একাত্তরের দিনগুলি: ৩০ এপ্রিল, ১৯৭১

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> <br /> <div style="text-align: justify;"> <table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody> <tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgzk9IJVRrSNTTd9Pqz5He9fLUw1h5GFITxiS6kjhjEeTrwn8YzUv8r2Ss4CYesxGu3wzmgJzuVOFyX34TNXqXygYuM3qbcqJ2bX9CTW4Du3jQOg-FLonzV9sFtXCguKBPvu_uP5FR-tBY/s1600/ekd.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img border="0" height="332" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgzk9IJVRrSNTTd9Pqz5He9fLUw1h5GFITxiS6kjhjEeTrwn8YzUv8r2Ss4CYesxGu3wzmgJzuVOFyX34TNXqXygYuM3qbcqJ2bX9CTW4Du3jQOg-FLonzV9sFtXCguKBPvu_uP5FR-tBY/s640/ekd.jpg" width="640" /></a></td></tr> <tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;"></td></tr> </tbody></table> </div> <b>৩০ এপ্রিল, ১৯৭১, শুক্রবার </b><br /> <br /> <div style="text-align: justify;"> বেশ গরম পড়ে গেছে। ক’দিন আগের তুমুল বৃষ্টির ফলে হিউমিডিটি বেড়ে গরমটা আরো অসহ্য লাগছে। সন্ধ্যায় গাড়ি-বারান্দার সামনের ছোট খোলা জায়গাটায় বেতের চেয়ারে বসেছিলাম। আজ মোতাহার সাহেব বেড়াতে আসেন নি। উনি সারাদিন ধরে মেডিক্যাল ও মিটফোর্ড হাসপাতালের মর্গে, থানায় এবং সম্ভব অসম্ভব আরো বহু জায়গায় ছুটে বেরিয়েছিলেন। শরীফ বলল, "চল, আমরাও ওঁর বাসায় যাই। খোঁজ নিয়ে আসি কি হল।"<br /> <br /> আমাদের বাড়ি থেকে দুটো বাড়ির পরে মেইন রোডের কাছাকাছি সামাদের বাসা। এটা আসলে সিদ্দিকী সাহেবের বাড়ি- এ গলিতে ওঁর বাড়িটাই একমাত্র তেতলা- সামাদরা একতলায় ভাড়া থাকে। <br /> <br /> সামাদদের বসার ঘরের একপাশে একটা খাট আছে। মোতাহার সাহেব সেই খাটে শুয়েছিলেন। আমাদের দেখে উঠে বসলেন। দু’দিনেই ওর দশ পাউণ্ড ওজন কমে গেছে মনে হল। <br /> <br /> আমরা চেয়ারে বসে চুপ করে অপেক্ষা করতে লাগলাম। মোতাহার সাহেব ভাঙা গলায় বললেন, "কোথাও খোঁজ পেলাম না। মর্গে যত লাশ দেখলাম, সব পেটের নাড়িভুড়ি বের করা। পিশাচগুলো প্রথম কোপ দিয়েছে পেটে। তারপর শরীরের অন্য সব জায়গায়। উঃ! এমন বীভৎস দৃশ্য জীবনে চোখে দেখি নি। পুলিশে সব লাশ তুলে আনতে পেরেছে বলে মনে হয় না। ড্রাইভারতো নিজেই দেখেছে অনেকগুলোকে নদীর পানিতে ছুঁড়ে ফেলেছে। ছুঁড়ে ফেলার পরিশ্রমে বোধহয় পারে নি, নইলে সব লাশই নিশ্চয় নদীতেই ফেলত।"<br /> <br /> মোতাহার সাহেব চোখ বন্ধ করলেন। </div> <div style="text-align: justify;"> <br /> "আপনি ওসব কথা এখন আর বলবেন না, মনেও করবেন না। আজ রাতে বরং দুটো ভ্যালিয়াম খেয়ে শোবেন।" এই বলে আমরা চলে এলাম। <br /> <br /> সে রাতে ভ্যালিয়াম আমাদেরও খেতে হল। তা সত্ত্বেও ঘুম এল না। মাঝে-মাঝে তন্দ্রার মধ্যে চমকে উঠতে লাগলাম।<br /> <br /> - শহীদ জননী জাহানারা ইমামের বই থেকে</div> </div>

একাত্তরের দিনগুলি: ৩০ এপ্রিল, ১৯৭১

৩০ এপ্রিল, ১৯৭১, শুক্রবার বেশ গরম পড়ে গেছে। ক’দিন আগের তুমুল বৃষ্টির ফলে হিউমিডিটি বেড়ে গরমটা আরো অসহ্য লাগছে। সন্ধ্যায় গাড়ি-বারান্দার সামনের ছোট খোলা জায়গাটায় বেতের চেয়ারে বসেছিলাম। আজ মোতাহার …

Read more »

একাত্তরের দিনগুলি: ২৯ এপ্রিল, ১৯৭১

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> <br /> <div style="text-align: justify;"> <table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody> <tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgzk9IJVRrSNTTd9Pqz5He9fLUw1h5GFITxiS6kjhjEeTrwn8YzUv8r2Ss4CYesxGu3wzmgJzuVOFyX34TNXqXygYuM3qbcqJ2bX9CTW4Du3jQOg-FLonzV9sFtXCguKBPvu_uP5FR-tBY/s1600/ekd.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img border="0" height="332" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgzk9IJVRrSNTTd9Pqz5He9fLUw1h5GFITxiS6kjhjEeTrwn8YzUv8r2Ss4CYesxGu3wzmgJzuVOFyX34TNXqXygYuM3qbcqJ2bX9CTW4Du3jQOg-FLonzV9sFtXCguKBPvu_uP5FR-tBY/s640/ekd.jpg" width="640" /></a></td></tr> <tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;"></td></tr> </tbody></table> <b>২৯ এপ্রিল, ১৯৭১, বৃহস্পতিবার</b> </div> <br /> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> নাসরিনের বাবা মোতাহার সাহেব আমাদের বহু বছরের পরিচিত। ১৯৫০ সালে প্রথম যখন রেডিও প্রোগ্রাম করি, উনি তখন ছিলেন প্রোগ্রাম এসিস্ট্যান্ট। মাইকের সামনে কিভাবে, থেমে, দম নিয়ে পড়লে রিডিং পড়ার মতো শোনাবে না, কথা বলার মতই শোনাবে-এই কায়দা উনিই আমাকের প্রথম শিখিয়েছিলেন।</div> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> পরবর্তীতে মোতাহার সাহেব তার এক বন্ধু আশরাফ আলী সাহেবের সঙ্গে মিলে ‘খাওয়াতীন’ নামে যে মহিলাদের মাসিক পত্রিকা বের করেন, তাতে প্রথম দিকে আমাকে বেশ কিছুদিন সম্পাদিকার কাজ করতে হয়েছিল। তারপর বহুদিন ওঁর সঙ্গে যোগাযোগ ছিল না। আমাদের গলিতে ওঁর মেয়েজামাই বাসা ভাড়া নিয়ে থাকে, তাও জানতাম না। </div> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> হঠাৎ একদিন সকালে দেখি, আমাদের বাসার সামনে মোতাহার সাহেব! কি ব্যাপার? উনি শ্যামলীতে থাকতেন, এই রকম সময়ে ওদিকে থাকা নিরাপদ নয়, তাই ওঁর জামাই সামাদ ওঁকে সপরিবারে নিজের বাসায় নিয়ে এসেছে। </div> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> মোতাহার সাহেব এ পাড়ায় আসার পর সন্ধ্যেটা আমাদের ভালোই কাটে। খুব মজলিসী মানুষ। কতো জায়গার খবর যে বলেন। এক সঙ্গে সবাই মিলে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অনুষ্ঠান শুনি। পূর্ব পাকিস্তানের রেডিও ও সংবাদপত্রের খবর, আকাশবাণী ও বিবিসির খবর এবং স্বাধীন বাংলা বেতারের খবর চালাচালি করে আসল খবর বের করার চেষ্টা করি। এ কাজে মোতাহার সাহেবের জুড়ি নেই। ওর ধৈর্য এবং অধ্যবসায়েরও শেষ নেই।</div> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> মা’র বাসায় গেছিলাম সকাল দশটায়। গিয়ে দেখি ওঁর জ্বর। রুমী সঙ্গে ছিল। ওকে দিয়ে রুটি আনিয়ে মা’র কাছে খানিক বসে বারোটার দিকে বাড়ি ফিরে দেখি-মোতাহার সাহেব আমাদের বসার ঘরে বসে কোথায় যেন ফোন করছেন, ওঁর চুল উষ্কখুষ্ক, মুখে উদ্বেগের ছাপ। কি ব্যাপার? ওঁর জামাই সামাদের বড় ভাই আজ ভোরের কোচে পাবনা রওনা দিয়েছিল। খানিকক্ষণ আগে উনি লোকমুখে খবর শুনেছেন-মিরপুরের বিহারিরা নাকি মোহাম্মদপুরের বাঙালিদের মেরে ধরে শেষ করে দিচ্ছে; ও পথে যত বাস, কোচ যাচ্ছে সেগুলোও থামিয়ে যাত্রীদের মেরে ফেলছে।</div> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> পাবনার কোচ তো আরিচার পথে মোহাম্মদপুর, মিরপুরের ওপর দিয়েই যাবে। মারামারির খবর শোনার পর থেকেই উনি ফোন করছেন কমলাপুর কোচ স্টেশনে। রিং বেজে যাচ্ছে, কিন্তু কোচ স্টেশনে কেউ ফোন তুলছে না।</div> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> খবর শুনে আমারও বুক ধড়ফড় করতে শুরু করল। আমাকে বাসায় নামিয়ে রুমী আবার বেরোবার উদ্যোগ করছিল। এই খবর শোনার পর রুমীকে আর বেরোতে দিলাম না। শরীফকে তার ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডের অফিসে ফোন করে খবরটা জানিয়ে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরতে বললাম।</div> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> মোতাহার সাহেব খানিক পরপরই এসে কোচ স্টেশনে ফোন করার জন্য ডায়াল করতে লাগলেন। রিং হয়, ফোন বেজেই যায়, কেউ ধরে না।</div> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> শেষে দুটোর দিকে মোতাহার সাহেব বললেন তিনি নিজেই কমলাপুর কোচ স্টেশনে যাবেন খবর নিতে।</div> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> উনি সামাদের ছোট ভাইকে নিয়ে কমলাপুরের উদ্দেশে রওনা হয়ে গেলেন। আমরা কয়েকজন বাড়িতে স্থির হয়ে বসতে পারছিলাম না, বাড়ির সামনে গলিতে দাঁড়িয়ে হোসেন সাহেব, রশীদ সাহেব, আহাদ সাহেব-এঁদের সঙ্গে কথা বলে সময় কাটাতে লাগলাম। </div> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> ঘন্টা দুয়েক পর মোতাহার সাহেব বিস্তারিত খবর নিয়ে ফিরলেন। কোচের ড্রাইভার আড়াইটের দিকে কমলাপুর কোচ স্টেশনে ফিরলে তার মুখে সব খবর জানা যায়। মিরপুর ব্রিজের কাছে বিহারিরা ওদের কোচ এবং অন্য একটা ছোট বাস থামিয়ে বড় রাস্তা থেকে একটু ভেতরে নিয়ে যায়। তারপর সব যাত্রীকে নামায়। যাত্রীদের ভয়ার্ত চিৎকার, বিহারিদের রণহুঙ্কার ইত্যাকার হৈ চৈ গোলমালের সুযোগ নিয়ে পাবনাগামী কোচের ড্রাইভারটি বাসের তলায় লুকিয়ে পড়ে এবং সেখান থেকে পুরো হত্যাযজ্ঞটি প্রত্যক্ষ করে। বিহারিরা যাত্রীদের নামিয়ে ধারাল দা বড় চাকু-এসব দিয়ে মারতে থাকে। বাসে দু’জন যাত্রী ছিল তারা কেবল মক্কা থেকে হজ্ব করে দেশে ফিরেছে। বিহারিরা কেবল ওই হাজি দু’জনকে ছেড়ে দেয়। বাকি সবাইকে মেরে ফেলেছে। কয়েকজনকে তারা ছুরি মেরে ব্রিজের ওপর থেকে নিচে নদীতে ফেলে দিয়েছে- ড্রাইভারটা তাও দেখেছে। মিনিবাসটাকে বিহারিরা ভেতরের রাস্তায় আরো খানিকদূর নিয়ে গিয়েছিল। বড় রাস্তার মোড়ে কোচের যাত্রীদের শেষ করে লাশগুলো ওখানেই ফেলে রেখে উল্লাসে উন্মত্ত বিহারিরা ঐ মিনিবাসটার দিকে চলে যায়। তখন ড্রাইভার কোনমতে জান নিয়ে পালিয়ে কমলাপুর কোচ স্টেশনে চলে গিয়ে সবাইকে এই খবর দেয়।<br /> <br /> - শহীদ জননী জাহানারা ইমামের বই থেকে</div> </div>

একাত্তরের দিনগুলি: ২৯ এপ্রিল, ১৯৭১

২৯ এপ্রিল, ১৯৭১, বৃহস্পতিবার নাসরিনের বাবা মোতাহার সাহেব আমাদের বহু বছরের পরিচিত। ১৯৫০ সালে প্রথম যখন রেডিও প্রোগ্রাম করি, উনি তখন ছিলেন প্রোগ্রাম এসিস্ট্যান্ট। মাইকের সামনে কিভাবে, থেমে, দম নিয়…

Read more »

একাত্তরের দিনগুলি: ২৮ এপ্রিল, ১৯৭১

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> <br /> <table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody> <tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgzk9IJVRrSNTTd9Pqz5He9fLUw1h5GFITxiS6kjhjEeTrwn8YzUv8r2Ss4CYesxGu3wzmgJzuVOFyX34TNXqXygYuM3qbcqJ2bX9CTW4Du3jQOg-FLonzV9sFtXCguKBPvu_uP5FR-tBY/s1600/ekd.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img border="0" height="332" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgzk9IJVRrSNTTd9Pqz5He9fLUw1h5GFITxiS6kjhjEeTrwn8YzUv8r2Ss4CYesxGu3wzmgJzuVOFyX34TNXqXygYuM3qbcqJ2bX9CTW4Du3jQOg-FLonzV9sFtXCguKBPvu_uP5FR-tBY/s640/ekd.jpg" width="640" /></a></td></tr> <tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;"></td></tr> </tbody></table> <br /> <b>২৮ এপ্রিল, ১৯৭১, বুধবার </b><br /> <br /> <div style="text-align: justify;"> <br /> আজকের কাগজে একটা খবর দেখে চমকে উঠলাম। নিউইয়র্কে পাকিস্তান দূতাবাসের ভাইস কনসাল মাহমুদ আলীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। বুঝলাম আরেকজন দেশপ্রেমিক বাঙালি পাকিস্তান সরকারের পক্ষ ত্যাগ করলেন।</div> <div style="text-align: justify;"> <br /> বাঙালি কূটনীতিক বাংলাদেশ সরকারের আনুগত্য ঘোষণা করেছে-এটা খুশির খবর। তবে কি না মাহমুদ আলী আমাদের আত্মীয়-নাতজামাই। ওর শ্বশুর আবদুল খালেক শরীফের ভাগনে। এখন ডিস্ট্রিক্ট জজ হিসেবে সিলেটে রয়েছে। ২৫ মার্চের পর রটেছিল পাকি আর্মি ওদের সবাইকে গুলি করে মেরেছে। পরে খবর পাওয়া গেছে খালেক বাবাজি আর লেবু বউমা প্রাণে বেঁচে আছে। ওদের কাছাকাছি বাড়ির এক ইঞ্জিনিয়ারকে আর্মি গুলি করে মেরে ফেলার পর ওরা গ্রামে পালিয়ে যায়। মাহমুদ আলী ওদের জামাই। কি জানি মাহমুদ আলীর কারণে পাক আর্মি ওদের আবার কোন অত্যাচার না করে।</div> <div style="text-align: justify;"> <br /> কলিম এসেছিল। ওরা সবাই এখনো নিজ নিজ বাড়িতেই আছে-প্রাণ হাতে করে। ওর কাছে শহরে মিলিটারিদের অব্যাহত তৎপরতার কথা আরো কিছু শুনলাম। ট্রাকভর্তি চোখ বাঁধা, হাত বাঁধা যুবকদের এখনো দেখা যাচ্ছে প্রায় প্রায়। কলিম আরো বলল, "মিরপুর-মোহাম্মদপুরে মাঝে-মাঝে ছুটকো ছাটকা গোলমাল হয়েছে। কিছু ছুরি মারামারি, কিছু ঘরবাড়িতে আগুন দেয়াদেয়ি।"<br /> <br /> রঞ্জু এসে একটা মজার খবর দিল। গ্রীন রোড যেখানে ময়মনসিংহ রোডে গিয়ে মিশেছে, সেইখানে আজ বিকেল চারটার সময় শান্তি কমিটির অন্যতম সদস্য জনাব আবদুল জব্বার খদ্দর বক্তৃতা দিচ্ছিলেন। শ্রোতামণ্ডলী : তিনটি ট্রাফিক পুলিশ, একটি মিলিটারি পুলিশ এবং একটি আর্মির জওয়ান।<br /> <br /> - শহীদ জননী জাহানারা ইমামের বই থেকে</div> </div>

একাত্তরের দিনগুলি: ২৮ এপ্রিল, ১৯৭১

২৮ এপ্রিল, ১৯৭১, বুধবার আজকের কাগজে একটা খবর দেখে চমকে উঠলাম। নিউইয়র্কে পাকিস্তান দূতাবাসের ভাইস কনসাল মাহমুদ আলীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। বুঝলাম আরেকজন দেশপ্রেমিক বাঙালি পাকিস্তান সরকারের পক্ষ ত্যা…

Read more »

মুক্তিযুদ্ধ প্রতিদিনঃ ২৮ এপ্রিল, ১৯৭১

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> <div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"> </div> <table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody> <tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgCQv3sW-eY1wkAYl8dsYSn0lfq_uzEjhJGVhSKGAYthRbNe7g9Fmoao8T0MOkDC46H3dB23m1q_MJBVyqa-jFIlHFuTLz9-eemMH0QGjLVvWJR0gwJ7tzxMAC5mC8xI_4Dgd-agj9AUQk/s1600/mp.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img border="0" height="332" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgCQv3sW-eY1wkAYl8dsYSn0lfq_uzEjhJGVhSKGAYthRbNe7g9Fmoao8T0MOkDC46H3dB23m1q_MJBVyqa-jFIlHFuTLz9-eemMH0QGjLVvWJR0gwJ7tzxMAC5mC8xI_4Dgd-agj9AUQk/s640/mp.jpg" width="640" /></a></td></tr> <tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;"></td></tr> </tbody></table> <b>২৮ এপ্রিল, ১৯৭১</b><br /> <ul> <li style="text-align: justify;">প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আমদ স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারকে বিনাশর্তে অস্ত্র সাহায্য ও স্বাধীন বাংলাদেশকে স্বীকৃতিদানের জন্য প্রতিবেশি দেশসমূহের সরকারের প্রতি আবেদন জানান।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>সোভিয়েত প্রধানমন্ত্রী আলেক্সি কোসিগিন পাকিস্তানি প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের কাছে প্রেরিত এক বার্তায় অবিলম্বে দেশের পূর্বাঞ্চলে গণহত্যা বন্ধ করা আহ্বান জানান।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>পাকবাহিনী মাধবপুরে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধ ব্যুহের ওপর তীব্র আক্রমণ চালায়। সারাদিন প্রচন্ড গোলা বিনিময়ের পর গোলাবারুদ ফুরিয়ে এলে মুক্তিযোদ্ধারা প্রতিরোধ ব্যুহ ত্যাগ করে সিলেটের মনতলা নামক স্থানে চলে আসে এবং নতুন করে প্রতিরক্ষা গঠন করে। এ যুদ্ধে পাকবাহিনীর প্রায় ৩০০ জন হতাহত হয়। যুদ্ধে সিপাহী খালেদ এবং সিপাহী শাহজাহান শাহাদাৎ বরণ করেন।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>মুক্তিযোদ্ধারা চট্টগ্রামের হিকুয়া এলাকা থেকে সরে এসে চিকনছড়া নামক স্থানে শক্ত প্রতিরক্ষা ব্যুহ তৈরি করে।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>ভোরে ঢাকার মিরপুর ও মোহাম্মদপুরে মুক্তিবাহিনীর গেরিলারা টহলদার পাকসেনাদের ওপর আক্রমণ চালায়। বন্দুকযুদ্ধে ৭ জন গেরিলা যোদ্ধা শহীদ হন।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>হানাদার ঘাতকরা মিরপুরে এক পৈশাচিক হত্যাকান্ড চালায়। এ হত্যাকান্ডে হানাদারদের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে অংশ নেয় স্থানীয় বিহারীরা । এ ছাড়াও অসংখ্য বাঙালিকে পাকসেনারা ক্যাম্পে ধরে নিয়ে যায়। এদের অধিকাংশই আর কোনদিন পৃথিবীর আলো দেখেনি।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>পত্রিকায় দেয়া এক বিবৃতিতে শান্তি ও কল্যাণ পরিষদের সেক্রেটারি জেনারেল মওলানা নুরুজ্জামান কল্যাণ পরিষদের সকল সদস্যকে সেনাবাহিনীর পাশে থেকে মুক্তিবাহিনী নামধারী দুষ্কৃতকারীদের সমূলে উৎখাতের নির্দেশ দেন। তিনি জানান, শত্রুদের প্রশ্রয় দিলে বহু ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত পাকিস্তান তারা ধবংস করে দেবে। তাদের প্রচেষ্টা সফল হলে আমরা দাসে পরিণত হবো।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>ভারতীয় হাই কমিশনারকে পাকিস্তানি পররাষ্ট্র দফতরে ডেকে এনে সতর্কতা ও হুমকি দেওয়া হয়।</li> </ul> <ul> <li style="text-align: justify;">বিশ্ব শান্তি পরিষদের সম্মেলনে গৃহীত এক প্রস্তাবে বলা হয়, বাংলাদেশে রক্তগঙ্গা বন্ধ করার জন্য বিশ্ব জনমত ও বিশ্বের সর্বত্র শান্তিকামী শক্তিগুলোকে অবিলম্বে তৎপর হতে হবে। আওয়ামী লীগ নেতৃবর্গ এবং জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের বিশেষ করে শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনরক্ষা করতেই হবে। শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের জনগণের নির্বাচিত নেতা।</li> </ul> তথ্যসূত্র: মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর</div>

