MPLQG61U/s640/np.jpg" width="640" /></a></td></tr> <tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;"> </td></tr> </tbody></table> ষোলোই ডিসেম্বর বিকেলের দিকে হঠাৎ সাড়া পড়ে গেল ক্যাম্পে। প্রথমে ফিসফাস গুঞ্জন, তারপর সবাই বলতে থাকে, 'স্বাধীন! স্বাধীন! স্বাধীন হয়ে গেছি আমরা!!' ঢাকা থেকে খবর এসেছে পাকবাহিনী আত্মসমর্পণ করবে আজই, রেসকোর্স ময়দানে। চলো চলো, ঢাকা চলো সবাই।<br /> <div style="text-align: justify;"> <br /> ঝটপট প্রস্তুত হলাম আমরা। কাপড়ের ব্যাগটা কাঁধে নিলাম। বেড়ার গায়ে হেলান দিয়ে রাখা অস্ত্রগুলো সরিয়ে ফেলা হলো। ওগুলো আমরা সঙ্গে নেব না। যে খবর এসেছে তা কতটুকু সত্যি কে জানে? গত কদিন ধরে সত্যি-মিথ্যা নানারকম কথা শোনা যাচ্ছে।<br /> <br /> এই খবরটাই বা কতটা সত্যি কে বলবে? তাই ঢাকা শহরে প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। তবে সিদ্ধান্ত হলো ব্যাগের মধ্যে দুটো স্টেনগান আর কয়েকটা গ্রেনেড নেওয়া হবে, যাতে প্রয়োজনে ব্যবহার করা যায়।<br /> <br /> ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে রওনা দিলাম আমরা। হাফিজ ভাই, মিনি মুজিব ভাই, আমি, মঞ্জু এবং আরও দু'জন- এই ছয় জন এক দলে। হাফিজ ভাই দলের নেতা। তার বন্ধু মুজিব ভাই বঙ্গবন্ধুর সাতই মার্চের ভাষণ খুব ভালো নকল করতে পারে, তাই বন্ধুরা তাকে ডাকে 'মিনি মুজিব।'<br /> <br /> ছয়জনের দলটা হনহনিয়ে চলেছে গ্রামের পথে। দুপাশে হলুদ কার্পেটের মতো সর্ষের ক্ষেত। তার উপর এসে পড়েছে ডিসেম্বরের শেষ বিকেলের নরম রোদ। সর্ষের উজ্জ্বল রঙ আর সূর্যের সোনালী আভা মিলেমিশে একাকার হয়ে আছে। সূর্য দ্রুত নেমে যাচ্ছে দিগন্তের দিকে। অন্ধকার গাঢ় হয়ে নেমে আসার আগেই আমরা বুড়িগঙ্গা পার হতে চাই।<br /> <br /> কিছুদূর যাওয়ার পরই দেখা গেল উল্টো দিক থেকে পাঁচ-সাতজনের একটা দল আসছে আমাদের দিকে। ততক্ষণে শীতের সন্ধ্যা গাঢ় হয়ে নেমেছে। দলটা খুব কাছে আসার পর বোঝা গেল ওরা সশস্ত্র। প্রত্যেকের হাতে থ্রি-নট-থ্রি। আমাদের দিকে তাক করে আছে। কাছাকাছি আসতেই ওদের দলের সামনের লোকটা চিৎকার করে উঠলো, 'হ্যান্ডস আপ!'<br /> <br /> আমরা বোকার মতো হাত তুলে দাঁড়িয়ে গেলাম। ওরা আমাদের কোনো ক্ষতি না করে পাশ দিয়ে হনহনিয়ে চলে গেল উল্টো দিকে।<br /> <br /> দলটা একটু দূরে যেতেই হাফিজ ভাই চরম বিরক্তির সাথে বললো, 'মুজিব... স্টেন দুটো বের কর্। আর গ্রেনেডগুলো হাতে হাতে দিয়ে দে। এরা রাজাকার, পালিয়ে যাচ্ছে। রাজাকাররা আমাদের হ্যান্ডস আপ করলো! অসহ্য!!'<br /> <br /> বাজারের ব্যাগ থেকে বের হলো স্টেনগান, গ্রেনেডগুলো বিলি করা হলো। আবার এগিয়ে চললো দলটা। এবার আর হাঁটছি না আমরা, দু'পকেটে দুটো করে গ্রেনেড নিয়ে ছুটে চলেছি। দূরে রাস্তার ধারে নতুন টিনের কয়েকটা ঘর। সেখান থেকে গুলির শব্দ ভেসে এলো। রাইফেলের সিঙ্গেল শট, থেকে থেকে স্টেনগান আর কারবাইনের ব্রাশ ফায়ার।<br /> <br /> একটু এগোতেই বোঝা গেল ব্ল্যাঙ্ক ফায়ার করছে মুক্তিযোদ্ধাদের একটা দল- উল্লাস করছে, আনন্দ করছে, আকাশের দিকে গুলি ছুঁড়ছে। ভেসে আসছে 'জয় বাংলা' চিৎকার। ওদের সঙ্গে কুশল বিনিময় হলো আমাদের। আনন্দে একে অন্যকে জড়িয়ে ধরলাম। পাগলের মতো চ্যাঁচাচ্ছে সবাই- 'স্বাধীন! স্বাধীন!! আমরা স্বাধীন!!!'<br /> <br /> ওদের নেতার সঙ্গে কথা বলছিলেন হাফিজ ভাই। এখনি আবার রওনা দেব আমরা। বাড়ির উঠানে দাঁড়িয়ে আছি, চারপাশে ঘর। দক্ষিণ দিকের ছোট একটা ঘরে জানলার শিক ধরে দাঁড়িয়ে ছিল কয়েকজন যুবক। ওদের ওখানে আটকে রাখা হয়েছে। জানালায় মুখগুলো দেখা যাচ্ছে শুধু। হঠাৎ সেখান থেকে কে যেন কাঁদো কাঁদো গলায় ডাক দিল, 'মঞ্জু ভাই!'<br /> <br /> মঞ্জু চমকে তাকালো ওদিকে, দুপা এগিয়ে গিয়ে অবাক গলায় বললো, 'আরে নবী... ! তুই এখানে কি করছিস?'<br /> <br /> জানা গেল ওর নাম নবী হোসেন, বলাকা সিনেমা হলের ব্ল্যাকার। টিকিট ব্ল্যাক করতো। সে রাজাকারের খাতায় নাম লিখিয়েছে, মাসিক আশি টাকার লোভে। মঞ্জু জানালো ও নবীকে চেনে। রাজাকার হলেও সে কারো ক্ষতি করেনি। বরং বিপদের সময় নীলক্ষেত এলাকায় উপকার করেছে দু'একজনের। মঞ্জুর অনুরোধে নবীকে ছেড়ে দেওয়া হলো। ছাড়া পেয়ে ছুটে পালালো নবী।<br /> <br /> পালানোর আগে খুব কাছে থেকে রাজাকার ছেলেটাকে একনজর দেখলাম আমি। আমাদেরই বয়সি এক তরুণ, অথচ যোগ দিয়েছে মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শিবিরে। কেন? কি কারণে সে পাকবাহিনীর দোসর হয়েছে? শুধুই মাসিক আশি টাকার লোভে? নাকি অন্য কোনো কারণ আছে - আদর্শগত কোনো কারণ? সবচেয়ে বড় প্রশ্ন নবীকে রাজাকার বানিয়েছে কারা? এতসব প্রশ্ন অবশ্য সেই সময় এভাবে গুছিয়ে আমার মাথায় আসেনি। এসেছে অনেক পরে।<br /> <br /> সেদিন অন্য দলের ছেলেদের কাছে বিদায় নিয়ে আমরা আবার পথে নেমেছিলাম। দৌড়াতে দৌড়াতে বুড়িগঙ্গার পাড়ে এসে দেখা গেল একটা নৌকাও নাই। জনহীন নদীর তীর। নৌকা নাই, মাঝি নাই, পার হবো কিভাবে? শেষমেশ বহু খোঁজাখুঁজির পর নৌকা এবং মাঝি পাওয়া গেল।<br /> <br /> কোনাকুনি নদী পাড়ি দিচ্ছে মাঝি। অন্ধকার রাত। কালো জলে ছপাস ছপাস দাঁড়ের শব্দ। নদী পাড়ি দিয়ে যেখানে নৌকা ভিড়ালো মাঝি, সেখানেই এক বাড়িতে থাকতো অবাঙালী তিনজন শার্প শুটার। তাদের গুলি এড়িয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাঝি ঠিকই আমাদের পৌঁছে দিল এপারে।<br /> <br /> সারারাত জিপে করে এদিক ওদিক ঘোরাঘুরি শেষে পাগলের মতো জয় বাংলা চিৎকার দিতে দিতে গলা ভেঙে শেষরাতে লালকুঠিতে আমরা ক্যাম্প করলাম। লালকুঠিতে ছিল পাক আর্মির ঘাঁটি। যাবার সময় ওরা তাড়াহুড়ায় এখানে ওখানে গ্রেনেড, অস্ত্রশস্ত্র ফেলে গেছে। সোফার গদির নিচে আমি পেয়ে গেলাম একটা চাইনিজ স্টেন আর গোটা তিনেক ম্যাগাজিন।<br /> <br /> এদিকে পূবের আকাশ ফরশা হতে শুরু করেছে। কারো চোখে ঘুম নাই। আমরা কয়েকজন লালকুঠির ছাদে উঠে গেলাম। কি মিষ্টি বাতাস! দক্ষিণে নদী বুড়িগঙ্গা। নদীর উপরে লাফিয়ে উঠলো লাল বলটা - বাংলাদেশের প্রথম সূর্য! এত লাল!<br /> <br /> কে যেন প্রথম জয় বাংলা চিৎকার দিয়ে গুলি ছুঁড়লো আকাশের দিকে। তারপর সবাই। আমিও আমার সদ্য কুড়িয়ে পাওয়া স্টেনগানের ম্যাগাজিন খালি করে ফেললাম।<br /> <br /> তারপর...শুরু হলো পথ চলা। নতুন পথে।<br /> <br /> লিখেছেনঃ <a href="https://www.facebook.com/motazid.momtaz?hc_ref=ARRafqCz6wa1m_leBT3mlFvLTm4nUEzorK75ebJ7W4XYMf491Qlxh8uFXa2gKgnYn2c&fref=nf">Motazid Momtaz Khurram</a></div> </div>

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি

  ষোলোই ডিসেম্বর বিকেলের দিকে হঠাৎ সাড়া পড়ে গেল ক্যাম্পে। প্রথমে ফিসফাস গুঞ্জন, তারপর সবাই বলতে থাকে, 'স্বাধীন! স্বাধীন! স্বাধীন হয়ে গেছি আমরা!!' ঢাকা থেকে খবর এসেছে পাকবাহিনী আত্মসমর্পণ করবে আজই, রে…

Read more »

বিজয় দিবসের প্রত্যাশা

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> <table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody> <tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEiuVH5LFdn6GGlwDHfm4UkbPdtkdEIRNNlwkCPXQ3Y6Ox02S48Z3OgX3sQqoVoHKmnZ6ExQG876VaI4yIexfkkKnDlSJTPMFVr6dVqCv7RmcaVTwK_lGl0wYEYPuVX8isxVdA5MPLQG61U/s1600/np.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img border="0" data-original-height="613" data-original-width="1181" height="332" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEiuVH5LFdn6GGlwDHfm4UkbPdtkdEIRNNlwkCPXQ3Y6Ox02S48Z3OgX3sQqoVoHKmnZ6ExQG876VaI4yIexfkkKnDlSJTPMFVr6dVqCv7RmcaVTwK_lGl0wYEYPuVX8isxVdA5MPLQG61U/s640/np.jpg" width="640" /></a></td></tr> <tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;"> </td></tr> </tbody></table> <div style="text-align: justify;"> আমাদের বয়সী যেকোনো মানুষকে যদি জিজ্ঞাসা করা হয়, তার জীবনের সবচেয়ে আনন্দময় দিন কোনটি? সে অবধারিতভাবে বলবে, সেটি হচ্ছে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর। আমি মনে করি, আমাদের বয়সী মানুষরা যারা সেই দিনটিতে বাংলাদেশের জন্ম হতে দেখেছি, সেই সময়ের তীব্র আনন্দটুকু পৃথিবীর খুব কম মানুষ অনুভব করেছে।<br /><br />আমরা খুবই সৌভাগ্যবান একটি প্রজন্ম, যারা সেই অবিশ্বাস্য আনন্দটুকু অনুভব করার সুযোগ পেয়েছিলাম।<br /></div> <div style="text-align: justify;"> অথচ বিস্ময়ের ব্যাপার হচ্ছে, সেই দিনটিতে যখন একজনের সঙ্গে আরেকজনের দেখা হয়েছে তখন প্রথম অনুভূতিটি হচ্ছে একধরনের বিষাদ। কারণ সারা দেশে একজন মানুষও ছিল না, যার কোনো না কোনো আপনজন বা প্রিয়জন সেই যুদ্ধে মারা যায়নি। নতুন বাংলাদেশের নতুন প্রজন্ম কল্পনাও করতে পারবে না, একটি দেশের স্বাধীনতার জন্য একটি দেশের মানুষ কত বড় আত্মত্যাগ করেছে। বাংলাদেশের পতাকার মধ্যখানে যে লাল বৃত্ত, সেটি সাধারণ মানুষের কাছে শুধু এক টুকরা লাল কাপড়, কিন্তু আমরা জানি সেই লাল রং কোথা থেকে এসেছে, আমরা জানি সেই লাল রঙে আমাদের সব আপনজনের বুকের রক্ত একটুখানি হলেও আছে।<br /><br /> ১৯৭১ সালের বিজয়ের আগের দিনগুলোর স্মৃতি আমাদের এখনো এত স্পষ্টভাবে মনে আছে যে মনে হয়, এটি মাত্র সেদিনের ঘটনা। আমাদের পুরো পরিবার তখন পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন, কে কোথায় আছে, কেমন আছে, আদৌ বেঁচে আছে কি না—আমরা কিছুই জানি না। আমি যাত্রাবাড়ীতে একটা পরিবারের সঙ্গে অনেক শিশুকে নিয়ে আছি। ১৯৭১ সালের যাত্রাবাড়ী আজকের যাত্রাবাড়ীর মতো নয়, মোটামুটি ফাঁকা।<br /><br /> রাস্তার দুই পাশে বাড়িঘর নেই। আমি সেখানে আছি তার চারপাশে ছোট একটা জনবসতি।<br /><br /> তখন শেষ যুদ্ধ শুরু হয়েছে। দিনরাত গোলাগুলির শব্দ শুনতে পাই। শেলিং হচ্ছে, একটি-দুটি শেল আশপাশে পড়ছে, সে রকম খবরও ভেসে আসছে। মাঝেমধ্যে এত কাছে থেকে এত তীব্র গোলাগুলির শব্দ শুনতে পাই যে মনে হয়, এই বুঝি সেগুলো আমাদের গায়ে এসে লাগবে। এ রকম সময়ে কিছু না করে চুপচাপ বসে থাকা যায় না, তাই কিছু একটা করার উদ্দেশ্যে একটি কোদাল দিয়ে কুপিয়ে কুপিয়ে ঘরের উঠানে একটা ট্রেঞ্চ খুঁড়ে ফেলা হলো। ট্রেঞ্চের ওপরে একটা ঢেউটিনের আস্তরণ। যখন গোলাগুলির শব্দ খুব বেড়ে যায়, তখন বাচ্চাগুলোকে নিয়ে সেই ট্রেঞ্চের ভেতর বসে থাকি।<br /><br /> বাড়িটার পাশেই রাস্তা, সেই রাস্তা দিয়ে মিলিটারির বহর যাচ্ছে-আসছে। একদিন মিলিটারিরা সেই রাস্তা দিয়ে যাওয়া একটা স্কুটারের সব যাত্রীকে মেরে ফেলল। আমরা দেখতে পাই, স্কুটারের ভেতর থেকে মৃত মানুষগুলোর হাত-পা বের হয়ে আছে। মৃত মানুষগুলো প্রকাশ্য রাস্তায় স্কুটারের ভেতর দিনের পর দিন পড়ে আছে, কেউ সেটা নিয়ে বিচলিত হচ্ছে না।<br /><br /> একসময় লক্ষ করলাম, রাস্তা দিয়ে বড় বড় ট্যাংক ঘড়ঘড় শব্দ করে ঢাকার দিকে ফিরে যাচ্ছে। তার সঙ্গে সঙ্গে অসংখ্য পাকিস্তানি মিলিটারি! ‘পশ্চাদপসরণ’ বলে একটা শব্দ আছে, এই মিলিটারি বাহিনীকে দেখলেই বোঝা যায় তারা সেই পশ্চাদপসরণ করছে। প্রাণের ভয়ে? আমরা দূর থেকে অবিশ্বাসের দৃষ্টিতে আশা নিয়ে তাকিয়ে থাকি।<br /><br /> ঠিক তখন একদিন যখন সূর্যের আলো নিভু নিভু, অন্ধকার নেমে আসছে, গোলাগুলির শব্দ কমে আসছে, তখন নৈঃশব্দ বিদীর্ণ করে একজন চিৎকার করে উঠল, ‘জয় বাংলা’।<br /><br /> মুহূর্তের মধ্যে আমরা বুঝে গেলাম দীর্ঘ প্রতীক্ষার শেষ হয়েছে, যে স্বাধীনতার জন্য বুভুক্ষের মতো আমরা অপেক্ষা করছিলাম, সেই অপেক্ষার শেষ হয়েছে। সেটি জানার জন্য আমাদের প্রয়োজন ছিল শুধু একটি স্লোগান! জয় বাংলা।<br /><br /> কী আশ্চর্য, মুক্তিযুদ্ধের সেই স্লোগানটি এ দেশে নির্বাসিত হয়েছিল। শুধু স্লোগানটি নয়, যে মুক্তিযুদ্ধের জন্য এই স্লোগান সেই মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত দেশ থেকে নির্বাসিত করা হয়েছিল, দেশের শাসক হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত স্বাধীনতার শত্রুরা! ‘জয় বাংলা’ স্লোগানটি ধুঁকে ধুঁকে বেঁচে ছিল শুধু আওয়ামী লীগের কর্মীদের মধ্যে। কেউ সেই স্লোগানটি উচ্চারণ করলেই মানুষ ধরে নিত সেই মানুষটি নিশ্চিতভাবে আওয়ামী লীগের কর্মী। দেশের মানুষ মনে হয় ভুলেই গেল যে এটি কোনো রাজনৈতিক দলের স্লোগান ছিল না। এই স্লোগানটি ছিল মুক্তিযুদ্ধের স্লোগান। মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র গর্জে ওঠার আগে তাঁদের কণ্ঠ থেকে প্রকম্পিত হতো এই স্লোগান।<br /><br /> গণজাগরণ মঞ্চের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই যে তারা মুক্তিযুদ্ধের সেই স্লোগানটি আবার আমাদের উপহার দিয়েছে। কোনো রাজনৈতিক দলের সদস্য না হয়েও এখন একজন শুধু মুক্তিযুদ্ধের প্রতি গভীর ভালোবাসায় জয় বাংলা স্লোগানটি দিতে পারে!<br /><br /> ২.<br /><br /> বাংলাদেশটি আমরা এমনি এমনি পাইনি। এই দেশটি পাওয়ার একটি সুদীর্ঘ ইতিহাস আছে। একসময় আমরা পাকিস্তানের অংশ ছিলাম। সেই পাকিস্তান দেশটির জন্য যে লাহোর প্রস্তাব ছিল, সেখানে বহুবচনে দুটি দেশের কথা বলা হয়েছিল। ‘মুদ্রণ প্রমাদ’ বলে দুটি দেশের ধারণাটিকে সরিয়ে একটি পাকিস্তান তৈরি করা হয়েছিল। আমরা জন্ম থেকে দেখে আসছিলাম বলে মেনে নিয়েছিলাম, এখন নিশ্চয়ই সবাই চোখ কপালে তুলে বলে, এটি কিভাবে সম্ভব? একটি দেশের দুই টুকরা দুই জায়গায়, মধ্যখানে হাজার কিলোমিটার দূরত্ব? সেটিই ছিল আজব স্থান পাকিস্তান! জনসংখ্যায় আমরাই ছিলাম বেশি, অথচ সম্পদের বড় অংশ ভোগ করত পশ্চিম পাকিস্তান। পুরো দেশটিই যে ছিল ষড়যন্ত্রের জোড়াতালি দিয়ে তৈরি করা একটি দেশ, সেটি বুঝতে বাঙালিদের মাত্র বছরখানেক সময় লেগেছিল যখন পাকিস্তানের স্থপতি মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঢাকায় এসে ঘোষণা দিয়ে গেলেন উর্দু এবং শুধু উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা! ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলন হলো, রক্ত দিয়ে বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করতে হলো। ১৯৫৪ সালে বঙ্গবন্ধু আর সহনেতারা প্রাদেশিক নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ করে সরকার গঠন করলেন; কিন্তু বছর ঘোরার আগেই সেই সরকারকে বাতিল করে দেওয়া হলো। বঙ্গবন্ধু তখন একজন তরুণ রাজনৈতিক নেতা, কিন্তু তাঁর বুঝতে বাকি রইল না যে পাকিস্তানের এই ষড়যন্ত্র থেকে মুক্তি লাভের একটি মাত্র উপায়, সেটা হচ্ছে স্বায়ত্তশাসন। তিনি ছয় দফার আন্দোলন শুরু করলেন।<br /><br /> এ দেশের নতুন প্রজন্মের যারা দেশকে নিয়ে চিন্তাভাবনা করে তাদের সবার এই ছয়টি দফা একবার হলেও পরে দেখা উচিত, তাহলে তারা অবাক হয়ে আবিষ্কার করবে যে ছয় দফা আসলে একটি মাত্র দফা, যার আসল অর্থ হচ্ছে স্বাধীনতা! পাকিস্তানে তখন আইয়ুব খানের সামরিক শাসন, বঙ্গবন্ধু আর তাঁর সহকর্মীরা বেশির ভাগ সময়ই জেলখানায় থাকেন। রাজনৈতিক নেতাদের বলতে গেলে কেউই বাইরে নেই, ছাত্ররা আন্দোলন করে বঙ্গবন্ধুকে মুক্ত করে আনল (আজকাল কেউ কল্পনা করতে পারবে, এখন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ছাত্রলীগ আছে ক্যাফেটেরিয়া ক্যান্টিনে ফাউ খাওয়া থেকে যারা বড় কিছু চিন্তা করতে পারে না, তাদের পূর্বসূরিরা একসময় এত বড় বড় কাজ করেছেন!)।<br /><br /> ১৯৬৯ সালে বিশাল গণ-আন্দোলনে সামরিক শাসক আইয়ুব খানের পতন ঘটল, ক্ষমতা দেওয়া হলো সর্বকালের নৃশংস দানব ইয়াহিয়া খানের কাছে। এখনো অবশ্য আমরা তার সেই পরিচয়টির কথা জানি না।<br /><br /> ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর ছয় দফার প্রতি স্বীকৃতি জানিয়ে বাঙালিরা তাঁকে একটা অভূতপূর্ব বিজয় উপহার দেয়। বাঙালিরা প্রথমবার এ দেশের শাসনভার গ্রহণ করবে, পাকিস্তানি মিলিটারির মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ল! তাদের বিশাল ষড়যন্ত্রের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী তারা নির্বাচনের রায় অস্বীকার করা মাত্রই সারা দেশ বিক্ষোভে ফেটে পড়ল। বঙ্গবন্ধু অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিলেন, তাঁর অঙ্গুলি হেলনে এ দেশ চলতে শুরু করল। ৭ই মার্চ রেসকোর্সে তিনি তাঁর সেই ঐতিহাসিক ভাষণটি দিলেন। সেটি শুনলে এখনো আমার শরীরে শিহরণ জাগে!<br /><br /> ২৫ মার্চ পাকিস্তান মিলিটারি এ দেশে গণহত্যা শুরু করল, ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দিলেন, শুরু হলো মুক্তিযুদ্ধ।<br /><br /> ৯ মাসের সেই যুদ্ধের ইতিহাস হচ্ছে আত্মত্যাগের ইতিহাস, বীরত্বের ইতিহাস আর অর্জনের ইতিহাস। পৃথিবীর কয়টি দেশ এ রকম একটি গৌরবের ইতিহাস দাবি করতে পারবে?<br /><br /> ৩.<br /><br /> বাংলাদেশের একটি কালো অধ্যায়ের সময় ছিল যখন সেই ইতিহাসকে অস্বীকার করা হতো কিংবা খাটো করে দেখানো হতো। প্রজন্মের পর প্রজন্মকে বোঝানো হতো বঙ্গবন্ধু বলে কেউ নেই, কেউ ছিল না, জিয়াউর রহমান নামের একজন মেজরের ঘোষণায় এ দেশে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে; দেশ স্বাধীন হয়েছে। রাজাকার শব্দটি উচ্চারণ করা যেত না। পাকিস্তান বলা যেত না, বলতে হতো হানাদার। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধের কথা বলতেন, তাঁদের শাসন করা হতো, শাস্তি হিসেবে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বদলি করে দেওয়া হতো। যুদ্ধাপরাধের বিচারের কথা উচ্চারণ করলে দেশদ্রোহী হিসেবে মামলা করে দেওয়া হতো।<br /><br /> ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা আমাকে জিজ্ঞাসা করত, ‘স্বাধীনতার ঘোষক কে?’ (স্বাধীনতা যেন একটি ছেলের হাতের মোয়া, কোনো একজন তার কথা ঘোষণা করলেই দেশ স্বাধীন হয়ে যায়!)। তারা জিজ্ঞাসা করত, রাজাকাররা কেমন করে মন্ত্রী হয়? যারা এ দেশ চায়নি, এ দেশের মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করেছে, তারা কেমন করে এ দেশ শাসন করে? তারা কেমন করে তাদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা লাগিয়ে ঘুরে বেড়ায়?<br /><br /> আমাদের অনেক বড় সৌভাগ্য, সেই দুঃসময় আমরা পেছনে ফেলে এসেছি। কেউ আমাদের কাছে জানতে চায় না স্বাধীনতার ঘোষক কে? নতুন প্রজন্ম এখন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানে। বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ ওরা পাঠ্য বইয়ে পড়েছে, নিজের কানে শুনতে পেয়েছে। শুধু তা-ই নয়, এ দেশের মাটিতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হতে দেখেছে, দেশকে গ্লানিমুক্ত হতে দেখেছে।<br /><br /> এ দেশকে নিয়ে অনেকের অনেক কিছু চাওয়ার আছে, আমার আর কিছু চাওয়ার নেই। এ দেশ থেকে আমি যা চেয়েছিলাম তার চেয়ে বেশি পেয়েছি। বিজয় দিবসের প্রাক্কালে নতুন প্রজন্মের কাছে আমার শুধু একটি মাত্র প্রত্যাশা, যেটুকু পেয়েছি সেটি যেন কোনোভাবে আবার হারিয়ে না ফেলি।</div> </div>