মুক্তিযুদ্ধ প্রতিদিনঃ ২৮ এপ্রিল, ১৯৭১

২৮ এপ্রিল, ১৯৭১ প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আমদ স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারকে বিনাশর্তে অস্ত্র সাহায্য ও স্বাধীন বাংলাদেশকে স্বীকৃতিদানের জন্য প্রতিবেশি দেশসমূহের সরকারের প্রতি আ…

Read more »

মুক্তিযুদ্ধ প্রতিদিনঃ ২৭ এপ্রিল, ১৯৭১

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> <div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"> </div> <table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody> <tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgCQv3sW-eY1wkAYl8dsYSn0lfq_uzEjhJGVhSKGAYthRbNe7g9Fmoao8T0MOkDC46H3dB23m1q_MJBVyqa-jFIlHFuTLz9-eemMH0QGjLVvWJR0gwJ7tzxMAC5mC8xI_4Dgd-agj9AUQk/s1600/mp.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img border="0" height="332" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgCQv3sW-eY1wkAYl8dsYSn0lfq_uzEjhJGVhSKGAYthRbNe7g9Fmoao8T0MOkDC46H3dB23m1q_MJBVyqa-jFIlHFuTLz9-eemMH0QGjLVvWJR0gwJ7tzxMAC5mC8xI_4Dgd-agj9AUQk/s640/mp.jpg" width="640" /></a></td></tr> <tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;"></td></tr> </tbody></table> <b>২৭ এপ্রিল, ১৯৭১</b><br /> <ul> <li style="text-align: justify;">কুমিল্লার মিয়াবাজারে পাকবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে প্রচন্ড সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে পাকবাহিনীর অনেক সৈন্য হতাহত হয়।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>পাকহানাদার বাহিনী বিমান হামলার পরক্ষণেই সুযোগ বুঝে সিরাজগঞ্জ শহরে ঢুকে পড়ে।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>বিকেলে পাকবাহিনীর বিশাল দল মুক্তিযোদ্ধাদের মহালছড়ি হেড কোয়ার্টার আক্রমণ করে। এ যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটে খাগড়াছড়ি এসে ডিফেন্স নেয়। ক্যাপ্টেন কাদের যুদ্ধ কালে শত্রুর গুলিতে শহীদ হন।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>পাকবাহিনী জনতার প্রতিরোধ ভেঙে চকরিয়ায় প্রবেশ করেই চিরিঙ্গার হিন্দুপাড়ায় আক্রমণ চালায়। পাকবর্বররা আওয়ামী লীগ নেতা এস.কে শামসুল হুদা, দেলোয়ার হোসেন, সারদা বাবু ও নূরুল কবিরসহ বহু নেতা ও কর্মীর ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়। পাকবাহিনীর হামলায় আওয়ামী লগি নেতা সারদা বাবুর ছেলে মনীন্দ্র ও লক্ষ্যচরস্থ শহীদ মুক্তিযোদ্ধা হাবিলদার আবুল কালামের ভাই আবুল হোসেন শহীদ হন।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>পাকহানাদার বাহিনী জগন্নাথপুর থানায় প্রবেশ করে ব্যারিস্টার আবদুল মতিনের বাড়িতে ঘাঁটি স্থাপন করে। পাকহানাদাররা অনেক বাড়িঘর জ্বালিয়ে এলাকার ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>শাহবাজপুরে পাকবাহিনীর ওপর সফল আক্রমণ চালিয়ে লে. মোরশেদের নেতৃত্বাধীন মুক্তিযোদ্ধা দল মাধবপুরে প্রত্যাবর্তন করে। উক্ত তৎপরতায় পাকিস্তান বাহিনীর কিছু সৈন্যহতাহত হয়।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>চট্টগ্রামের হিকুয়া নামক স্থানে মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে পাকবাহিনীর প্রচন্ড প্রচন্ড সংঘর্ষ হয়। রামগড় দখলের জন্য হিকুয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি স্থান।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>পাবনা-বগুড়া মহাসড়কের ডাব-বাগানে (বর্তমান শহীদনগর) মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থানের ওপর পাকবাহিনী আকস্মিক আক্রমণ চালায়। এ আক্রমণে সিপাহী নেফরিুল হোসেন, সিপাহী রমজান আলী, ল্যান্স নায়েক ফজলুর রহমান, হাবিলদার মোকসেদ আলীসহ ১৭ জন বীরযোদ্ধা শহীদ হন। অপরদিকে ৩০-৩৫জন শত্রু সৈন্য হতাহত হয়।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>প্রচন্ড সংঘর্ষের পর পাকবাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে নোয়াখালী, সান্তাহার, সিরাজগঞ্জ ও মৌলভীবাজার পুনর্দখল করে।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>অধিকৃত ঢাকার গভর্নর লে. জেনারেল টিক্কা খান ‘পূর্ব পাকিস্থান রাইফেল’ (ইপিআর)-এর নাম পরিবর্তন করে ‘পূর্ব পাকিস্তান বেসামরিক বাহিনী’ (ইপিসিএফ) নামকরণ করে।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>বৃটিশ এমপি জন স্টোনহাউস লন্ডনে বিবিসির সাথে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, পূর্ব বাংলায় মারাত্মক ও ভয়ঙ্কর সব ব্যাপার ঘটছে। ঢাকায় ঠান্ডা মাথায় মানুষ খুন করা হয়েছে। সেখানে সেনাবাহিনী যা করছে তা নিঃসন্দেহে গণহত্যা। নির্বাচনে শতকরা ৯৮ ভাগ ভোটার যে রায় দিয়েছেন, সামরিক জান্তা নেই গণতান্ত্রিক রায়কে কেবল প্রত্যাখ্যানই করেননি তা ভেস্তে দেবার পরিকল্পনা এঁটেছেন। এ বিষয়টি কখনোই উপেক্ষা করা যায় না। এ ব্যাপারে আমাদের কত্যর্ব রয়েছে। আমাদের নিষ্ক্রয় থাকা উচিত নয়।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>পাকিস্তান বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার ভাইস মার্শাল এ. রহিম খান ঢাকা আসেন। ঢাকায় তিনি সার্বিক অবস্থা প্রত্যক্ষ করে বিমান হামলা সম্পর্কে কৌশল নির্ধারণ করেন।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>ইসলামাবাদে পাকিস্তান সরকারের পররাষ্ট্র দফতরের জনৈক্ মুখপাত্র জানান, নিউইয়র্কে পাকিস্তানের ভাইস কন্সাল মাহমুদ আলী তাঁর চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করায় তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।</li> </ul> <ul> <li style="text-align: justify;">ঢাকায় সামরিক কর্তৃপক্ষ ১৪৮নং সামরিক বিধি জারি করে। এ আদেশের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা এবং তাদের সহায়তাকারীদের পাইকারী শাস্তির নির্দেশ দেয়া হয়। এ আদেশে কোনো কারণ ছাড়াই কেবলমাত্র সন্দেহের ওপর ভিত্তি করে চরম শাস্তির লাইসেন্স দেয়া হয় ঘাতকদের। এমনকি যে এলাকায় মুক্তিযোদ্ধারা তৎপরতা চালাবে সে এলাকার লোকদের বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষমতা লাভ করে দালালরা।</li> </ul> তথ্যসূত্র: মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর</div>

মুক্তিযুদ্ধ প্রতিদিনঃ ২৭ এপ্রিল, ১৯৭১

২৭ এপ্রিল, ১৯৭১ কুমিল্লার মিয়াবাজারে পাকবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে প্রচন্ড সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে পাকবাহিনীর অনেক সৈন্য হতাহত হয়। পাকহানাদার বাহিনী বিমান হামলার পরক্ষণেই সুযোগ বুঝে সিরাজগঞ্জ শহরে ঢুকে …

Read more »

মুক্তিযুদ্ধ প্রতিদিনঃ ২৬ এপ্রিল, ১৯৭১

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> <div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"> </div> <table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody> <tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgCQv3sW-eY1wkAYl8dsYSn0lfq_uzEjhJGVhSKGAYthRbNe7g9Fmoao8T0MOkDC46H3dB23m1q_MJBVyqa-jFIlHFuTLz9-eemMH0QGjLVvWJR0gwJ7tzxMAC5mC8xI_4Dgd-agj9AUQk/s1600/mp.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img border="0" height="332" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgCQv3sW-eY1wkAYl8dsYSn0lfq_uzEjhJGVhSKGAYthRbNe7g9Fmoao8T0MOkDC46H3dB23m1q_MJBVyqa-jFIlHFuTLz9-eemMH0QGjLVvWJR0gwJ7tzxMAC5mC8xI_4Dgd-agj9AUQk/s640/mp.jpg" width="640" /></a></td></tr> <tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;"></td></tr> </tbody></table> <b>২৬ এপ্রিল, ১৯৭১</b><br /> <ul style="text-align: justify;"> <li>মীর শওকত আলী মহালছড়িস্থ মুক্তিযোদ্ধা হেড কোয়ার্টার আক্রমণে পাকবাহিনী তৎপরতা প্রতিরোধ করতে ক্যাপ্টেন খালেকুজ্জামান ও তাঁর দলকে নানিয়ারচর বাজারে বড় পাহাড়ের ওপর ডিফেন্স গ্রহণের নির্দেশ দেন। ক্যাপ্টেন কাদের এর নেতৃত্বে একটি মুক্তিযোদ্ধা দলকে সড়কপথে পাকবাহিনীর গতিপথ রুদ্ধ করতে পাঠান এবং লে. মাহফুজের নেতৃত্বে একটি দলকে রিজার্ভ ডিফেন্স রাখেন যাতে পাল্টা আক্রমণ করা যায়।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>সিরাজগঞ্জের কাশীনাথপুরস্থ মুক্তিযোদ্ধাদের ঘাঁটির ওপর পাকবাহিনী হঠাৎ আক্রমণ চালায়। এ যুদ্ধে ৩০-৪০ জন মুক্তিযোদ্ধা শাহাদাৎ বরণ করেন।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>পাকহানাদার বাহিনী সোজাপথে সিরাজগঞ্জ ঢুকতে ব্যর্থ হয়ে প্রবল বোমাবর্ষণ শুরু করে।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>কুড়িগ্রামে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি টহলদার দলের সঙ্গে পাকবাহিনীর ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে মুক্তিযোদ্ধারা পাকবাহিনীর বেশকিছু ক্ষতিসাধন করে নিরাপদ ঘাঁটিতে ফিরে আসে। ‍</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>পাকহানাদার বাহিনী বরিশাল দখলের পর শুরু করে গণহত্যা, নারী ধর্ষণ,অবাধ লুন্ঠন ও অগ্নিসংযোগ। ভারি অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত পাকবাহিনী অবিরাম বোমা ও গুলিবর্ষণের মুখে এসব এলাকার মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে। ফলে মুক্তিযোদ্ধারা শহর ছেড়ে গ্রাম এলাকায় অবস্থান নেয়।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>বর্বর পাকবাহিনী সিলেটের কালাগুল চা-বাগানে হামলা চালিয়ে ৫০ জন নিরীহ মানুষকে হত্যা করে।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>টাইম ম্যাগাজিন লিখেছে: গৃহযুদ্ধের দীর্ঘস্থায়ী গেরিলা তৎপরতার অধ্যায় ইতোমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে, অধিকাংশ শহর সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে আর বিদ্রোহীদের দখলে রয়েছে গ্রাম এলাকার বেশিরভাগ। পূর্ব পাকিস্থানকে কব্জা করে রাখার সংকল্পে পাকিস্তান যতই অটল থাক, পরিস্থিতি-দৃষ্টে সিদ্ধান্তে আসতে হয় যে, শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ স্বাধীন হবেই।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>সাবেক প্রাদেশিক শিক্ষামন্ত্রী ও মুসলিম লীগের (কাইয়ুম) সহ-সভাপতিমফিজুদ্দিন আহমদ, প্রাদেশিক মুসলিম লীগের (কনভেনশন) সাবেক সাধারণ সম্পাদক মওলানা আবদুল মান্নান ঢাকায় এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, পাকিস্তানের স্বাধীনতা রক্ষায় মাদ্রাসা শিক্ষক ও ওলেমারা গৌরবময় ভূমিকা পালন করবেন।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>তারা আরও বলেন, পাকিস্তানকে রক্ষা এবং দুষ্কৃতকারী ও অনুপ্রবেশকারী (মুক্তিযোদ্ধা) সহ সমাজ ও রাষ্ট্রবিরোধীদের নিশ্চিহ্ন করে পূর্ব পাকস্তানের দেশিপ্রেমিক নাগরিখরা দেশের পশ্চিমাংশের সাথে একত্রিত হতে যে প্রস্তুত আছেন সে ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। তারা এব্যাপারে সরকারকে সহযোগিতা করার জন্য জনসাধারণের প্রতি আহ্বান জানান।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>২৩ এপ্রিল জারিকৃত মিশন বন্ধের নির্দেশ কার্যকর করতে সামরিক কর্তৃপক্ষ বেলা ১২টায় ঢাকাস্থ ভারতীয় ডেপুটি হাই কামিশন বলপূর্বক বন্ধ করে দেয়।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>রাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর চীফ অব স্টাফ জেনারেল হামিদ খান পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত হয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নির্ধরণের জন্য ঢাকায় আসেন। টিক্কা খানসহ উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তারা হামিদ খানকে বিমান বন্দরে অভ্যর্থনা জানান।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>সামরিক কর্তৃপক্ষ আদেশ জারি করে, কেউ যোগাযোগ ব্যবস্থা, গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ও সরকারি সম্পত্তির ক্ষতিসাধন করলে তাকে সর্বোচ্চ মৃত্যুদন্ড দেয়া হবে। যেখানে ক্ষতিসাধন করা হবে তার আশপাশের অধিবাসীদের বিরুদ্ধে পাইকারি ব্যবস্থা নেয়া হবে।</li> </ul> <ul> <li style="text-align: justify;">শান্তি কমিটির জেলা আহ্বায়কদের নাম ঘোষণা করা হয়। এরা হলেন:</li> </ul> <blockquote class="tr_bq"> <span style="text-align: justify;">বরিশাল জেলা - মওলানা বশির উল্লাহ আতাহরী প্রাক্তন এমএলএ ও অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম সিকদার</span><span style="text-align: justify;">দিনাজপুর জেলা - মৌলভী মতিউর রহমান চৌধুরী ও আহমদ জান মোক্তার</span><span style="text-align: justify;">ঈশ্বরদি (পাবনা জেলা) - মমতাজুর রহমান</span><span style="text-align: justify;">পটুয়াখালী জেলা - প্রাক্তন এমএলএ কসিমউদ্দিন সিকদার এবং</span><span style="text-align: justify;">বগুড়া, খুলনা, মাদারীপুর ও পটুয়াখালী জামে মসজিদের ইমামবৃন্দ।</span></blockquote> তথ্যসূত্র: মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর</div>

মুক্তিযুদ্ধ প্রতিদিনঃ ২৬ এপ্রিল, ১৯৭১

২৬ এপ্রিল, ১৯৭১ মীর শওকত আলী মহালছড়িস্থ মুক্তিযোদ্ধা হেড কোয়ার্টার আক্রমণে পাকবাহিনী তৎপরতা প্রতিরোধ করতে ক্যাপ্টেন খালেকুজ্জামান ও তাঁর দলকে নানিয়ারচর বাজারে বড় পাহাড়ের ওপর ডিফেন্স গ্রহণের নির্দেশ দ…

Read more »

একাত্তরের দিনগুলি: ২৫ এপ্রিল, ১৯৭১

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> <br /> <table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody> <tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgzk9IJVRrSNTTd9Pqz5He9fLUw1h5GFITxiS6kjhjEeTrwn8YzUv8r2Ss4CYesxGu3wzmgJzuVOFyX34TNXqXygYuM3qbcqJ2bX9CTW4Du3jQOg-FLonzV9sFtXCguKBPvu_uP5FR-tBY/s1600/ekd.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img border="0" height="332" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgzk9IJVRrSNTTd9Pqz5He9fLUw1h5GFITxiS6kjhjEeTrwn8YzUv8r2Ss4CYesxGu3wzmgJzuVOFyX34TNXqXygYuM3qbcqJ2bX9CTW4Du3jQOg-FLonzV9sFtXCguKBPvu_uP5FR-tBY/s640/ekd.jpg" width="640" /></a></td></tr> <tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;"></td></tr> </tbody></table> <br /> <b>২৫ এপ্রিল, ১৯৭১, রবিবার </b><br /> <br /> <div style="text-align: justify;"> <br /> আজ নাসির আমেরিকার পথে জেনেভা রওনা হবে। প্লেন বিকেলে, কিন্তু যাত্রী ছাড়া অন্য কারো এয়ারপোর্টে ঢোকার হুকুম নেই। তাই দুপুরেই বাসায় গিয়ে নাসির ও লীনাকে বিদায় জানিয়ে এসেছি।</div> <div style="text-align: justify;"> <br /> ঢাকার বিমানবন্দরে এখন কড়া সিকিউরিটি। শুনেছি, বিমানযাত্রীর গাড়িও এয়ারপোর্টের গেট পেরিয়ে ভেতরে যেতে পারে না। গেটের বাইরে রাস্তার ওপর নেমে যেতে হয়। গেটের ভেতরে বাউন্ডারি ওয়াল ঘেরা জায়গাটা কম বড় নয়-আগে এখানে এক সঙ্গে প্রায় ৬০/৭০ টা গাড়ি পার্ক করা যেত। এতটা চৌহদ্দি মালপত্রসহ হেঁটে তারপর এয়ারপোর্ট বিল্ডিংয়ে ঢোকা। যাত্রীদের কষ্টের আর শেষ নেই।</div> <div style="text-align: justify;"> <br /> বাসায় ফিরে আমের আচার দিতে বসলাম। এবার আচার অনেক বেশি করে বানিয়ে বয়েম ভরে রেখে দেব। দুর্দিনে আর কিছু নাই পাই, শুধু আচার দিয়েই ভাত খাওয়া যাবে।</div> <div style="text-align: justify;"> <br /> নারিন্দা থেকে আতাভাই এসেছিলেন খোঁজখবর নিতে। খোদাভক্ত, পরহেজগার সদাপ্রসন্ন মানুষ, কিন্তু ইসলামের নামে পাকিস্তানিরা যা করছে, তাতে তার প্রসন্নতা, শান্তি এবং ঘুম-সব নষ্ট হয়ে গেছে। বললেন, “বুঝলে জাহানারা, ওদের আর বেশিদিন নাই। ইসলামের নামে ওরা যা করছে তাতে খোদার আরশ পর্যন্ত কেঁপে উঠছে। মসজিদে বসে কোরান তেলাওয়াত করছিলেন ক্বারী সাহেব, তাকে পর্যন্ত গুলি করে মেরেছে। খোদার ঘরে ঢুকে মানুষ খুন! মায়ের সামনে ছোট বাচ্চাকে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে মেরেছে। বয়ঃপ্রাপ্ত ছেলের সামনে মাকে বেইজ্জত করেছে। ভেবেছে খোদাতালা সইবেন এত অনাচার? ওরা নিজেদের ধ্বংস নিজেরাই ডেকে আনছে।</div> <div style="text-align: justify;"> <br /> বিহারিরা শেষ পর্যন্ত তাদের মিছিল বের করতে পারেনি, সরকার পারমিশান দেয়নি।</div> <div style="text-align: justify;"> <br /> বাঁচা গেল। তবু গতকাল তারার মুখে শোনার পর থেকে রুমী-জামীকে একা কোথাও বেরোতে দিচ্ছি না।<br /> <br /> - শহীদ জননী জাহানারা ইমামের বই থেকে</div> </div>