বিজয় দিবসের প্রত্যাশা

  আমাদের বয়সী যেকোনো মানুষকে যদি জিজ্ঞাসা করা হয়, তার জীবনের সবচেয়ে আনন্দময় দিন কোনটি? সে অবধারিতভাবে বলবে, সেটি হচ্ছে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর। আমি মনে করি, আমাদের বয়সী মানুষরা যারা সেই দিনটিতে বাংলাদ…

Read more »

মুক্তিযুদ্ধের বই পড়ুন-মুক্তিযুদ্ধকে জানুন...

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> <table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody> <tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEglf96V-eN9U-Fu4xcUxiQIO7dDAm20zAih4O7_utN11xqnTPaWi1EnSbWyqx07g1VgR5KNKbM348gUzcYj1Jg7I9Qx6Sel2pTHHTEmRDpqV6KFT_vvcNRF2JfJIzUEozr339ovGHvWeVE/s1600/education-books.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img border="0" data-original-height="1067" data-original-width="1600" height="426" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEglf96V-eN9U-Fu4xcUxiQIO7dDAm20zAih4O7_utN11xqnTPaWi1EnSbWyqx07g1VgR5KNKbM348gUzcYj1Jg7I9Qx6Sel2pTHHTEmRDpqV6KFT_vvcNRF2JfJIzUEozr339ovGHvWeVE/s640/education-books.jpg" width="640" /></a></td></tr> <tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;"><br /></td></tr> </tbody></table> <div style="text-align: justify;"> অনেকেই মুক্তিযুদ্ধের বই পড়তে চান। কোন বই পড়লে মুক্তিযুদ্ধের চাপা পড়া বিস্মৃত ইতিহাসগুলো জানতে পারা যাবে। মুক্তিযুদ্ধের উপর এই পর্যন্ত সাড়ে পাঁচ হাজারেরও বেশি বই বের হয়েছে। আপনি যদি প্রকাশিত এই বইগুলোর অর্ধেকও পড়তে পারেন, তবে মুক্তিযুদ্ধ নামক এই মহাকাব্যের অশেষ অসংখ্য চাপা পড়া অধ্যায় সম্পর্কে জানতে পারবেন। তবে মুক্তিযুদ্ধের পর্যায়ক্রমিক নয় মাস সময়ের সলিড নির্ভরযোগ্য ইতিহাসটা জানতে হলে বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয় কতৃক হতে প্রকাশিত এবং হাসান হাফিজুর রহমান কতৃক সম্পাদিত “বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র’-১৫ খণ্ড” এর বিকল্প নাই। প্রায় সাড়ে তিন লাখ ডকুমেন্টস থেকে ভ্যারিফিকেশন শেষে ১৫ খণ্ডের এই সংকলন প্রস্তুত করা হয়েছে, পৃষ্ঠা সংখ্যা এরাউন্ড ১৫,০০০। এই বইটির প্রকাশনায় ১৯৭২ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত সকল দর্শনের গভমেন্টই কমবেশী কাজ করেছে এবং আমাদের জানামতে এখানে শুধু রিপ্রিন্ট করা হয়েছে। কোন গভমেন্টের আমলে এডিটিং করা হয়নি বললেই চলে। তাই এখানে রক্ষিত ডকুমেন্টসকেই নিঃসন্দেহে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের প্রাইমারি সোর্স হিসেবে বিবেচনা করা যায়।<br /> <br /> এই ১৫ খণ্ড অনলাইনে সহজলভ্য করতে অবিশ্রান্ত কাজ করেছে ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধঃ দলিলপত্র থেকে বলছি’। তারা ইতিমধ্যে সবগুলো খণ্ডই মাইক্রোসফট ওয়ার্ডে ইউনিকোডে বাংলায় কম্পাইল করে উন্মুক্ত করে দিয়েছে সর্বসাধারনের জন্য।<br /> <br /> পেজের লিংকঃ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধঃ দলিলপত্র থেকে বলছি -<br /> <br /> <a href="http://zuddhodolil.com/%E0%A6%A6%E0%A6%B2%E0%A6%BF%E0%A6%B2%E0%A6%AA%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0/" target="_blank">মাইক্রোসফট ওয়ার্ডে ইউনিকোডে বাংলায় কম্পাইলড খণ্ডগুলোর ডাউনলোড লিংক</a></div> <div style="text-align: justify;"> <a href="http://www.liberationwarbangladesh.org/.../blog-post_1121" target="_blank"><br /></a> <a href="http://www.liberationwarbangladesh.org/.../blog-post_1121" target="_blank">১৫ খণ্ডের মূল পিডিএফ ফাইলের লিংক</a><br /> <br /> <div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"> </div> এর বাইরে মুক্তিযুদ্ধের অসংখ্য বইয়ের খোঁজ পাবেন মুক্তিযুদ্ধ ই-আর্কাইভে... মুক্তিযুদ্ধের বই খুঁজে পাবার জন্য এর চেয়ে ভালো উপায় আর হতে পারে না।<br /> <br /> <a href="http://www.liberationwarbangladesh.org/p/index.html" target="_blank">মুক্তিযুদ্ধের ই-আর্কাইভের লিংক</a><br /> <br /> <a href="https://www.facebook.com/liberationwarbangladesh.org" target="_blank">ফেসবুক পেজের লিংক</a><br /> <br /> এর বাইরে মুক্তিযোদ্ধাদের, নির্যাতিতদের বর্ণনা এবং প্রত্যক্ষদর্শী অভিজ্ঞদের অভিজ্ঞতা সাপেক্ষে রচিত বেশ কিছু বইয়ের নাম দেওয়া হল। এর মধ্যে অনেকগুলোতে ফিকশনের আদলে সত্যিকার ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে...<br /> <br /> ১। অসমাপ্ত আত্মজীবনী - জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান<br /> <br /> ২। রাইফেল রোটি আওরাত — আনোয়ার পাশা {শহীদ বুদ্ধিজীবী (অধ্যাপক) রচনাকাল - একাত্তরের এপ্রিল থেকে জুন মাস। মুক্তিযুদ্ধের বীভৎসতার প্রামাণ্য প্রত্যক্ষ দলিল}<br /> <br /> ৩। একাত্তরের দিনগুলি-জাহানারা ইমাম। (আম্মা)<br /> <br /> ৪। বারে বারে ফিরে যাই — ডাঃ মেজর আখতার বীর প্রতীক। মুক্তিযুদ্ধকালে বাংলাদেশ হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা।<br /> <br /> ৫। Brave Of Hearts- হাবিবুল আলম বীর প্রতীক(ক্র্যাক প্লাটুনের বীরযোদ্ধা, সেক্টর-২)<br /> <br /> ৬। মুক্তিযুদ্ধে মেজর হায়দার এবং তার বিয়োগান্তক বিদায়ঃ জহিরুল হক। (মেজর হায়দারের অধীনস্থ গেরিলা যোদ্ধা)<br /> <br /> ৭। ঘুম নেই- নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু। (ক্র্যাক প্লাটুন-সেক্টর ২) <br /> <br /> ৮। মা- আনিসুল হক। (আজাদ এবং ক্র্যাক প্লাটুন ভিত্তিক ঢাকার গেরিলা যোদ্ধাদের নিয়ে আখ্যান)<br /> <br /> ৯। ক্র্যাচের কর্নেল- শাহাদুজ্জামান। (কিংবদন্তী ফিল্ড কমান্ডার কর্নেল আবু তাহের গাঁথা)<br /> <br /> ১০। মুক্তিযুদ্ধে ২ নম্বর সেক্টর এবং কে ফোর্স – মেজর খালেদ মোশাররফের যুদ্ধদিনের প্রত্যক্ষ বর্ণনায় লেখা ডায়েরি সংগ্রহ। প্রতিদিনের যুদ্ধের বিবরণসমৃদ্ধ সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য প্রামাণ্য দলিল।<br /> <br /> ১১। অনিল বাগচির একদিন- হুমায়ূন আহমেদ <br /> <br /> ১২। আমার বন্ধু রাশেদ- মুহাম্মদ জাফর ইকবাল<br /> <br /> ১২। জোছনা ও জননীর গল্প- হুমায়ূন আহমেদ<br /> <br /> ১৩। চরমপত্র- এম আর আখতার মুকুল<br /> <br /> ১৪। ছোটগল্পসমগ্র- মুহাম্মদ জাফর ইকবাল<br /> <br /> ১৫। তালাশ- শাহীন আখতার <br /> <br /> ১৬। যুদ্ধ ও নারী- ডাঃ এম এ হাসান<br /> <br /> ১৭। ২ নম্বর সেক্টর এবং কে ফোর্স কমান্ডার : খালেদের কথা -মেজর কামরুল হাসান ভূঁইয়া বীর প্রতীক<br /> <br /> ১৮। আলবদর ১৯৭১- মুনতাসির মামুন<br /> <br /> ১৯। অপারেশন জ্যাকপট- সেজান মাহমুদ<br /> <br /> ২০। পতাকার প্রতি প্রণোদনা- মেজর কামরুল হাসান ভূঁইয়া<br /> <br /> ২১। একাত্তরে আমরা ভুল করিনি- গোলাম আজম ও জামাতের রাজনীতি<br /> <br /> ২২। দৈনিক সংগ্রামের ভূমিকা-- আলি আলবার টাবি<br /> <br /> ২৩। একাত্তরের দশ মাস-- রবীন্দ্রনাথ ত্রিবেদী<br /> <br /> ২৪। অপারেশন বিগ বার্ড: যেভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছিলো বঙ্গবন্ধুকে - অমি রহমান পিয়াল<br /> <br /> ২৫। ওঙ্কার- আহমেদ ছফা<br /> <br /> ২৬। আমি বীরাঙ্গনা বলছি- নীলিমা ইব্রাহিম<br /> <br /> ২৭। একাত্তরের গেরিলা - জহিরুল ইসলাম<br /> <br /> ২৮। ডেটলাইন বাংলাদেশ : নাইন্টিন সেভেন্টিওয়ান - সিডনি শনবার্গ<br /> <br /> ২৯। ত্রিশ লক্ষ শহিদ বাহুল্য নাকি বাস্তবতা - আরিফ রহমান<br /> <br /> ৩০। একাত্তরের ঘাতক দালালেরা কে কোথায়- শাহরিয়ার কবির, আহমেদ শরীফ এবং নূর-উজ-জামান<br /> <br /> ৩১। পাকিস্তানী জেনারেলদের মন, বাঙ্গালী বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ- মুনতাসীর মামুন<br /> <br /> ৩২। যারা ভোর এনেছিল- আনিসুল হক<br /> <br /> ৩৩। পাকিস্তানী যুদ্ধাপরাধী ১৯১ জন- ডঃ এম এ হাসান<br /> <br /> ৩৪।ঊষার দুয়ার- আনিসুল হক<br /> <br /> ৩৫। পিতার অস্থি'র সন্ধানে - অনল রায়হান<br /> <br /> ৩৬। চল্লিশ থেকে একাত্তর- এম আর আখতার মুকুল <br /> <br /> ৩৭। রক্ত ও কাদা ১৯৭১-তাদামাসা হুকিউরা</div> <div style="text-align: justify;"> ৩৮। জনযুদ্ধের গণযোদ্ধা – মেজর কামরুল হাসান ভূঁইয়া<br /> <br /> ৩৯। একাত্তরের বিশটি ভয়াবহ যুদ্ধ – মেজর রফিকুল ইসলাম পিএসসি<br /> <br /> ৪০। বাংলাদেশ সরকার ১৯৭১-৭৫- এইচ টি ইমাম <br /> <br /> ৪১। আমি বিজয় দেখেছি- এম আর আখতার মুকুল<br /> <br /> ৪২। লক্ষ প্রানের বিনিময়ে- মেজর রফিকুল ইসলাম পিএসসি<br /> <br /> ৪৩। স্মৃতি কথা ১৯৭১(১ম-৯ম খন্ড)-বাংলা একাডেমী<br /> <br /> ৪৪। গেরিলা থেকে সম্মুখযুদ্ধে- মেজর রফিকুল ইসলাম পিএসসি<br /> <br /> ৪৫। ক্যাম্প- জাফর ইকবাল<br /> <br /> ৪৬। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস- মুহম্মদ জাফর ইকবাল( মাত্র ১০ টাকায় চিকন এই বইটায় খুব সংক্ষেপে মোটামুটি এক অসাধ্য সাধন করেছেন জাফর ইকবাল স্যার। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আগ্রহীরা প্রাথমিকভাবে খুব সহজেই একটা ভালো আইডিয়া পাবে বইটি পড়লে)<br /> <br /> ৪৭। ছোটদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস- মুহম্মদ জাফর ইকবাল( এটি স্পেশালি ছোটদের জন্য লেখা, তাদের বোধগম্য করে সহজে তুলে ধরা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের বেসিক পয়েন্টগুলো। মাত্র ২৭ টাকা দাম।) <br /> <br /> ৪৮। জন্মযুদ্ধ ১৯৭১- অমি রহমান পিয়াল <br /> <br /> ৪৯। হু কিলড মুজিব- এ. এল. খতিব<br /> <br /> বইগুলো শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেট, নীলক্ষেত, পাঠক সমাবেশসহ বিভিন্ন বইয়ের দোকানে এবং অনলাইনে রকমারি.কম, বইজগত.কমসহ সব ধরনের অনলাইন বুক শপে অর্ডার করতে পারবেন। এছাড়াও মুক্তিযুদ্ধ ই-আর্কাইভ ওয়েবসাইটে বইগুলো বিনামূল্যে ডাউনলোড করবার সুবিধা রয়েছে...<br /> <br /> তো আর দেরি কেন? বই পড়ুন, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানুন... <br /> <br /> বিঃ দ্রঃ - যারা এই পোস্টটা পড়ছেন,আপনারা যদি এই লিস্টটা আপনাদের টাইমলাইনে নোট আকারে সেভ করে রাখেন, চিরকৃতজ্ঞ থাকবো।</div> </div>

মুক্তিযুদ্ধের বই পড়ুন-মুক্তিযুদ্ধকে জানুন...

অনেকেই মুক্তিযুদ্ধের বই পড়তে চান। কোন বই পড়লে মুক্তিযুদ্ধের চাপা পড়া বিস্মৃত ইতিহাসগুলো জানতে পারা যাবে। মুক্তিযুদ্ধের উপর এই পর্যন্ত সাড়ে পাঁচ হাজারেরও বেশি বই বের হয়েছে। আপনি যদি প্রকাশিত এই বইগুলো…

Read more »

একজন মতিউর এবং একটা “মিসিং ম্যান ফর্মেশন”-এর আক্ষেপ!

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> <br /> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> <br /> <br /> <div style="text-align: justify;"> মাটিতে ৩৫ মাইল অনেক লম্বা দূরত্ব, কিন্তু আকাশে উড়ে ৩৫ মাইল পার হওয়া খুব সাধারণ, অল্প সময়ের ব্যাপার। একটা টি-৩৩ বিমানের টপ স্পীড ৬০০ মাইল পার আওয়ার! ৩৫ মাইল পার হতে সময় লাগত মাত্র সাড়ে তিন মিনিট! এই সাড়ে তিন মিনিট কিংবা ৩৫ মাইলের হিসাবটাই ইতিহাস বদলে দিতে পারত! কিন্তু ঈশ্বর পাশা খেলেন না, তাই ৩৫ মাইল পার হয়ে সূর্য ছিনিয়ে আনা হয়না একজন ইকারুসের। মাত্র সাড়ে তিন মিনিটের রেসে হেরে যায় বাজির ঘোড়া!<br /> <table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody> <tr><td style="text-align: center;"><img height="522" src="https://egiye-cholo.com/wp-content/uploads/2017/08/Capture2.jpg" style="margin-left: auto; margin-right: auto;" width="640" /></td></tr> <tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;"><br /></td></tr> </tbody></table> ৩৫ বছর ধরে যার সমাধি চিহ্নিত ছিল ‘গাদ্দার’ হিসেবে, সেই মানুষটা চাইলেই বাংলাদেশে থেকে যেতে পারতেন। ১৯৭১ সালের ৯ মে তিনি পশ্চিম পাকিস্তানে ফিরে গিয়েছিলেন। কি বোকা, তাইনা?<br /> <br /> প্রিয়তমা স্ত্রী, প্রাণপ্রিয় দুই কণ্যার ভালোবাসার বন্ধন; সবকিছুর চেয়ে তার কাছে বড় ছিল বাংলা মায়ের ডাক। স্বপ্ন দেখার জন্য সাহস লাগে। কতখানি সাহস থাকলে এক মানবসন্তান শত্রুর ঘরে ঢুকে তার কলিজা ছিঁড়ে নিয়ে আসার চিন্তা করতে পারে, ভেবে দেখো প্রজন্ম! ১৯৭১ সালের জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে দুই মাসের ছুটি নিয়ে দেশে এসে তিনি স্বচক্ষে দেখেছেন দানবের হুংকার আর বিভীষিকা। গড়ে তুলেছেন প্রতিরোধ, আর অকল্পনীয় দূরদর্শীতায় অনুভব করেছেন, ‘ইটের জবাব পাথর দিয়ে দিতে হবে’।<br /> <table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody> <tr><td style="text-align: center;"><img height="429" src="https://egiye-cholo.com/wp-content/uploads/2017/08/Capture5.jpg" style="margin-left: auto; margin-right: auto;" width="640" /></td></tr> <tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;"></td></tr> </tbody></table> সংসার, পরিবার সবকিছু নিয়ে জুয়া খেলতে নেমেছিলেন তিনি, তাই ফিরে গিয়েছিলেন শত্রুর ঘাঁটিতে, বুকের গহীণ অলিন্দে লুকিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন আগুন! স্বাধীনতার আগুন! ইকারুসের ডানায় ভর করে সূর্যটা এইদেশে এসেছিল ঠিকই, শুধু আসেনি একজন স্বামী; যার শেষ কথা ছিল, “এই দেশটাকে হানাদারেরা গিলে খাবে, এটা আমি কি করে মেনে নেই? আমার মায়ের আঁচল শত্রুরা ছিঁড়ে নেবে…এটা আমি সহ্য করি কিভাবে মিলি? আমি আবার ফিরব মিলি। আমাদের স্বাধীন দেশের পতাকা বুকপকেটে নিয়ে ফিরব”।<br /> <table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody> <tr><td style="text-align: center;"><img height="484" src="https://egiye-cholo.com/wp-content/uploads/2017/08/motiur-rahman-with-wife-and-daughters-from-dhaka-city-guide.jpg" style="margin-left: auto; margin-right: auto;" width="640" /></td></tr> <tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;"><br /></td></tr> </tbody></table> ফিরে আসেননি একজন পিতা, যার কণ্যাদের জন্য শেষ বার্তা ছিল, “আমার কণ্যারা যদি কখনও জিজ্ঞাসা করে, ‘বাবা কেন আমাদের ফেলে চলে গেছে?’ তুমি তাঁদের বলবে, তোমাদের বাবা তোমাদের অন্য এক মা’র টানে চলে গেছে। যে মা’কে তোমরা কখনও দেখনি… সে মা’র নাম বাংলাদেশ”।<br /> <table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody> <tr><td style="text-align: center;"><img height="640" src="https://egiye-cholo.com/wp-content/uploads/2017/08/Capture4.jpg" style="margin-left: auto; margin-right: auto;" width="490" /></td></tr> <tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;"></td></tr> </tbody></table> এই মানুষটা ফেরেননি। মাত্র সাড়ে তিন মিনিটের ব্যবধানে ইতিহাস বদলে গিয়েছিল সেদিন। ৩৫ মাইল পার হতে না পারায় ৩৫ বছর এই বাংলা মায়ের ছেলেটা অবহেলায় পড়ে ছিল ‘গাদ্দার’ পরিচয় নিয়ে! আজ থেকে ৪৬ বছর আগের এই দিনে ছেলেটা আমাদের দেখিয়ে দিয়েছে প্রেম কাকে বলে, ভালোবাসা কেমন হয়। বড় বোকা ছিল ছেলেটা, ভীষণ আনস্মার্ট!<br /> <table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody> <tr><td style="text-align: center;"><img height="437" src="https://egiye-cholo.com/wp-content/uploads/2017/08/Capture6.jpg" style="margin-left: auto; margin-right: auto;" width="640" /></td></tr> <tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;"></td></tr> </tbody></table> মাত্র ৩০ বছর বয়স ছিল তার। ছিল স্ত্রী আর দুই দেবশিশুর মত মেয়ে! জীবন নিয়ে এমন বাজি কয়জন খেলতে পেরেছে আর? আমরা ব্যস্ত অনেক কিছু নিয়ে, কথায় কথায় গর্বে বুক ফুলিয়ে লাল-সবুজের পতাকা ওড়াই আমরা। অথচ ঘুণাক্ষরেও মনে পড়েনা, এই পতাকাটা একজন আমাদের এনে দিয়ে চুপচাপ হারিয়ে গেছেন। ৩৫টা বছর অপমানিত হয়েছে তার সমাধি। আমরা শুধুই ভুলে যাই।<br /> <br /> বিভিন্ন দেশের বিমান বাহিনীতে ‘মিসিং ম্যান ফর্মেশন’ নামে একটা ফ্লাই পাস্টের প্রচলন আছে। প্রয়াত পাইলটের সম্মানে তিন, পাঁচ বা সাত বিমানের ফর্মেশনে একটা স্থান ফাঁকা রেখে ফ্লাই পাস্ট করা হয়। আমি জানিনা আমাদের বিমান বাহিনীতে এই ঐতিহ্য আছে কি না। আমার খুব ইচ্ছে করে, বাংলার আকাশে উদীয়মান সূর্যের পটভূমিতে একটা ‘মিসিং ম্যান’ ফ্লাই পাস্ট হোক। লাল সবুজ ধোঁয়া ছেড়ে খুব নিচু দিয়ে উড়ে যাওয়া ফর্মেশনে একটা শূন্যস্থান আমাদের মনে করিয়ে দিক, এই বাংলার আকাশ মুক্ত রাখার জন্য এক অতিমানব সাড়ে তিন মিনিটের জন্য আজীবন বিজয়ীর খেতাবটা ছিনিয়ে নিয়ে আমাদের একটা পতাকা উপহার দিয়ে গেছেন।<br /> <br /> কেউ কি পড়ছেন? কেউ কি শুনছেন? একটু চেষ্টা করবেন কি? বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান নামটা মনে পড়ে? আজ ২০ আগস্ট। ১৯৭১ সালের এই দিনে বোকা ছেলেটা অসম্ভবকে সম্ভব করার পথ দেখিয়ে গিয়েছিল।<br /> <br /> লিখেছেন- <a href="https://www.facebook.com/tamur.hasan?hc_ref=ARS9hoSuiNsCyDkTu4Aa39LKbea80OSnnIlXuQcBhuV86yPmkXVc3HJ9YTUTd_kr16w">Tamur Hasan</a></div> </div>

একজন মতিউর এবং একটা “মিসিং ম্যান ফর্মেশন”-এর আক্ষেপ!

মাটিতে ৩৫ মাইল অনেক লম্বা দূরত্ব, কিন্তু আকাশে উড়ে ৩৫ মাইল পার হওয়া খুব সাধারণ, অল্প সময়ের ব্যাপার। একটা টি-৩৩ বিমানের টপ স্পীড ৬০০ মাইল পার আওয়ার! ৩৫ মাইল পার হতে সময় লাগত মাত্র সাড়ে তিন মিনিট! এই স…

Read more »

মুক্তিযুদ্ধ প্রতিদিনঃ ২১ আগস্ট, ১৯৭১

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> <table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody> <tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgUIdwkCFLsawXBhP4GLrCaQyCrcff7VB_SJ8okd99ksbrOYOJVri4-JO1w2KaYhCWjryj6p2gfX3WSVPaZcuQOgRAyhcF5u0Fu0zLoXZodJ1N0bcUVn5DoNPxYcR2jPS1Z4Tz9i5_tgdo/s1600/mp.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img border="0" height="332" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgUIdwkCFLsawXBhP4GLrCaQyCrcff7VB_SJ8okd99ksbrOYOJVri4-JO1w2KaYhCWjryj6p2gfX3WSVPaZcuQOgRAyhcF5u0Fu0zLoXZodJ1N0bcUVn5DoNPxYcR2jPS1Z4Tz9i5_tgdo/s1600/mp.jpg" width="640" /></a></td></tr> <tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;"></td></tr> </tbody></table> <b>২১ আগস্ট, ১৯৭১</b><br /> <ul style="text-align: justify;"> <li>মুক্তিবাহিনীর একটি টহলদার দল কুমিল্লার উত্তরে গাজীপুর রেলওয়ে সেতুর কাছে পাকবাহিনীর একটি দলকে এ্যামবুশ করে। এই আক্রমণে একজন লেফটেন্যান্টসহ ৬ জন পাকসেনা নিহ হয় এবং অবশিষ্ট পাকসেনারা পালিয়ে যায়। মুক্তিযোদ্ধারা প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র এবং গুরুত্বপূর্ণ ম্যাপ দখল করে।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>পাকবাহিনীর এক কোম্পানি সৈন্য নরসিংদির নিকটস্থ মুক্তিবাহিনীর গেরিলা অবস্থানের দিকে অগ্রসর হলে পথিমধ্যে গেরিলা দল তাদের ওপর অতর্কিত আক্রমণ চালায়। প্রায় একঘন্টা গোলাগুলির পর পাকসেনারা গোলাগুলি বন্ধ করে সামনের দিকে অগ্রসর না হয়ে পিছু হটে।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>সুন্দরবনে মুক্তিবাহিনী ও পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। যুদ্ধে মুক্তিসেনাদের নেতৃত্ব দেন রাইফেলস-এর ক্যাপ্টেন নাজমুল হুদা।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>পূর্ব পাকিস্তান সামরিক সরকার আনসার অধ্যাদেশ ১৯৪৮ বাতিল করে ‘রাজাকার অধ্যাদেশ ১৯৭১’ জারি করেন।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>জাতিসংঘের মহাসচিব উ'থান্ট আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ মুজিবুর রহমানের গোপন বিচার বন্ধ রাখার জন্য যে বিবৃতি দেন, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় পরিষদ তার সমালোচনা করে বলেন, জাতিসংঘ মহাসচিব এ ব্যাপারে ক্ষমতা বহির্ভুত হস্তক্ষেপ করেছেন। পরিষদে গৃহীত এক প্রস্তাবে বলা হয়, শেখ মুজিবুর রহমানের বিচার অনুষ্ঠান পাকিস্তান সরকারের নিজস্ব বিষয়। এ ব্যাপারে জাতিসংঘ মহাসচিবের হস্তক্ষেপ করার কোন অধিকার নেই।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে মওলানা আবদুর রহিম জানান, হানাদার বাহিনীর তৎপরতা যথেষ্ট নয়। তিনি বাঙালীদের ওপর ৬০ ও ৭৮ নং সামরিক বিধিকে আরো নির্মমভাবে প্রয়োগের সুপারিশ করেন।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের নিয়মিত কথিকা ‘বিশ্বজনমত’:</li> </ul> <blockquote class="tr_bq"> <div style="text-align: justify;"> বাংলাদেশের শহরে নগরে বাজারে বন্দরে প্রতিটি পল্লীতে আজ শত্রুহননের দুর্বার লড়াই চলছে। আর এই লড়াইয়ে কুলিয়ে উঠতে না পেরে আমাদের মৃত্যুঞ্জয়ী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে প্রচন্ড মার খেয়ে পাকিস্তানি সামরিক চক্র নতুন এক ফন্দি আঁটলো। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে তারা ভারত-পাকিস্তান সমস্যা বলে চিহ্নিত করে কাজ হাসিল করতে চেয়েছিল। তারা ভেবেছিল আমাদের দেশের এই মুক্তিযুদ্ধকে তারা যদি ভারত-পাকিস্তান বিরোধ বলে চিহ্নিত করতে পারে তাহলে বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের মুক্তিসংগ্রামের প্রতি আজ যে বিশ্ব জনমত গঠিত হয়েছে, তাকে কিছুটা প্রশমিত করা যাবে। পাকিস্তানি সামরিক চক্র এই উদ্দেশ্যে বাংলাদেশের অধিকৃত এলাকার সীমান্তে এবং ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে উস্কানিমূলক তৎপরতা শুরু করলো। কিন্তু বিশ্বের সচেতন মানুষ পাকিস্তানি সামরিক চক্রের এই দুরভিসন্ধিটা বুঝে নিয়েছে। </div> </blockquote> <blockquote class="tr_bq"> <div style="text-align: justify;"> সোভিয়েত প্রধানমন্ত্রী আলেক্সী কোসিগিন পাকিস্তানি ফ্যাসিবাদী সামরিক চক্রের এই ঘৃণ্য দুরভিসন্ধির কথা জানতে পেরে বাংলাদেশে গণহত্যা, ধ্বংসযজ্ঞ ও নারী নির্যাতনের নায়ক পাকিস্তানের স্বঘোষিত প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়াকে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় হুঁশিয়ারী করে দিয়ে বলেছেন: সাবধান! ভারতের সঙ্গে যুদ্ধ বাধানো পাকিস্তানের পক্ষে আত্মহত্যার সামিল হবে।</div> </blockquote> <div style="text-align: left;"> <br /> তথ্যসূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর।</div> </div>

মুক্তিযুদ্ধ প্রতিদিনঃ ২১ আগস্ট, ১৯৭১

২১ আগস্ট, ১৯৭১ মুক্তিবাহিনীর একটি টহলদার দল কুমিল্লার উত্তরে গাজীপুর রেলওয়ে সেতুর কাছে পাকবাহিনীর একটি দলকে এ্যামবুশ করে। এই আক্রমণে একজন লেফটেন্যান্টসহ ৬ জন পাকসেনা নিহ হয় এবং অবশিষ্ট পাকসেনারা পালি…

Read more »

মুক্তিযুদ্ধের শহীদ প্রথম নারী কবি শহীদ মেহেরুন্নেসা: শুভ জন্মদিন!

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> <div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"> </div> <div style="text-align: justify;"> <table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody> <tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEiKRNXuXP1PuMfeZzfaUuVHDY0g0zyhGGFkB4iq9M1DkHznj9c20PfxOXBq-d9VRR28gUj3CrvGgGEv3rEFNK1hRV6M8I6XUqsNmmtjAoIOxI_purnTc3gbHVvgltVpFMHKD-pDXwjbq5o/s1600/11903922_815306618590130_3512804916401461061_n.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img border="0" data-original-height="327" data-original-width="853" height="244" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEiKRNXuXP1PuMfeZzfaUuVHDY0g0zyhGGFkB4iq9M1DkHznj9c20PfxOXBq-d9VRR28gUj3CrvGgGEv3rEFNK1hRV6M8I6XUqsNmmtjAoIOxI_purnTc3gbHVvgltVpFMHKD-pDXwjbq5o/s640/11903922_815306618590130_3512804916401461061_n.jpg" width="640" /></a></td></tr> <tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;"><br /></td></tr> </tbody></table> আচ্ছা, মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হওয়া প্রথম নারী কবি কে ছিলেন? অনেকেই জানি না আমরা। জানবার আগ্রহটাও হয়তো হয়নি আমাদের, সময়ও নেই। কিন্তু আজ যে স্বাধীন জমিনে স্বাধীন নাগরিকের পরিচয় নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি, যে স্বাধীন আলো-হাওয়ায় বুক ভরে শ্বাস নিচ্ছি, আমার-আপনার এই পরিচয়, এই স্বাধীনতা আনার জন্য নির্দ্বিধায় প্রাণ দিয়েছিলেন শহীদ মেহেরুন্নেসা, মুক্তিযুদ্ধের প্রথম নারী কবি! যার আঙ্গুল ফুঁড়ে বেরিয়েছিল স্বাধীনতার অমর কাব্য!<br /> <br /> <table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody> <tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEiTRxB7SjEFJjr8RTVDYZVKKamH7l3py4zZnYlR9Zrgc-OxvyYtalUZ5FcTYr6vYQPpRqkB0fcXLJu0cfBMtWZd0vJr28WR_UZsx5aFHoPzfZ7LKxll5HujEo4_rtbhsroLXxDVEHHHlf4/s1600/001_68494.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img border="0" data-original-height="382" data-original-width="720" height="339" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEiTRxB7SjEFJjr8RTVDYZVKKamH7l3py4zZnYlR9Zrgc-OxvyYtalUZ5FcTYr6vYQPpRqkB0fcXLJu0cfBMtWZd0vJr28WR_UZsx5aFHoPzfZ7LKxll5HujEo4_rtbhsroLXxDVEHHHlf4/s640/001_68494.jpg" width="640" /></a></td></tr> <tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;"></td></tr> </tbody></table> ষাটের দশকে যখন বাংলা সাহিত্যে ঝড় তুলেছিলেন কিছু শক্তিমান কবি, তাদের মধ্যেও আলাদা করে নজর কেড়েছিলেন মেহেরুন্নেসা। বাংলা এ্যাকাডেমির পাঠের আসরে, সদা উপস্থিত - প্রাণবন্ত - হাস্যেজ্জল শ্যামবর্ণ ছিপছিপে এই কবিকে প্রায়ই পাওয়া যেত। একাত্তরের উত্তাল মার্চে বাঙ্গালী জাতি যখন মুক্তির সংগ্রামে উত্তাল আন্দোলনের জোয়ারে ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে সবকিছু, তখন তিনিও একটা স্বাধীন দেশের স্বপ্ন চোখে নিয়ে রাজপথে, মিছিলের সন্মুখে সাহসের সাথে হেঁটে গেছেন, স্লোগানে স্লোগানে ঝরেছে আগুনের ফুলকি!<br /> <br /> মেহেরুন্নেন্সার বাবা ক্যান্সারে মারা গিয়েছিলেন অকালে। ছোট ভাই দুটো আর আর মাকে নিয়ে গড়া ছোট্ট পরিবারের হাল ধরবার জন্য নিজের সৃজনশীল কবি মনকে শক্ত বাঁধনে বেঁধে পত্রিকায় কপি লেখা আর প্রুফ দেখার কাজ শুরু করেছিলেন তিনি। সেসময়ের প্রায় সব পত্রিকাতেই তার কবিতা ছাপা হত, কিন্তু সংসারের ঘানি টানতে গিয়ে একটা সময় আর শিল্প-সংস্কৃতিতে সময় দিতে পারলেন না তিনি। নিজের অপার সম্ভবনাময় প্রতিভা ছোট ভাই দুটোকে মানুষ করার পেছনেই ব্যয় হচ্ছিল। তবুও, এতো কষ্টের ভেতরেও মার্চের সেই উত্তাল সময়ে কবিতা লেখা থেমে ছিল না তার। বিশেষ করে-<br /> <blockquote class="tr_bq"> “সাত কোটি জয় বাংলার বীর! ভয় করি নাকো কোন/<br /> বেয়নেট আর বুলেটের ঝড় ঠেলে- চির বিজয়ের পতাকাকে দেবো,<br /> সপ্ত আকাশে মেলে<br /> আনো দেখি আনো সাত কোটি এই দাবীর মৃত্যু তুমি<br /> চির বিজয়ের অটল শপথ<br /> জয় এ বাংলায় তুমি....”</blockquote> কবিতাটা প্রকাশ হবার পর সাড়া ফেলে চারিদিক। তার কলমের শক্তি জানান দেয় তার ভেতরের বারুদের গল্প। পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী, বিহারী ও রাজাকারদের রক্তচক্ষূকে উপেক্ষা করে পাকিস্তান প্রজাতন্ত্র দিবসে নিজ বাড়ির ছাদে উড়িয়েছিলেন লাল-সবুজের পতাকা। অবাঙ্গালী ও বিহারীদের হাতে প্রতিনিয়ত নির্যাতিত ও লাঞ্ছিত মিরপুরের বাঙ্গালিদের রক্ষার জন্য যিনি প্রিয় বান্ধবী কাজী রোজীকে সাথে নিয়ে গঠন করেছিলেন - “অ্যাকশন কমিটি”। একজন মুক্তিযোদ্ধা, সাহসী বিপ্লবী কবির পরিচয়টা এক পাশে রাখলেও সেই ৪৬ বছর আগে একজন নারীর এমন অসামান্য তেজ ও দীপ্তিভরা পথচলা আমাদের বিস্ময়াবিভূত করে। অথচ তাকে ন্যুনতম স্বীকৃতি তো দূরে থাক, আমরা তাকে ভালোভাবে চেনা তো দূরে থাক, আমরা তার নামটাও জানি না!<br /> <br /> তার এই প্রবল সাহসী যুদ্ধ পাকিস্তানীরা এবং তাদের দোসর রাজাকার আলবদরেরা মেনে নিতে পারলো না। ২৫শে মার্চের সেই পৈশাচিকতম গণহত্যার পর মিরপুর এলাকা পুরোপুরি চলে গেল অবাঙ্গালী বিহারী নরপিশাচদের হাতে। তারা মেতে উঠলো জবাই-কুপিয়ে বাঙ্গালী হত্যার বর্বোরচিত উৎসবে! সেই নারকীয় হত্যাযজ্ঞের এক পর্যায়ে মার্চের ২৭ তারিখ মিরপুরের কুখ্যাত কসাই কাদের মোল্লার (যুদ্ধাপরাধের দায়ে ফাঁসী হয়েছে) নেতৃত্বে বিহারী এবং রাজাকারদের একটি দল মিরপুর ৬ নম্বর ডি ব্লকে কবি মেহেরুন্নেসার বাড়িতে আক্রমণ করে। মানুষটা একটা স্বাধীন বাংলাদেশ চেয়েছিলেন, অনলবর্ষী কবিতা বেরোত তার আঙ্গুল ফুঁড়ে... কত বড় সাহস, ভাবা যায়?<br /> <br /> তাই মুশরিক, কাফের, ভারতের দালাল ইত্যাদি বিশেষণ দিয়ে প্রথমে ওরা মেহেরুন্নেসার ভাই দুজনকে কোপাতে শুরু করলো। এটা দেখে মেহেরুন্নেসার মা কোরআন শরীফ বুকে চেপে ধরে ওদের কাছে কাকুতিমিনতি করে বলতে লাগলেন, আমরা মুসলিম, আমাদের মেরো না। কিন্তু ঐ বর্বর নরপিশাচগুলো সেদিন কিছুই শোনেনি। চোখের সামনে মেহেরুন্নেসার ভাই দুজনকে জবাই করে ওরা ঐ মায়ের সামনেই মেহেরুন্নেসাকে প্রচন্ড যন্ত্রণা আর নির্যাতনে একটু একটু করে হত্যা করে।<br /> <br /> মেহেরুন্নেসার দুই ভাইয়ের মাথা নিয়ে ফুটবলের মতো খেলেছিল সেদিন ওরা। আর মেহেরুন্নেসার দেহ থেকে মাথা আলাদা করে চুল দিয়ে ফ্যানের সঙ্গে বেঁধে মাথাটা টাঙ্গিয়ে দিয়েছিল কাদের মোল্লা, আর দেহটা কাপড় শুকানোর তারে কাপড় শুকাবার মত করে ঝুলিয়ে রেখেছিল বিহারীরা। এই বীভৎস পৈশাচিকতার পুরোটাই তারা দেখতে বাধ্য করেছিল ওরা মেহেরুন্নেসার মাকে! যখন তিন সন্তানকে মায়ের সামনেই মেরে ফেলা হলো, এরপর ওরা কোরআন শরীফ বুকে চেপে থাকা মাকেও জবাই করে। কত বড় নৃশংস জালিম হলে নিজেকে মুসলমান পরিচয় দিয়ে কিছু মানুষ এমন অচিন্তনীয় নৃশংসতা চালাতে পারে, ভাবতে পারেন? পাশের বাসার এক প্রতিবেশী দেখেছিলেন এই পুরো ঘটনা, পরে তিনি পাগল হয়ে যান, সবসময় বলতে থাকতেন কিভাবে ওরা এই পুরো পরিবারের চারজনকে কসাই কাদের মোল্লা এবং বিহারী এবং রাজাকারেরা মেরেছে। হা হা অট্টহাসিতে ফেটে পড়েছিল সেদিন কাদের মোল্লাসহ পাকিস্তানী ভাইয়েরা, কোরআন শরীফ বুকে জড়িয়ে একজন ধর্মপ্রাণ মুসলমান হিসেবে প্রাণভিক্ষা চেয়েও বাঁচতে পারেননি মেহেরুন্নেসার মা।<br /> <br /> প্রিয় পাঠক, আর কিছু না, স্রেফ এটুকু চিন্তা করুন তো, আপনার সামনে আপনার সন্তানকে কেউ জবাই করছে, আর আপনাকে বাঁচিয়ে রেখেছে শুধুমাত্র আপনার সন্তানকে বীভৎসভাবে জবাইয়ের সেই দৃশ্য দেখবার জন্য! একটা সেকেন্ড চোখ বন্ধ করে ভাবতে চেষ্টা করুন তো দৃশ্যটা! কি, পারছেন?<br /> <br /> কসাই কাদের মোল্লার বিচার চলাকালে আর্ন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দী দিয়েছিলেন শহীদ কবি মেহেরুন্নেসার বন্ধু কবি কাজী রোজি। তার বর্ণনা থেকে উঠে এসেছে কবি মেহেরুন্নেসার উপর নির্যাতনের চিত্রঃ<br /> <blockquote class="tr_bq"> একাত্তরে নিহত কবি মেহেরুন্নেসা আমার ঘনিষ্ট বন্ধু ছিল। আমরা একই এলাকায় থাকতাম। একাত্তরে মিরপুরে অবাঙালী ও বিহারীরা বাঙালীদের ভীষণভাবে অপমানিত ও লাঞ্চিত করত। এ থেকে রেহাই পাবার জন্য ঐ নির্বাচনের সময় আমরা একটা এ্যাকশন কমিটি গঠন করি। আমি ছিলাম ঐ কমিটির সভাপতি, কবি মেহেরুন্নেসাসহ আরও অনেকে ছিল সদস্য। মিরপুরের অবাঙালীরা এজন্য আমাদের প্রতি বৈরী মনোভাব পোষণ করত। এটা বুঝতে পেরে আমরা অ্যাকশন কমিটির পক্ষ থেকে মিরপুরের বিভিন্ন এলাকায় প্রতিদিন মিটিং-মিছিল করতে থাকি।<br /><br />তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শুনতে আমি ও মেহেরুন্নেসাসহ অনেকেই রেসকোর্স ময়দানে গিয়েছিলাম। এই ভাষণ ছিল স্বাধীনতার ডাক। এরই মধ্যে চলে আসে ২৫ মার্চ। সেদিন সকালে আমি মিটিং করছিলাম। বুঝতে পারছিলাম একটা কিঠু ঘটতে যাচ্ছে। মিটিং শেষ করে বাসায় ফেরার পর খবর পেলাম, আমার ও কবি মেহেরুন্নেসার বাসায় তল্লাশি হবে। কারণ, এ্যাকশন কমিটিতে আমরা দু’জন ছিলাম নারী সদস্য। আমি যখন জানতে পারলাম, আমার বাসায় তল্লাশি হবে, তখন মেহেরুন্নেসার বাসায় খবর পাঠালাম। বললাম, আমি আজই বাসা ছেড়ে চলে যাব। তোমরাও অন্যত্র চলে যাও। এ খবর পাবার পর মেহেরুন্নেসা তার ছোট ভাইকে দিয়ে আমার বাসায় খবর পাঠাল যে, সে, তার মা ও দুই ভাইকে নিয়ে কোথায় যাবে ? আমি বুঝালাম, বাড়ি থেকে চলে যাওয়া একান্ত প্রয়োজন।<br /><br />তারপর ২৫ মার্চের কালরাতের ঘটনা সবাই জানেন। দিন চলে গেল। ২৭ মার্চ বিকেলে আমি খবর পেলাম, মেহেরুন্নেসা, তার দুই ভাই ও মা কে কাদের মোল্লা ও তার সহযোগী অবাঙালীরা হত্যা করেছে। অবাঙালীদের মধ্যে কেউ কেউ মাথায় সাদা ও লাল পট্টি বেঁধে মেহেরুন্নেসার বাসায় সকাল এগারটায় ঢুকে যায়। মেহেরুন্নেসা যখন দেখল, ওরা তাদের মারতে এসেছে, তখন তিনি বুকে কুরআন শরীফ চেপে ধরে বাঁচতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ওরা কবি মেহেরুন্নেসাসহ চারজনকে জবাই করে। পরে গুলজার ও আরও অবাঙালীর কাছ থেকে শুনেছিলাম, কবি মেহেরুন্নেসাকে গলা কেটে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল। মেহেরুন্নেসা তখন গলা কাটা মুরগীর মতো ছটফট করছিল। এই বীভৎস সংবাদ পেয়ে কষ্ট পেয়েছিলাম। মেহেরুন্নেসার জন্য আজ অবধি আমি কষ্ট পাই। আজ আমি এখানে কাঁদতে আসিনি। এ হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবীতে এসেছি। আমি সত্যিকার অর্থে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাই। আমি বিচার দেখে যেতে পারব কিনা জানিনা। আমার ভিতর কোন রাগ নেই, আছে শুধুই ঘৃণা।</blockquote> অথচ এই কাদের মোল্লার সর্বনিম্ন শাস্তি ফাঁসীর দাবিতে যখন আমরা রাস্তায় নামলাম, তখন অনেকেই ইনিয়েবিনিয়ে বলতে চেয়েছিল, এই কাদের মোল্লা সেই কাদের মোল্লা না! ইনি একজন নিষ্পাপ নিরপরাধ মানুষ। মজার ব্যাপারটা হচ্ছে, এই কাদের মোল্লার ফাঁসীর পর তার বাপের দেশ পাকিস্তান থেকেই যখন হাহাকার আর ক্ষোভ জানিয়ে বলা হলো, কাদের মোল্লা একজন সাচ্চা পাকিস্তানী দেশপ্রেমিক ছিলেন, তখন আর এদের পারলে পাকিস্তান সরকারকেও আওয়ামীলীগের দালাল বানিয়ে দেয়। একটা নরপিশাচের প্রতি মেহেরুন্নেসাদের রক্তের উপর দাঁড়িয়ে মেহেরুন্নেসার জীবনের বিনিময়ে পাওয়া স্বাধীন বাতাসে শ্বাস নিয়ে কিছু মানুষ কাদের মোল্লাকে নিষ্পাপ প্রমাণে যুদ্ধ করছে, এরচেয়ে কুৎসিত নির্লজ্জ জঘন্য দৃশ্য আজো তৈরি হয়নি!<br /> <br /> আজ সেই শহীদ কবি মেহেরুন্নেসার ৭৭তম জন্মবার্ষিকী। শুভ জন্মদিন কবি! ভাবতেও আফসোসে কুঁকড়ে যাচ্ছে ভেতরটা যে, আজ ৪৬ বছর পরেও আপনার জন্মদিনে অবাক জিজ্ঞেস করতে হয় আমাদের, মেহেরুন্নেসা কে? এ লজ্জা কোথায় রাখি!<br /> <br /> ছবি কৃতজ্ঞতাঃ Club Obscure<br /> স্কেচঃ S M Saiful Islam</div> </div>