একাত্তরের দিনগুলি: ২৫ এপ্রিল, ১৯৭১

২৫ এপ্রিল, ১৯৭১, রবিবার আজ নাসির আমেরিকার পথে জেনেভা রওনা হবে। প্লেন বিকেলে, কিন্তু যাত্রী ছাড়া অন্য কারো এয়ারপোর্টে ঢোকার হুকুম নেই। তাই দুপুরেই বাসায় গিয়ে নাসির ও লীনাকে বিদায় জানিয়ে এসেছি। ঢা…

Read more »

মুক্তিযুদ্ধ প্রতিদিনঃ ২৫ এপ্রিল, ১৯৭১

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> <div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> <div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"> </div> <table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody> <tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgCQv3sW-eY1wkAYl8dsYSn0lfq_uzEjhJGVhSKGAYthRbNe7g9Fmoao8T0MOkDC46H3dB23m1q_MJBVyqa-jFIlHFuTLz9-eemMH0QGjLVvWJR0gwJ7tzxMAC5mC8xI_4Dgd-agj9AUQk/s1600/mp.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img border="0" height="332" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgCQv3sW-eY1wkAYl8dsYSn0lfq_uzEjhJGVhSKGAYthRbNe7g9Fmoao8T0MOkDC46H3dB23m1q_MJBVyqa-jFIlHFuTLz9-eemMH0QGjLVvWJR0gwJ7tzxMAC5mC8xI_4Dgd-agj9AUQk/s640/mp.jpg" width="640" /></a></td></tr> <tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;"></td></tr> </tbody></table> <b>২৫ এপ্রিল, ১৯৭১</b><br /> <ul style="text-align: justify;"> <li>দশজন মার্কিন সিনেটর ওয়াল্টার মন্ডেল, এডওয়ার্ড মাস্কি, হিউবার্ট হামফ্রে, বার্চ বে, জর্জ ম্যাকগভার্ন, ফ্রেড হ্যারিস, হ্যারল্ড হিউস, উইলিয়াম প্রক্সমায়ার, টমাস এগ্রেটন ও ক্লিফোর্ড কেস এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, পাকিস্তান সরকার যতদিন না বাংলাদেশের জন্য আপৎকালীন ভিত্তিতে ত্রান কাজের ব্যবস্থা করবে এবং আন্তর্জাতিক রেডক্রসকে সেখানে কাজ করতে দেবে, ততদিন পাকিস্তানকে সাহায্যদাতা পাশ্চাত্য দেশসমূহ ও জাতিসংঘের উচিত তাদের সমস্ত বৈদেশিক সাহায্য বন্ধ করে দেয়া।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>তৃতীয় বেঙ্গলের যোদ্ধাগণ পশ্চিম-দিনাজপুরের কামারপাড়া স্কুলে ক্যাম্প স্থাপন করে।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>পাকবাহিনী বরিশালের ওপর তিনদিক থেকে আক্রমণ চালায়। পাকসেনাদের একটি দল মলাদির দিক থেকে শেলিং করতে করতে, এবং অন্য দুইটি দল খুলনা ও ফরিদপুর থেকে মার্চ করতে করতে বরিশালের দিকে অগ্রসর হয়। চারটি জেট বিমান বরিশালের ওপর অনবরত বোমা বর্ষণ করে । ছয়টি হেলিকপ্টারযোগে পাকবাহিনী বরিশালের অসংখ্য ছত্রীসেনা নামিয়ে দেয়। প্রচন্ড লড়াই শেষে পাকবাহিনী বরিশাল শহর দখল করে নেয়।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>মুক্তিযোদ্ধারা বরিশাল শহরের চার মাইল দূরে লাকুটিয়া জমিদার বাড়িতে তাদের ঘাঁটি স্থানান্তর করে।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>বরিশাল শহরের কয়েক মাইল উত্তরে জুনাহার নামক স্থানে মুক্তিযোদ্ধা ও পাকসেনাদের মধ্যে প্রচন্ড গোলা বিনিময় হয়।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>বরিশালের গৌরনদীর উত্তরে কটকস্থল নামক স্থানে মুক্তিযোদ্ধারা প্রতিরোধ ব্যুহ রচনা করে।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>বিকেলে পাকবাহিনী গোপালগঞ্জের মানিকদাহ ও হরিদাশপুরে প্রবেশ করে। পাকিস্তানের প্রাক্তন বানিজ্য মন্ত্রী ওয়াহিদুজ্জামানের নেতৃত্বে গঠিত স্বাধীনতা-বিরোধীদলের সহায়তায় পাকবাহিনী গোপালগঞ্জ স্টেডিয়াম, ঈদগাহ মাঠ এবং কলেজে ক্যাম্প স্থাপন করে।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>নওগাঁর কুমরিয়া, জাফরাবাজ, লক্ষণপুর, মোহনপুর, হাপানিয়া, একডালা ও মাধাইমুরী গ্রামে পাকহানাদার বাহিনী আক্রমণ চালায়। পাক বর্বরদের অগ্নিসংযোগ ও হত্যাকান্ডে গ্রামের পর গ্রাম ভস্মীভূত হয় এবং কুমরিয়া গ্রামের মেরু মন্ডল, জাফরাবাজ গ্রামের আকালু মন্ডল, ফয়েজ মন্ডল, আলী মন্ডল ও মোহনপুর গ্রামের ১১ জন নিরীহ মানুষ শহীদ হন।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>নওগাঁ জেলার তিলকপুর ইউনিয়নের ফতেপুর গড়ের হাটে পাকহানাদার বাহিনী হামলা  চালায়। বর্বরদের এ হামলায় ১৩ জন নিরীহ মানুষ শাহাদাৎ বরণ করেন।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>মুক্তিবাহিনী করেরহাট থেকে পিছুহটে রামগড়ে চট্টগ্রাম সেক্টরের সদর দফতর স্থাপন করে।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>সামরিক কর্তৃপক্ষ খ-অঞ্চল (বাংলাদেশ)-কে তিনটি সামরিক সেক্টরে ও ১০টি সাব-সেক্টরে ভাগ করে। সেক্টর তিনটি হচ্ছে: ঢাকা, কুমিল্লা ও বগুড়া।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটি এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে কমিটির মিশন সফল করার উদ্দেশ্যে জেলা ও মহকুমা সদরে শান্তি কমিটি গঠনের জন্য কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির প্রতিনিধিদের পাঠানোর ঘোষণা দেয়।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>রাজশাহীতে আয়েনউদ্দিনের নেতৃত্বে জামাত নেতা আফাজউদ্দিনকে আহ্বায়ক করে ১৩ সদস্য বিশিষ্ট জেলা ‘শান্তি কমিটি’ গঠিত হয়। ঢাকা পিডিপি-র সহসভাপতি সৈয়দ নজরুল হান্নান এক বিবৃতিতে জানান, পূর্ব পাকিস্তানের দুর্ভাগ্যজনক ঘটনাবলীর জন্যে আওয়ামী লীগ সম্পূর্ণরূপে দায়ী। তাদের আসল উদ্দেশ্য আমাদের পবিত্র ইসলামী রাষ্ট্রের অংশকে ছিনিয়ে নিয়ে ভারতের শৃঙ্খলে আবদ্ধ করা।</li> </ul> তথ্যসূত্র: মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর</div> </div>

মুক্তিযুদ্ধ প্রতিদিনঃ ২৫ এপ্রিল, ১৯৭১

২৫ এপ্রিল, ১৯৭১ দশজন মার্কিন সিনেটর ওয়াল্টার মন্ডেল, এডওয়ার্ড মাস্কি, হিউবার্ট হামফ্রে, বার্চ বে, জর্জ ম্যাকগভার্ন, ফ্রেড হ্যারিস, হ্যারল্ড হিউস, উইলিয়াম প্রক্সমায়ার, টমাস এগ্রেটন ও ক্লিফোর্ড কেস এক …

Read more »

মুক্তিযুদ্ধ প্রতিদিনঃ ২৪ এপ্রিল, ১৯৭১

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> <div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"> </div> <div style="text-align: justify;"> <table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody> <tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgCQv3sW-eY1wkAYl8dsYSn0lfq_uzEjhJGVhSKGAYthRbNe7g9Fmoao8T0MOkDC46H3dB23m1q_MJBVyqa-jFIlHFuTLz9-eemMH0QGjLVvWJR0gwJ7tzxMAC5mC8xI_4Dgd-agj9AUQk/s1600/mp.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img border="0" height="332" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgCQv3sW-eY1wkAYl8dsYSn0lfq_uzEjhJGVhSKGAYthRbNe7g9Fmoao8T0MOkDC46H3dB23m1q_MJBVyqa-jFIlHFuTLz9-eemMH0QGjLVvWJR0gwJ7tzxMAC5mC8xI_4Dgd-agj9AUQk/s640/mp.jpg" width="640" /></a></td></tr> <tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;"></td></tr> </tbody></table> <b>২৪ এপ্রিল, ১৯৭১</b></div> <ul style="text-align: justify;"> <li>ভারতের হিলিতে অবস্থানরত মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর পাকবাহিনী আক্রমণ চালায়। এ আক্রমণে মুক্তিযোদ্ধারা তাদের অবস্থান ছেড়ে পিছিয়ে গিয়ে পুনরায় সংঘবদ্ধ হয়।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>পাকহানাদার বাহিনী সড়কপথে মাদারীপুর শহরে প্রবেশ করে। শহরে ঢুকেই কালবিলম্ব না করে স্থানীয় দোসরদের সহযোগিতায় এম.পি আসমত আলী খান ও ফনীভূষণ মজুমদারের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ এবং বহু বাড়িসহ দোকানপাট লুট করে।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বালুরঘাট, বাঙালিপুর, টিয়রপাড়া ও মধুপুরে ক্যাম্প স্থাপন করে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণের প্রস্তুতি চলে। এ সমস্ত ক্যাম্পে মুক্তিযোদ্ধাদের ১ মাস ১৫ দিন মেয়াদে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে ‘ফ্ল্যাগ মিটিং’ অনুষ্ঠিত হয়। এতে পাকিস্তানিরা বারবার ইপিআর বাহিনীকে তাদের হাতে সমর্পণ করার জন্য চাপ দেয়। কিন্তু ভারতীয বিএসএফ-এর মেজর ভেদী, ক্যাপ্টেন ঘোষ ইপিআর সম্পর্কে কিছু জানেন না বলে জানান।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>রাঙামাটি থেকে মহালছড়ির থেকে আগত পাকবাহিনীর দুই কোম্পানি সৈন্যের সাথে ক্যাপ্টেন আফতাব কাদের ও লে. মাহফুজের নেতৃত্বাধীন মুক্তিযোদ্ধাদের কুতুবছড়ি নামক স্থানে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে পাকবাহিনীর প্রচুর ক্ষতি হয়।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>পাকবাহিনীর একদল সৈন্য চিংড়ি নদী দিয়ে নানিয়ারচর বাজার হয়ে মহালছড়ির দিকে অগ্রসর হয়।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>মুক্তিযোদ্ধা সংগ্রাম পরিষদের আহ্বানে পুলিশ সুপার নূরুল মোমিন খান (মিহির) ফরিদপুর পুলিশ লাইনের অস্ত্রাগার খুলে দেন। ফরিদপুরে মুক্তিবাহিনীর জন্য এটাই প্রথম অস্ত্র লাভ।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়কে করেরহাট নামক স্থানে পাকবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধারা সাহসিকতার সাথে পাকসেনাদের প্রতিহত করেন।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>বৃটিশ পার্লামেন্ট শ্রমিকদলের সদস্য উড্রো ওয়াট বলেন, পূর্ব পাকিস্তানের ব্যাপক হত্যার প্রতিবাদে আমরা সবাই এতো চুপচাপ কেন? পূর্ব পাকিস্তানে যেসব ঘটনা ঘটছে তা অত্যন্ত জঘন্য। হিটলার ও স্ট্যালিনের পর এ ধরনের হত্যাকান্ডের কথা আর কখনো শোনা যায়নি। আমরা এ বিষয়ে কি করছি? জেনারেল ইয়াহিয়াকে এখনও আমরা সাহায্য দিচ্ছি। সারাদেশ উজাড় করার বিষয়টি মোটেই ঘরোয়া ব্যাপার নয়।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>ঢাকার মিরপুরে দেওয়ান ওয়ারেসাত হোসেন খানের সভাপতিত্ত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় মো. সামীউদ্দিন খানকে আহ্বায়ক করে ২৫ সদস্য বিশিষ্ট ‘শান্তি কমিটি’ গঠিত হয়। এ সভায় উপস্থিত ছিলেন ‘কেন্দ্রীয় শান্তি’ কমিটির আবুল কাসেম, মাহমুদ আলী, আবদুল জব্বার খদ্দর, মেজর আফসারউদ্দিন প্রমুখ।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>শান্তি কমিটির ১৮টি ইউনিট আহ্বায়কের নাম ঘোষনা করা হয়। আহ্বায়করা হচ্ছেন: </li> </ul> <ol style="text-align: left;"> <li>তেজগাঁও (পূর্ব) মো. ফজলুর রহমান, </li> <li>ধানমন্ডি - এস.এম হাবিবুল হক, </li> <li>নারায়ণগঞ্জ (শহর) - এএসআই সরদার,</li> <li>দিলখুশা - মো. মনসুর আলী, </li> <li>জোয়ার সাহারা - আলী আহসান,</li> <li>শরাফতগঞ্জ - গিয়াসউদ্দিন আহমদ,</li> <li>খিলগাঁও - ড. আইয়ুব আলী, </li> <li>নবীনগর (কুমিল্লা) - মৌলবী সেকেন্দার আলী, </li> <li>জয়দেবপুর - আবদুল মজিদ সরকার, </li> <li>জয়দেবপুর (থানা) - মো. মস্তান খান, </li> <li>রেকাবীবাজার - ইদ্রিস বেপারী, </li> <li>মোহাম্মদপুর - দেওয়ান ওয়ারেসাত আলী, </li> <li>দিলু রোড - জিআন,</li> <li>নিউ ইস্কাটন - মজিবুর রহমান, </li> <li>ধানমন্ডি (পূর্ব) - এম.এ খালেক, </li> <li>মহাখালী - এ.কে.এম আবদুল্লাহ, </li> <li>মিরপুর - মো. শফিউদ্দিন খান ও </li> <li>শাজাহানপুর - এম.এ খালেক।</li> </ol> <ul style="text-align: justify;"></ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>সরকারি এক হ্যান্ড আউটে ঢাকা শহরের পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে বলা হয়, নিউমার্কেট, বায়তুল মোকাররমসহ সমস্ত জায়গায় প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। কোথাও কোনো অস্বাভাবিকতা নেই। প্রদেশের সর্বত্র সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে যথারীতি কাজ চলছে। সব ব্যাপারেই জনগণসহায়তা করছে। বিশেষ করে সীমান্ত এলাকা থেকে দুষ্কৃতকারীদের উচ্ছেদ করে সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রন প্রতিষ্ঠা করায় জনগণের মধ্যে পুরোমাত্রায় আস্থা ফিরে এসেছে।</li> </ul> <div style="text-align: justify;"> তথ্যসূত্র: মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর</div> </div>

মুক্তিযুদ্ধ প্রতিদিনঃ ২৪ এপ্রিল, ১৯৭১

২৪ এপ্রিল, ১৯৭১ ভারতের হিলিতে অবস্থানরত মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর পাকবাহিনী আক্রমণ চালায়। এ আক্রমণে মুক্তিযোদ্ধারা তাদের অবস্থান ছেড়ে পিছিয়ে গিয়ে পুনরায় সংঘবদ্ধ হয়। পাকহানাদার বাহিনী সড়কপথে মাদারীপুর শহরে …

Read more »

একাত্তরের দিনগুলি: ২৪ এপ্রিল, ১৯৭১

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> <br /> <table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody> <tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgzk9IJVRrSNTTd9Pqz5He9fLUw1h5GFITxiS6kjhjEeTrwn8YzUv8r2Ss4CYesxGu3wzmgJzuVOFyX34TNXqXygYuM3qbcqJ2bX9CTW4Du3jQOg-FLonzV9sFtXCguKBPvu_uP5FR-tBY/s1600/ekd.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img border="0" height="332" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgzk9IJVRrSNTTd9Pqz5He9fLUw1h5GFITxiS6kjhjEeTrwn8YzUv8r2Ss4CYesxGu3wzmgJzuVOFyX34TNXqXygYuM3qbcqJ2bX9CTW4Du3jQOg-FLonzV9sFtXCguKBPvu_uP5FR-tBY/s640/ekd.jpg" width="640" /></a></td></tr> <tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;"></td></tr> </tbody></table> <b>২৪ এপ্রিল, ১৯৭১, শনিবার </b><br /> <div style="text-align: justify;"> <br /> মুজিবনগর বলে একটা জায়গায় প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়েছে গত ১৭ এপ্রিল। ১০ তারিখেই নাকি এই প্রবাসী সরকার গঠিত হয়, আকাশবাণী, বিবিসি থেকে সে খবর আগেই জানা গেছে। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকেও নাকি এই প্রবাসী সরকারের নবনিযুক্ত প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদের এক বক্তৃতা প্রচার হয়েছে- আমরা নিজের কানে শুনতে পাই নি কিন্তু অন্যদের কাছে শুনেছি।</div> <div style="text-align: justify;"> <br /> এসব খবর শুনে আনন্দে উত্তেজনায় আমরা সবাই শিহরিত। তবু খবরগুলো সঠিক কি না, বিশ্বাস করব কি করব না-এসব ভাবনায় দুলতে দুলতে শুনি আরেকটা খবর। ১৮ তারিখে কলকাতায় পাকিস্তানি দূতাবাসের ডেপুটি হাই কমিশনার হোসেন আলী বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা করেছেন মিশনের পুরো দলবল নিয়ে।<br /> <br /> এরপর কদিন ধরে ঢাকার কাগজে যে সব খবর বেরোল, তাতে ওদিকের খবরাখবরের ব্যাপারে অবিশ্বাসের কোনো অবকাশ রইল না-<br /> <br /> :কলিকাতাস্থ পাকিস্তান ডেপুটি হাইকমিশন বেআইনী দখল থেকে মুক্ত করার জন্য পাকিস্তান সরকার ভারতের প্রতি আহবান জানিয়েছে।<br /> <br /> গত ১৮ এপ্রিল ভারতীয় বেতারের এক খবরে বলা হয়েছে- কলিকাতার পাকিস্তান ডেপুটি হাইকমিশন অস্তিত্বহীন বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধি পরিচয়দানকারী ব্যক্তিরা দখল করেছে।<br /> <br /> : পাকিস্তান সরকার কলিকাতাস্থ পাকিস্তান দূতাবাস বন্ধে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।<br /> <br /> : ঢাকায় ভারতীয় মিশন গোটাতে বলা হয়েছে।<br /> <br /> এর আগে যে আকাশবাণী আর বিবিসিতে শুনেছিলাম ৬ এপ্রিল নয়াদিল্লিতে পাকিস্তান হাইকমিশনের সেকেন্ড সেক্রেটারি কে.এম.শাহাবুদ্দিন আর প্রেস এটাচি আমজাদুল হক পাকিস্তান সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে দূতাবাস ত্যাগ করেছেন, সে খবরটাও এতদিনে পুরোপুরি বিশ্বাস হল।<br /> <br /> - শহীদ জননী জাহানারা ইমামের বই থেকে</div> </div>

একাত্তরের দিনগুলি: ২৪ এপ্রিল, ১৯৭১

২৪ এপ্রিল, ১৯৭১, শনিবার মুজিবনগর বলে একটা জায়গায় প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়েছে গত ১৭ এপ্রিল। ১০ তারিখেই নাকি এই প্রবাসী সরকার গঠিত হয়, আকাশবাণী, বিবিসি থেকে সে খবর আগেই জানা …

Read more »