মুক্তিযুদ্ধের শহীদ প্রথম নারী কবি শহীদ মেহেরুন্নেসা: শুভ জন্মদিন!

আচ্ছা, মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হওয়া প্রথম নারী কবি কে ছিলেন? অনেকেই জানি না আমরা। জানবার আগ্রহটাও হয়তো হয়নি আমাদের, সময়ও নেই। কিন্তু আজ যে স্বাধীন জমিনে স্বাধীন নাগরিকের পরিচয় নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি, যে স্বাধীন …

Read more »

মুক্তিযুদ্ধ প্রতিদিনঃ ২০ আগস্ট, ১৯৭১

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> <table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody> <tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgUIdwkCFLsawXBhP4GLrCaQyCrcff7VB_SJ8okd99ksbrOYOJVri4-JO1w2KaYhCWjryj6p2gfX3WSVPaZcuQOgRAyhcF5u0Fu0zLoXZodJ1N0bcUVn5DoNPxYcR2jPS1Z4Tz9i5_tgdo/s1600/mp.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img border="0" height="332" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgUIdwkCFLsawXBhP4GLrCaQyCrcff7VB_SJ8okd99ksbrOYOJVri4-JO1w2KaYhCWjryj6p2gfX3WSVPaZcuQOgRAyhcF5u0Fu0zLoXZodJ1N0bcUVn5DoNPxYcR2jPS1Z4Tz9i5_tgdo/s1600/mp.jpg" width="640" /></a></td></tr> <tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;"></td></tr> </tbody></table> <b>২০ আগস্ট, ১৯৭১</b><br /> <ul style="text-align: justify;"> <li>মুক্তিবাহিনীর এ্যামবুশ দল কুমিল্লার এক মাইল উত্তরে পাক বর্বরদের একটি টহলদার প্লাটুনকে এ্যামবুশ করে। মুক্তিযোদ্ধাদের অতর্কিত আক্রমণে পাকসেনারা হতচকিত হয়ে ছত্রভঙ্গ হয়ে পলায়ন করে। এই এ্যামবুশে ১১ জন পাকসেনা নিহত ও তিনজন আহত হয়। মুক্তিযোদ্ধারা পাকসেনাদের একটি মেশিন গান ও কয়েকটি জি-৩ রাইফেল দখল করে।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>করাচীর মাসরুর বিমান ঘাঁটির ইন্সট্রাক্টর ফ্লাইয়ার ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়ার জন্য পাকিস্তান বিমানবাহিনীর টি-৩৩ বিমানে করে মুজিব নগর আসার সময় দুর্ভাগ্যজনকভাবে বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেন। তিনি ২৯ নভেম্বর, ১৯৪২ ঢাকার রায়পুরা থানার রামনগর গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>মাসুদ হোসেন আলমগীর নবেলের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধা দল সারিয়াকান্দি থানার আওলাকান্দী গ্রামের পূর্ব পাশে যমুনা নদীতে একটি পাকমিলিটারী লঞ্চকে আক্রমণ করে। রকেট লাঞ্চারের আঘাতে লঞ্চটি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয় এবং সকল আরোহী নিহত হয়।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>পাঁচদিন পাঁচরাত রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর মুক্তিযোদ্ধারা কুড়িগ্রামের চিলমারী এলাকা পাকহানাদার মুক্ত করে। আনন্দে উদ্বেলিত জনগণ চিলমারীর রণক্ষেত্রে এসে দেখতে থাকে বাঙ্কারে বাঙ্কারে পড়ে থাকা শতাধিক হানাদার ও রাজাকারের লাশ।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>মুক্তিযোদ্ধা পান্ডব চন্দ্র দাসের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা সুনামগঞ্জে পাকবাহিনীর মুসলিমপুর অবস্থান আক্রমণ করে। এক ঘন্টারও অধিক সময় যুদ্ধের পর পাকসেনাদের চাপে মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ কৌশল পরিবর্তন করে এবং জিরানপুর গ্রামে এসে অবস্থান নেয়।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>মুক্তিবাহিনী খুলনায় পাকবাহিনীর শ্যামনগর অবস্থানের ওপর তিনটি কলামে যথাক্রমে ক্যাপ্টেন হুদা, লেঃ বেগ এবং নায়েব সুবেদার আবদুল গফুর ও হাবিলদার সোবাহানের নেতৃত্বে তীব্র আক্রমণ চালায়। তুমুল যুদ্ধের পর পাকসেনারা তাদের অবস্থান ত্যাগ করে এবং শ্যামনগর মুক্তিবাহিনীর দখলে চলে আসে।এ সংঘর্ষে মুক্তিবাহিনী ৪ জন পাকসেনার লাশ উদ্ধার করে ও ৪ জনকে আহত অবস্থায় বন্দী করে। অপরদিকে বীর মুক্তিযোদ্ধা সুবেদার ইলিয়াসসহ ৮ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন এবং ৬ জন মুক্তিযোদ্ধাকে পাকসেনারা ধরে নিয়ে যায়।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>রাওয়ালপিন্ডিতে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকের সদর দফতর থেকে এক প্রেসনোটে বলা হয়ঃ বেআইনী আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ মুজিবুর রহমান প্রখ্যাত আইনজীবী এ.কে.ব্রোহীকে বিশেষ সামরিক আদালতে তাঁর পক্ষ সমর্থনের জন্য মনোনীত করেছেন। প্রেসনোটে উল্লেখ করা হয়, আওয়ামী লীগ প্রধান গত ১১ আগস্ট বিশেষ সামরিক আদালতে প্রথম উপস্থিত হবার জন্য আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে তিনজন আইনজীবীর নামের তালিকা প্রদান করেন। গত ১১ আগস্ট পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার অভিযোগে শেখ মুজিবুর রহমানের রুদ্ধদ্বার কক্ষে বিচার শুরু হয়েছে। মামলার সমস্ত শুনানি গোপন রাখা হবে। </li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>সামরিক আইন প্রশাষক লে: জেনারেল টিক্কা খান ১৩ জন জাতীয় পরিষদ সদস্যকে সামরিক আদালতে হাজির হবার নির্দেশ দেয়। এঁরা হচ্ছেন: নূরজাহান মোর্শেদ, মিজানুর রহমান চৌধুরী, এম. ওয়ালিউল্লাহ, কাজী জহিরুল কাইয়ুম, খোন্দকার মোশতাক আহমদ, খোরশেদ আলম, নূরুল ইসলাম চৌধুরী, মোহাম্মদ ইদ্রিস, মোস্তাফিজুর রহমান, খালেদ মোহাম্মদ আলী, খাজা আহমদ, নূরুল হক এবং মোহাম্মদ হানিফ।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয কমিটির এক বৈঠকের প্রস্তাবে বলা হয়, ভারতীয় যুদ্ধবাজ ও তাদের চরদের যোগসাজশে পূর্ব পাকিস্তানকে বিচ্ছিন্ন করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ব্যক্তিদের দমন করার কাজে সরকার যে সমস্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, মজলিশে শুরা তার প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছে। </li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের নিয়মিত কথিকা ‘বিশ্বজনমত’:</li> </ul> <div style="text-align: left;"> </div> <div style="text-align: justify;"> <blockquote class="tr_bq"> পশ্চিম পাকিস্তান ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির প্রধান খান আবদুল ওয়ালী খান আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে পৌঁছে সেখানকার একটি ইংরেজী পত্রিকা ‘নিউ ওয়েভ’-এর সাংবাদিকদের কাছে সাক্ষাৎকার প্রদান করেন। তিনি বলেন, পাকিস্তানের রাজনীতি এখন এমন এক অবস্থায় পৌঁছেছে যেখান থেকে আর ফেরা সম্ভব নয়-পাকিস্তান ছিন্নভিন্ন টুকরো টুকরো হয়ে যাবেই। পাকিস্তানের রাজনীতি এখন যেভাবে চলছে তাতে সমূলে ধ্বংস হয়ে যাওয়া থেকে পাকিস্তানকে রক্ষা করার আর কোন উপায় নেই।</blockquote> <blockquote class="tr_bq"> তিনি বলেন: বাংলাদেশে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী যা করছে তা প্রাগৈতিহাসিক বর্বরতাকেও হার মানায়। তবে পাকিস্তানি সৈন্যদের পক্ষে বাংলাদেশকে দখলে রাখা আদৌ সম্ভব নয়। পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী যদি মনে করে থাকে যে, চরম অত্যাচার চালিয়ে, গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ অব্যাহত রেখে বাংলাদেশের বীর জনগণকে দাবিয়ে রাখতে পারবে তাহলে তারা চরম ভুল করবে।</blockquote> <blockquote> ওয়ালী খান বলেন, ধর্ম যে ভিন্ন সংস্কৃতির দুটি জাতির রাষ্ট্রীয় বন্ধন হতে পারে না, তা চিরকালের মতো প্রমাণিত হয়ে গেল। ধর্মকে রাষ্ট্রীয় বন্ধন বলে যারা ভাবতো এবার তাদের মোহমুক্তি চিরদিনের মতো ঘটে গেল। তিনি বলেন, আমার কাছে বাঙালীদের প্রতিরোধ আন্দোলনের গুরুত্ব এখানেই। পিন্ডির বর্তমান পরিস্থিতির উল্লেখ করতে গিয়ে ওয়ালী খান একটি উপমা দিয়ে বলেন, ‘দুধের কলসী ভেঙ্গে গেছে। দুধ চারিদিকে গড়িয়ে পড়ছে। আর তার চারপাশে বসে তারা কাঁদছে।’ পাকিস্তানের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে তিনি বলেন: পাকিস্তানের ভবিষ্যৎ যে কেবল অন্ধকারাচ্ছন্ন তা নয়, বিপজ্জনক।</blockquote> <br /> তথ্যসূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর।</div> </div>

মুক্তিযুদ্ধ প্রতিদিনঃ ২০ আগস্ট, ১৯৭১

২০ আগস্ট, ১৯৭১ মুক্তিবাহিনীর এ্যামবুশ দল কুমিল্লার এক মাইল উত্তরে পাক বর্বরদের একটি টহলদার প্লাটুনকে এ্যামবুশ করে। মুক্তিযোদ্ধাদের অতর্কিত আক্রমণে পাকসেনারা হতচকিত হয়ে ছত্রভঙ্গ হয়ে পলায়ন করে। এই এ্যা…

Read more »

মুক্তিযুদ্ধ প্রতিদিনঃ ১৯ আগস্ট, ১৯৭১

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> <table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody> <tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgUIdwkCFLsawXBhP4GLrCaQyCrcff7VB_SJ8okd99ksbrOYOJVri4-JO1w2KaYhCWjryj6p2gfX3WSVPaZcuQOgRAyhcF5u0Fu0zLoXZodJ1N0bcUVn5DoNPxYcR2jPS1Z4Tz9i5_tgdo/s1600/mp.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img border="0" height="332" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgUIdwkCFLsawXBhP4GLrCaQyCrcff7VB_SJ8okd99ksbrOYOJVri4-JO1w2KaYhCWjryj6p2gfX3WSVPaZcuQOgRAyhcF5u0Fu0zLoXZodJ1N0bcUVn5DoNPxYcR2jPS1Z4Tz9i5_tgdo/s1600/mp.jpg" width="640" /></a></td></tr> <tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;"></td></tr> </tbody></table> <b>১৯ আগস্ট, ১৯৭১</b><br /> <div> <ul class="tr_bq" style="text-align: justify;"> <li>দুপুর ১২ টায় পাকবাহিনীর তিনটি নৌকা শালদা নদী অবস্থান থেকে ব্রাহ্মণপাহাড় দিকে অগ্রসর হলে মুক্তিবাহিনী ছোট নাগাইশের কাছে নৌকাগুলোর ওপর অতর্কিত আক্রমণ চালায়। এতে পাকবাহিনীর দু‘টি নৌকা পানিতে ডুবে যায় ও ২০ জন পাকসেনা নিহত হয়। পিছনের নৌকাটি দ্রুত পাড়ে ভিড়িয়ে পাকসেনারা নৌকা থেকে নেমে পড়ে এবং মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর পাল্টা আক্রমণ চালায়। প্রায় চারঘন্টা গুলিবিনিময়ের পর পাকসেনারা পিছু হটে।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>মুক্তিবাহিনী পাকবাহিনী শালদা নদী গুদাম অবস্থানের ওপর কামান আক্রমণ চালায়। এতে পাকবাহিনীর একটি বাঙ্কার ধ্বংস হয় ও ৮ জন পাকসেনা নিহত হয়।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>সন্ধ্যায় মুক্তিবাহিনী কুড়িগ্রামে পাকহানাদার বাহিনীর চিলমারী ঘাঁটি আক্রমণ করে। এতে হানাদারদের কিছু বাঙ্কার ধ্বংস হয় ও ৪ জন পাকসেনা নিহত হয়।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>ঢাকায় মুক্তিবাহিনী সাটুরিয়া থানা আক্রমণ করে। এ অভিযানে ৪ জন পাকসেনা ও ৫ জন পুলিশ নিহত হয় এবং ১৪ জন পাকসেনা মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে বন্দী হয়। থানা থেকে মুক্তিযোদ্ধারা প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ দখল করে।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>খুলনার পাইকগাছায় মুক্তিবাহিনী পাকহানাদার বাহিনীর একটি লঞ্চকে এ্যামবুশ করে। এতে লঞ্চে অবস্থানকারী ২৬ জন পাকসেনার সকলেই নিহত হয় এবং লঞ্চটি বিধ্বস্ত হয়।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>পাকিস্তান সরকার ঘোষনা করে: পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্যপদে অধুনালুপ্ত আওয়ামী লীগের টিকিটে নির্বাচিত ৯৪ জন সদস্যের সদস্যপদ ব্যক্তিগত পর্যায়ে বহাল থাকবে।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র রবার্ট ম্যাকক্লক্সি বলেন, পাকিস্তানি সেনাবাহিনী বাংলাদেশে গণহত্যা চালিয়েছে বলে সিনেটর এডওয়ার্ড কেনেডী যে অভিযোগ করেছেন যুক্তরাষ্ট্র সরকার তার সাথে একমত নন।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>ঢাকায় সামরিক আইন প্রশাসক জেনারেল টিক্কা খান আওয়ামী লীগের ২৯ জন জাতীয় পরিষদ সদস্যকে সামরিক আদালতে হাজির হবার নির্দেশ দেয়। এঁরা হচ্ছেন: আবদুল মমিন, আবদুল হামিদ, জিল্লুর রহমান, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, মৌলবী হুমায়ুন খালিদ, শামসুর রহমান, তাহের উদ্দিন ঠাকুর, আলী আজম, আবদুস সামাদ আজাদ, মোহাম্মদ আবদুর রব, মোস্তফা আলী, এ.কে. লতিফুর রহমান চৌধুরী মানিক, দেওয়ান ফরিদ গাজী, মোহাম্মদ ইলিয়াস, ফজলুর রহমান, এ.কে.শামসুজ্জোহা, আবদুল করিম ব্যাপারী, এ. ভুঁইয়া, শামসুল হক, কে.এম. ওবায়দুর রহমান, মোল্লা জালাল উদ্দিন, শামসুদ্দিন মোল্লা, এম.এ. গফুর, শেখ আবদুল আজিজ, নূরুল ইসলাম মঞ্জুর, এ. মান্নান হাওলাদার, আবদুর রব সেরানিয়াবাত এবং এনায়েত হোসেন খান।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের নিয়মিত কথিকা ‘বিশ্বজনমত’:</li> </ul> <div style="text-align: justify;"> <blockquote> পাকিস্তানের সাবেক এয়ার মার্শাল আসগর খান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিচার প্রহসনের তীব্র নিন্দা করেছেন। তিনি পাকিস্তানি সামরিক চক্রকে এই বলে হুঁশিয়ার করেছেন যে, পাকিস্তানি সামরিক জান্তা বাংলাদেশে যা করেছে এবং বঙ্গবন্ধু বিচার প্রহসনে মেতে যা করতে যাচ্ছে তার পরিণতি হবে অত্যন্ত ভয়াবহ এবং এর ফলে পাকিস্তানটাই তাসের ঘরের মতো এক মুহুর্তে হুড়মুড় করে ভেঙ্গে পড়বে।<br /> <br /> গত সপ্তাহে পাকিস্তানি জাহাজ আল-আহমাদী মার্কিন সমরাস্ত্র বহনের জন্যে ফিলাডেলফিয়া বন্দরে ভেড়ার চেষ্টা করছিল কিন্তু সেখানে পাকিস্তানি জঙ্গিশাহীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শিত হয় এবং বিক্ষোভকারীরা ছোট ছোট নৌযান দিয়ে পাকিস্তানি জাহাজের সম্মুখে অবরোধ সৃষ্টি করে। ফলে পাকিস্তানি জাহাজটিকে ফিলাডেলফিয়া বন্দরে ভেড়ার সংকল্প পরিত্যাগ করে বাল্টিমোরের দিকে এগুতে হয়।<br /> <br /> শুধু ফিলাডেলফিয়া বন্দর নয়, পৃথিবীর সর্বত্রই পাকিস্তানি সামরিক চক্রের বিরুদ্ধে ঘৃণা ও ধিক্কার উঠেছে। পাকিস্তানি জঙ্গিশাহী সর্বত্রই লাঞ্ছিত। যুদ্ধবাদ সাম্রাজ্যবাদী শক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের মদত পেয়ে পাকিস্তানের গোঁয়ার সামরিক চক্র এখনও আস্ফালন করছে সত্যি কিন্তু এর শোচনীয় পরিসমাপ্তি অত্যাসন্ন।</blockquote> </div> <div style="text-align: left;"> <br /> তথ্যসূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর।</div> </div> </div>

মুক্তিযুদ্ধ প্রতিদিনঃ ১৯ আগস্ট, ১৯৭১

১৯ আগস্ট, ১৯৭১ দুপুর ১২ টায় পাকবাহিনীর তিনটি নৌকা শালদা নদী অবস্থান থেকে ব্রাহ্মণপাহাড় দিকে অগ্রসর হলে মুক্তিবাহিনী ছোট নাগাইশের কাছে নৌকাগুলোর ওপর অতর্কিত আক্রমণ চালায়। এতে পাকবাহিনীর দু‘টি নৌকা পান…

Read more »

মুক্তিযুদ্ধ প্রতিদিনঃ ১৮ আগস্ট, ১৯৭১

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> <table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody> <tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgUIdwkCFLsawXBhP4GLrCaQyCrcff7VB_SJ8okd99ksbrOYOJVri4-JO1w2KaYhCWjryj6p2gfX3WSVPaZcuQOgRAyhcF5u0Fu0zLoXZodJ1N0bcUVn5DoNPxYcR2jPS1Z4Tz9i5_tgdo/s1600/mp.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img border="0" height="331" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgUIdwkCFLsawXBhP4GLrCaQyCrcff7VB_SJ8okd99ksbrOYOJVri4-JO1w2KaYhCWjryj6p2gfX3WSVPaZcuQOgRAyhcF5u0Fu0zLoXZodJ1N0bcUVn5DoNPxYcR2jPS1Z4Tz9i5_tgdo/s1600/mp.jpg" width="640" /></a></td></tr> <tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;"></td></tr> </tbody></table> <b>১৮ আগস্ট, ১৯৭১</b><br /> <ul style="text-align: justify;"> <li>কুমিল্লার পাকসেনাদের তিনটি দল মুরাদনগর থেকে হোমনার দিকে নৌকায় অগ্রসর হয়। মুক্তিবাহিনীর গেরিলা দল মুরাদনগর থেকে ৮ মাইল দূরে পাকসেনাদের নৌকাগুলোকে এ্যামবুশ করে। গেরিলাদের গুলিতে দু‘টি নৌকা পানিতে ডুবে যায় এবং এবং একজন ক্যাপ্টেনসহ ২৯ জন পাকসেনা ও ৫ জন রাজাকার নিহত হয়। এ অভিযানে মুক্তিবাহিনী প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ দখল করে।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>বরিশালে পাকবাহিনীর ৪খানা গান বোট শরণখোলা রেঞ্জঅফিস অতিক্রম করে উত্তরদিকে যাবার পরে পরবর্তী ৩খানা গানবোর্টের ওপর ভোলা নদীর দুই পার থেকে মুক্তিযোদ্ধারা প্রবল গুলি বর্ষণ করে। এতে একটি গান বোর্ট বিধ্বস্ত হয় ও ৪ জন পাকসেনা নিহত হয়। ভোর থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত যুদ্ধ করেও নদীর পাড়ে অবতরণে ব্যর্থ হলে পাকসেনারা পিছু হটে। এ যুদ্ধের পর মুক্তিযোদ্ধারা ত্যারাবাকা হাট নামক স্থানে একত্র হয়।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>মুক্তিবাহিনী সিলেট শহরের কদমতলী ঝালোপাড়ার কাছে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর একটি জীপ এ্যামবুশ করে। এতে একজন পাক অফিসারসহ ৩ জন পাকসেনা নিহত হয়। সফল অভিযান শেষে মুক্তিযোদ্ধারা নিরাপদে নিজ ঘাঁটিতে ফিরে আসেন।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>নওগাঁর কুলফতেপুর পাকহানাদাররা মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর হামলা চালায়। এতে ৬ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন ও ১২ জন আহত হন।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের নিয়মিত কথিকা ‘বিশ্বজনমত’: </li> </ul> <blockquote class="tr_bq"> <div style="text-align: justify;"> বিশ্ব জোড়া প্রতিবাদ, ঘৃনা ও কোটি ধিক্কার উপেক্ষা করে পাক সামরিক চক্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিচার প্রহসন অব্যাহত রেখেছে।<br /> <br /> মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আন্ডার সেক্রেটারী ও প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত মিঃ চেস্টার বোলস শেখ মুজিবুর রহমানের তথাকথিত বিচারের কঠোর সমালোচনা করে বলেছেন: পাকিস্তানি সামরিক জান্তার সামরিক আদালতে শেখ মুজিবুর রহমানের যে গোপন বিচার চালাচ্ছে তা আগাগোড়া একটি প্রহসন মাত্র। পাকিস্তানি সামরিক জান্তার এটা একটা চরম ধৃষ্টতা। এ বিচার সকল রীতিনীতি ও আইন-কানুনের সম্পূর্ণ পরিপন্থি।<br /> <br /> ‘ওয়াশিংটন পোষ্ট’-এ একটি তথ্যপূর্ণ প্রবন্ধে মিঃ চেস্টার বোলস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে অতীতের সব ভুলত্রুটি সংশোধন করে পাকিস্তানের কাছে সামরিক অস্ত্র ও সমরসম্ভার বিক্রয় সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করা এবং পাকিস্তানকে সর্বপ্রকার অর্থনৈতিক সাহায্য দান একেবারে বন্ধ করে দেবার আহ্বান জানান।<br /> <br /> মার্কিন সিনেটের উদ্বাস্তু বিষয়ক কমিটির সভাপতি সিনেটর এডওয়ার্ড কেনেডী বলেন: পাকিস্তানি সামরিক জান্তার কাছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একমাত্র অপরাধ হলো তিনি নির্বাচনে জয়লাভ করেছেন। তাঁর বিচার আন্তর্জাতিক আইনের দিক থেকে বিচারের ব্যাভিচার ও ন্যায়বিচারের প্রহসন মাত্র।</div> </blockquote> <div style="text-align: justify;"> <blockquote class="tr_bq"> আদ্দিস আবাবা বেতার থেকে প্রচারিত এক খবরে বলা হয়: রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি ব্যাপারে সাহায্য করার জন্যে গঠিত আন্তর্জাতিক সংস্থা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তি জন্যে সারাবিশ্বে এক প্রচার অভিযান শুরু করবে।<br /> <br /> বিশ্ব জোড়া এই বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সত্ত্বেও পাকিস্তানি সামরিক জান্তার কাছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের গোপন বিচার প্রহসন অব্যাহত রেখেছে। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ এই প্রহসন মেনে নেয়নি। বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ আজ হানাদার উৎখাতে বদ্ধপরিকর।</blockquote> </div> <div> <br /> তথ্যসূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর । </div> </div>

মুক্তিযুদ্ধ প্রতিদিনঃ ১৮ আগস্ট, ১৯৭১

১৮ আগস্ট, ১৯৭১ কুমিল্লার পাকসেনাদের তিনটি দল মুরাদনগর থেকে হোমনার দিকে নৌকায় অগ্রসর হয়। মুক্তিবাহিনীর গেরিলা দল মুরাদনগর থেকে ৮ মাইল দূরে পাকসেনাদের নৌকাগুলোকে এ্যামবুশ করে। গেরিলাদের গুলিতে দু‘টি নৌ…

Read more »

মুক্তিযুদ্ধ প্রতিদিনঃ ১৭ আগস্ট, ১৯৭১

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> <table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody> <tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgUIdwkCFLsawXBhP4GLrCaQyCrcff7VB_SJ8okd99ksbrOYOJVri4-JO1w2KaYhCWjryj6p2gfX3WSVPaZcuQOgRAyhcF5u0Fu0zLoXZodJ1N0bcUVn5DoNPxYcR2jPS1Z4Tz9i5_tgdo/s1600/mp.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img border="0" height="332" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgUIdwkCFLsawXBhP4GLrCaQyCrcff7VB_SJ8okd99ksbrOYOJVri4-JO1w2KaYhCWjryj6p2gfX3WSVPaZcuQOgRAyhcF5u0Fu0zLoXZodJ1N0bcUVn5DoNPxYcR2jPS1Z4Tz9i5_tgdo/s1600/mp.jpg" width="640" /></a></td></tr> <tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;"></td></tr> </tbody></table> <b>১৭ আগস্ট, ১৯৭১</b><br /> <ul style="text-align: justify;"> <li>পাকসেনাদের একটি বিরাট দল নদীর পাড় দিয়ে এবং সঙ্গে সৈন্য বোঝাই তিনটি নৌকা শালদা নদী থেকে ব্রাহ্মণপাড়ার দিকে অগ্রসর হয়। পাকসেনাদের এই দলটিকে বীর মুক্তিযোদ্ধারা এ্যামবুশ করে। এই এ্যামবুশে নৌকার আরোহী ১৮ জন পাকসেনা নিহত হয়। পাকসোনদের নদীর পাড় দিয়ে আসা দলটির প্রবল চাপে মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটে।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>মুক্তিবাহিনী সারদা পুলিশ একাডেমীতে অবস্থানরত পাকিস্তানি কোম্পানীর ওপর অতর্কিত আক্রমণ চালায়। এই দুঃসাহসিক অভিযানে মুক্তিযোদ্ধা দলের একজন ব্যাতীত সকলেই শহীদ হন।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>মুক্তিবাহিনীর সুন্দরবন ক্যাম্পে ক্যাপ্টেন জিয়া মুক্তিযোদ্ধাদের কনফারেন্স ডাকেন। এ কনফারেন্সে বরিশালের চারটি থানা আক্রমণের জন্য পৃথক পৃথক দল গঠন করা হয়। দলগুলো হচ্ছে: ভান্ডারিয়া থানার জন্য সুবেদার আজিজ এবং লতিফের নেতৃত্বে ২০ জনের একটি দল; কাউখালী থানার জন্য কমান্ডার হাবিবের নেতৃত্বে ২০ জনের একটি দল; রাজাপুর থানার জন্য সুবেদার রুস্তমের নেতৃত্বে ২০ জনের একটি দল ও মঠবাড়িয়া থানার জন্য ক্যাপ্টেন জিয়ার নেতৃত্বে ৫০ জনের একটি দল।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>কুড়িগ্রামের চিলমারীর পূর্বদিকে অষ্টম ইস্ট বেঙ্গলের যোদ্ধরা পাকহানাদারদের দু‘টি অবস্থানের ওপর আক্রমণ চালায়। এ আক্রমণে পাকসেনারা অবস্থান দুটি পরিত্যাগ করে এবং ৪ জন পাকসেনা নিহত হয়।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>টাঙ্গাইলে ভাতকুরা ও পয়লার মাঝখানে মুক্তিবাহিনী ও পাকবর্বরদের মধ্যে তুমুল যুদ্ধ হয়। এই যুদ্ধে বীর মুক্তিযোদ্ধা বাকু শহীদ হন এবং মুক্তিযোদ্ধারা বিমান বিহার দাস পাকসেনাদের হাতে ধরা পড়েন।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>সিলেটে পাকহানাদার বাহিনী ব্যাপক হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ পরিচালনা করে। বানিয়াচঙ্গ থানা সদর থেকে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর এক বিশাল দল মাকালকান্দি গ্রামের ওপর হামলা চালিয়ে ৮৭ জন নিরীহ নিরপরাধ লোকে হত্যা করে। গুলিবিদ্ধ করে আরো কয়েকশ’ লোককে। লুন্ঠিত হয় পুরো গ্রাম। পাশের হারুনি গ্রামের ৫ জনকে ও পাকবর্বররা হত্যা করে।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>'খ' অঞ্চলের সামরিক প্রশাসক লে: জেনারেল টিক্কা খান আওয়ামী লীগের ১৬ জন জাতীয় পরিষদ সদস্যকে ২৩ আগস্টের মধ্যে সামরিক আদালতে হাজির হবার নির্দেশ দেয়। অন্যথায় তাঁদের অনুপস্থিতিতে বিচার করা হবে বলে ঘোষণা করে। এঁরা হচ্ছেন: আনোয়ার হোসেন তালুকদার, মোহাম্মদ বায়তুল্লাহ, খালিদ আলী মিয়া, শাহ মোহাম্মদ জাফরউল্লাহ, এ.এইচ.এম. কামরুজ্জামান, আমিরুল ইসলাম, আজিজুর রহমান আক্কাস, আবু আহমদ আবজালুর রশিদ, কামরুজ্জামান, ইকবাল আনোয়ারুল ইসলাম, সুবোধ কুমার মিত্র, খোন্দকার আব্দুল হাফিজ, সোহরাব হোসেন, এম. রওশন আলী, মোহাম্মদ মহসীন ও শহীদ উদ্দিন।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>লাহোরে পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীর আমীর গোলাম আজম বলেন, ভারত পাকিস্তানকে দ্বিখন্ডিত করার ব্যাপারে সশস্ত্র অনুপ্রবেশকারী (মুক্তিযোদ্ধা) পাঠিয়ে প্রকৃতপক্ষে পাকিস্তানের ওপর যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়েছে এবং যুদ্ধের মাধ্যমেই পাকিস্তানকে তার জবাব দিতে হবে। গোলাম আজম আওয়ামী লীগের ৮৮ জন জাতীয় পরিষদ সদস্যের আসন বহাল থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন।</li> </ul> <br /> তথ্যসূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর।</div>

মুক্তিযুদ্ধ প্রতিদিনঃ ১৭ আগস্ট, ১৯৭১

১৭ আগস্ট, ১৯৭১ পাকসেনাদের একটি বিরাট দল নদীর পাড় দিয়ে এবং সঙ্গে সৈন্য বোঝাই তিনটি নৌকা শালদা নদী থেকে ব্রাহ্মণপাড়ার দিকে অগ্রসর হয়। পাকসেনাদের এই দলটিকে বীর মুক্তিযোদ্ধারা এ্যামবুশ করে। এই এ্যামবুশে …

Read more »

মুক্তিযুদ্ধ প্রতিদিনঃ ১৬ আগস্ট, ১৯৭১

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> <table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody> <tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgUIdwkCFLsawXBhP4GLrCaQyCrcff7VB_SJ8okd99ksbrOYOJVri4-JO1w2KaYhCWjryj6p2gfX3WSVPaZcuQOgRAyhcF5u0Fu0zLoXZodJ1N0bcUVn5DoNPxYcR2jPS1Z4Tz9i5_tgdo/s1600/mp.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img border="0" height="332" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgUIdwkCFLsawXBhP4GLrCaQyCrcff7VB_SJ8okd99ksbrOYOJVri4-JO1w2KaYhCWjryj6p2gfX3WSVPaZcuQOgRAyhcF5u0Fu0zLoXZodJ1N0bcUVn5DoNPxYcR2jPS1Z4Tz9i5_tgdo/s1600/mp.jpg" width="640" /></a></td></tr> <tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;"></td></tr> </tbody></table> <b>১৬ আগস্ট, ১৯৭১</b><br /> <ul style="text-align: justify;"> <li>কুমিল্লা থেকে তিন মাইল উত্তর-পূর্ব দিকে ক্যাপ্টেন মাহবুবের নেতৃত্বে মুক্তিবাহিনী পাকসেনাদের কংসতলা অবস্থানের ওপর অতর্কিত আক্রমণ করে। তুমুল সংঘর্ষে কিংকতব্যবিমুঢ় পাকসেনারা পর্যুদস্তু হয়ে তাদের ঘাঁটি ছেড়ে পালিয়ে যায়। এই সংঘর্ষে একজন অফিসারসহ ৩০ জন পাকসৈন্য হতাহত হয়। অভিযান শেষে মুক্তিযোদ্ধা দল নিরাপদে নিজ ঘাঁটিতে ফিরে আসে।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>৩নং সেক্টরের কটিয়াদীতে হাবিলদার আকমল আলীর নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদল পাকসৈন্য বোঝাই কয়েকটি মোটর লঞ্চকে এ্যামবুশ করে। এই এ্যামবুশে পাকবাহিনীর কয়েকটি লঞ্চ বিধ্বস্ত হয়ে পানিতে ডুবে যায় এবং ১৪৩ জন পাক সৈন্য নিহত ও অনেকে আহত হয়।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>বগুড়ায় সৈয়দ ফজলুল আহসান দিপুর নেতৃত্বে মুক্তিবাহিনী সারিয়াকান্দি থানার নিকটবর্তী রামচন্দ্রপুর গ্রামে পাকহানাদারদের একটি দলকে ধলাপাড়া ঘাটে আক্রমণ করে। এতে ৩০ জন পাকসেনা নিহত ও বহু আহত হয়। অপরদিকে বীর মুক্তিযোদ্ধা হাতেম শহীদ হন এবং কাদের সিদ্দিকী আহত হন।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>নিজামউদ্দিন লস্কর ময়নার নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদল সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কে জয়কলস সেতুর কাছে পাকহানাদারদের আক্রমণ করে। এতে পাকসেনারা পাল্টা আক্রমণ চালায়। ১২ ঘন্টা ব্যাপী এ যুদ্ধে ৯ জন পাকসেনা নিহত ও ১০ জন আহত হয়। যুদ্ধে অধিনায়কসহ ৪ জন মুক্তিযোদ্ধা আহত হয়।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>ফেনীতে পাকবাহিনীর দু'টি শক্তিশালী প্লাটুন নাগাইশের দিকে অগ্রসর হলে সুবেদার নজরুল ও সুবেদার মুনিবের নেতৃত্বে মুক্তিবাহিনী তাদের ওপর আকস্মিক আক্রমণ চালায়। এতে ২৫ জন পাকসেনা নিহত হয়।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী নয়াদিল্লীতে বলেন, বাংলাদেশের সঙ্কটজনিত পরিস্থিতি স্বাধীনতার পর ভারতের জন্যে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। বিপুল শরণার্থীর চাপে ভারতের অর্থনীতি সঙ্কটের মুখে।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>সামরিক শাসক ১৪ জন জাতীয় পরিষদ সদস্যকে ২২ আগস্ট সকাল ১০টার মধ্যে নাটোরে ২নং সেক্টরের উপ-সামরিক আইন প্রশাসকের আদালতে হাজির হবার নির্দেশ দেয়। এঁরা হচ্ছেন: রিয়াজউদ্দিন আহমেদ, মোশাররফ হোসেন চৌধুরী, মতিউর রহমান, মফিজ আলী মোহাম্মদ চৌধুরী, মোঃ আজিজুর রহমান, শাহ মাহতাব আহমেদ, মুজিবুর রহমান, মোতাহার হোসেন তালুকদার, আবদুল আউয়াল, আবদুল মোমিন তালুকদার, আবু সাঈদ, এ.বি.এম. মোকসেদ আলী ও অধ্যাপক মোঃ ইউসুফ আলী।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের নিয়মিত কথিকা "বিশ্বজনমত":</li> </ul> <div style="text-align: justify;"> <blockquote class="tr_bq"> পৃথিবীর দেশে দেশে শান্তিকামী মানুষ দেশবরেণ্য জননেতা, বুদ্ধিজীবী সমাজ, বেতার, টেলিভিশন ও সংবাদপত্র পাকিস্তানি নরঘাতী তস্করদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে।</blockquote> </div> <div style="text-align: justify;"> <blockquote class="tr_bq"> 'ওয়াশিংটন স্টার' পত্রিকার এক সম্পাদকীয়তে বলা হয়: শেখ মুজিবুর রহমানের বিচার প্রহসন শুরু করে পাকিস্তানের মূঢ় সামরিক চক্র এক প্রচন্ড ভুল করে বসেছে। ইয়াহিয়া আর তার সাঙ্গপাঙ্গদের একথা বোঝা উচিত যে নেতা হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মর্যাদা প্রশ্নাতীত।</blockquote> </div> <div style="text-align: justify;"> <blockquote class="tr_bq"> 'ক্রীশ্চিয়ান সায়েন্স মনিটর' পত্রিকার এক সম্পাদকীয়তে বলা হয়: শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের প্রাণপ্রিয় নেতা। পাকিস্তানের জঙ্গী সামরিক চক্র বিচার প্রহসনের দ্বারা যদি তাঁর কিছু করে, তাহলে পাকিস্তান বাংলাদেশ থেকে যে চিরতরে বিদায় হবে তা নয় বরং মূল পাকিস্তানটাই চূর্ণ হয়ে যাবে।</blockquote> </div> <div style="text-align: justify;"> <blockquote class="tr_bq"> যুগোশ্লাভ দৈনিক 'বেলগ্রেড বোরবা' পত্রিকার সম্পাদকীয়তে বলা হয়: শেখ মুজিবুর রহমানের বিচার প্রহসন করতে গিয়ে ইয়াহিয়া তার নিজের সমস্যার সমাধানের সকল পথই রুদ্ধ করেছে। এখন অন্ধকারে মাথা কুটে মরা ছাড়া তার আর দ্বিতীয় কোন পথ নেই।</blockquote> </div> <div style="text-align: justify;"> <blockquote class="tr_bq"> 'জাকার্তা টাইমস' এর প্রতিবেদনে বলা হয়: শেখ মুজিবুর রহমান হলেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় নেতা। তার বিচার প্রহসন চালাতে গিয়ে ইয়াহিয়া পাকিস্তানের সর্বস্ব খোয়ানোর ঝুঁকি নিয়েছে। ইয়াহিয়া আর তার সাঙ্গপাঙ্গরা ভুল ঘোড়ায় বাজি ধরেছে।</blockquote> </div> <br /> তথ্যসূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর।</div>