একাত্তরের দিনগুলি: ২৩ এপ্রিল, ১৯৭১

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> <br /> <table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody> <tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgzk9IJVRrSNTTd9Pqz5He9fLUw1h5GFITxiS6kjhjEeTrwn8YzUv8r2Ss4CYesxGu3wzmgJzuVOFyX34TNXqXygYuM3qbcqJ2bX9CTW4Du3jQOg-FLonzV9sFtXCguKBPvu_uP5FR-tBY/s1600/ekd.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img border="0" height="332" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgzk9IJVRrSNTTd9Pqz5He9fLUw1h5GFITxiS6kjhjEeTrwn8YzUv8r2Ss4CYesxGu3wzmgJzuVOFyX34TNXqXygYuM3qbcqJ2bX9CTW4Du3jQOg-FLonzV9sFtXCguKBPvu_uP5FR-tBY/s640/ekd.jpg" width="640" /></a></td></tr> <tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;"></td></tr> </tbody></table> <br /> <b>২৩ এপ্রিল, ১৯৭১, শুক্রবার </b><br /> <br /> <div style="text-align: justify;"> <br /> কিছুই ভালো লাগে না। জীবনের, পৃথিবীর সব রসকষ ভো আগেই শুকিয়ে গেছে। যে ভয়, আতঙ্ক আমাদের সবাইকে টানটান করে রেখেছে, তাও যেন শিথিল হয়ে আমাদের দিনরাতগুলোকে এলিয়ে দিয়েছে। <br /> <br /> মা'র বাসায় গেছিলাম সকালে। নিচতলায় রফিকরা আর মণিরা ভাগাভাগি করে থাকছে । মণি আমার চাচাতো বোন। ওরা নাখালপাড়ায় থাকতো। ২৫ মার্চের কয়েকদিন পর এ বাসায় এসে উঠেছে। মণির স্বামী, ছেলেমেয়ে, রফিক, জুবলী, তাদের দুটো বাচ্চা, কাজের মেয়ে আনোয়ারা-দুটো সম্পূর্ণ আলাদা পরিবারের এতগুলো লোক ছোট ছোট চারটে ঘরে থাকছে। বেশ কষ্ট করেই থাকছে। তবে রফিক ভাবছে সায়ান্স ল্যাবরেটরি রোডে ওর ভাই আতিকুল ইসলামের বাসায় উঠে যাবে কিনা। <br /> <br /> আমরা থাকতে থাকতেই মা'র মামাতো ভাইয়ের মেয়ে তারা আর তার স্বামী বেড়াতে এল। ওরা আসাদ গেটের কাছে নিউ কলোনিতে থাকে। ওরা বলল, ওই অঞ্চলে একটা থাকার জায়গা খুঁজতে বেরিয়েছে। কারণ ওদিকে বাঙালিদের থাকাটা ক্রমেই বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে। মিরপুর-মোহাম্মদপুরের বিহারিরা দিন দিন অত্যাচারী হয়ে উঠছে। সৈয়দপুর, পার্বতীপুর, রাজশাহী, চটগ্রাম বিভিন্ন জায়গাতে বাঙালিরা যে বিহারিদের মেরেছে, তার প্রতিবাদে তারা মিছিল বের করবে আগামীকাল। মোহাম্মদপুরের অনেক বাঙালিই ইতিমধ্যে বাসা ছেড়ে শহরের অন্য অঞ্চলে আত্মীয়দের বাসায় চলে গেছে। <br /> <br /> আমি বললাম, "বাঙালিরা বিহারিদের মেরেছে, তার প্রতিবাদে তারা মিছিল বের করবে? আর বিহারিরা যে বাঙালিদের কচুকাটা করেছে, তার বেলায় কে প্রতিবাদ করে?"<br /> <br /> গতকাল প্রচুর রানাবান্না করেছি। কাসেম মাত্র চারদিনের ছুটি নিয়ে গেছে, কিন্তু জানি চারদিনের জায়গায় চোদ্দ দিন হয়ে যাওয়া মোটেও অসম্ভব নয়। আজ কোন কাজ নেই। তাই কি এগারোটার সময় গরম পানিতে সাবান গুলে একগুচ্ছ কাপড় ধুতে বসলাম? বড় বড় বেড কভারও। কিছু একটা কষ্টসাধ্য, ভারি কাজ করা দরকার। কিছু পেটানো, আছড়ানো। সারাদিন ধরেই কাপড় ধোয়া চলছে।<br /> <br /> - শহীদ জননী জাহানারা ইমামের বই থেকে</div> </div>

একাত্তরের দিনগুলি: ২৩ এপ্রিল, ১৯৭১

২৩ এপ্রিল, ১৯৭১, শুক্রবার কিছুই ভালো লাগে না। জীবনের, পৃথিবীর সব রসকষ ভো আগেই শুকিয়ে গেছে। যে ভয়, আতঙ্ক আমাদের সবাইকে টানটান করে রেখেছে, তাও যেন শিথিল হয়ে আমাদের দিনরাতগুলোকে এলিয়ে দিয়েছে। মা…

Read more »

মুক্তিযুদ্ধ প্রতিদিনঃ ২৩ এপ্রিল, ১৯৭১

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> <div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"> </div> <div style="text-align: justify;"> <table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody> <tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgCQv3sW-eY1wkAYl8dsYSn0lfq_uzEjhJGVhSKGAYthRbNe7g9Fmoao8T0MOkDC46H3dB23m1q_MJBVyqa-jFIlHFuTLz9-eemMH0QGjLVvWJR0gwJ7tzxMAC5mC8xI_4Dgd-agj9AUQk/s1600/mp.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img border="0" height="332" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgCQv3sW-eY1wkAYl8dsYSn0lfq_uzEjhJGVhSKGAYthRbNe7g9Fmoao8T0MOkDC46H3dB23m1q_MJBVyqa-jFIlHFuTLz9-eemMH0QGjLVvWJR0gwJ7tzxMAC5mC8xI_4Dgd-agj9AUQk/s640/mp.jpg" width="640" /></a></td></tr> <tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;"></td></tr> </tbody></table> <b>২৩ এপ্রিল, ১৯৭১</b></div> <ul style="text-align: justify;"> <li>প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ বেনাপোলে মুক্তিযোদ্ধাদের ঘাঁটিতে বৃটিশ এম.পি ডগলাস ম্যানকে স্বাগত জানান। এখানে উভয়ের মধ্যে এক ঘন্টা ব্যাপী আলোচরা হয়। </li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দুই ব্যাটালিয়ন সৈন্য যশোরের কাগজপুকুর গ্রামে মুক্তিযোদ্ধাদের মূল ঘাঁটির ওপর আক্রমণ করে। দীর্ঘ ছয় ঘন্টা তুমুল যুদ্ধের পর মুক্তিযোদ্ধারা বেনাপোল কাস্টম কলোনী ও চেকপোস্ট এলাকায় বিকল্প প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নেয়। এ যুদ্ধে ইপিআর বাহিনীর নায়েক সুবেদার মজিবুল হকসহ ১৬ জন মুক্তিযোদ্ধা শাহাদাৎ বরণ করেন। অন্যদিকে পাকবাহিনীর ৫০ জন সৈন্য নিহত ও অনেক আহত হয়।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>পাকবাহিনীর ২০০ সৈন্য রাঙামাটি থেকে মহালছড়ির দিকে যাত্রা করলে ক্যাপ্টেন কাদের ও লে.মাহফুজের নেতৃত্বাধীন মুক্তিবাহিনী তাদের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তোলে।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>পাকিস্তানিদের কাছে ফেনীর পতন হলে মুক্তিযোদ্ধারা ভারতের বিভিন্ন সীমান্তে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলে।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>পাকিস্তান বাহিনীর ব্যাটালিয়ন কমান্ডার লাকসাম পরিদর্শন করেন। তিনি লাকসাম শহরের প্রবীনদের এক সমাবেশে প্রতিশোধ গ্রহণের হুমকি দিয়ে বলেন, ‘গত দুদিনে আপনাদের মুক্তিরা আমাদের বেশ ক্ষতি করেছে। আমরাও তাই করবো।’ অতঃপর পাকবাহিনী নজিরবিহীন নারকীয় হত্যাকান্ডে মেতে ওঠে।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>পাকবাহিনী তিস্তা ও লালমনিরহাট বিমানঘাঁটি থেকে প্রবল গুলিবর্ষণ করতে করতে কুড়িগ্রামের দিকে অগ্রসর হয়। বর্বর পাকবাহিনীর ভারি অস্ত্রের তীব্র আক্রমণে মুক্তিযোদ্ধারা তাদের অবস্থান ছেড়ে দিয়ে পিছু হটে নিরাপদ স্থানে প্রতিরক্ষা ঘাঁটি স্থাপন করে।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>নওগাঁয় হানাদার বাহিনীর গুলিতে মোহনপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলাম, মখরপুর গ্রামের আবদুর রাজ্জাক, দশপাইকার গ্রামের বাচ্চু ও মমতাজউদ্দিন শাহাদাৎ বরণ করেন। বলিহার ইউনিয়নের বাসিন্দা লক্ষ্নৌর মরিস মহাবিদ্যালয় থেকে সঙ্গীতের ওপর বিশেস সনদপ্রাপ্ত নওগাঁর বিশিষ্ট সঙ্গীত বিশারদ ওস্তাদ মানিক চক্রবর্তী এবং মাধাইমুরী গ্রামের বিশিষ্ট সমাজসেবী আলিমউদ্দিন খাঁ মিলন ও আলিম পৃথক পৃথক ঘটনায় পাকসেনাদের হাতে শহীদ হন।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>যুক্তরাজ্যের কমন্স সভায় শ্রমিক দলীয় সদস্য ও অর্থনৈতিক সাহায্য বিষয়ক কমিটির সাবেক সচিব পিটার শোর বলেন, ‘পূর্ব বাংলার পাকিস্তান সরকারের আচরণ সর্বপ্রকার নীতিবহির্ভূত বন্য আচরণ। এ অত্যাচার উৎপীড়ন উপেক্ষা করা লজ্জাজনক হবে। আমি অনুরোধ করছি, শ্রমিক দল যেন এ বিষয়ে দৃঢ়তার সাথে কথা বলে এবং পশ্চিম পাকিস্তানকে সর্বপ্রকার অর্থনৈতিক ও সামরিক সাহায্যদান অবিলম্বে বন্ধ করার জন্য সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করে।’</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>সিলেট শান্তি কমিটির উদ্যোগে স্বাধীনতাবিরোধীরা শহরে মিছিল করে। মিছিলে পাকিস্তান জিন্দাবাদ, ইয়াহিয়া খান জিন্দাবাদ এবং ভারত ও তার দালালদের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বিভিন্ন শ্লোগান প্রদত্ত হয়। মিছিল শেষে অনুষ্ঠিত সভায় শান্তি কমিটির নেতারা দুষ্কৃতকারীদের (মুক্তিযোদ্ধাদের) উৎখাত করে পাকিস্তানের অখন্ডতা বজায় রাখার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে জ্বালাময়ী বক্তৃতা দেয়।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>পাকিস্তান সরকার আগামী ২৬ এপ্রিল ১২টা থেকে কলকাতার পাকিস্তানি ডেপুটি হাই কমিশন বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় এবং একই সময়ে ঢাকায় ভারতীয় ডেপুটি হাই কমিশন বন্ধ করে দেয়ার জন্য ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানায়।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>কৃষক শ্রমিক পার্টির এ.এস.এম. সোলায়মান, নেজামে ইসলামের সাইদ মো.মোস্তফা আল মাদানী, প্রাক্তন এম.এন.এ. রহিমুল্লাহ চৌধুরী ও প্রাক্তন এম.পি.এ. আবদুস সোবহান ঢাকায় পৃথক পৃথক বিবৃতিতে বলেন, পূর্ব পাকিস্তানের আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে ভারতের হস্তক্ষেপের প্রচেষ্টা দেশপ্রেমিক জনগণ ও সশস্ত্র সেনাবাহিনী নস্যাৎ করে দিয়েছে। আমারা আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর জন্য গর্বিত। তারা অনুপ্রবেশকারীদের নির্মূল করতে সশস্ত্র বাহিনীর সাথে সহযোগিতা করার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানায়।</li> </ul> <div style="text-align: justify;"> তথ্যসূত্র: মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর</div> </div>

মুক্তিযুদ্ধ প্রতিদিনঃ ২৩ এপ্রিল, ১৯৭১

২৩ এপ্রিল, ১৯৭১ প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ বেনাপোলে মুক্তিযোদ্ধাদের ঘাঁটিতে বৃটিশ এম.পি ডগলাস ম্যানকে স্বাগত জানান। এখানে উভয়ের মধ্যে এক ঘন্টা ব্যাপী আলোচরা হয়।  পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দুই ব্যাটালিয়…

Read more »

মুক্তিযুদ্ধ প্রতিদিনঃ ২২ এপ্রিল, ১৯৭১

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> <table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody> <tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgUIdwkCFLsawXBhP4GLrCaQyCrcff7VB_SJ8okd99ksbrOYOJVri4-JO1w2KaYhCWjryj6p2gfX3WSVPaZcuQOgRAyhcF5u0Fu0zLoXZodJ1N0bcUVn5DoNPxYcR2jPS1Z4Tz9i5_tgdo/s1600/mp.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img border="0" height="332" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgUIdwkCFLsawXBhP4GLrCaQyCrcff7VB_SJ8okd99ksbrOYOJVri4-JO1w2KaYhCWjryj6p2gfX3WSVPaZcuQOgRAyhcF5u0Fu0zLoXZodJ1N0bcUVn5DoNPxYcR2jPS1Z4Tz9i5_tgdo/s640/mp.jpg" width="640" /></a></td></tr> <tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;"></td></tr> </tbody></table> <b>২২ এপ্রিল, ১৯৭১</b><br /> <ul style="text-align: justify;"> <li>কুমিল্লার গঙ্গাসাগরে মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানি সৈন্যদের অ্যামবুশ করে। এ অ্যামবুশে মুক্তিযোদ্ধাদের কোনোরূপ ক্ষতি ছাড়াই ৬ জন পাকসৈন্য নিহত হয় এবং মুক্তিযোদ্ধারা প্রচুর পরিমাণে গোলাবারুদ ও অস্ত্র দখল করে।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>হিলিতে<b> </b>পাকবাহিনী আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে সীমান্ত রেখার ভেতর মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর প্রচন্ড আক্রমণ করে। পরে মুক্তিযোদ্ধারা ভারতের ভূখন্ডে আশ্রয় নেয়।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোদাগাড়িতে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরক্ষা ব্যুহে পাকবাহিনী হামলা চালায়। এখানে পাকহানাদারদের বিরাট কনভয় আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আক্রমণ করে। এ সংঘর্ষে অনেক মুক্তিযোদ্ধা শাহাদাৎ বরণ করে।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>পাক হানাদারদের হাতে বগুড়া শহরের পতন ঘটে।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>পাকবাহিনী বাঘাবাড়িতে এসে শাহজাদপুর লক্ষ্য করে গোলাবর্ষণ শুরু করে। মুক্তিবাহিনীর সাথে তুমুল সংঘর্ষের পর বাঘাবাড়ি ও শাহজাদপুর পাকবাহিনীর হাতে পতন হয়।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>পাকহানাদার বাহিনী হেলিকপ্টার থেকে মাদারীপুর শহরের ওপর গোলাবর্ষণ শুরু করে। তাদের আক্রমণের মূল লক্ষ্যস্থল ছিল সংগ্রাম কমিটির কন্ট্রোল রুম মিলন সিনেমা হল। এ হামলায় কেউ নিহত না হলেও অনেক নিরীহ মানুষ আহত হয়।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>চট্টগ্রাম নোয়াখালী ও কুমিল্লা এই তিনদিক থেকে পাকবাহিনী একযোগে ফেনী আক্রমণ করে। এ যুদ্ধে পাকসেনারা ফেনী দখলে ব্যর্থ হয়।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>রাজশাহী থেকে সড়কপথে পাকবাহিনীর একটি কনভয় ভারি অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত অবস্থায় নওগাঁ প্রবেশ করে। রাতে পাকবাহিনীর নির্দেশমত পাকিস্তানকে রক্ষা করার লক্ষ্যে ‘শান্তি কমিটি’ গঠন করা হয়। শান্তি কমিটির দাপট ও অত্যাচারে জ্বলে ওঠে নওগাঁ শহর ও তার চারপাশের অঞ্চল।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>নওগাঁ শহরের লর্ড লিটন ব্রিজের পূর্ব পাশে চকবাড়িয়া গ্রামের ১৯ বছর বয়স্ক আকালু পাকিস্তান বাহিনীর সামনে ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান উচ্চারণ করতে করতে ঘাতকদের গুলিতে শাহাদাৎ বরণ করেন। অন্য এক ঘটনায় নওগাঁ নাট্য অঙ্গনের বালা সাহা (৮০) তাঁর নিজ বাসভবনে পাকবাহিনীর গুলিতে শহীদ হন।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>ময়মনসিংহের মধুপুরে পাকবাহিনী ব্যাপক শেলিং শুরু করে। এ আক্রমণে মুক্তিবাহিনী পিছু হটে হালুয়াঘাটে একত্র হয় ও অবস্থান নেয়।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>১১ নং সেক্টর-এনাজমুল হক তারা, তফাজ্জল হোসেন,এম.এ. আলম ও নাজমুল আহসানের নেতৃত্বে চারটি সাব সেক্টর বিভক্ত করা হয়।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>চট্টগ্রামের দোহাজারীতে মুক্তিবাহিনী ও পাকবাহিনীর মধ্যে দখল প্রতিষ্ঠার জন্যে প্রচন্ড সংঘর্ষ হয়।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী উইলিয়াম ম্যাকমোহন ক্যানবারায় বলেন, জীবনহানির জন্য আমরা নিশ্চয়ই দুঃখিত। আমরা চাই পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করুন, যত শিগগির সম্ভব তিনি বেসামরিক কতৃপক্ষ প্রতিষ্ঠার জন্য চেষ্টা করবেন এবং তা প্রতিষ্ঠা করবেন। আমরা আশা করি আর কোন জীবন হানি হবে না এবং পাকিস্তানের পার্লামেন্টে জনগণের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য আওয়ামী লীগের নেতৃবর্গকে ক্ষমতা দেয়া হবে।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির প্রধান মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী এক বিবৃতিতে বলেন, পূর্ব বাংলার মুক্তি সংগ্রাম পাকিস্তানের আভ্যন্তরীণ ব্যাপার হতে পারে না। অবিভক্ত ভারতের ১০ কোটি মুসলমান যে ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাবের প্রতি সমর্থন জানিয়েছিল পশ্চিম পাকিস্তান তাকে অবজ্ঞা করেছে। পাকিস্তান আন্দোলনের এই মৌলিক প্রস্তাবটিকে অবজ্ঞা করে বিগত ২৩ বছর ধরে তারা পূর্ব বাংলাকে তাদের কালোনী করে রাখে। এই সংগ্রাম বীর বাঙালি জাতির স্বাধীনতার সংগ্রাম। শোষণ থেকে মুক্তি ও হৃত স্বাধীনতা পুনরুদ্ধারের লড়াই। মওলানা ভাসানী নবগঠিত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের স্বাধীন সরকারকে অবিলম্বে স্বীকৃতি প্রদানের জন্য বিশ্বের সকল শান্তিকামী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সরকার ও জনগণের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষের প্রতি দলমত, পেশা, বয়স নির্বিশেষে সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।</li> </ul> <ul style="text-align: justify;"> <li>ময়মনসিংহ জেলা ইসলামী ছাত্র সংঘের সভাপতি মুহম্মদ আশরাফ হোসাইনের নেতৃত্বে জামালপুর শহরে প্রথম আলবদর বাহিনী গঠিত হয়। পরবর্তীকালে বদর বাহিনী জামায়াতে ইসলামীর নিজস্ব বাহিনীতে রূপ নেয়। বদর বাহিনীর নিষ্ঠুরতা সীমাহীন। এর চিত্র ফুটে উঠে তাদের এক পত্রিকার লেখায়- ‘আলবদর একটি ন্যায়! একটি বিস্ময়! আলবদর একটি প্রতিজ্ঞা! যেখানে তথাকথিত মুক্তিবাহিনী, আলবদর সেখানে। যেখানেই দুষ্কৃতকারী (মুক্তিযোদ্ধা) আলবদর সেখানেই। ভারতীয় চর কিংবা দুষ্কৃতকারীদের কাছে আলবদর সাক্ষাৎ আজরাইল।’</li> </ul> <div style="text-align: justify;"> তথ্যসূত্র: মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর</div> </div>

মুক্তিযুদ্ধ প্রতিদিনঃ ২২ এপ্রিল, ১৯৭১

২২ এপ্রিল, ১৯৭১ কুমিল্লার গঙ্গাসাগরে মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানি সৈন্যদের অ্যামবুশ করে। এ অ্যামবুশে মুক্তিযোদ্ধাদের কোনোরূপ ক্ষতি ছাড়াই ৬ জন পাকসৈন্য নিহত হয় এবং মুক্তিযোদ্ধারা প্রচুর পরিমাণে গোলাবা…

Read more »