মুক্তিযুদ্ধ প্রতিদিনঃ ১৬ আগস্ট, ১৯৭১

১৬ আগস্ট, ১৯৭১ কুমিল্লা থেকে তিন মাইল উত্তর-পূর্ব দিকে ক্যাপ্টেন মাহবুবের নেতৃত্বে মুক্তিবাহিনী পাকসেনাদের কংসতলা অবস্থানের ওপর অতর্কিত আক্রমণ করে। তুমুল সংঘর্ষে কিংকতব্যবিমুঢ় পাকসেনারা পর্যুদস্তু হয়…

Read more »

মুক্তিযুদ্ধ প্রতিদিনঃ ১৫ আগস্ট, ১৯৭১

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> <table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody> <tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgUIdwkCFLsawXBhP4GLrCaQyCrcff7VB_SJ8okd99ksbrOYOJVri4-JO1w2KaYhCWjryj6p2gfX3WSVPaZcuQOgRAyhcF5u0Fu0zLoXZodJ1N0bcUVn5DoNPxYcR2jPS1Z4Tz9i5_tgdo/s1600/mp.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img border="0" height="332" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgUIdwkCFLsawXBhP4GLrCaQyCrcff7VB_SJ8okd99ksbrOYOJVri4-JO1w2KaYhCWjryj6p2gfX3WSVPaZcuQOgRAyhcF5u0Fu0zLoXZodJ1N0bcUVn5DoNPxYcR2jPS1Z4Tz9i5_tgdo/s1600/mp.jpg" width="640" /></a></td></tr> <tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;"></td></tr> </tbody></table> <b>১৫ আগস্ট, ১৯৭১</b><br /> <ul style="text-align: justify;"> <li>২নং সেক্টরে মুক্তিবাহিনীর এক প্লাটুন যোদ্ধা পাকসোদের রসদ বোঝাই দু‘টি নৌকাকে ব্রাহ্মণপাড়া থেকে নয়ানপুর যাবার পথে অতর্কিত আক্রমণ করে। এই আক্রমণে পাকবাহিনীর রসদ বোঝাই নৌকা দু‘টি বিধ্বস্ত হয়ে পানিতে ডুবে যায় এবং ১১ জন পাকসেনা নিহত হয়।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>কুমিল্লায় মুক্তিবাহিনীর একটি সম্মিলিত দল হোমনা থানার ওপর অতর্কিত আক্রমণ করে। থানার ভিতরে অবস্থিত পাক পুলিশ ও সেনারা আক্রমণ প্রতিহত করার চেষ্টা চালায়। কিন্তু দ‘ঘন্টা তুমুল যুদ্ধের পর তারা মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে আত্মসমর্পন করতে বাধ্য হয়। এই যুদ্ধে পাকবাহিনীর ১০ জন সৈন্য নিহত হয় ও ১৪ জন মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে বন্দী হয়।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>সন্ধ্যায় মেজর আবু তাহেরর নেতৃত্বে ১৫০ জন মুক্তিযোদ্ধা ময়মনসিংহে পাকহানাদার বাহিনীর কামালপুর ঘাঁটির ওপর তীব্র আক্রমণ চালায়। দু‘ঘন্টা স্থায়ী এ যুদ্ধে পাকবাহিনীর ১৫/১৬ জন সৈন্য নিহত হয়। অপরদিকে মুক্তিবাহিনীর ১৫ জন যোদ্ধা আহত হয়।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>মার্কিন সিনেটের উদ্বাস্তু সংক্রান্ত সাব-কমিটির চেয়ারম্যান সিনেটর এডওয়ার্ড কেনেডি নয়াদিল্লিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী সরদার শরণ সিংয়ের সাথে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ ও শরণার্থী পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>পাকিস্তানের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হামিদুল হক চৌধুরী লন্ডনে বলেন, যারা স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছেন তারা মীর জাফরের মতোই ভুল করছেন। মীর জাফর বাংলার স্বাধীনতা বিকিয়ে দিয়েছিল।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>পাকিস্তান সরকার জাতিসংঘের মহাসচিব উ'থান্টের বিবৃতির তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, 'শেখ মুজিব দেশ ও জাতির শত্রু। তার বিচার সম্পূর্ণভাবে পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। শেখ মুজিবের বিচারে নাক গলিয়ে জাতিসংঘ তার সীমা ছাড়িয়ে গেছে।'</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের নিয়মিত কথিকামালা বিশ্বজনমত :</li> </ul> <blockquote class="tr_bq"> <div style="text-align: justify;"> গত ২৫ মার্চ থেকে ইয়াহিয়ার বর্বর সামরিক চক্র বাংলাদেশে যা করেছে সমস্ত বিশ্ব তাতেই হতবাক হয়েছে। জাতিসংঘের সেক্রেটারী জেনারেল উ' থান্ট বর্ণিত মানব ইতিহাসের সেই সর্বাধিক কলঙ্কজনক অধ্যায় রচনার পর এবং মার্কিন সিনেটর এডওয়ার্ড কেনেডি বর্ণিত মানব ইতিহাসের বৃহত্তম বিপর্যয় সৃষ্টির পর ইয়াহিয়ার বর্বর সেনাবাহিনীর বর্তমান বাংলার নয়নমণি শেখ মুজিবুর রহমানের নামে মিথ্যে অভিযোগ এনে সামরিক আদালতে বিচার প্রহসন শুরু করেছে।</div> </blockquote> <blockquote class="tr_bq"> <div style="text-align: justify;"> কানাডার প্রধানমন্ত্রী মিঃ ট্রুডো পাকিস্তানের জঙ্গি প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়ার কাছে এক তারবার্তায় শেখ মুজিবুর রহমানের বিচার প্রহসনে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, এর পরিণতি অত্যন্ত গুরুতর হবে।</div> </blockquote> <blockquote class="tr_bq"> <div style="text-align: justify;"> ‘টাইমস’ পত্রিকায় প্রখ্যাত বৃটিশ আইনজীবী ডাবলিউ.টি. উইলিয়ামের একটি চিঠি প্রকাশিত হয়েছে। চিঠিতে উইলিয়াম বলেছেন, যেভাবে সামরিক আদালতে শেখ মুজিবের গোপন বিচার প্রহসন শুরু হয়েছে তাতে তিনি ও বিশ্বের বিবেকবান সকল মানুষ গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, পাক সামরিক চক্র মূঢ়তার বশে মিথ্যা অভিযোগে শেখ মুজিবুর রহমানকে যদি কোন রকমের দন্ড দেয় তাহলে তার পরিণতি হবে অত্যন্ত ভয়াবহ।</div> </blockquote> <blockquote class="tr_bq"> <div style="text-align: justify;"> ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকার এক সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, মিথ্যা অভিযোগে তুলে শেখ মুজিবুর রহমানের বিচার প্রহসন শুরু করে পাকিস্তানের ক্ষমতাসীন সামরিক জান্তা এক মারাত্মক ভুল করেছে। পাকিস্তান সামরিক জান্তা যদি এই তথাকথিত বিচারে শেখ মুজিবুর রহমানের প্রাণদন্ড দেয় তাহলে সেটাই হবে সবচেয়ে মারাত্মক ভুল। আর সেই ভুল সংশোধনের কোন পথ থাকবে না।</div> </blockquote> <br /> তথ্যসূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর।</div>

মুক্তিযুদ্ধ প্রতিদিনঃ ১৫ আগস্ট, ১৯৭১

১৫ আগস্ট, ১৯৭১ ২নং সেক্টরে মুক্তিবাহিনীর এক প্লাটুন যোদ্ধা পাকসোদের রসদ বোঝাই দু‘টি নৌকাকে ব্রাহ্মণপাড়া থেকে নয়ানপুর যাবার পথে অতর্কিত আক্রমণ করে। এই আক্রমণে পাকবাহিনীর রসদ বোঝাই নৌকা দু‘টি বিধ্বস্ত …

Read more »

অপারেশন নিউমার্কেট: পেট্রোল পাম্প

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> <div style="text-align: justify;"> <table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody> <tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhn21mwcsA-NZZrB3DazcGepvgToVb-Q7Mxe99oEVuszAOxzieowhCZ8JhzTNPBfcNsDbo0GAq1XjpZ4mSPFeKa2NUljh-RxcXGi1mnaDnH_skpyxnpuM5VttWaxHYxLws5SisE9Z6qwgE/s1600/mjo1.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img border="0" data-original-height="591" data-original-width="1138" height="332" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhn21mwcsA-NZZrB3DazcGepvgToVb-Q7Mxe99oEVuszAOxzieowhCZ8JhzTNPBfcNsDbo0GAq1XjpZ4mSPFeKa2NUljh-RxcXGi1mnaDnH_skpyxnpuM5VttWaxHYxLws5SisE9Z6qwgE/s640/mjo1.jpg" width="640" /></a></td></tr> <tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;"> </td></tr> </tbody></table> </div> <div style="text-align: justify;"> </div> <div style="text-align: justify;"> জুলাই থেকে আগস্টের মাঝামাঝি এই সময়টায় ঢাকায় ইতিমধ্যে বড়সড় ধাক্কা খাওয়া পাকিস্তানীদের উপর আরো রুদ্ররোষে ঝাঁপিয়ে পড়বার জন্য সেক্টর- ২ এর সমন্বয়ক ও অস্ত্র বন্টনের দায়িত্বে থাকা শহীদুল্লাহ খান বাদল এবং সেকেন্ড ইন কমান্ড গেরিলা প্রশিক্ষক মেজর এটিএম হায়দার পুরোনো ও নতুন ট্রেনিং পাওয়া ছাত্র মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে আবার ঢাকা যাবার নির্দেশ দেন। ১০ জন তরুণের আলাদা একটি দল প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মুরাদনগর দিয়ে ঢাকায় ঢোকেন। এদের নেতৃত্বে ছিলেন হাবিবুল আলম বীর প্রতীক। প্রায় ৫০-৬০ পাউন্ড বিস্ফোরক ও ডেটোনেটর, ২-৩টি এনেগ্রা-৯৪ গ্রেনেড, দুটি ভারতীয় এসএমজি এবং আলমের ব্যক্তিগত চীনা এসএমজি। অস্ত্র ও গোলাবারুদ এনে রাখা হয়েছিল আলমের ১/৩ দিলু রোদ, নিউ ইস্কাটনের বাড়িতে।</div> <div style="text-align: justify;"> <br /> জনাব হাতেম নামে আলমের এক ভগ্নিপতি ছিলেন। ভদ্রলোক পেশায় ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার, চাকুরি করতেন ওয়াপদায়। হাসিখুশি সাধাসিধে মানুষটা প্রায়ই আলমদের বাড়ি আসতেন, তার সাথে আলমের ছিল বেশ বন্ধুত্বপূর্ন সম্পর্ক। ভাই-বোনদের মধ্যে সবার বড় আসমা আলমদের গেরিলা অপারেশন সম্পর্কে সবই জানতো; সত্যি বলতে কি গেরিলাদের আশ্রয় দেওয়া, সেবাযত্ন করা, অস্ত্র-গোলাবারুদ পরিষ্কার করা, যত্ন নেওয়ার কাজটা আসমাই করতো। সে কারণেই হাতেমকে জীপটা ব্যবহার করতে দেবার জন্য আসমাকে বলে আলম।<br /> <br /> কারণ ঢাকায় আসার পর থেকেই আলমেরা একটা জীপ খুঁজছিল, যা নিয়ে নির্বিঘ্নে তারা ঢাকায় অপারেশন চালাতে পারবে। তো, একদিন যখন হাতেম তার নিশান পেট্রোল জীপটি নিয়ে আলমদের বাড়ি এলেন, তখন আলম সিদ্ধান্ত নিল সে জীপটি যেভাবেই হোক নিয়ে নেবে। হাতেম চলে যাবার পর আলমের কথামত আসমা হাতেমকে ফোন করে বললেন যেন জীপটি ব্যবহার করার অনুমতি দেন তিনি। আসমা মুভি দেখতে যাবেন। বেশ কিছুক্ষণ অনুরোধের পর রাজি হয়ে গেলেন হাতেম, কিন্তু গোঁ ধরে বসলেন যে তিনিও যেতে চান মুভি দেখতে। এখন তাকে তো আর বলা যায় না যে, আলমেরা জীপটি নিয়ে আসলে ঢাকা শহরে গেরিলা অপারেশন চালাতে যাচ্ছে। কিন্তু তাকে কিভাবে কাটানো যায়?<br /> <br /> শেষমেষ তাকে আসমা ফোন করে জানালো, এই ছবিটা আসলে বাচ্চাদের ছবি, এটা দেখে তার লাভ নেই। তাকে এটাও বলে আসমা যে খুব দ্রুতই তাকে নিয়ে মুভি দেখতে যাওয়া হবে। সাধাসিধে লোক হওয়ায় তিনি আর কোন সন্দেহ না করে আসমাকে বলেন, বিকেলে তার বাসায় এসে আলম যেন জীপটা নিয়ে যায় কারণ গাড়ীটা ওয়াপদার এবং কেবল অফিস শেষে ফিরলেই আলম জীপটা পেতে পারে। শেষ পর্যন্ত আলমের কৌশলে কাজ হলো এবং একটা বেশ ভালো জীপ যোগাড় করা গেল।<br /> <br /> ওদের হাতে সময় ছিল ১৪-১৬ ঘন্টা। আলম বাকি তিনজন মুক্তিযোদ্ধা আনু, শহীদ এবং জিয়ার সাথে যোগাযোগ করলো। আনু জানালো, সে দরকার হলে মুক্তিযোদ্ধা টুটুলকে আনবে। যেহেতু বাকি দুজন গাড়ি চালাতে পারতো না, তাই আলম সিদ্ধান্ত নিল সে জীপের স্টিয়ারিং হুইল ধরবে, জিয়ার হাতে থাকবে ভারতীয় এসএমজি। এক্সপ্লোসিভগুলো থাকবে আনুর হাতে এবং সেই এগুলো টার্গেটে বসাবে।<br /> <br /> এই ছোট্ট দলটার লক্ষ্য ছিল হোম ইকোনমিক্স কলেজের পাশের পেট্রোল পাম্পটি উড়িয়ে দেওয়া। নিউমার্কেটের ঠিক বামপাশেই এই স্থাপনাটা ছিল শাহেদ শেখ নামের এক উর্দুভাষী পাকিস্তানী ব্যবসায়ীর। জায়গাটার একপাশে ছিল হোম ইকোনমিক্স কলেজ, অন্যপাশে ছিল প্রধান রাস্তা। রাস্তাটি হাতের বামে আজিমপুর কলোনী এবং ডানে নিউ মার্কেট রেখে চলে গেছে পশ্চিম দিকে। আলমেরা নাটকের ক্লাব এজিয়ানে সদস্য থাকার সময় থেকে শাহেদ শেখকে চিনত। ক্লাবের ইংরেজী নাটকগুলো পরিচালনা করত সে। আলম-শহীদ-জিয়া খবর পেয়েছিল শাহেদ শেখ পাকিস্তানী আর্মিকে সর্বাত্মক সহায়তা করছে। তাই তাকে একটা শিক্ষা দেওয়ার জন্য এবং পাকিস্তানীদের ভয় দেখানোর জন্য এই অপারেশন নিউমার্কেট চালাবার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।<br /> <br /> তারা প্ল্যান করে যে, পেট্রোল পাম্পের তেলের ট্যাংকের উপর এনাগ্রা গ্রেনেডটা উল্টো করে বসানো হবে, যেন এটা মাটির নিচের তেলের ট্যাংকের ঠিক উপরের দিকটায় আঘাত হানে। আনুর দায়িত্ব ছিল, গ্রেনেডটা বসিয়ে এর উপর এক্সপ্লোসিভ লেপে দেওয়া এবং তিনটি কাঠি দিয়ে একটা ট্রাইপড তৈরি করে ট্যাংকের উপর রাখা। শহরের সব পেট্রোল পাম্পের গ্যাসোলিন ট্যাংকগুলো মাটির ৪-৫ ফুট নিচে থাকে এবং কালো একটি স্টিলের কভার দিয়ে আন্ডারগ্রাউন্ড এই ট্যাংকটি ঢাকা থাকে এবং কালো এই স্টিলের কভারটি তুললে দেখা যায় ভেতরে একটা লাল রঙয়ের প্যাঁচানো স্টিলের কভার তালা মারা। এটার উপরেই এক্সপ্লোসিভ লেপা গ্রেনেড বসানোর সিদ্ধান্ত হয়।<br /> <br /> বিকেল ৩টায় আলম হাতেম সাহেবের বাসায় যায়। সেখান থেকে জীপটা নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর দিয়ে শহীদ মিনার ও ঢাবির অংক ও ভূগোল বিভাগ ভবন পাশে ফেলে বিজ্ঞান অনুষদ কার্জন ভবনের সামনে দিয়ে হাইকোর্ট ভবনটা বাঁয়ে রেখে চলে আসে। প্রায় ঘন্টাখানেক ধরে জীপটা নিয়ে সারা শহরময় ঘুরে বেড়াবার কারণ হলো, আলম আগে কখনো জীপ চালায়নি, তাই অপারেশনের সময় যেন জীপ চালাতে সমস্যা না হয়, আর যদি কেউ অনুসরণ করেই থাকে, সে যেন ইতিমধ্যে ক্লান্ত ও বিরক্ত হয়ে হাল ছেড়ে দেয়।<br /> <br /> তো জীপটি নিয়ে ফিরে আসার পর বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে জিতা আর আনু আলমের বাসায় আসে। তিনজন মিলে এনাগ্রা গ্রেনেড আর ট্রাইপড প্রস্তুত করে। গ্রেনেডটা পিইকে এক্সপ্লোসিভের সাথে সংযুক্ত করে তিন মিনিটের একটা ফিউজ লাগিয়ে ডেটোনেটর লাগানো হয়। আনু তিনটি কাঠের টুকরা দিয়ে ট্রাইপডটা প্রস্তুত করে। ইন্ডিয়ান এসএমজিটা রাখা হয় সামনের সিটের নিচে যেন জিয়া প্রয়োজনের সময় দ্রুত সেটা ব্যবহার করতে পারে। তিনজন মিলে জীপে করে দিলু রোড থেকে নিউ মার্কেটের দিকে এগোতে থাকে, আনু বসেছিল পেছনে আর সামনে জিয়া ড্রাইভ করতে থাকা আলমের পাশে। আলম আনু আর জিয়াকে জিজ্ঞেস করলো, "তোমরা ঘাবড়ে গেছো নাকি?"। জিয়া আর আনু জবাব দিল, অবশ্যই না!<br /> <br /> হোম ইকোনমিক্স কলেজের সামনে দিয়ে ইডেন কলেজ হয়ে ডানে ঘুরে আজিমপুর কোয়াটারে প্রবেশ করে জীপ, এখানেই টুটুলের বাসা, সে অপেক্ষায় ছিল বাসার সামনেই। সমস্যাটা হচ্ছে আলমের ভগ্নীপতি হাতেমের বাসা হয়েই টুটুলের বাসায় যেতে হয়। তো হাতেমের বাসার সামনে এসে হঠাৎ করেই হতভম্বের মতো আলম আবিষ্কার করল যে ফুল হাতা শার্ট আর লুঙ্গি পড়ে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা হাতেমের দিকে সে তাকিয়ে আছে। বিস্ময়ের ঘোর কাটিয়ে হাতেম হাত তুলে জীপ থামাতে বলেন কিন্তু আলম তাকে এমনভাবে এড়িয়ে যায় যে কখনো তাকে দেখেইনি এবং চেনেও না! মুভি দেখার কথা বলে নেওয়া তার জীপ নিয়ে শহরময় ঘুরে বেড়ানো আলম তাকে এভাবে পাত্তা না দিয়ে চলে যাবে, হাতেম সম্ভবত স্বপ্নেও ভাবেননি। কিন্তু তার বিস্ময় বা রাগ দেখার সময় বা সুযোগ আলমদের ছিল না। একেবার অন্য রাস্তা দিয়ে জীপ ঘুরিয়ে আলম টুটুলের বাসার সামনে এসে টুটুলকে তুলে নিল। তাকে ব্রিফ করলো বাকিরা।<br /> <br /> এরপর খুব দ্রুত আলম জীপ ঘুরিয়ে রাস্তার মোড়ে নিয়ে এল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে মুখ করে গাড়িটাকে এমনভাবে পার্ক করা হলো যেন দ্রুত সটকে পড়া যায়। ডান পাশে পড়লো "শেখ পেট্রোল পাম্প"। জীপটা যেইমাত্র থেমেছে, ঠিক তখনই হঠাৎ পূর্ব পাকিস্তান রাইফেলসের ৪-৫টা বেডফোর্ড ট্রাকের গর্জন শোনা গেল। এগুলো ফিরে যাচ্ছিল পিলখানায়। এই বহরের সামনে ছিল একটা ডজ ট্রাক এবং তার হুডের উপর একটা এলএমজি লাগিয়ে পিছে দাঁড়িয়ে ছিল এক সৈনিক। এতো দ্রুত পুরো বহর চলে এসেছে যে আর পালানো বা আড়াল নেবার উপায় নাই।<br /> <br /> খুবই আশংকাজনক সেই পরিস্থিতিতে আলম চাপা গলায় বললো, "কেউ মুভ করবা না। কয়েক মিনিট অপেক্ষা করি, জীপ থেকে নামবো না আমরা। ওরা চলে যাক। যদি এগিয়ে এসে চ্যালেঞ্জ করে, তাহলে জীপ নিয়ে পালায়ে যাবো। বাট নো রাশ মুভমেন্টস।"<br /> <br /> সৌভাগ্যক্রমে কিছুক্ষণের মধ্যে পুরো বহরটা পার হয়ে গেল জীপের পাশ দিয়ে। ততক্ষণে অন্ধকার হয়ে আসায় সুবিধা হলো গেরিলাদের। আলম খুব সাবধানে জীপের ব্যাকভিউ মিরর দিয়ে পেছনে তাকিয়ে নিশ্চিত হয়ে নিল যে বহরটা নিউ মার্কেটের সেকেন্ড গেটে থেমেছে কিনা। না, থামেনি। সাথে সাথে গেট খুলে লাফ দিয়ে নামলো সবাই, আনু আর টুটুল এনাগ্রা-৯৪ গ্রেনেড এবং ট্রাইপড নিয়ে সরাসরি চলে গেল তেলের ট্যাংকের দিকে। ট্রাইপডে ঝুলে থাকা এনাগ্রা গ্রেনেডটা বসানো হলো পেট্রোল পাম্পের তেলের ট্যাংকের সেই লাল কাভারের উপর, লেপে দেওয়া হলো এক্সপ্লোসিভ দিয়ে। গ্রেনেডটির মাথার দিকটি ছিল ট্যাংকের উপর, যেন প্রথম ধাক্কাতেই ট্যাংকটা বিস্ফোরিত হয়ে ধ্বংস হয়ে যায়। কিন্তু তাড়াতাড়ি গ্রেনেডটা বসাতে গিয়ে দুজন খেয়াল করেনি যে, কাঠের ট্রাইপডের একটা পা সরে যাওয়ায় বসানো গ্রেনেডটার মুখ আর তেলের ট্যাংকটির দিকে না গিয়ে দেয়ালের দিকে চলে গেছে। তখন আসলে এত কিছু দেখার সময় ছিল না। ফিউজে আগুন ধরিয়েই জীপের দিকে দৌড় দিল।<br /> <br /> আলম জীপ স্টার্ট দিয়ে অপেক্ষায় ছিল, তারা উঠেছে কি ওঠেনি, এক্সিলেটোরে পা দাবিয়ে জীপ টান দিল আলম। ঠিক হাইকোর্ট আর পিডব্লিউ ভবনের মাঝখানে যখন জীপ, প্রচণ্ড বিস্ফোরণে মাটি কেঁপে উঠলো থর থর করে, হইচই পড়ে গেল সর্বত্র। শব্দ শুনে মনে হচ্ছিল পেট্রোল পাম্প তো বটেই আশেপাশের সবকিছু উড়ে গেছে। প্রচণ্ড আনন্দিত চারজন একে অন্যকে ধরে উল্লাসে ফেটে পড়লো। আলম তাদের বাড়ি নামিয়ে দিয়ে জীপ নিয়ে ফিরে এলো দিলু রোডে।<br /> <br /> পর দিন পত্রিকার খবর বেরোলো এবং তুমুল হইচই পড়ে গেল যে কারা যেন নিউমার্কেটের পাশের পেট্রোল পাম্পটা উড়িয়ে দিতে গিয়ে পেট্রোল পাম্পের বদলে সাথের হোম ইকোনমিক্স কলেজের পুরো দেয়ালে বোমা মেরেছে। দেয়ালসহ একটা পাশ ধ্বসে গেছে। আলমদের একটু মন খারাপ হলো, কারণ ওই যে তাড়াহুড়ায় গ্রেনেডের মাথাটা দেওয়ালের দিকে চলে যাওয়ায় পুরো শকটা গিয়ে লেগেছে দেওয়ালে, ট্যাংকে না। তবুও তারা এই ভেবে খুশি হলো যে, পুরোটা ওড়ানো না গেলেও পেট্রোল পাম্পের বিশাল ক্ষয়ক্ষতি করা গেছে, ঢাকা শহরে পাকিস্তানীদের সবকিছু শান্ত নিরুপদ্রব রাখার আয়োজন আরেকবার তুমুল তুলকালামে মাটির সাথে মিশিয়ে দেওয়া গেছে, তাদের আরেকবার ভয় দেখানো গেছে, কাঁপিয়ে দেওয়া গেছে ঢাকা!<br /> <br /> হাতেমের জীপটি তাকে ফেরত দেয় আলম এবং ওয়াদা করে শীঘ্রই তাকে নিয়ে একটা মুভি দেখে তার মনের আশা পূরন করবে। কিন্তু সর্বক্ষণ জীবন হাতে নিয়ে মৃত্যুর সাথে খেলে বেড়ানো গেরিলা আলম বা আসমার সেই প্রতিশ্রুতি রাখার আর সুযোগ হয়নি!<br /> <br /> তথ্যসূত্র- ব্রেভ অফ হার্ট, হাবিবুল আলম বীরপ্রতীক<br /> প্রথম প্রকাশিতঃ <a href="http://egiye-cholo.com/newmarket-petrol-pump/">http://egiye-cholo.com/newmarket-petrol-pump/</a><br /> সার্বিক কৃতজ্ঞতা- <a href="http://egiye-cholo.com/">http://egiye-cholo.com</a></div> </div>

অপারেশন নিউমার্কেট: পেট্রোল পাম্প

  জুলাই থেকে আগস্টের মাঝামাঝি এই সময়টায় ঢাকায় ইতিমধ্যে বড়সড় ধাক্কা খাওয়া পাকিস্তানীদের উপর আরো রুদ্ররোষে ঝাঁপিয়ে পড়বার জন্য সেক্টর- ২ এর সমন্বয়ক ও অস্ত্র বন্টনের দায়িত্বে থাকা শহীদুল্লাহ খান বাদল এবং…

Read more »

মুক্তিযুদ্ধ প্রতিদিনঃ ১৮ এপ্রিল, ১৯৭১

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> <table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody> <tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgUIdwkCFLsawXBhP4GLrCaQyCrcff7VB_SJ8okd99ksbrOYOJVri4-JO1w2KaYhCWjryj6p2gfX3WSVPaZcuQOgRAyhcF5u0Fu0zLoXZodJ1N0bcUVn5DoNPxYcR2jPS1Z4Tz9i5_tgdo/s1600/mp.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img border="0" height="332" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgUIdwkCFLsawXBhP4GLrCaQyCrcff7VB_SJ8okd99ksbrOYOJVri4-JO1w2KaYhCWjryj6p2gfX3WSVPaZcuQOgRAyhcF5u0Fu0zLoXZodJ1N0bcUVn5DoNPxYcR2jPS1Z4Tz9i5_tgdo/s640/mp.jpg" width="640" /></a></td></tr> <tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;"></td></tr> </tbody></table> ১৮ এপ্রিল, ১৯৭১<br /> <ul style="text-align: justify;"> <li>কলকাতায় নিযুক্ত পাকিস্তানের ডেপুটি হাই কমিশনার জনাব এম.ভি হোসেইন আলী বাংলাদেশের প্রতি তাঁর পূর্ণ আনুগত্য ঘোষণা করেন। তিনি সেখানে উপস্থিত কূটনৈতিক ব্যক্তিবর্গের উল্লাসধ্বনির মাধ্যমে সবুজ ও সোনালি রঙের বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন। পাকিস্তানিদের গণহত্যার প্রতিবাদে মিশনের সকল বাঙালি কর্মচারিদের নিয়ে তিনি বাংলাদেশের পক্ষে যোগ দেন।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>লর্ড ব্রাকওয়ে লন্ডনে পূর্ব পাকিস্তানে পাক বাহিনীর তৎপরতার তীব্র নিন্দা প্রকাশ করে বলেন, “এটি হিটলারের পরবর্তী সময়কার চরম নিষ্ঠুরতা ও পাশবিকতার দৃষ্টান্ত।” তিনি এখানে অনুষ্ঠিত ঔপনিবেশিক স্বাধীনতা আন্দোলনের সম্মেলনে বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দানের আহ্বান জানান।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>লন্ডনে “জাস্টিস ফর দ্যা ইস্ট বেঙ্গল” নামে একটি সাহায্যকারী সমিতি গঠন করা হয়। সমিতির সভাপতি শ্রমিক দলীয় এম.পি. ব্রুস ডগলাসম্যান, শরণার্থী শিবির পরিদর্শনের উদ্দেশে লন্ডন ত্যাগ করেন।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>পাঁচ হাজারের বেশী বাঙালি লন্ডনের ট্রাফালগার স্কোয়ারে এক বিক্ষোভ সভায় মিলিত হয়। বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য আবেদনপত্র তারা বৃটিশ প্রধানমন্ত্রীর আবস ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে পেশ করেন। তাঁরা গণহত্যা বন্ধ করা এবং পশ্চিশ পাকিস্তানের উপর যথাযথ চাপ প্রয়োগের জন্য বৃটিশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>নেজাম ইসলাম পার্টির সহ-সভাপতি সৈয়দ মাহমুদ আল মোস্তফা আল মাদানীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল গর্ভনর টিক্কা খানের সাথে সাক্ষাৎ করে। তারা সরকারের সাথে পূর্ণ সহযোগিতা করবে বলে টিক্কা খানকে আশ্বাস দেয়।</li> </ul> <div style="text-align: justify;"> তথ্যসূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর</div> </div>

মুক্তিযুদ্ধ প্রতিদিনঃ ১৮ এপ্রিল, ১৯৭১

১৮ এপ্রিল, ১৯৭১ কলকাতায় নিযুক্ত পাকিস্তানের ডেপুটি হাই কমিশনার জনাব এম.ভি হোসেইন আলী বাংলাদেশের প্রতি তাঁর পূর্ণ আনুগত্য ঘোষণা করেন। তিনি সেখানে উপস্থিত কূটনৈতিক ব্যক্তিবর্গের উল্লাসধ্বনির মাধ্যমে…

Read more »

একাত্তরের দিনগুলি: ১৮ এপ্রিল, ১৯৭১

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> <br /> <table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody> <tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgzk9IJVRrSNTTd9Pqz5He9fLUw1h5GFITxiS6kjhjEeTrwn8YzUv8r2Ss4CYesxGu3wzmgJzuVOFyX34TNXqXygYuM3qbcqJ2bX9CTW4Du3jQOg-FLonzV9sFtXCguKBPvu_uP5FR-tBY/s1600/ekd.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img border="0" height="332" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgzk9IJVRrSNTTd9Pqz5He9fLUw1h5GFITxiS6kjhjEeTrwn8YzUv8r2Ss4CYesxGu3wzmgJzuVOFyX34TNXqXygYuM3qbcqJ2bX9CTW4Du3jQOg-FLonzV9sFtXCguKBPvu_uP5FR-tBY/s640/ekd.jpg" width="640" /></a></td></tr> <tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;"></td></tr> </tbody></table> <br /> <b>১৮ এপ্রিল, ১৯৭১, রবিবার </b><br /> <br /> <div style="text-align: justify;"> <br /> বাদশা আসবে দশটায়, তার সঙ্গে রিকশায় করে পুরনো ঢাকায় যাব। শরীফ গাড়ি নিয়ে যেতে দিতে নারাজ-একই গাড়ি বিভিন্ন রাস্তায় ঘুরছে দেখলে আর্মি সন্দেহ করতে পারে। আমি, রুমী বা জামীকে নিয়ে যেতে সাহস পাই নে। অতএব, ভাগনীজামাই বাদশাই আমার ভরসা। সে ডাক্তার মানুষ। তার কাজ-কারবার ঐ পুরনো ঢাকারই মিটফোর্ড হাসপাতালে। <br /> <br /> শরীফ রুমী-জামীকে নিয়ে চুল কাটাতে যাবে ঢাকা ক্লাবে। ওরা বেরোবার উদ্যোগ করছে, হঠাৎ দেখি বেয়াই-বেয়ান এসে হাজির। শরীফের বন্ধু ইঞ্জিনিয়ার আমিরুল ইসলাম, ওকে আমরা বেয়াই বলে ডাকি। রোববার সকালে ওরা প্রায়ই এরকম বেড়াতে বেরোয়। আজ কিন্তু ওদের মুখ থমথমে বিষন্ন। আরেক ইঞ্জিনিয়ার বন্ধু নূরুর রহমানের মৃত্যুসংবাদ দিল। গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছিল। পথে এক জায়গায় পাক আর্মি ওদের গোটা দলটার ওপর গুলি চালায়। <br /> <br /> মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে গেল। আমাদের জানাশোনার গণ্ডির ভেতরে, খুব নিকট একজনের মৃত্যুসংবাদ এই প্রথম শুনলাম। এত হাসিখুশি, আমুদে মানুষ ছিল নূরুর রহমান। যেখানেই যেত, সবাইকে মাতিয়ে তুলত। সেই মানুষ আর্মির গুলি খেয়ে মারা গেছে? <br /> <br /> বেয়াই বলল, “নূরু একা গেলে হয়তো মারা পড়ত না। সে তার বন্ধুর পরিবারের অনেক লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছিল তার গ্রামের বাড়িতে। দলে ছোট ছেলেপিলেও ছিল।” <br /> <br /> “বন্ধুটি কে? তার কিছু হয়নি তো?” <br /> <br /> “বন্ধুটির নাম ভিখু চৌধুরী। সে আর তার বউও মারা গেছে।” <br /> <br /> ভয়ানকভাবে চমকে উঠলাম, “ভিখু চৌধুরী? আমাদের ভিখু আর মিলি নয় তো? ” <br /> <br /> “মিলি? হ্যাঁ হ্যাঁ, মিসেস চৌধুরীর নাম মিলি তো বটে!” <br /> <br /> ব্যাকুল হয়ে বললাম, “ভিখু আমাদের আত্মীয়। এবং বন্ধুও। কবে ঘটেছে এ ঘটনা? কার কাছে শুনলেন?” <br /> <br /> “তিন তারিখে। নূরুর কাজের ছেলেটাও ওদের সঙ্গে ছিল। সে এতদিন পরে ফিরে এসেছে। গতকাল আমার বাসায় গিয়ে সব বলেছে।” <br /> <br /> উঃ! কি সাংঘাতিক। আজ আঠারো তারিখ, পনের দিন আগে ঘটে গেছে এই মর্মান্তিক ঘটনা। কেউ কিছু জানি না। কি রকম বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মধ্যে বাস করছি আমরা ঢাকা শহরে। ভিখু অর্থাৎ মাসুদুল হক চৌধুরী সুলেখা প্রেসের মালিক, আসাদ গেটের কাছে নিউ কলোনিতে তার বাসা। আমাদের দূর সম্পর্কের আত্মীয়-ইদানীং যাওয়া-আসা একটু কমই হত। কিন্তু এক সময় অনেক বছর আগে এই ভিখু আর মিলি কতো প্রিয় ছিল আমাদের। <br /> <br /> আমি বেয়াইকে জিগ্যেস করলাম, “ভিখুর ছেলেমেয়েদের কথা কিছু জানেন? তারা বেঁচে আছে তো? আর কে কে ছিল দলে?” <br /> <br /> ভিখুর ছেলেমেয়েদের কিছু হয় নি। ওর মা আর বোন গুলিতে জখম হয়েছে। তবে বেঁচে আছে।” <br /> <br /> “ওরা কোথায় আছে এখন জানেন কি?” <br /> <br /> “না, জানি না।” <br /> <br /> বাদশা এল। শরীফ বলল, “তোমরা কিন্তু একই রিকশাতে ঘুরো না। একেক জায়গায় নেমে রিকশা ছেড়ে দিয়ো যেন কিছু কেনাকাটা করতে বেরিয়েছ। দু’চারটে দোকানে ঢ়ুকে এদিক ওদিকে খানিক হেঁটে তারপর আরেকটা রিকশা নিয়ো।” <br /> <br /> লালবাগ দিয়ে শুরু করলাম। চকবাজারে নেমে দু’চারটে দোকান ঘুরলাম। চকবাজার না বলে তার ধ্বংসাবশেষ বলাই ভালো। তবু ওরই মধ্যে প্রাণের প্রদীপ জ্বালিয়ে বসে আছে কিছু মানুষ যারা এখনো পাক আর্মির গুলি খেয়ে শেষ হয়ে যায় নি। তারপর ইসলামপুর, শাঁখারি পট্টি, ওয়াইজঘাট, পাটুয়াটুলী, সদরঘাট, নবাবপুর ঘুরে জিন্নাহ এভিনিউ দিয়ে বেরিয়ে এলাম। সবখানেই বর্বর পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর ধ্বংসলীলার চিহ্ন প্রকট, কিন্তু শাঁখারিপট্টির অবস্থা দেখে বুক ভেঙে গেল। ঘরবাড়ি যেভাবে ভেঙেছে, মনে হয় ভারি গোলা ব্যবহার করতে হয়েছিল। এতদিনে লাশ সব সরিয়ে ফেলেছে, কিন্তু বাতাসে এখনো পঁচা গন্ধ ভেসে বেড়াচ্ছে। মেঝেয়, বাবান্দায়, সিঁড়িতে এখনো পানি রয়েছে, রাস্তাতেও পানি। মনে হচ্ছে জমাট রক্ত ধুয়ে সাফ করার কাজ এখনো শেষ হয় নি। প্রায় সব ঘরেরই দরজা-জানালা ভাঙা, কোন কোন দরজার সামনের চট ঝুলছে। চটগুলোর চেহারা দেখে বোঝা যাচ্ছে এগুলো সদ্য কিনে ঝোলানো হয়েছে। <br /> <br /> প্রতিটি বিধ্বস্ত ঘরের সামনে একটা করে কাগজ ঝুলছে। কি যেন সব লেখা। <br /> <br /> কাছে গিয়ে দু’একটা পড়লাম। উর্দুতে লেখা কতগুলো মুসলিম নাম। শুনলাম, বিহারিদের এ জায়গাটা ভাগ বাটোয়ারা করে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। যারা পেয়েছে, তারা বরাদ্দকৃত ঘরের সামনে নিজ নিজ নাম লেখা কাগজ সেঁটে বা ঝুলিয়ে আপন মালিকানার স্বাক্ষর রেখে দিয়েছে।<br /> <br /> - শহীদ জননী জাহানারা ইমামের বই থেকে</div> </div>

একাত্তরের দিনগুলি: ১৮ এপ্রিল, ১৯৭১

১৮ এপ্রিল, ১৯৭১, রবিবার বাদশা আসবে দশটায়, তার সঙ্গে রিকশায় করে পুরনো ঢাকায় যাব। শরীফ গাড়ি নিয়ে যেতে দিতে নারাজ-একই গাড়ি বিভিন্ন রাস্তায় ঘুরছে দেখলে আর্মি সন্দেহ করতে পারে। আমি, রুমী বা জামীকে নিয়…

Read more »