একাত্তরের দিনগুলি: ২২ এপ্রিল, ১৯৭১

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> <table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody> <tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgzk9IJVRrSNTTd9Pqz5He9fLUw1h5GFITxiS6kjhjEeTrwn8YzUv8r2Ss4CYesxGu3wzmgJzuVOFyX34TNXqXygYuM3qbcqJ2bX9CTW4Du3jQOg-FLonzV9sFtXCguKBPvu_uP5FR-tBY/s1600/ekd.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img border="0" height="332" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgzk9IJVRrSNTTd9Pqz5He9fLUw1h5GFITxiS6kjhjEeTrwn8YzUv8r2Ss4CYesxGu3wzmgJzuVOFyX34TNXqXygYuM3qbcqJ2bX9CTW4Du3jQOg-FLonzV9sFtXCguKBPvu_uP5FR-tBY/s640/ekd.jpg" width="640" /></a></td></tr> <tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;"></td></tr> </tbody></table> <b>২২ এপ্রিল, ১৯৭১, বৃহস্পতিবার </b><br /> <div style="text-align: justify;"> <br /> সময় মনে হচ্ছে থেমে আছে গতকাল থেকে। গতকাল এই সমযু নাসিরের বাড়িতে- আমি ও রুমী। কি বলেছিলাম আমি? নাসির, লীনা, রুমী সবাই ক্ষণকালের জন্য স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। রুমীও নিশ্চয় এতটা নাটকীয়তা আশা করে নি তার মায়ের কাছ থেকে। তবু সে উজ্জ্বল হাসিমুখে ছুটে এসে জড়িয়ে ধরেছিল আমাকে। যেন ছোট ছেলে অনেক কসরত করে মা'র কাছ থেকে আইসক্রিম খাবার পয়সা আদায় করে নিয়েছে। নাসির ফ্যাকাসে মুখে হাসবার চেষ্টা করে শুধু বলেছিল, "বুবু!" লীনা তার বাচ্চাকে বুকে চেপে পাশের ঘরে চলে গিয়েছিল। <br /> <br /> রাতে ঘুম হয় নি। কাউকে কিছু বলতেও পারছি না। সকালে নাশতা খাবার টেবিলে কাসেম আবার বলল, সে বাড়ি যাবে। এর আগে দু’বার ছুটি চেয়ে পায় নি। একজন যুদ্ধে যেতে চেয়ে অনুমতি পেয়েছে, কাসেম তো শুধু চারদিনের জন্য বাড়ি যেতে চায়। বললাম, "ঠিক আছে, যাবে।"<br /> <br /> তারপরই তৎপর হয়ে উঠলাম। শরীফকে বললাম, "অফিসে গিয়ে গাড়িটা পাঠিয়ে দাও, ঠাটারী বাজারে যাব।"<br /> <br /> শরীফ বলল, "তার চেয়ে তুমি এখনই তৈরি হয়ে গাড়িতে চল। আমাকে নামিয়ে দিয়ে ওইদিক দিয়ে বাজারে চলে যেয়ো।"<br /> <br /> আজকাল রাস্তায় খালি গাড়ি দেখলেই আর্মির লোক থামিয়ে কয়েক ঘণ্টা নিজের কাজে ব্যবহার করে নেয়। সারা শহরে এ একটা নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু গাড়িতে মহিলা থাকলে থামায় না। <br /> <br /> ঠাটারী বাজারের অবস্থাও অন্য জায়গার চেয়ে এমন কিছু ভালো না। ২৫ মার্চের রাতে পুড়ে যাবার পর এখন এখানে-ওখানে কিছু কিছু মেরামত করে বাজার বসছে। আমি ড্রাইভারকে বললাম, "গাড়ি বন্ধ করে আমার সঙ্গেই এসো।"<br /> <br /> বাজারের পরিবেশ মোটেও ভালো লাগল না। দগ্ধ-বিদ্ধস্ত বাজারের মাঝে-মাঝে দোকানী লোকগুলো কেমন যেন অস্বাভাবিক নির্বিকারভাবে বসে আছে। চোখে বোবা দৃষ্টি সারা বাজারজুড়ে পানি থইথই করছে। এতো পানি কেন? এর মধ্যে তো বৃষ্টি হয় নি। মনে হচ্ছে সকালে প্রচুর পানি ঢেলে পুরো বাজারটা ধোয়া হয়েছে। কেন? হালে আবারো কিছু হয়েছে নাকি? কেমন যেন গা ছমছম করতে লাগল। তাড়াতাড়ি কিছু গোশত আর কিমা কিনে চলে এলাম। দরকার নেই বাবা। নিউ মার্কেটে যা পাওয়া যায় তাই দিয়েই চালাবো। <br /> <br /> দুপুরে খেতে বসেছি এমন সময় লুলু এল। সেও একটা প্লেট নিয়ে খেতে বসে গেল। খেতে খেতে বলল, "জানেন মামী, গতকাল নাকি বিহারিরা ঠাটারী বাজারে কয়েকজন বাঙালি কসাইকে জবাই করেছে!"<br /> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> "ঠাটারী বা-জা-রে! দূর! বাজে কথা, আমি তো আজ সেখানে গিয়েছিলাম, কই, লোক জবাই হলে দোকানীদের মধ্যে যে রকম ভয়চকিত হাবভাব হওয়া উচিত ছিল, সে রকম তো কিছুই দেখলাম না। লোক জবাই হলে ওরা কি ওরকম নির্বিকার হয়ে বসে থাকতে পারতো? তোরা কোথা থেকে যে এসব গুজব ধরে আনিস।"<br /> <br /> কথাটা উড়িয়ে দিলাম বটে কিন্তু গা শিরশির করতে লাগলো।<br /> <br /> খেয়ে উঠে কাসেমকে বললাম, "নিউ মার্কেট থেকে গোটা কতক মুরগি আর কিছু মাছ কিনে আন। ওগুলো কুটে বেছে দিয়ে তারপর বাড়ি যেয়ো।"<br /> <br /> - শহীদ জননী জাহানারা ইমামের বই থেকে</div> </div>

একাত্তরের দিনগুলি: ২২ এপ্রিল, ১৯৭১

২২ এপ্রিল, ১৯৭১, বৃহস্পতিবার সময় মনে হচ্ছে থেমে আছে গতকাল থেকে। গতকাল এই সমযু নাসিরের বাড়িতে- আমি ও রুমী। কি বলেছিলাম আমি? নাসির, লীনা, রুমী সবাই ক্ষণকালের জন্য স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। রুমীও নিশ্চয় এ…

Read more »

মুক্তিযুদ্ধ প্রতিদিনঃ ২১ এপ্রিল, ১৯৭১

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> <div style="text-align: justify;"> <table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody> <tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgUIdwkCFLsawXBhP4GLrCaQyCrcff7VB_SJ8okd99ksbrOYOJVri4-JO1w2KaYhCWjryj6p2gfX3WSVPaZcuQOgRAyhcF5u0Fu0zLoXZodJ1N0bcUVn5DoNPxYcR2jPS1Z4Tz9i5_tgdo/s1600/mp.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img border="0" height="332" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgUIdwkCFLsawXBhP4GLrCaQyCrcff7VB_SJ8okd99ksbrOYOJVri4-JO1w2KaYhCWjryj6p2gfX3WSVPaZcuQOgRAyhcF5u0Fu0zLoXZodJ1N0bcUVn5DoNPxYcR2jPS1Z4Tz9i5_tgdo/s640/mp.jpg" width="640" /></a></td></tr> <tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;"></td></tr> </tbody></table> <b>২১ এপ্রিল, ১৯৭১</b></div> <div style="text-align: justify;"> <ul> <li>লন্ডনে আইরিশ শ্রমিক দলের বৈদেশিক বিষয়ক কর্মকর্তা ড. কোনার ক্রুইজ বলেন, পূর্ববঙ্গের বিরুদ্ধে পশ্চিম পাকিস্তান যে ব্যবস্থা নিয়েছে তা সাম্রাজ্যবাদী ও দমনমূলক যুদ্ধের এক দৃষ্টান্ত।</li> </ul> <ul> <li>মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী মুক্তাঞ্চল থেকে জাতিসংঘের মহাসচিব উ থান্ট, গণচীনের প্রেসিডেন্ট মাও সে তুং ও প্রধানমন্ত্রী চৌ-এন লাই, সোভিয়েত রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ব্রেজনেভ, চেয়ারম্যান কোসিগিন ও প্রধানমন্ত্রী পদগর্নি, মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিক্সন, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট পম্পিডো, বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হীথ, যুগোশ্লাভিয়ার প্রেসিডেন্ট টিটো, মিসরের প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদাত, আরব লীগের মহাসচিব আবদেল খালেক হাসুনা ও আরব ঐক্য সংস্থার মহাসচিব দায়লো টেলির কাছে প্রেরিত পৃথক পৃথক বার্তায় অবিলম্বে বাংলাদেশে গণহত্যা বন্ধ করার লক্ষ্যে পাকিস্তানের জেনারেল প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের ওপর চাপ প্রয়োগের জন্য আবেদন জানান। তিনি বাংলাদেশে পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর বর্বরতা অবলোকনের জন্য নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক দল পাঠানো ও বাংলাদেশের জনগণকে তাদের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার অর্জনের লড়াইয়ে সমর্থন ও সহযোগিতা দানের জন্যও বিশ্ব নেতৃবৃন্দের প্রতি আবেদন জানান।</li> </ul> <ul> <li>বাংলাদেশ সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরীকে বহির্বিশ্ব ও জাতিসংঘে বাংলাদেশের কুটনৈতিক মিশনের বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ প্রদান করেন।</li> </ul> <ul> <li>মেজর ইমামুজ্জামান-এর নেতৃত্বাধীন বেঙ্গল রেজিমেন্টের এক কোম্পানি সৈন্য লাকসাম ত্যাগ করে কুমিল্লার মিয়ার বাজারে চলে আসে এবং সেখানে প্রতিরক্ষা ব্যুহ তৈরী করে।</li> </ul> <ul> <li>২০ জন মুক্তিযোদ্ধার একটি দল যশোরে পাকবাহিনীর নাভারন ঘাঁটি আক্রমণ করে। এতে ১৫ জন পাকসেনা আহত ও ১০ জন নিহত হয়।</li> </ul> <ul> <li>হিলিতে পাকবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এ যুদ্ধে পাকবাহিনী হিলি দখল করে নেয়।</li> </ul> <ul> <li>মুক্তিযোদ্ধাদের কিশোরগঞ্জ প্রতিরক্ষা ঘাঁটির ওপর পাকবাহিনী আক্রমণ চালায়। এ যুদ্ধে পাকবাহিনীর হাতে কিশোরগঞ্জের পতন হয়।</li> </ul> <ul> <li>পাকবাহিনীর সৈন্যরা ব্যাপক গোলাবর্ষণ দ্বারা দিনাজপুরের পঞ্চগড়শহরে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। বহু নিরীহ মানুষকে হতাহত করে এবং পঞ্চগড় বাজারটি সম্পূর্ণ পুড়িয়ে দিয়ে এক শ্মসান অবস্থা কায়েম করে।</li> </ul> <ul> <li>পাক হানাদার বাহিনী অতি প্রত্যুষে ফরিদপুরের গোয়ালন্দঘাট আক্রমণ করে। মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে তুমুল সংঘর্ষের পর সকাল নয়টায় গোয়ালন্দঘাট দখল করে। একই সঙ্গে হেলিকপ্টারে করে ফরিদপুরের বিভিন্ন স্থানে তারা ছত্রী বাহিনী অবতরণ করে।</li> </ul> <ul> <li>আলজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বুমেদীন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার কাছে পাঠানো এক বাণীতে পাকিস্তান বাহিনীর কার্যক্রমের প্রতি তাঁর পূর্ণ সমর্থন রয়েছে বলে জানান।</li> </ul> <ul> <li>ঢাকায় মুসলিম লীগ নেতা খান এ. সবুর সামরিক কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতার জন্যে নিজ নিজ এলাকায় ভিজিলেন্স কমিটি গঠনের জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে এক বিবৃতিতে বলেন, শত্রুর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার উদ্দেশ্যে আমাদের সশস্ত্র বাহিনীকে সব ধরনের সাহায্য প্রদান বর্তমানে প্রত্যেক নাগরিকের জন্য জরুরি হয়ে পড়েছে।</li> </ul> তথ্যসূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর</div> </div>

মুক্তিযুদ্ধ প্রতিদিনঃ ২১ এপ্রিল, ১৯৭১

২১ এপ্রিল, ১৯৭১ লন্ডনে আইরিশ শ্রমিক দলের বৈদেশিক বিষয়ক কর্মকর্তা ড. কোনার ক্রুইজ বলেন, পূর্ববঙ্গের বিরুদ্ধে পশ্চিম পাকিস্তান যে ব্যবস্থা নিয়েছে তা সাম্রাজ্যবাদী ও দমনমূলক যুদ্ধের এক দৃষ্টান্ত। মওল…

Read more »

একাত্তরের দিনগুলি: ২১ এপ্রিল, ১৯৭১

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> <div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"> </div> <div style="text-align: justify;"> <table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody> <tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgzk9IJVRrSNTTd9Pqz5He9fLUw1h5GFITxiS6kjhjEeTrwn8YzUv8r2Ss4CYesxGu3wzmgJzuVOFyX34TNXqXygYuM3qbcqJ2bX9CTW4Du3jQOg-FLonzV9sFtXCguKBPvu_uP5FR-tBY/s1600/ekd.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img border="0" height="332" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgzk9IJVRrSNTTd9Pqz5He9fLUw1h5GFITxiS6kjhjEeTrwn8YzUv8r2Ss4CYesxGu3wzmgJzuVOFyX34TNXqXygYuM3qbcqJ2bX9CTW4Du3jQOg-FLonzV9sFtXCguKBPvu_uP5FR-tBY/s640/ekd.jpg" width="640" /></a></td></tr> <tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;"></td></tr> </tbody></table> <b>২১ এপ্রিল, ১৯৭১, বুধবার </b><br /> <br /> রুমীর সাথে ক’দিন ধরে খুব তর্কবিতর্ক হচ্ছে। ও যদি ওর জানা অন্য ছেলেদের মত বিছানায় পাশ-বালিশ শুইয়ে বাবা-মাকে লুকিয়ে পালিয়ে যুদ্ধে চলে যেত, তাহলে একদিক দিয়ে বেঁচে যেতাম। কিন্তু ঐ যে ছোটবেলা থেকে শিখিয়েছি লুকিয়ে বা পালিয়ে কিছু করবে না। নিজের ফাঁদে নিজেই ধরা পড়েছি। রুমী আমাকে বুঝিয়েই ছাড়বে, সে আমার কাছ থেকে মত আদায় করেই ছাড়বে।</div> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> কিন্তু আমি কি করে মত দেই? রুমীর কি এখন যুদ্ধ করার বয়স? এখন তো তার লেখাপড়া করার সময়। কেবল আই.এস.সি পাস করা এক ছাত্র, এখানে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি হয়েছে, আবার আমেরিকার ইলিনয় ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজিতেও ওর অ্যাডমিশন হয়ে গেছে। এই বছরের ২ সেপ্টেম্বর থেকে সেখানে ক্লাস শুরু হবে। ওকে আমেরিকা যেতে হবে আগস্টের শেষ সপ্তাহে। সেখানে গিয়ে চার বছর পড়াশোনা করে তবে সে ইঞ্জিনিয়ার হবে। আর এই সময় সে কি না বলে যুদ্ধ করতে যাবে? <br /> <br /> নাসিরের বাড়িতে বসেও এই তর্ক হচ্ছিল। ডাঃ নাসিরুল হক হলিফ্যামিলি হাসপাতালে শিশু বিভাগের ডাক্তার-সে আমেরিকা চলে যাবার চেষ্টা করছে। হয়ত সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই রওনা হয়ে যেতে পারবে। নাসির কিছুদিন আগেও আমাকে সাপোর্ট করেছে। আজ দেখি উল্টো সুর? আমি ক্ষুব্ধ হয়ে বললাম, "বুঝেছি কেন রুমী ঘনঘন এ বাড়িতে আসে। এ কয়দিনে সে তোমাকে বুঝিয়ে পটিয়ে ফেলেছে।"<br /> <br /> রুমী নাসিরের কয়েক মাস বয়সের মেয়েটিকে লোফালুফি করতে করতে বলল, "কি যে বল আম্মা, আমি তো আসি এই ডল পুতুলটাতে আদর করতে। মামার সাথে আমার এ নিয়ে কথাই হয় নি। কিন্তু আম্মা, তোমাকে গত দু’সপ্তাহ ধরে যা বুঝিয়েছি তার সিকি ভাগ মামাকে বললে মামা কনভিনসড হয়ে যেত। আম্মা শোন, ছাত্রজীবন লেখাপড়া করার সময় এসবই চিরকালীন সত্য; কিন্তু ১৯৭১ সালের এই এপ্রিল মাসে এই চিরকালীন সত্যটা কি মিথ্যে হয়ে যায় নি? চেয়ে দেখ, দেশের কোথায় সুস্থ, স্বাভাবিক জীবনধারা বজায় আছে? কোথাও নেই। সমস্ত দেশটা পাকিস্তানি মিলিটারি জান্টার টার্গেট প্র্যাকটিসের জায়গা হয়ে উঠেছে। রোমান গ্ল্যাডিয়েটরের চেয়েও আমাদের অবস্থা খারাপ। একটা গ্ল্যাডিয়েটরের তবু কিছুটা আশা থাকত, একটা সিংহের সঙ্গে ঝুটোপুটি করতে করতে সে জিতেও যেতে পারে। কিন্তু এখানে? সেই ঝুটোপুটি করার সুযোগটুকু পর্যন্ত নেই। হাত আর চোখ বেঁধে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে, কটকট করে কতকগুলো গুলি ছুটে যাচ্ছে, মুহুর্তে লোকগুলো মরে যাচ্ছে। এই রকম অবস্থার মধ্য থেকে লেখাপড়া করে মানুষ হবার প্রক্রিয়াটা খুব বেশি সেকেলে বলে মনে হচ্ছে না কি?"<br /> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> "তুইতো এখানে পড়বি না। আই.আই.টি’তে তোর ক্লাস শুরু হবে সেপ্টেম্বরে, তোকে না হয় কয়েক মাস আগেই আমেরিকা পাঠিয়ে দেব।"<br /> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> "আম্মা, দেশের এই রকম অবস্থায় তুমি যদি আমাকে জোর করে আমেরিকায় পাঠিয়ে দাও, আমি হয়তো যাব শেষ পর্যন্ত। কিন্তু তাহলে আমার বিবেক চিরকালের মতো অপরাধী করে রাখবে আমাকে। আমেরিকা থেকে হয়ত বড় ডিগ্রি নিয়ে এসে বড় ইঞ্জিনিয়ার হবো; কিন্তু বিবেকের ভ্রুকুটির সামনে কোনদিনও মাখা উঁচু করে দাঁড়াতে পারব না। তুমি কি তাই চাও আম্মা?"<br /> <br /> কলেজে, বিশ্ববিদ্যালয়ে বিতর্ক প্রতিযোগিতার উজ্জ্বল তারকা রুমী কোনদিনই বিতর্কে হারে নি প্রতিপক্ষের কাছে, আজই বা সে হারবে কেন? <br /> <br /> আমি জোরে দুই চোখ বন্ধ করে বললাম। "না,তা চাই নে। ঠিক আছে, তোর কথাই মেনে নিলাম। দিলাম তোকে দেশের জন্য কোরবানি করে। যা, তুই যুদ্ধে যা।"<br /> <br /> - শহীদ জননী জাহানারা ইমামের বই থেকে</div> </div>

একাত্তরের দিনগুলি: ২১ এপ্রিল, ১৯৭১

২১ এপ্রিল, ১৯৭১, বুধবার রুমীর সাথে ক’দিন ধরে খুব তর্কবিতর্ক হচ্ছে। ও যদি ওর জানা অন্য ছেলেদের মত বিছানায় পাশ-বালিশ শুইয়ে বাবা-মাকে লুকিয়ে পালিয়ে যুদ্ধে চলে যেত, তাহলে একদিক দিয়ে বেঁচে যেতাম। কিন্…

Read more »

মুক্তিযুদ্ধ প্রতিদিনঃ ২০ এপ্রিল, ১৯৭১

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> <div style="text-align: justify;"> <div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"> </div> </div> <div style="text-align: justify;"> <table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody> <tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgUIdwkCFLsawXBhP4GLrCaQyCrcff7VB_SJ8okd99ksbrOYOJVri4-JO1w2KaYhCWjryj6p2gfX3WSVPaZcuQOgRAyhcF5u0Fu0zLoXZodJ1N0bcUVn5DoNPxYcR2jPS1Z4Tz9i5_tgdo/s1600/mp.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img border="0" height="332" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgUIdwkCFLsawXBhP4GLrCaQyCrcff7VB_SJ8okd99ksbrOYOJVri4-JO1w2KaYhCWjryj6p2gfX3WSVPaZcuQOgRAyhcF5u0Fu0zLoXZodJ1N0bcUVn5DoNPxYcR2jPS1Z4Tz9i5_tgdo/s640/mp.jpg" width="640" /></a></td></tr> <tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;"></td></tr> </tbody></table> <b>২০ এপ্রিল, ১৯৭১</b></div> <div style="text-align: justify;"> <ul> <li>হিলিতে পাকবাহিনী মুক্তিবাহিনীর অবস্থানের উপর ব্যাপক আক্রমণ চালায়। এতে মুক্তিযোদ্ধারা পাল্টা আক্রমণ চালালে পাকসেনারা পিছু হটতে বাধ্য হয়। এই যুদ্ধে ৬ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।</li> </ul> <ul> <li>মুক্তিবাহিনী সিলেট পাকবাহিনীর একটি দলকে শেওলা ঘাট এলাকায় আক্রমণ চালায়। এতে ৮ জন শত্রুসেনা নিহত হয়। পরে মুক্তিযোদ্ধারা শেওলাঘাট ফেরী ধ্বংস করে পাকসেনাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিঘ্নিত করে।</li> </ul> <ul> <li>মুক্তিবাহিনীর মিরেশ্বরাই অবস্থানের ওপর পাকবাহিনীর দুটি ব্যাটালিয়ান ভারি অস্ত্র-শস্ত্রসহ আক্রমণ চালায়। ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত যুদ্ধে শতাধিক শত্রুসেনা নিহত হয়। মুক্তিবাহিনীরও প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়। রাতে মুক্তিযোদ্ধারা মিরেশ্বরাই ত্যাগ করে মাস্তান নগরে প্রতিরক্ষা ব্যুহ গড়ে তোলে। মধ্যরাতে পাকবাহিনী ট্যাঙ্ক নিয়ে মাস্তান নগর আক্রমণ করে। ভোর রাতে মুক্তিবাহিনী মিরেশ্বরাই অবস্থান ত্যাগ করে। হিংগুলিতে নতুন প্রতিরক্ষা ব্যুহ গড়ে তোলে।</li> </ul> <ul> <li>ন্যাশনাল আওযামী পার্টির সভাপতি অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ মুক্তাঞ্চল থেকে এক বিবৃতিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রতি পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করেন। তিনি বিবৃতিতে বাংলাদেশের একমাত্র বৈধ সাংবিধানিক সরকারের স্বীকৃতি দেয়ার জন্য বিশ্বের মুক্তি ও গণতন্ত্রকামী রাষ্ট্র ও জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।</li> </ul> <ul> <li>গর্ভনর ও সামরিক আইন প্রশাসক লে. জেনারেল টিক্কা খান আওয়ামী লীগ নেতা তাজুদ্দীন আহমদ, এস.নজরুল ইসলাম, আব্দুল মান্নান, তোফায়েল আহমদ ও দি পিপল-এর সম্পাদক আবিদুর রহমানকে আগামী ২৬ এপ্রিল সকাল ৮ টায় ঢাকার এক নম্বর সামরিক আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয়।</li> </ul> <ul> <li>নেজামে ইসলাম পার্টির আলহাজ্ব সৈয়দ মোস্তফা আল মাদানী, হাজী আকিল সাহাব, আ্যাডভোকেট সৈয়দ আনিসুর রহমান, মওলানা আজিজুল হক ও হাফেজ আহমদ করিম ঢাকায় এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, ভারতের সহযোগিতায় সশস্ত্র হানাদারদের (মুক্তিযোদ্ধা) অনুপ্রবেশ পাকিস্তানের সার্বভৌমত্বের ওপর পরিষ্কার হামলা স্বরূপ।</li> </ul> <ul> <li>ঢাকায় খাজা খয়েরউদ্দিনের সভাপতিত্বে শান্তি কমিটির কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে শান্তি কমিটির নেতারা দেশের সব জায়গায় শান্তি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়। এ ব্যাপারে যোগাযোগের জন্য গোলাম আজম, মাহমুদ আলী, এ.জে. খদ্দর, আবুল কাশেমকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।</li> </ul> তথ্যসূত্র: মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর</div> </div>

মুক্তিযুদ্ধ প্রতিদিনঃ ২০ এপ্রিল, ১৯৭১

২০ এপ্রিল, ১৯৭১ হিলিতে পাকবাহিনী মুক্তিবাহিনীর অবস্থানের উপর ব্যাপক আক্রমণ চালায়। এতে মুক্তিযোদ্ধারা পাল্টা আক্রমণ চালালে পাকসেনারা পিছু হটতে বাধ্য হয়। এই যুদ্ধে ৬ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। মুক…

Read more »

মুক্তিযুদ্ধ প্রতিদিনঃ ১৯ এপ্রিল, ১৯৭১

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> <div style="text-align: justify;"> <div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"> </div> <table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody> <tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgUIdwkCFLsawXBhP4GLrCaQyCrcff7VB_SJ8okd99ksbrOYOJVri4-JO1w2KaYhCWjryj6p2gfX3WSVPaZcuQOgRAyhcF5u0Fu0zLoXZodJ1N0bcUVn5DoNPxYcR2jPS1Z4Tz9i5_tgdo/s1600/mp.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img border="0" height="332" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgUIdwkCFLsawXBhP4GLrCaQyCrcff7VB_SJ8okd99ksbrOYOJVri4-JO1w2KaYhCWjryj6p2gfX3WSVPaZcuQOgRAyhcF5u0Fu0zLoXZodJ1N0bcUVn5DoNPxYcR2jPS1Z4Tz9i5_tgdo/s640/mp.jpg" width="640" /></a></td></tr> <tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;"></td></tr> </tbody></table> <b>১৯ এপ্রিল, ১৯৭১</b><br /> <ul> <li>কনভেনশন মুসলিম লীগের সভাপতি ফজলুল কাদের চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মালিক মোহাম্মদ কাশেম গভর্ণর হাউজে জেনারেল টিক্কা খানের সাথে সাক্ষাৎ করেন। তারা গভর্ণরকে দলের পক্ষ হতে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।<b><br /></b></li> </ul> <ul> <li>পাকিস্তান পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান জে.এ ভূট্টো করাচিতে এক সভায় যারা পাকিস্তানের অখন্ডতার বিরুদ্ধে কাজ করছে তাদের সম্পর্কে সরকারের কাছে রিপোর্ট করার নির্দেশ দেন। সংকট নিরসনে তিনি সবাইকে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার হাতকে শক্তিশালী করার কাজে আত্মনিয়োগ করতে বলেন। </li> </ul> </div> <div style="text-align: justify;"> <ul> <li>ঢাকা নগরীর বিভিন্ন মহল্লার শান্তি কমিটির লিয়াজোঁ অফিসার ও আহ্বায়কদের নাম ঘোষণা করা হয়। অ্যাডভোকেট নূরুল হক মজুমদারকে শান্তি কমিটির ৫ নং এলিফ্যান্ট রোড-মগবাজারস্থ কেন্দ্রীয় অফিসের সচিব হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। </li> </ul> <ul> <li>সিলেটের সালুটিকর বিমানঘাঁটির দখল নিয়ে মুক্তিবাহিনী ও পাকসেনার মধ্যে দিনব্যাপী রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। পাকিস্তানি বিমানবাহিনী এসময় সিলেটে বোমা বর্ষণ করে। দর্শনায় মুক্তিবাহিনী ও পাকবাহিনীর মধ্যে প্রচন্ড সংঘর্ষ শেষে পাকসেনারা বাঙালিদের ওপর গণহত্যা চালায়। </li> </ul> <ul> <li>মুজিবনগরে বাংলাদেশের পক্ষ হতে ১৮ দফা নির্দেশনা জারি করা হয়। প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ সরকারের আদেশ মেনে চলার জন্য দেশবাসীর প্রতি আবেদন জানান। নির্দেশগুলো নিম্নরূপ:</li> </ul> <ol> <li>কোন বাঙালি কর্মচারী শত্রুপক্ষের সাথে সহযোগিতা করবে না। প্রতিটি কর্মচারী স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের নির্দেশ অনুসারে কাজ করবেন। শত্রু কবলিত এলাকায় অবস্থা বিশেষে বিচার-বুদ্ধি খাটিয়ে কাজ করবেন। </li> <li>সরকারি আধাসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা নিজ ক্ষমতা অনুযায়ী বাংলাদেশ সরকার ও মুক্তিফৌজকে সাহায্য করবেন। </li> <li>সকল কর্মরত বা অবসরপ্রাপ্ত সামরিক ও আধাসামরিক বাহিনীর সদস্য অবিলম্বে নিকটতম মুক্তিসেনা শিবিরে যোগ দেবেন। শত্রুর সাথে সহযোগিতা করবেন না। </li> <li>বাংলাদেশ সরকার ছাড়া অন্য কারো বাংলাদেশ থেকে কর, খাজনা ও শুল্ক আদায়ের অধিকার নেই। </li> <li>যোগাযোগ ব্যবস্থা, বিশেষ করে নৌ চলাচল সংস্থার কর্মচারীরা কোন অবস্থায় শত্রুকে সাহায্য করবেন না। </li> <li>নিজ নিজ এলাকায় খাদ্য ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের চাহিদার ওপর লক্ষ্য রাখবেন। </li> <li>চুরি, ডাকাতি, কালোবাজারি,মজুতদারির ওপর কঠোর নজর রাখবেন। </li> <li>ধর্মের দোহাই দিয়ে ও অখন্ডতার বুলি আউড়ে এক শ্রেণীর দেশদ্রোহী মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। এদের চিহ্নিত করে রাখুন। এদের সম্পর্কে সাবধানতা অবলম্বন করুন। তাদের মুক্তিফৌজদের হাতে অর্পণ করুন। </li> <li>গ্রামে গ্রামে রক্ষীবাহিনী গড়ে তুলুন এবং রক্ষীবাহিনীর সেচ্ছাসেবকদের মুক্তিবাহিনীর নিকটতম ক্যাম্পে পাঠানোর ব্যবস্থা করবেন। </li> <li>শত্রুপক্ষের গতিবিধির খবর সঙ্গে সঙ্গে মুক্তিবাহিনীর ক্যাম্পে জানাবেন। </li> <li>মুক্তিবাহিনীর চলাচলের জন্য চাহিবামাত্র সরকারি যানবাহন হস্তান্তর করতে হবে। </li> <li>বাংলাদেশ সরকার বা মুক্তিবাহিনী ছাড়া জ্বালানী বিক্রি করা চলবে না। </li> <li>কেউ পশ্চিম পাকিস্তানি সেনাবাহিনী অথবা তাদের এজেন্টদের সাহায্য করবে না। যে করবে তাকে শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। </li> <li>গুজবে কান দেবেন না। চূড়ান্ত সাফল্য সম্পর্কে নিরাশ হবেন না। </li> <li>সকল সুস্থ ও সবল ব্যক্তিকে নিজ নিজ আগ্নেয়াস্ত্রসহ নিকটতম মুক্তিবাহিনী শিবিরে রিপোর্ট করতে হবে। </li> <li>শত্রুবাহিনীর ধরা পড়া কিংবা আত্মসমর্পণকারী সৈন্যকে মুক্তিবাহিনীর কাছে সপর্দ করতে হবে। </li> <li>পশ্চিম পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সকল প্রকার যোগাযোগ ও সরবরাহ ব্যবস্থা যাতে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত না হতে পারে সে ব্যাপারে লক্ষ্য রাখতে হবে। </li> <li>তথাকথিত পাকিস্তান বেতারের মিথ্যা প্রচারণা আদৌ বিশ্বাস করবেন না।</li> </ol> তথ্যসূত্র: মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর</div> </div>

মুক্তিযুদ্ধ প্রতিদিনঃ ১৯ এপ্রিল, ১৯৭১

১৯ এপ্রিল, ১৯৭১ কনভেনশন মুসলিম লীগের সভাপতি ফজলুল কাদের চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মালিক মোহাম্মদ কাশেম গভর্ণর হাউজে জেনারেল টিক্কা খানের সাথে সাক্ষাৎ করেন। তারা গভর্ণরকে দলের পক্ষ হতে সর্বাত্মক সহযোগ…

Read more »

একাত্তরের চিঠিঃ চিঠি – ৪ : শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আজিজ

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> <table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody> <tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEg1gm6F6LlhatVB2_HnbdY0wSecPthM0fS0CpQ_zv3ckJaYgez88Y77JhBaMkE_diHmVnZ6R6DL78fpypGPfzSi4SqnAYy1IHEe1MOgQn9auDhJU_s9LYNgmde2Jj1rXye_cvJkY5TXDHA/s1600/vo71w1.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img border="0" height="332" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEg1gm6F6LlhatVB2_HnbdY0wSecPthM0fS0CpQ_zv3ckJaYgez88Y77JhBaMkE_diHmVnZ6R6DL78fpypGPfzSi4SqnAYy1IHEe1MOgQn9auDhJU_s9LYNgmde2Jj1rXye_cvJkY5TXDHA/s640/vo71w1.jpg" width="640" /></a></td></tr> <tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;"> </td></tr> </tbody></table> <div style="text-align: justify;"> চিঠি লেখকঃ শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আজিজ।</div> <div style="text-align: justify;"> চিঠি প্রাপকঃ স্ত্রী ফজিলা আজিজ।</div> <div style="text-align: justify;"> চিঠিটি পাঠিয়েছেনঃ মোঃ ফারুক জাহাঙ্গীর, গ্রামঃ কুজাইল, নাটোর। ফারুক জাহাঙ্গীর শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আজিজের পুত্র </div> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> তারিখঃ ১৬/০৪/৭১</div> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> প্রিয় ফজিলা,</div> <div style="text-align: justify;"> জানি না কী অবস্থায় আছ। আমরা তো মরণের সাথে যুদ্ধ করে এ পর্যন্ত জীবন হাতে নিয়ে বেঁচে আছি। এর পরে থাকতে পারব কি না বুঝতে পারছি না। সেলিমদের বিদায় দিয়ে আজ পর্যন্ত অশান্তির মধ্যে দিন কাটাচ্ছি। আবার মনে হয় তারা যদি আর একটা দিন আমাদের এইখানে থাকত তাহলে তাদের নিয়ে আমি কী করতাম। সত্যিই ফজিলা, রবিবার ১১ এপ্রিলের কথা মনে হলে আজও ভয় হয়। রাইফেল, কামান, মেশিনগান, বোমা, রকেট বোমার কী আওয়াজ আর ঘর বাড়ির আগুনের আলো দেখলে ভয় হয়। সুফিয়ার বাড়ির ওখানে ৪২ জন মরেছে। সুফিয়ার আব্বার হাতে গুলি লেগেছিল। অবশ্য তিনি বেঁচে আছেন। সুফিয়াদের বাড়ি এবং বাড়ির সব জিনিস পুড়ে গেছে। য়ামাদের বাড়িতে তিন-চার দিন শোয়ার মত জায়গা পাইনি। রাহেলাদের বাড়ির সবাই, ওদের গ্রামের আর ১৫-১৬ জন, সুফিয়ার বাড়ির পাশের বাড়ির চারজন, দুলালের বাড়ির সকলে, দুলালের ফুফুজামাই দীঘির কয়েকজন এসে বাড়িতে উঠল। তাই বলি, সেই দিন যদি আব্বা এবং সেলিমরা থাকত তাহলে কী অবস্থা হতো। এদিকে আমরাও আবার পায়খানার কাছে জঙ্গলে আশ্রয় নিলাম। কী যে ব্যাপার, থাকলে বুঝতে। বর্তমানে যে পরিস্থিতি তা আর বলার নয়, রাস্তার ধারের মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নেই। রোজ গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগী ছাড়াও যুবতী মেয়েদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে। দুই একদিন পর আধা মরা আবস্থায় রাস্তার ধারে ফেলে দিয়ে যাচ্ছে। প্রত্যেক এসব ঘটনা। বাড়িতে আগুন আর গুলি করে মানুষ মারার তো কথাই নেই। তা ছাড়া লুটতরাজ, চুরি, ডাকাতি সব সময় হচ্ছে। কয়েকদিন বৃষ্টির জন্য রাস্তা ঘাটে কাদা হওয়ায় আমরা বেঁচে আছি। রাস্তাঘাট শুকনা থাকলে হয়তো আমাদের এদিকেও আসত। জানি না ভবিষ্যতে কী হবে। তবে ওরা শিক্ষিত এবং হিন্দুদের আর রাখবে না বলে বিশ্বাস। হিন্দু এবং ছাত্রদের সামনে পেলে সঙ্গে সঙ্গে গুলি করছে। গত রাতে পাশের গ্রামে এক বাড়িতে ডাকাত্রা এসে সেই বাড়ির মানুষদের যা মেরেছে তা আর বলার নয়। কখন কী হয় বলার নেই। তবু খোদা ভরসা করে বেঁচে আছি। আমাদের এদিকে ছেলেরা প্রায় সবাঈ বাড়ি ছেড়ে দূরে থাকে। কারণ বাড়িতে থাকা এ সময় মোটেই নিরাপদ নয়। তোমাদের দেখার জন্য চৌবাড়ি যাওয়ার অনেক চেষ্টা করেছি। দুঃখের বিষয়, একটি দিনও বৃষ্টি থামেনি। অবশ্য বৃষ্টি না থামার জন্য আমাদের একটু সুবিধাই হয়েছে। তোমাদের সংবাদ জানানোর মতো কনো পথ নেই। কীভাবে যে সংবাদ পাব ভেবে পাই না। মিঠু বোধ হয় এখন হাঁটতে শিখেছে তাই না? মিঠুকে দেখতে খুব ইচ্ছে করছে। কিন্তু পথ নেই। সান্ত্বনা এইটুকুই যে বেঁচে থাকলে একদিন দেখা হবে। কিন্তু বাঁচাই সমস্যা। রাতে ঘুম নেই দিনে পালিয়ে বেড়াই। মা-বাবা তো প্রায়ই আমার জন্য কাঁদে। যাক, দোয়া করো যেন ভালো থাকতে পারি। বুবুদের যে কী অবস্থায় পাঠিয়েছি, তা মনে হলে দুঃখ লাগে। আমি সঙ্গে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সম্ভব হয়নি। অবশ্য সেদিন নাপাঠালে তাদের নিয়ে দারুন মুশকিলে পড়তে হতো। রবিবার দিন বাবলুর আম্মা মেরীগাছা এসেছিল। বাবলুরা ভালো আছে। তোমাদের সংবাদটা জানাতে পারলে জানাবে। আমার মানসিক ও শারীরিক অবস্থা ভীষন খারাপ। বুবু, আম্মা, দুলাভাইকে আমার সালাম এবং সেলিমদের ও মিনাদের আমার স্নেহ দেবে। সম্ভব হলে তোমাদের সংবাদটা জানাবে। আমরা তো মরেও কোনো রকমে বেঁচে আছি। শেষ পর্যন্ত কী হবে জানি না।</div> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> ইতি</div> <div style="text-align: justify;"> আজিজ</div> </div>

একাত্তরের চিঠিঃ চিঠি – ৪ : শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আজিজ

  চিঠি লেখকঃ শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আজিজ। চিঠি প্রাপকঃ স্ত্রী ফজিলা আজিজ। চিঠিটি পাঠিয়েছেনঃ মোঃ ফারুক জাহাঙ্গীর, গ্রামঃ কুজাইল, নাটোর। ফারুক জাহাঙ্গীর শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আজিজের পুত্র  তারিখঃ …

Read more »

একাত্তরের দিনগুলি: ১৬ এপ্রিল, ১৯৭১

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> <br /> <table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody> <tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgzk9IJVRrSNTTd9Pqz5He9fLUw1h5GFITxiS6kjhjEeTrwn8YzUv8r2Ss4CYesxGu3wzmgJzuVOFyX34TNXqXygYuM3qbcqJ2bX9CTW4Du3jQOg-FLonzV9sFtXCguKBPvu_uP5FR-tBY/s1600/ekd.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img border="0" height="332" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgzk9IJVRrSNTTd9Pqz5He9fLUw1h5GFITxiS6kjhjEeTrwn8YzUv8r2Ss4CYesxGu3wzmgJzuVOFyX34TNXqXygYuM3qbcqJ2bX9CTW4Du3jQOg-FLonzV9sFtXCguKBPvu_uP5FR-tBY/s640/ekd.jpg" width="640" /></a></td></tr> <tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;"></td></tr> </tbody></table> <b>১৬ এপ্রিল, ১৯৭১, শুক্রবার</b><br /> <br /> <div style="text-align: justify;"> স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র ক’দিন থেকে ধরতে পারছি। খুব অল্প সময়ের জন্য অনুষ্ঠান: সকালে ঘণ্টা খানেক-আটটা থেকে নটা কিংবা সাড়ে আটটা থেকে সাড়ে নটা। বিকেলে কোনদিন পাঁচটা থেকে সাতটা। কোনদিন আটটা থেকে দশটা। প্রচার সময়ের কোন স্থিরতা নেই। দু’তিনটি মাত্র গান ঘুরে ঘুরে বাজানো হয়, বাংলা-ইংরেজি খবর, মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য কথিকা, বিদেশী পত্রপত্রিকা থেকে উদ্ধৃতি, মাত্র এইটুকু। তবু এইটুকুর জন্য আমরা সবাই কিরকম যেন তৃষ্ণার্ত হয়ে থাকি। মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য কথিকা। মুক্তিযুদ্ধ তাহলে হচ্ছে? তবু এখনো যেন বিশ্বাস হতে চায় না। আর এই যে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র, এইটাই বা প্রচার করছে কোথা থেকে, কিভাবে? রুমী বলে নিশ্চয় বর্ডার এলাকায় কোন জঙ্গলের ভেতর ট্রান্সমিটার লুকিয়ে ব্রডকাস্ট করে। <br /> <br /> তাই হবে মনে হয়। কিন্তু যদি ধরা পড়ে যায় কোনদিন? যদি পাক আর্মি কোনদিন খোঁজ পেয়ে যায় লুকোনো ট্রান্সমিটারের? তাহলে? কোন কোন দিন সময়মত বেতার কেন্দ্র ধরতে না পারলে অস্থির হয়ে উঠি বাড়িসুদ্ধ সবাই। এই বুঝি পাক আর্মি দিয়েছে গুঁড়িয়ে। কেউ কেউ বলে আসলে নাকি কলকাতা থেকে এসব প্রচার করা হয়। এটাও বিশ্বাস হতে চায় না। কলকাতা থেকে হলে নিশ্চয় এর চেয়ে ভালো প্রোগ্রাম হত, গানও এই দুটো তিনটে মাত্র ঘুরে ঘুরে দিত না। রবি ঠাকুরের ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি,’ নজরুলের ‘কারার ঐ লৌহ কপাট ভেঙে ফেল কররে লোপাট,’ ‘দুর্গম গিরি-কান্তার মরু দুস্তর পারাবার’ আর ‘মোরা ঝঞ্ঝার মতো উদ্দাম।’ আরেকটা গান হয়, এটা আগে কোনদিন শুনি নি-‘কেঁদো না কেঁদো না মাগো আর তুমি কেঁদো না।’ <br /> <br /> আর অনুষ্ঠানের শুরুতে বাজে শাহনাজ বেগমের সেই গান যেটার রেকর্ড আমি কিটির হাতে সরিয়ে দিয়েছি- <br /> <br /> ‘জয় বাংলা বাংলার জয়। <br /> হবে হবে হবে নিশ্চয়।’ <br /> <br /> অনুষ্ঠানের শেষেও এই গানটাই বাজানো হয়।<br /> <br /> - শহীদ জননী জাহানারা ইমামের বই থেকে</div> </div>