মুক্তিযুদ্ধ প্রতিদিনঃ ১৭ এপ্রিল, ১৯৭১

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> <div style="text-align: justify;"> <table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody> <tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgUIdwkCFLsawXBhP4GLrCaQyCrcff7VB_SJ8okd99ksbrOYOJVri4-JO1w2KaYhCWjryj6p2gfX3WSVPaZcuQOgRAyhcF5u0Fu0zLoXZodJ1N0bcUVn5DoNPxYcR2jPS1Z4Tz9i5_tgdo/s1600/mp.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img border="0" height="332" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgUIdwkCFLsawXBhP4GLrCaQyCrcff7VB_SJ8okd99ksbrOYOJVri4-JO1w2KaYhCWjryj6p2gfX3WSVPaZcuQOgRAyhcF5u0Fu0zLoXZodJ1N0bcUVn5DoNPxYcR2jPS1Z4Tz9i5_tgdo/s640/mp.jpg" width="640" /></a></td></tr> <tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;"></td></tr> </tbody></table> <b>১৭ এপ্রিল, ১৯৭১</b></div> <div style="text-align: justify;"> <ul> <li>কুষ্টিয়া জেলার মেহেরপুর মহকুমার বৈদ্যনাথতলার ভবেরপাড়া গ্রামের ‘মুজিব নগর’-এ প্রায় দশ হাজার মানুষের বিপুল হর্ষধ্বনির মধ্যে আওয়ামীলীগ চীফ হুইফ অধ্যাপক ইউসুফ আলীর স্বাধীনতা সনদ পাঠের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার’ গঠিত হয়। এই আনুষ্ঠানিক ঘোষণা পাঠের মধ্য দিয়ে ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান বাংলাদেশের যে স্বধীনতা ঘোষণা করেন, তা সাংগঠনিক রুপ নেয়। এ অনুষ্ঠানে ৫০ জন দেশী-বিদেশী সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন।</li> </ul> <ul> <li>নবগঠিত মন্ত্রীসভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান রাষ্ট্রপতি এবং সশস্ত্র বাহিনী ও মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক, সৈয়দ নজরুল ইসলাম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-রাষ্ট্রপতি, তাজউদ্দিন আহমদ প্রধানমন্ত্রী, খন্দকার মোস্তাক আহমদ পররাষ্ট্র ও আইনমন্ত্রী, মনসুর আলী অর্থ ও বানিজ্যমন্ত্রী, এ.এইচ.এম কামরুজ্জামান স্বরাষ্ট্র, যোগাযোগ ও সাহায্য মন্ত্রী এবং কর্ণেল ওসমানী বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনীর সর্বাধিনায়ক নিযুক্ত হন। মুজিব নগরের অনুষ্ঠানে এই ঘোষণা দেওয়া হয়।</li> </ul> <ul> <li>অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামের শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন অধ্যাপক এম.ইউসুফ আলী।</li> </ul> <ul> <li>স্বাধীনতার সনদ ঘোষণা ও শপথ অনুষ্ঠানে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামকে মুক্তিবাহিনীর দুটি প্লাটুন এসডিপিও মাহবুবউদ্দীনের নেতৃত্বে সামরিক অভিবাদন জানায়। এই অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন গণপরিষদ সদস্য আবদুল মান্নান। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন শরীফ থেকে তেলাওয়াত শেষে জাতীয় সঙ্গীত ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি’ পরিবেশন করা হয়।</li> </ul> <ul> <li>রাঙামাটির মধ্যস্থল বুড়িঘাটে পাকবাহিনীর ২০ জন সৈন্য লঞ্চযোগে রেকি করতে এসে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরক্ষা ব্যুহের কাছাকাছি হল গুলি ছুঁড়তে শুরু করে। ক্যাপ্টেন খালেকুজ্জামানের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা পাল্টা আক্রমণ শুরু করলে পাকবাহিনীর অধিকাংশ সৈন্যসহ লঞ্চটি ধ্বংস হয়।</li> </ul> <ul> <li>শাহবাজপুওে তিতাস ব্রিজ এলাকায় অবস্থানরত মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর পাকবাহিনীর একটি ব্যাটালিয়ন আর্টিলারি গানবোট সহকারে আক্রমণ চালায়। সারারাত স্থায়ী যুদ্ধে ৫ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। এতে মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটে মাধবপুরে গিয়ে ঘাঁটি রচনা করেন।</li> </ul> <ul> <li>পাকিস্তান বিমানবাহিনীর ৪ টি জঙ্গিবিমান ময়মনসিংহ শহর ও আশেপাশে অন্যান্য এলাকায় আক্রমণ চালায়। এ আক্রমনে কয়েকজন নিরীহ মানুষ নিহত হয় এবং অনেক জায়গা পুড়ে যায়।</li> </ul> <ul> <li>নওয়াবগঞ্জের গোদাবাড়িতে অবস্থানরত মুক্তিযোদ্ধাদের ঘাঁটি ও নওয়াবগঞ্জ শহরের ওপর পাকিস্তান সেনাবাহিনী জঙ্গিবিমানের সাহায্যে রকেট ও মেশিনগানের প্রচন্ড হামলা চালায়।</li> </ul> <ul> <li>ময়মনসিংহের কালিহাতীতে মুক্তিযোদ্ধা ও পাকসেনাদের মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ হয়।</li> </ul> <ul> <li>গোয়ালন্দ ঘাট পার হয়ে পাকসেনারা রাজবাড়ি পৌঁছায় এবং ব্যাপক গুলি বর্ষণ করে। এতে আনসার কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা ফকির উদ্দিন শহীদ হন। তিনিই রাজবাড়ির প্রথম শহীদ।</li> </ul> <ul> <li>যশোহর ক্যান্টনমেন্ট থেকে এসে পাকসেনারা পুনরায় কুষ্টিয়া দখল করে নেয়।</li> </ul> <ul> <li>প্রাথমিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ১৬০ জন মুক্তিযোদ্ধা স্টুয়ার্ড মুজিবের নেতৃত্বে উচ্চতর প্রশিক্ষণ গ্রহনের জন্য ভারতের আগরতলার উদ্দেশে মাদারীপুর ত্যাগ করে।</li> </ul> <ul> <li>ফেনীর গঙ্গাসাগর যুদ্ধে পাকবাহিনীর সার্বিক আক্রমণের মুখে মুক্তিবাহিনী পশ্চাদপসরণ করে।</li> </ul> <ul> <li>বরিশালের ওপর পাক স্যাবর জেট নির্বিবাদে গোলাবর্ষণ করে।</li> </ul> <ul> <li>রংপুর ক্যান্টমেন্ট থেকে একদল সৈন্য বড়দরগা সানেরহাট রাস্তা ধরে গাইবান্ধা দখলের উদ্দেশে ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অগ্রসর হয়। মাদারগঞ্জ ব্রিজের নিকট পৌঁছলে রাস্তা কেটে দিয়ে সুবেদার আফতাবের নেতৃত্বে মুক্তিবাহিনীর প্রতিরক্ষা ব্যুহ থেকে তাদেও ওপর প্রচন্ড আক্রমণ করা হয়। সকাল থেকে শুরু করে দুপুর পর্যন্ত সংঘটিত এ যুদ্ধে ২ জন পাকসৈন্য নিহত ও ৫জন আহত হয়। একজন নিরীহ গ্রামবাসী পাকসৈন্যদের গুলিতে মারাত্মকভাবে আহত হয়। পরা পাকবাহিনী পশ্চাদপসারন করার সময় শাখারী পট্টিসহ সমস্ত মাদারগঞ্জ বাজার জ্বালিয়ে দেয়। ৩ জন ব্যবসায়ীকে গুলি করে হত্যা করে।</li> </ul> <ul> <li>দেশী-বিদেশী সাংবাদিক, বিদেশী পর্যবেক্ষক, মুক্তিযোদ্ধা ও জনতার উদ্দেশে প্রদত্ত ভাষণে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা বিশ্বের সব রাষ্ট্রের সাথে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান চাই। পরস্পরের ভাই হিসেবে বসবাস করতে চাই। মানবতা, গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার জয় চাই।</li> </ul> <ul> <li>প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন মুজিবনগরে প্রদত্ত এক দীর্ঘ বক্তৃতায় বলেন,বাংলাদেশে আজ যে ব্যাপক গণহত্যা চলছে পাকিস্তান সরকার তার সত্যতা গোপন ও বিকৃত করার জন্যে ওঠে পড়ে লেগেছে। বাংলাদেশ আজ যুদ্ধে লিপ্ত। পশ্চিম পাকিস্তানের ঔপনিবেশিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে এই যুদ্ধ। এ সংগ্রাম আমাদের আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকারের সংগ্রাম, জীবন-মৃত্যুও সংগ্রাম। এছাড়া আমাদের আর কোন উপায় ছিল না।</li> </ul> তথ্যসূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর</div> </div>

মুক্তিযুদ্ধ প্রতিদিনঃ ১৭ এপ্রিল, ১৯৭১

১৭ এপ্রিল, ১৯৭১ কুষ্টিয়া জেলার মেহেরপুর মহকুমার বৈদ্যনাথতলার ভবেরপাড়া গ্রামের ‘মুজিব নগর’-এ প্রায় দশ হাজার মানুষের বিপুল হর্ষধ্বনির মধ্যে আওয়ামীলীগ চীফ হুইফ অধ্যাপক ইউসুফ আলীর স্বাধীনতা সনদ পাঠের …

Read more »

মুক্তিযুদ্ধ প্রতিদিনঃ ১৬ এপ্রিল, ১৯৭১

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> <div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"> </div> <div style="text-align: justify;"> <table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody> <tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgUIdwkCFLsawXBhP4GLrCaQyCrcff7VB_SJ8okd99ksbrOYOJVri4-JO1w2KaYhCWjryj6p2gfX3WSVPaZcuQOgRAyhcF5u0Fu0zLoXZodJ1N0bcUVn5DoNPxYcR2jPS1Z4Tz9i5_tgdo/s1600/mp.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img border="0" height="332" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgUIdwkCFLsawXBhP4GLrCaQyCrcff7VB_SJ8okd99ksbrOYOJVri4-JO1w2KaYhCWjryj6p2gfX3WSVPaZcuQOgRAyhcF5u0Fu0zLoXZodJ1N0bcUVn5DoNPxYcR2jPS1Z4Tz9i5_tgdo/s640/mp.jpg" width="640" /></a></td></tr> <tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;"></td></tr> </tbody></table> <b>১৬ এপ্রিল, ১৯৭১:</b></div> <ul style="text-align: justify;"> <li>রাঙামাটির খাগড়া রেস্ট হাউজে অবস্থানরত পাকবাহিনীর একজন অফিসারসহ এক প্লাটুন সৈন্যের ওপর ক্যাপ্টেন কাদেরের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা আক্রমণ চালায়। এ সংঘর্ষে অফিসারসহ ২০ জন পাকসৈন্য নিহত হয়। বাকি সৈন্যরা পালিয়ে যায়। মুক্তিযোদ্ধারা সংঘর্ষের পর নিরাপদে ঘাঁটিতে ফিরে আসে।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>কুমিল্লার গঙ্গাসাগর ব্রিজে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরক্ষাব্যুহে পাকবাহিনী প্রবল গুলিবর্ষণ করে। </li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>মেজর আবু ওসমান চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন মুক্তিবাহিনীর সদর দফতর চুয়াডাঙ্গা থেকে মেহেরপুরে স্থানান্তরিত হয়।রাতে আবার মেহেরপুর থেকে ভৈরব নদীর অপর পারে ইছাখালী বিওপিতে সদর দফতর স্থানান্তর করা হয়।এখান থেকে ভারতীয় বিওপির দূরত্ব মাত্র ৬০০ গজ। </li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>সকাল ১১ টায় পাকসেনারা পার্বতীপুর থেকে ১ টি ট্যাঙ্কসহ ভারী অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের ভবানীপুরের হাওয়া গ্রামের ডিফেন্সের ওপর আক্রমণ চালায়।এ যুদ্ধে ৮ জন মুক্তিযোদ্ধা শাহাদাৎ বরণ করেন। মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটে ফুলবাড়িয়ার দিকে যাত্রা করলে পিছু পিছু পাকসেনারাও ফুলবাড়ির দিকে অগ্রসর হয়। </li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>ভেড়ামারায় অবস্থানরত মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে পাকবাহিনীর তীব্র সংঘর্ষ হয়।পাকবাহিনীর প্রবল আক্রমণে সুবেদার মোজাফফর তাঁর বাহিনী নিয়ে পিছু হটেন। সামরিক অবস্থানের দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থান ভেড়ামারা পাকবাহিনীর দখলে চলে যায়। </li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>দিনাজপুর শহর সম্পূর্ণরুপে পাকবাহিনীর নিয়ন্ত্রনে চলে যায়। </li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>পাকবাহিনী ময়মনসিংহ জেলা দখলে সমর্থ হয়।এরপর পাকবাহিনী হত্যা, লুন্ঠন, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ অবলীলাক্রমে চালিয়ে যেতে থাকে । </li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>মুক্তিবাহিনীর কুমিরা থেকে সীতাকুন্ড এসে অবস্থান নেয় এবং প্রতিরক্ষা ব্যুহ তৈরি করে। </li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>পাকবাহিনী কুষ্টিয়া দখল করে এবং মুক্তিবাহিনীর হাতে বন্দী বিহারীদের জেলখানা থেকে ছেড়ে দিয়ে রাজাকার বাহিনীতে অন্তভূক্ত করে।ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালিয়ে সারা শহরে পাকসেনারা ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। </li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>কাপ্তাই জলবিদুৎ কেন্দ্র দখল নিয়ে সারাদিনব্যাপী মুক্তিবাহিনী ও পাকবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়। </li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>মুক্তিবাহিনী ও পাকবাহিনীর মধ্যে আশুগঞ্জ বিদুৎ কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ করায়ত্ব করার জন্যে সংঘর্ষ হয়। </li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>ঢাকায় কারফিউর মেয়াদ সকাল ৫টা থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত শিথিল করা হয়। </li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>সামরিক কর্তৃপক্ষ ঢাকা বিশ্বদ্যিালয়ের শিক্ষক-কর্মচারিদের অবিলম্বে কাজে যোগদানের নির্দেশ দেন। </li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যদের নাম ঘোষণা করা হয়। আহ্বায়ক-খাজা খয়েরুদ্দিন,সদস্য-নুরুল আমিন,এ.কিউ.এম শফিকুল ইসলাম,অধ্যাপক গোলাম আজম,মাহমুদ আলী,আবদুল জব্বার খদ্দর,মাওলানা সিদ্দিক আহমদ,আবুল কাশেম, ইউসুফ আলী চৌধুরী,মওলানা সৈয়দ মোহাম্মদ মাসুম,আবদুল মতিন,অধ্যাপক গোলাম সরোয়ার,ব্যারিস্টার আফতাব উদ্দিন আহম্মেদ,পীর মোহসেন উদ্দিন,এ.এস.এম সোলায়মান,এ.কে রফিকুল হোসেন,মওলানা নুরুজ্জামান,আতাউল হক খান,তোয়াহা বিন হাবিব,মেজর (অব.)আফসার উদ্দিন,দেওয়ান ওয়ারেসাত আলী ও হাকিম ইরতাজুর রহমান খান। </li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>সন্ধ্যায় নুরুল আমিনের নেতৃতে শান্তি কমিটির নেতৃবৃন্দ গভর্নও টিক্কা খানের সাথে দেখা করে জানান, শত্রু নিধনে তারা সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা করবেন এবং নিজেরাও দায়িত্ব পালনে সক্রিয় হবেন।</li> </ul> <div style="text-align: justify;"> <ul> <li><b>লন্ডনে গার্ডিয়ান পত্রিকার সংবাদ :</b></li> </ul> </div> <blockquote class="tr_bq"> <div style="text-align: justify;"> বাংলাদেশের পরিস্থিতি দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। বিংশ শতাব্দীতে এ ধরনের মুক্তি আন্দোলন খুবই কম দেখা যায়,যার প্রতি সর্বশ্রেণীর জনগনের আকুন্ঠ সমর্থন রয়েছে।আবার এই ধরনের আন্দোলন খুব কম দেখা যায়,যেখানে অধিকার আদায়ের জন্য অস্ত্রশস্ত্রেও এত অভাব। প্রতিটি জায়গায় পুরো প্রশাসন ব্যবস্থা একান্তভাবে মুক্তি আন্দোলনকারীদের সমর্থন দিয়েছে। কয়েকটি শহরে মুক্তি সংগ্রামীরা এখনও প্রশাসন চালিয়ে যাচ্ছে।</div> </blockquote> <div style="text-align: justify;"> তথ্যসূত্র: মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর</div> </div>

মুক্তিযুদ্ধ প্রতিদিনঃ ১৬ এপ্রিল, ১৯৭১

১৬ এপ্রিল, ১৯৭১: রাঙামাটির খাগড়া রেস্ট হাউজে অবস্থানরত পাকবাহিনীর একজন অফিসারসহ এক প্লাটুন সৈন্যের ওপর ক্যাপ্টেন কাদেরের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা আক্রমণ চালায়। এ সংঘর্ষে অফিসারসহ ২০ জন পাকসৈন্য নিহ…

Read more »

মুক্তিযুদ্ধ প্রতিদিনঃ ১৫ এপ্রিল, ১৯৭১

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> <div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"> </div> <div style="text-align: justify;"> <table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody> <tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgUIdwkCFLsawXBhP4GLrCaQyCrcff7VB_SJ8okd99ksbrOYOJVri4-JO1w2KaYhCWjryj6p2gfX3WSVPaZcuQOgRAyhcF5u0Fu0zLoXZodJ1N0bcUVn5DoNPxYcR2jPS1Z4Tz9i5_tgdo/s1600/mp.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img border="0" height="332" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgUIdwkCFLsawXBhP4GLrCaQyCrcff7VB_SJ8okd99ksbrOYOJVri4-JO1w2KaYhCWjryj6p2gfX3WSVPaZcuQOgRAyhcF5u0Fu0zLoXZodJ1N0bcUVn5DoNPxYcR2jPS1Z4Tz9i5_tgdo/s640/mp.jpg" width="640" /></a></td></tr> <tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;"></td></tr> </tbody></table> ১৫ এপ্রিল, ১৯৭১</div> <ul style="text-align: justify;"> <li>মুক্তিবাহিনীর ‘এ’ কোম্পানি কাকিনা নামক স্থানে, ‘বি’ কোম্পানি পাটেশ্বরী ঘাটে, ‘সি’ কোম্পানি পাটের ঘাটের বাম দিকে রৌমারী সড়কে এবং ‘ডি’ কোম্পানি ফুলবাড়ি থানায় ডিফেন্স নেয়।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>হানাদার পাকবাহিনীর আক্রমণে ভৈরবের পতন হয়। পাকবাহিনী ভৈরব এলাকায় ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ ও অমানুষিক নির্যাতন চালায় এবং লুন্ঠন, অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে ধ্বংসযজ্ঞের এক মর্মস্পশী দৃশ্য রচনা করে। </li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>নগরবাড়ি ঘাটে পাকবাহিনী ফেরি থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থানের ওপর মর্টার ছুঁড়ে। পাকবাহিনীর এ আক্রমণে মুক্তিযোদ্ধারা তাঁদের অবস্থান থেকে ১০ কিলোমিটার পিছিয়ে বগুড়া মহাসড়কের ডাববাগান(বর্তমান শহীদ নগর) এলাকায় এসে অবস্থান নেয় এবং শত্রুবাহিনীর জন্য ত্রিমুখী ফাঁদ তৈরী করে।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>পাকবাহিনী চুয়াডাঙ্গায় প্রচন্ড বিমান হামলা চালায়। এ হামলায় অসংখ্য নিরস্ত্র নিরীহ মানুষ নিহত হয়।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>পাকবাহিনী হাজীগঞ্জ বাজারে প্রবেশ করে। অপরদিকে কলিমুল্লাহর নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল চাঁদপুর ও ফরিদগঞ্জ থেকে ডাকাতিয়া নধীর পারে সমবেত হয়ে প্রতিরক্ষামূলক অবস্থান নেয়।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ১০টি ট্রাক ও ৮টি জিপে করে গুলি করতে করতে ঠাকুরগাঁও শহরে প্রবেশ করে। আতঙ্কে ঠাকুরগাঁওবাসী শহর ছাড়তে শুরু করে। অল্পক্ষণের মধ্যে শহর হয়ে যায় ধু-ধু জনশূন্য।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>তিতাস নদীর পূর্ব পাড়ে শাহবাজপুরের কাছে মুক্তিযোদ্ধারা একটি প্রতিরক্ষা ব্যুহ রচনা করে।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>বিকালে পাকবাহিনীর হাতে ঝিনাইদহের পতন ঘটে।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>লে. মাহফুজ খাগড়াছড়িতে মেজর জিয়ার সাথে সাক্ষাৎ করে সুবেদার খায়রুজ্জামান, করিম, ইঞ্জিয়ার ইসহাক, ফারুক আহম্মদ, শওকত আলী প্রমুখকে নিয়ে রাঙামাটি বুগিঘাট বাজারে আসেন ও অবস্থান নেন। এখান থেকে তারা পাকবাহিনীকে অতর্কিতে আক্রমণ করে ব্যতিব্যস্ত করে তোলেন।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>চট্টগ্রামের রাজাঘাট এলাকা পাকবাহিনীর দখলে চলে যায়।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>মুক্তিবাহিনী পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর কাছ থেকে কুমিল্লার গঙ্গাসাগর পুনরুদ্ধার কর।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>মুক্তিবাহিনী কয়েকদিন ধরে প্রতিরোধ যুদ্ধের পর রাজশাহী শহরের অবস্থান ছেড়ে দেয়।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>ঢাকায় সামরিক কর্তৃপক্ষ জনসাধারণকে কর ও খাজনা পরিশোধের জন্য নির্দেশ দেয়।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>নিউজিল্যান্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী মার্শাল এক বার্তায় বলেন, ‘আমরা আশা করি, প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান অবিলম্বে পূর্ব পাকিস্তানের বর্তমান গৃহযুদ্ধের অবসানের ব্রবস্থা করবেন।’</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>করাচীতে পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান জুলফিকার আলী ভুট্টো এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, সরকার ন্যায়সঙ্গত কারণেই আওয়ামী লীগকে বেআইনী ঘোষণা করেছেন।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>ঢাকায় ‘নাগরিক শান্তি কমিটি’-র নাম পরিবর্তন করে ‘পূর্ব পাকিস্তান কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটি’ রাখা হয়।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>রাজা ত্রিদিব রায়- এর আহ্বানে পাকবাহিনী রাঙ্গামাটি শহরে এসে পৌঁছায়।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>‘পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র পরিষদ’-এর সভাপতি রশিদুল কবির ও সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক সহযোগী ছাত্রদের সেনাবাহিনীর সাথে হাত মিলিয়ে শত্রু(মুক্তিযোদ্ধা) খতমের নির্দেশ দেয়।</li> </ul> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> <b>সংবাদ সংস্থা এএফপির খবর:</b> ঢাকা এখন মৃত্যুপূরী। রাস্তায় খুবই কম লোক দেখা যায়। অনেক লোক শহর ছেড়ে চলে গেছেন। যারা ঢাকা থেকে পালাতে চাচ্ছেন তাদের বাধা দেয়া হচ্ছে। সৈন্যরা ঘরে ঘরে তল্লাশি চালাচ্ছে, তরুনদের আটক করে নিয়ে যাচ্ছে। অন্যান্যদের সাথে খুব খারাপ ব্যবহার করছে।</div> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> শান্তি ও কল্যাণ স্টিয়ারিং কমিটি, জেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের সংগঠকদের ১৫ দিনের মধ্যে পরিষদের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে ১২ ধানমন্ডি, রোড নং-৫ এ যোগাযোগের নির্দেশ দেয়।</div> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> তথ্যসূত্র: মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর</div> </div>

মুক্তিযুদ্ধ প্রতিদিনঃ ১৫ এপ্রিল, ১৯৭১

১৫ এপ্রিল, ১৯৭১ মুক্তিবাহিনীর ‘এ’ কোম্পানি কাকিনা নামক স্থানে, ‘বি’ কোম্পানি পাটেশ্বরী ঘাটে, ‘সি’ কোম্পানি পাটের ঘাটের বাম দিকে রৌমারী সড়কে এবং ‘ডি’ কোম্পানি ফুলবাড়ি থানায় ডিফেন্স নেয়। হানাদার পাক…

Read more »