একাত্তরের দিনগুলি: ১৬ এপ্রিল, ১৯৭১

১৬ এপ্রিল, ১৯৭১, শুক্রবার স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র ক’দিন থেকে ধরতে পারছি। খুব অল্প সময়ের জন্য অনুষ্ঠান: সকালে ঘণ্টা খানেক-আটটা থেকে নটা কিংবা সাড়ে আটটা থেকে সাড়ে নটা। বিকেলে কোনদিন পাঁচটা থেকে …

Read more »

একাত্তরের দিনগুলি: ১৫ এপ্রিল, ১৯৭১

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> <br /> <table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody> <tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgzk9IJVRrSNTTd9Pqz5He9fLUw1h5GFITxiS6kjhjEeTrwn8YzUv8r2Ss4CYesxGu3wzmgJzuVOFyX34TNXqXygYuM3qbcqJ2bX9CTW4Du3jQOg-FLonzV9sFtXCguKBPvu_uP5FR-tBY/s1600/ekd.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img border="0" height="332" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgzk9IJVRrSNTTd9Pqz5He9fLUw1h5GFITxiS6kjhjEeTrwn8YzUv8r2Ss4CYesxGu3wzmgJzuVOFyX34TNXqXygYuM3qbcqJ2bX9CTW4Du3jQOg-FLonzV9sFtXCguKBPvu_uP5FR-tBY/s640/ekd.jpg" width="640" /></a></td></tr> <tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;"></td></tr> </tbody></table> <b>১৫ এপ্রিল, ১৯৭১, বৃহস্পতিবার</b><br /> <br /> <div style="text-align: justify;"> এত আটঘাট বেঁধে রেডিও’র লোকের হাত এড়ানো গেল না। সেই ১৯৫০ সাল থেকে রেডিও’তে প্রোগ্রাম করি, সবাই আমার চেনা। তার মধ্যে নূরুন্নবী খান একটু বেশি। ওঁর বড় ভাই এহিয়া খানও রেডিওতে-বান্ধবী নূরজাহানের মামা বলে আমিও মামা ডাকি। সেই মামার ছোট ভাই নূরন্নবী খান একদিন সকাল আটটায় চলে এলেন আমাদের বাসায়। খাবার টেবিল ছেড়ে উধাও হবারও সময়টুকু পেলাম না।<br /> <br /> নূরুন্নবী খান ঘরে ঢ়ুকলেন দুই হাত জোড় করে। আমি কিছু বলার আগেই গড়গড় করে বলে গেলেন-সামরিক আইন কর্তারা ওঁদের পিছে বন্দুকের নল ঠেকিয়ে কাজ করাচ্ছেন। পুরনো স-ব বেতার শিল্পী-গানের, নাটকের, জীবন্তিকার, কথিকার-সব বিভাগের শিল্পীদের খুঁজে পেয়ে এনে অনুষ্ঠান করাতে হবে। নূরুন্নবী খানের বিভাগ হল কথিকা। উনি বললেন, “বর্তমানে বিভিন্ন বিষয়ের ওপর পাঁচ মিনিটের কথিকা প্রচার হচ্ছে। এই দেখুন, আমি বিষয়গুলোর একটা তালিকাও সঙ্গে নিয়ে এসেছি। এ থেকে আপনার সুবিধেমত একটা বিষয় বেছে নিন। যাতে আপনারও কোনো বদনাম না হয়, আমারও পিঠ বাঁচে।”<br /> <br /> আমি বেছে নিলাম ‘গুজবে কান দেবেন না।’<br /> <br /> আজ পহেলা বৈশাখ। সরকারি ছুটি বাতিল হয়ে গেছে। পহেলা বৈশাখের উল্লেখ মাত্র না করে কাগজে বক্স করে ছাপা হয়েছে: আজ বৃহস্পতিবার প্রাদেশিক সরকারের যে ছুটি ছিল, জরুরি অবস্থার দরুন তা বাতিল করা হয়েছে।<br /> <br /> পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে ঢাকা শহরে এবং দেশের সর্বত্র বর্ষবরণ অনুষ্ঠানও বন্ধ।<br /> <br /> কিন্তু সে তো বাইরে। ঘরের ভেতরে, বুকের ভেতরে কে বন্ধ করতে পারে?<br /> <br /> - শহীদ জননী জাহানারা ইমামের বই থেকে</div> </div>

একাত্তরের দিনগুলি: ১৫ এপ্রিল, ১৯৭১

১৫ এপ্রিল, ১৯৭১, বৃহস্পতিবার এত আটঘাট বেঁধে রেডিও’র লোকের হাত এড়ানো গেল না। সেই ১৯৫০ সাল থেকে রেডিও’তে প্রোগ্রাম করি, সবাই আমার চেনা। তার মধ্যে নূরুন্নবী খান একটু বেশি। ওঁর বড় ভাই এহিয়া খানও রেড…

Read more »

একাত্তরের দিনগুলি: ১৪ এপ্রিল, ১৯৭১

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> <br /> <table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody> <tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgzk9IJVRrSNTTd9Pqz5He9fLUw1h5GFITxiS6kjhjEeTrwn8YzUv8r2Ss4CYesxGu3wzmgJzuVOFyX34TNXqXygYuM3qbcqJ2bX9CTW4Du3jQOg-FLonzV9sFtXCguKBPvu_uP5FR-tBY/s1600/ekd.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img border="0" height="332" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgzk9IJVRrSNTTd9Pqz5He9fLUw1h5GFITxiS6kjhjEeTrwn8YzUv8r2Ss4CYesxGu3wzmgJzuVOFyX34TNXqXygYuM3qbcqJ2bX9CTW4Du3jQOg-FLonzV9sFtXCguKBPvu_uP5FR-tBY/s640/ekd.jpg" width="640" /></a></td></tr> <tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;"></td></tr> </tbody></table> <b>১৪ এপ্রিল, ১৯৭১, বুধবার</b><br /> <br /> <div style="text-align: justify;"> রুমীর খুব মন খারাপ। চীন পাকিস্তানকে দৃঢ় সমর্থন দিয়েছে। চৌ এন লাই ঘোষণা করেছেন: স্বাধীনতা রক্ষার জন্য চীন সরকার পাকিস্তানকে পূর্ণ সহযোগিতা দেবে। রুমী এবং তার মতো যেসব প্রগতিশীল তরুণ সূর্যমুখী ফুলের মতো চীনের দিকে মুখ করে থাকত, তারা সবাই ভীষণভাবে মুষড়ে পড়েছে। রুমীর ভাব দেখে এবং কথাবার্তা শুনে মনে হচ্ছে-প্রাণের বন্ধু বিপদের মুহূর্তে চরম বিশ্বাসঘাতকতা করেছে।<br /> <br /> এদিকে আরেক নখরা। তিন-চারদিন আগে ঢাকায় এক নাগরিক শান্তি কমিটি গঠিত হয়েছে। কাগজে খুব ফলাও করে খবর ছাপা হচ্ছে। খাজা খায়রুদ্দিন এর আহ্বায়ক। সদস্য ১৪০ জন। তার মধ্যে স্বনামধন্য হচ্ছেন আবদুল জব্বার খদ্দর, মাহমুদ আলী, ফরিদ আহমদ, সৈয়দ আজিজুল হক, গোলাম আযম।<br /> <br /> গতকাল এই নাগরিক শান্তি কমিটির মিছিল বের হয়েছিল। আজকের কাগজে বিরাট করে ছবি ছাপা হয়েছে। ছবি দেখে আমরা খাবার টেবিলে বসে জল্পনা-কল্পনা করছিলাম-এই এতগুলো লোক যোগাড় করতে সরকারের কি রকম খাটাখাটনি গেছে।<br /> <br /> রুমী বলল, “খুব বেশি যায় নি। মিরপুর মোহাম্মদপুরের বিহারিরা আর আহসান মঞ্জিলের বংশধররা-দুটো ডাকেই সবাইকে জড়ো করা গেছে।”<br /> <br /> শরীফ বলল, “তাছাড়া ছবিটার মধ্যে ক্যামেরার কারসাজি আছে বলে সন্দেহ হচ্ছে। ভালো করে তাকিয়ে দেখ, অনেক উঁচু থেকে এমন কায়দায় ছবি তোলা হয়েছে যে দুশো লোককেও মনে হবে দু’হাজার।<br /> <br /> - শহীদ জননী জাহানারা ইমামের বই থেকে</div> </div>

একাত্তরের দিনগুলি: ১৪ এপ্রিল, ১৯৭১

১৪ এপ্রিল, ১৯৭১, বুধবার রুমীর খুব মন খারাপ। চীন পাকিস্তানকে দৃঢ় সমর্থন দিয়েছে। চৌ এন লাই ঘোষণা করেছেন: স্বাধীনতা রক্ষার জন্য চীন সরকার পাকিস্তানকে পূর্ণ সহযোগিতা দেবে। রুমী এবং তার মতো যেসব প্রগত…

Read more »

একাত্তরের দিনগুলি: ১৩ এপ্রিল, ১৯৭১

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> <br /> <table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody> <tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgzk9IJVRrSNTTd9Pqz5He9fLUw1h5GFITxiS6kjhjEeTrwn8YzUv8r2Ss4CYesxGu3wzmgJzuVOFyX34TNXqXygYuM3qbcqJ2bX9CTW4Du3jQOg-FLonzV9sFtXCguKBPvu_uP5FR-tBY/s1600/ekd.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img border="0" height="332" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgzk9IJVRrSNTTd9Pqz5He9fLUw1h5GFITxiS6kjhjEeTrwn8YzUv8r2Ss4CYesxGu3wzmgJzuVOFyX34TNXqXygYuM3qbcqJ2bX9CTW4Du3jQOg-FLonzV9sFtXCguKBPvu_uP5FR-tBY/s640/ekd.jpg" width="640" /></a></td></tr> <tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;"></td></tr> </tbody></table> <b>১৩ এপ্রিল, ১৯৭১, মঙ্গলবার</b><br /> <br /> <div style="text-align: justify;"> চারদিন ধরে বৃষ্টি। শনিবার রাতে কি মুষলধারেই যে হল, রোববার তো সারা দিনভর একটানা। গতকাল সকালের পর বৃষ্টি থামলেও সারা দিন আকাশ মেঘলা ছিল। মাঝে মাঝে রোদ দেখা গেছে। মাঝে মাঝে এক পশলা বৃষ্টি। জামী ছড়া কাটছিল, “রোদ হয় বৃষ্টি হয়, খ্যাঁক-শিয়ালীর বিয়ে হয়।” কিন্তু আমার মনে পাষাণভার। এখন সন্ধ্যার পর বৃষ্টি নেই, ঘনঘন মেঘ ডাকছে আর বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। বসার ঘরে বসে জানালা দিয়ে তাকিয়ে ভাবছিলাম, আমার জীবনেও এতদিনে সত্যি সত্যি দুর্যোগের মেঘ ঘন হয়ে আসছে। এই রকম সময়ে করিম এসে ঢ়ুকল ঘরে, সামনে সোফায় বসে বলল, “ফুফুজান এ পাড়ার অনেকেই চলে যাচ্ছে বাড়ি ছেড়ে। আপনি কোথাও যাবেন না?”<br /> <br /> “কোথায় যাব? অন্ধ, বুড়ো শ্বশুরকে নিয়ে কেমন করে যাব? কিন্তু এ পাড়া ছেড়ে লোকে যাচ্ছে কেন? এখানে তো কোনো ভয় নেই!”<br /> <br /> “নেই মানে? পেছনে এত কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো-”<br /> <br /> “হল তো সব খালি, বিরান, যা হবার তাতো প্রথম দু’দিনেই হয়ে গেছে। জানো বাবুদের বাড়িতে তার মামার বাড়ির সবাই এসে উঠেছে শান্তিনগর থেকে?”<br /> <br /> “তাই নাকি? আমরা তো ভাবছিলাম শান্তিনগরে আমার দুলাভাইয়ের বাসায় যাব।”<br /> <br /> “তাহলেই দেখ-ভয়টা আসলে মনে। শান্তিনগরের মানুষ এলিফ্যান্ট রোডে আসছে মিলিটারির হাত থেকে পালাতে, আবার তুমি এলিফ্যান্ট রোড থেকে শান্তিনগরেই যেতে চাচ্ছ নিরাপত্তার কারণে।”<br /> <br /> যুক্তিটা বুঝে করিম মাথা নাড়ল, “খুব দামী কথা বলেছেন ফুফুজান। আসলে যা কপালে আছে তা হবেই। নইলে দ্যাখেন না, ঢাকার মানুষ খামোকা জিঞ্জিরায় গেল গুলি খেয়ে মরতে। আরো একটা কথা শুনেছেন ফুফুজান? নদীতে নাকি প্রচুর লাশ ভেসে যাচ্ছে। পেছনে হাত বাঁধা, গুলিতে মরা লাশ।”<br /> <br /> শিউরে উঠে বললাম, “রোজই শুনছি করিম। যেখানেই যাই এছাড়া আর কথা নেই। কয়েকদিন আগে শুনলাম ট্রাকভর্তি করে তুলে নিয়ে যাচ্ছে হাত আর চোখ বেঁধে, কতো লোকে দেখেছে। এখন শুনছি সদরঘাট, সোয়ারীঘাটে নাকি দাঁড়ানো যায় না পচা লাশের দুর্গন্ধে। মাছ খাওয়াই বাদ দিয়েছি এজন্য।”<br /> <br /> - শহীদ জননী জাহানারা ইমামের বই থেকে</div> </div>

একাত্তরের দিনগুলি: ১৩ এপ্রিল, ১৯৭১

১৩ এপ্রিল, ১৯৭১, মঙ্গলবার চারদিন ধরে বৃষ্টি। শনিবার রাতে কি মুষলধারেই যে হল, রোববার তো সারা দিনভর একটানা। গতকাল সকালের পর বৃষ্টি থামলেও সারা দিন আকাশ মেঘলা ছিল। মাঝে মাঝে রোদ দেখা গেছে। মাঝে মাঝে…

Read more »

একাত্তরের দিনগুলি: ১০ এপ্রিল, ১৯৭১

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> <br /> <div style="text-align: justify;"> <table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody> <tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgzk9IJVRrSNTTd9Pqz5He9fLUw1h5GFITxiS6kjhjEeTrwn8YzUv8r2Ss4CYesxGu3wzmgJzuVOFyX34TNXqXygYuM3qbcqJ2bX9CTW4Du3jQOg-FLonzV9sFtXCguKBPvu_uP5FR-tBY/s1600/ekd.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img border="0" height="332" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgzk9IJVRrSNTTd9Pqz5He9fLUw1h5GFITxiS6kjhjEeTrwn8YzUv8r2Ss4CYesxGu3wzmgJzuVOFyX34TNXqXygYuM3qbcqJ2bX9CTW4Du3jQOg-FLonzV9sFtXCguKBPvu_uP5FR-tBY/s640/ekd.jpg" width="640" /></a></td></tr> <tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;"></td></tr> </tbody></table> </div> <b>১০ এপ্রিল, ১৯৭১, শনিবার</b><br /> <br /> <div style="text-align: justify;"> কিটির রেডিওটা পাবার পর থেকে রোজই স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অনুষ্ঠান ধরার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। কতজনের কাছে শুনছি, তারা ধরেছে, অনুষ্ঠান শুনছে। আমরাই শুধু পাচ্ছি না।<br /> <br /> স্বাধীন বাংলা বেতারের বরাত দিয়ে আকাশবাণী যত খবর বলে, সব বিশ্বাস করতে মন সায় দেয় না। ওদের কিছু কিছু খবর ভুল প্রমাণিত হয়েছে। নীলিমা আপা, সুফিয়া আপার মৃত্যু সংবাদটা ভুল ছিল। ঢাকার পতন, ক্যান্টনমেন্ট অবরোধ, টিক্কা খানের মৃত্যু-সবক’টা খবরই ভুল ছিল। টিক্কা খান বহাল তবিয়তে বেঁচে আছে, একের পর এক মার্শাল ল’র বাঁধন-বেড়ি প্রচার করে যাচ্ছে। ২৫ মার্চের আগে, যে চীফ জাস্টিস বি.এ.সিদ্দিকী টিক্কা খানকে গভর্নর হিসেবে শপথ করাতে রাজি হন নি, সেই বি.এ. সিদ্দিকীকে দিয়েই গতকাল গভর্নর হিসেবে টিক্কা খানের শপথ গ্রহণ করানো হয়েছে। আজকের কাগজে দু’জনের ছবি বেরিয়েছে।<br /> <br /> আজ সকালে খাবার টেবিলে সবাইকে বললাম, “স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র সত্যি সত্যি আছে, না আকাশবাণীর বানানো মিথ-তা বের করতেই হবে। সকাল ছ’টা থেকে একেকজন দু’ঘন্টা করে রেডিও’র নব ঘোরাতে থাকবে। সারা দিন ধরে চলবে।”<br /> <br /> জামী বলল, “এখন তো ন’টা বেজে গেছে।”<br /> <br /> আমি ধমক দিয়ে বললাম, “ঠাট্টা রাখ। ন’টা থেকে এগারোটা তোমার ডিউটি।”<br /> <br /> ফোন বেজে উঠল। উঠে গিয়ে ধরলাম। ওসমান গনি স্যার। ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন। এখন অবসর ভোগ করছেন। উনি বললেন, “জাহানারা রেডিও পাকিস্তান থেকে শিগগিরই তোমার কাছে লোক যাবে মনে হয়।”<br /> <br /> আঁতকে উঠলাম, “কেন স্যার?”<br /> <br /> “মার্শাল ল’ অথরিটি রেডিও’র কর্তাব্যক্তিদের হুকুম দিয়েছে, যেখান থেকে যেমন করে পার পুরনো টকারদের এনে প্রোগ্রাম করাও। আমার কাছে এসেছিল।”<br /> <br /> “আপনি প্রোগ্রাম করেছেন স্যার?”<br /> <br /> “না করে উপায় কি? বাড়িতে যখন রয়েছি। তোমাকেও যদি ফোনে বা বাড়িতে পেয়ে যায়–”<br /> <br /> উনি কথা শেষ করলেন না।<br /> <br /> স্যারকে মনে মনে অসংখ্য ধন্যবাদ জানালাম। খাবার টেবিলের কাছে ফিরে গিয়ে সবাইকে বললাম, “ফোন বাজলে এখন থেকে তোমরাই ধরবে। আমাকে চাইলে আগে জেনে নেবে কে, কোত্থেকে করেছে। যদি বলে রেডিও থেকে করেছে, তাহলে বলবে আমি নেই। আর কেউ বাসায় এসে আমার সঙ্গে দেখা করতে চাইলে আগেই যেন বলে দিও না যে আমি বাড়িতে আছি। আগে জেনে নেবে কোথা থেকে এসেছে-”<br /> <br /> জামী আবার বলে উঠল,“মা, তুমি টিক্কা খানের মত একের পর এক হোম ল’ রেগুলেশান জারি করে যাচ্ছ।”<br /> <br /> - শহীদ জননী জাহানারা ইমামের বই থেকে</div> </div>

একাত্তরের দিনগুলি: ১০ এপ্রিল, ১৯৭১

১০ এপ্রিল, ১৯৭১, শনিবার কিটির রেডিওটা পাবার পর থেকে রোজই স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অনুষ্ঠান ধরার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। কতজনের কাছে শুনছি, তারা ধরেছে, অনুষ্ঠান শুনছে। আমরাই শুধু পাচ্ছি না। স…

Read more »

একাত্তরের দিনগুলি: ৯ এপ্রিল, ১৯৭১

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> <table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody> <tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgzk9IJVRrSNTTd9Pqz5He9fLUw1h5GFITxiS6kjhjEeTrwn8YzUv8r2Ss4CYesxGu3wzmgJzuVOFyX34TNXqXygYuM3qbcqJ2bX9CTW4Du3jQOg-FLonzV9sFtXCguKBPvu_uP5FR-tBY/s1600/ekd.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img border="0" height="332" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgzk9IJVRrSNTTd9Pqz5He9fLUw1h5GFITxiS6kjhjEeTrwn8YzUv8r2Ss4CYesxGu3wzmgJzuVOFyX34TNXqXygYuM3qbcqJ2bX9CTW4Du3jQOg-FLonzV9sFtXCguKBPvu_uP5FR-tBY/s640/ekd.jpg" width="640" /></a></td></tr> <tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;"></td></tr> </tbody></table> <b>৯ এপ্রিল, ১৯৭১, শুক্রবার</b><br /> <br /> <div style="text-align: justify;"> কারফিউয়ের মেয়াদ ধীরে ধীরে কমছে। পাঁচ তারিখে ছ’টা-ছ’টা ছিল। ছয় তারিখ থেকে সাড়ে সাতটা-পাঁচটা দিয়েছিল। গতকাল থেকে আরো কমিয়ে ৯টা-৫টা করেছে।<br /> <br /> বদিউজ্জামানরা সবাই মা’র বাড়ির একতলা থেকে চলে গেছে নিজ নিজ বাসায়।<br /> <br /> রফিকরা ওয়াহিদের বাসা থেকে সরে মা’র ঝড়ির একতলায় এসে উঠেছে। তিন নম্বর রোডে ওয়াহিদের বাসার কাছাকাছি মিলিটারিদের চলাফেরা খুব বেড়ে গেছে, কি একটা চেকপোস্ট না কি যেন হয়েছে। মা’র বাড়ি ছ’নম্বর রোডের ভেতরে বলে কিছুটা নিরিবিলি।<br /> <br /> কপাল ভালো, আগের দিনই অজিত নিয়োগী চলে গেছেন। ওঁর কিছু বন্ধু প্রথমে আমাদের বাসায় এসে খোঁজ করেন। তারপর মা’র বাসা থেকে খুব সাবধানে ওঁকে গাড়ির ভেতরে চাদর মুড়ি দিয়ে বসিয়ে অন্যত্র নিয়ে গেছেন। শুনলাম, গ্রামের বাড়িতে যাবেন। যেখানেই যান, ভালো থাকুন।<br /> <br /> ২৫ মার্চ কালরাত্রির পর কয়েকটা দিন রুমী একেবারে থম ধরে ছিল। টেপা ঠোট, শক্ত চোয়াল উদভ্রান্ত চোখের দৃষ্টিতে ভেতরের প্রচণ্ড আক্ষেপ যেন জমাট বেঁধে থাকত। এখন একটু সহজ হয়েছে। কথাবার্তা বলে, মন্তব্য করে, রাগ করে, তর্ক করে। বন্ধুদের বাড়ি দৌড়োদৌড়ি করে, নানা রকম খবর নিয়ে আসে।<br /> <br /> আজ বলল, “জান আম্মা, বর্ডার এলাকাগুলোতে না যুদ্ধ হচ্ছে।”<br /> <br /> শুনেই চমকে গেলাম, “যাঃ তা কি করে হবে? সবখানে তো মেরে ধরে পুড়িয়ে শেষ করে দিচ্ছে।”<br /> <br /> তা হয়তো দিচ্ছে। পঁচিশের রাত থেকে যেখানে যেখানে প্রতিরোধ গড়ে উঠেছিল, পাকিস্তানিরা সেসব জায়গা আবার দখল করে নিচ্ছে-এটাও সত্যি। কিন্তু সেগুলো তারা এমনি এমনি দখল করতে পারছে না। সেসব জায়গায় তুমুল যুদ্ধ হচ্ছে। বহু জায়গায় বাঙালি আর্মি অফিসাররা রিভোল্ট করেছে। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে ই.পি.আর, ই.বি.আর, পুলিশ, আনসারের লোকজন। ঢাকা থেকে বহু ছেলেছোকরা বর্ডারের দিকে লুকিয়ে চলে যাচ্ছে যুদ্ধ করবে বলে। পাক আর্মি যেসব থানা, গ্রাম, মহকুমা জ্বালিয়ে দিয়েছে, সেখানকার লোকজনেরাও বর্ডারের দিকে পালিয়ে যাচ্ছে যুদ্ধ করতে।”<br /> <br /> “পালাচ্ছে ঠিকই। তবে যুদ্ধ করতে কি? ওরা তো সব পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিচ্ছে।”<br /> <br /> “তা নিচ্ছে ঠিকই। কিন্তু আম্মা, যুদ্ধও হচ্ছে।”<br /> <br /> “তুই এত কথা কোথায়, কার কাছে শুনিস?”<br /> <br /> “সবখানে-সবার কাছে। আমার বন্ধুদের অনেকের আত্মীয়স্বজন মফস্বল থেকে ঢাকায় আসছে। তাদের কাছে।”<br /> <br /> বিশ্বাস হতে চায় না। হায়রে, আমার কোনো আত্মীয় যদি এমনি মফস্বল থেকে আসত, তাহলে তার মুখে শুনে বিশ্বাস হত।<br /> <br /> রুমী বলল, “আমার জানাশোনা অনেক ছেলে বাড়িতে না-বলে লুকিয়ে চলে গেছে।”<br /> <br /> আমি অবিশ্বাসের সুরে বললাম, “কই কারা গেছে, নাম বলতো।”<br /> <br /> “ কেন, বাবু ভাই আর চিংকু ভাই।”<br /> <br /> আমি আবার চমকালাম, “ওরা তো চাটগাঁ গেল।”<br /> <br /> রুমী হাসল, “আসলে ওরা যুদ্ধেই গেছে।”<br /> <br /> “কোথায় যুদ্ধ হচ্ছে?”<br /> <br /> “তাতো ঠিক করে কেউ বলতে পারছে না। ওরা খোঁজ করতে করতে যাবে।”<br /> <br /> আমি স্তদ্ধ হয়ে বসে রইলাম। কি রকম ভালো মানুষের মতো মুখ করে ওয়াহিদ এই তো কয়েকদিন আগে বলে গেল মা’র সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছে চাটগাঁর গ্রামের বাড়িতে। চিংকুও যাচ্ছে তার সঙ্গে। চিংকুর ফুপা চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। ও ফুফার বাড়ি বেড়াতে যাচ্ছে।<br /> <br /> রুমী খুব আস্তে কিন্তু দৃঢ় গলায় বলল, “আম্মা। আমি যুদ্ধে যেতে চাই।”<br /> <br /> কি সর্বনেশে কথা। রুমী যুদ্ধে যেতে চায়! কিন্তু যুদ্ধটা কোথায়? কেউ তো ঠিক করে বলতে পারছে না। সবখানে ওধু জল্লাদের নৃশংস হত্যার উল্লাস-হাতবাঁধা, চোখবাঁধা অসহায় নিরীহ জনগণের ওপর হায়েনাদের ঝাঁপিয়ে পড়ার নিষ্ঠুর মত্ততা। যুদ্ধ হচ্ছে-এ কথা ধরে নিলেও তা এতই অসম যুদ্ধ যে কয়েকদিনের মধ্যেই পাকিস্তানি সৈন্যরা তাদের আধুনিকতম মারণাস্ত্র দিয়ে বিদ্রোহী বাঙালিদের গুঁড়িয়ে মাটিতে মিশিয়ে দেবে। সবখান থেকে তো সেই খবরই শুনতে পাচ্ছি। এই রকম অবস্থায় রুমীকে যুদ্ধে যেতে দিই কি বলে? মাত্র বিশ বছর বয়স রুমীর! কেবল আই.এস.সি পাস করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢ়ুকেছে। ও যুদ্ধের কি বোঝে? ও কি যুদ্ধ করবে?<br /> <br /> - শহীদ জননী জাহানারা ইমামের বই থেকে</div> </div>

একাত্তরের দিনগুলি: ৯ এপ্রিল, ১৯৭১

৯ এপ্রিল, ১৯৭১, শুক্রবার কারফিউয়ের মেয়াদ ধীরে ধীরে কমছে। পাঁচ তারিখে ছ’টা-ছ’টা ছিল। ছয় তারিখ থেকে সাড়ে সাতটা-পাঁচটা দিয়েছিল। গতকাল থেকে আরো কমিয়ে ৯টা-৫টা করেছে। বদিউজ্জামানরা সবাই মা’র বাড়ির একতলা…

Read more »

একাত্তরের চিঠিঃ চিঠি – ৩ : নৌ কমান্ডো শহীদ জিন্নাত আলী খান

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> <table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody> <tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEg1gm6F6LlhatVB2_HnbdY0wSecPthM0fS0CpQ_zv3ckJaYgez88Y77JhBaMkE_diHmVnZ6R6DL78fpypGPfzSi4SqnAYy1IHEe1MOgQn9auDhJU_s9LYNgmde2Jj1rXye_cvJkY5TXDHA/s1600/vo71w1.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img border="0" height="332" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEg1gm6F6LlhatVB2_HnbdY0wSecPthM0fS0CpQ_zv3ckJaYgez88Y77JhBaMkE_diHmVnZ6R6DL78fpypGPfzSi4SqnAYy1IHEe1MOgQn9auDhJU_s9LYNgmde2Jj1rXye_cvJkY5TXDHA/s640/vo71w1.jpg" width="640" /></a></td></tr> <tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;"></td></tr> </tbody></table> <div style="text-align: justify;"> <b>চিঠি লেখকঃ</b> নৌ কমান্ডো শহীদ জিন্নাত আলী খান। পিতা শামসুল হক খান, গ্রামঃ ননীক্ষির, ডাকঃ ননীক্ষির, উপজেলাঃ মকসুদপুর, জেলাঃ গোপালগঞ্জ </div> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> <b>চিঠি প্রাপকঃ</b> মা শুকুরুননেছা। </div> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> <b>চিঠিটি পাঠিয়েছেনঃ</b> ইয়াসির আরাফাত খান </div> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> ৫. ৪. ১৯৭১ </div> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> মা, </div> <div style="text-align: justify;"> আমার সালাম গ্রহন করবেন। পর সংবাদ আমি আপনাদের দোয়ায় এখনো পর্যন্ত ভাল আছি। কিন্তু কতদিন থাকতে পারব বলা যায় না। বাংলা মাকে বাঁচাতে যে ভূমিতে আপনি আমাকে জন্ম দিয়েছেন, যে ভাষায় কথা বলা শিখিয়েছেন, সেই ভাষাকে, সেই জন্মভুমি কে রক্ষা করতে হলে আমার মত অনেক জিন্নার প্রান দিতে হবে। দুঃখ করবেন না, মা। আপনার সম্মান রক্ষা করতে গিয়ে যদি আপনার এই নগন্য ছেলের রক্তে রাজপথ রঞ্জিত হয়, সে রক্ত ইতিহাসের পাতায় সাক্ষ্য দেবে যে বাঙ্গালি এখনো মাতৃভূমি রক্ষা করতে নিজের জীবন পর্যন্ত বুলেটের সামনে পেতে দিতে দ্বিধা বোধ করে না। </div> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> সময় নেই। হয়তো আবার কখন দৌড় দিতে হয় জানি না। তাই এই সামান্য পত্রটা দিলাম। শুধু দোয়া করবেন। সবার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। মা, যদি সত্যি আমরা এই পবিত্র জন্মভুমি থেকে ইংরেজ বেনিয়াদের মতো পাঞ্জাবি গুণ্ডাদের তাড়িয়ে দিয়ে এ দেশকে মুক্ত করতে পারি, তবে হয়তো আবার আপনার সাথে দেখা হতে পারে। বিদায় নিচ্ছি মা। ক্ষুদিরামের মতো বিদায় দাও। যাবার বেলায় ছালাম।</div> <div style="text-align: justify;"> মা...মা...মা...যাচ্ছি।</div> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> ইতি </div> <div style="text-align: justify;"> জিন্না</div> </div>

একাত্তরের চিঠিঃ চিঠি – ৩ : নৌ কমান্ডো শহীদ জিন্নাত আলী খান

চিঠি লেখকঃ নৌ কমান্ডো শহীদ জিন্নাত আলী খান। পিতা শামসুল হক খান, গ্রামঃ ননীক্ষির, ডাকঃ ননীক্ষির, উপজেলাঃ মকসুদপুর, জেলাঃ গোপালগঞ্জ  চিঠি প্রাপকঃ মা শুকুরুননেছা।  চিঠিটি পাঠিয়েছেনঃ ইয়াসির আরাফাত খান  ৫…

Read more »

একাত্তরের চিঠিঃ চিঠি – ২ : মুক্তিযোদ্ধা এ বি এম মাহবুবুর রহমান

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> <table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody> <tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgRxfqAe097K9ZoUwhnfbF8ltIDhUC5hwZT_On7J8-ItLk3Ty1m__D5vLptpQ7k_KlCUM5Vnuj4RazdJZZjsABgPLI07dsiNRLYDv65Qp5vLKexy-J90NcuICXq4XRSkxwzz0xW4SRaSMc/s1600/vo71w1.jpg" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img border="0" height="332" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgRxfqAe097K9ZoUwhnfbF8ltIDhUC5hwZT_On7J8-ItLk3Ty1m__D5vLptpQ7k_KlCUM5Vnuj4RazdJZZjsABgPLI07dsiNRLYDv65Qp5vLKexy-J90NcuICXq4XRSkxwzz0xW4SRaSMc/s640/vo71w1.jpg" width="640" /></a></td></tr> <tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;"><br /></td></tr> </tbody></table> <div style="text-align: justify;"> 'জানি, তুমি আমাকে যেতে দিবে না।' তাই মাকে না বলেই যুদ্ধে চলে গিয়েছিলেন ফরিদপুরের চাঁদ বোয়ালমারীর এ বি এম মাহবুবুর রহমান। তারপর ৫ এপ্রিল ভারতের ২৪ পরগনার ৮ নম্বর সেক্টর হেড কোয়ার্টারের বসিরহাট সাব‌ ডিভিশনে বসে মাকে চিঠিটি লিখেছিলেন মাহবুব। আনন্দের কথা 'মাতৃভূমি সোনার বাংলাকে শত্রুমুক্ত' করে একদিন ঠিকই দেশে ফিরেছিলেন তিনি।</div> <br /> <div style="text-align: justify;"> <b>চিঠি লেখকঃ </b>মুক্তিযোদ্ধা এ বি এম মাহবুবুর রহমান। তিনি চিঠিটি লিখেছিলেন ৮ নম্বর সেক্টর হেডকোয়ার্টার, ট্রেনিং সেশন, বসিরহাট সাব ডিভিশন, ২৪ পরগনা, ভারত থেকে।</div> <br /> <div style="text-align: justify;"> <b>তাঁর বর্তমান ঠিকানাঃ</b> বাড়ি ৭ (দোতলা), সড়ক ১৮, ব্লক জি/১, সেকশন ২, মীরপুর, ঢাকা।<br /> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> <b>চিঠি প্রাপকঃ</b> মা রাহেলা বেগম রাঙ্গা, আখালিপাড়া, নদীয়ার চাঁদঘাট, বোয়ালমারী, ফরিদপুর।<br /> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> <b>চিঠিটি পাঠিয়েছেনঃ</b> লেখক নিজেই।<br /> <br /> ৫ এপ্রিল, ১৯৭১ সাল</div> <div style="text-align: justify;"> মাগো,<br /> তুমি যখন এ পত্র পাবে, আমি তখন তোমার থেকে অনেক দুরে থাকব। মা, জানি, তুমি আমাকে যেতে দিবে না, তাই তোমাকে না বলে চলে যাচ্ছি। তবে যেদিন মা‌-বোনের ইজ্জতের প্রতিশোধ এবং এই সোনার বাংলাকে শত্রুমুক্ত করতে পারব, সেদিন তোমার ছেলে তোমার কোলে ফিরে আসবে। <br /> <br /> দোয়া করবে, মা, তোমার আশা যেন পূর্ণ হয়।<br /> <br /> ইতি<br /> তোমারই হতভাগা ছেলে<br /> <br /> <b>পুনশ্চ:</b> সেই গাঢ় অন্ধকারে একাকী পথ চলেছি। শরীরের রক্ত মাঝে মাঝে টগবগিয়ে উঠছে, আবার মনে ভয় জেগে উঠছে, যদি পাকসেনাদের হাতে ধরা পড়ি, তবে সব আশাই শেষ(..) যশোর হয়ে নাগদা বর্ডার দিয়ে ভারতে প্রবেশ করি। পথে একবার রাজাকারদের হাতে ধরা পড়ি। তারা শুধু টাকা‌-পয়সা ও চার-পাচটা হিন্দু যুবতী মেয়েকে নিয়ে আমাদের ছেড়ে দেয়। তখন একবার মনে হয়েছিল, নিজের জীবন দিয়ে মেয়েদের ওদের হাত থেকে রক্ষা করি। কিন্তু পরমূহূর্তে মনে হয়, না, এদের উদ্ধার করতে গেলে প্রাণটাই যাবে, তাহলে হাজার মা বোনের কী হবে?<br /> <br /> রাত চারটার দিকে বর্ডার পার হয়ে ভারতে প্রবেশ করি। বাল্যবন্ধু শ্রী মদনকুমার ব্যানার্জি ইতনা কলোনি, শিবমন্দির, বারাসাত, ২৪ পরগনা- এই ঠিকানায় উঠলাম। এখানে এক সপ্তাহ থেকে ওই বন্ধুর বড় ভাই শরত্‍ চন্দ্র ব্যানার্জি আমাকে বসিরহাট মহকুমা ৮ নম্বর সেক্টর মেজর ডালিমের তত্ত্বাবধানে আমাকে মুক্তিযুদ্ধে ট্রেনিংয়ে ভর্তি করে দেন। সেখানে পরিচয় হয় ব.রেজিমেন্টের আবুল ভাইয়ের সঙ্গে। ট্রেনিং ক্যাম্পে এক সপ্তাহ থাকার পর কর্ণেল ওসমান গণির নির্দেশে আমাদের উচ্চ ট্রেনিং (... অসম্পুর্ণ ...) </div> </div>

একাত্তরের চিঠিঃ চিঠি – ২ : মুক্তিযোদ্ধা এ বি এম মাহবুবুর রহমান

'জানি, তুমি আমাকে যেতে দিবে না।' তাই মাকে না বলেই যুদ্ধে চলে গিয়েছিলেন ফরিদপুরের চাঁদ বোয়ালমারীর এ বি এম মাহবুবুর রহমান। তারপর ৫ এপ্রিল ভারতের ২৪ পরগনার ৮ নম্বর সেক্টর হেড কোয়ার্টারের বসিরহাট সাব‌ …

Read more »

একাত্তরের দিনগুলি: ৪ এপ্রিল, ১৯৭১

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> <br /> <table align="center" cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody> <tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgzk9IJVRrSNTTd9Pqz5He9fLUw1h5GFITxiS6kjhjEeTrwn8YzUv8r2Ss4CYesxGu3wzmgJzuVOFyX34TNXqXygYuM3qbcqJ2bX9CTW4Du3jQOg-FLonzV9sFtXCguKBPvu_uP5FR-tBY/s1600/ekd.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img border="0" height="332" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgzk9IJVRrSNTTd9Pqz5He9fLUw1h5GFITxiS6kjhjEeTrwn8YzUv8r2Ss4CYesxGu3wzmgJzuVOFyX34TNXqXygYuM3qbcqJ2bX9CTW4Du3jQOg-FLonzV9sFtXCguKBPvu_uP5FR-tBY/s640/ekd.jpg" width="640" /></a></td></tr> <tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;"></td></tr> </tbody></table> <b>৪ এপ্রিল, ১৯৭১, রবিবার</b><br /> <br /> <div style="text-align: justify;"> আজ কিটি ঢাকা ছেড়ে চলে যাচ্ছে। সকালে এসেছে বিদায় নিতে। ওর রেডিওটা সঙ্গে নিয়ে এসেছে। খাবার টেবিলের ওপর রেখে বলল, “এটা তোমাদের কাছে রেখে যাচ্ছি। এখন প্রথমে তেহরানে যাব,তারপর কোথায় যাব, ঠিক নেই। এত ভারি রেডিও নিয়ে মুভ করা অসুবিধে।”<br /> <br /> কিটি রাওয়ালপিন্ডি হয়ে তেহরান যাবে। ওর কাছে বেলু-ধলুদের ফোন নম্বর লিখে দিলাম। “ওরা ইসলামাবাদে থাকে। ওদেরকে বোলো এখানে কি কি ঘটেছে। আর বোলো আমরা ভালো আছি।”<br /> <br /> কিটি আস্তে করে বলল, “তোমাদের কিছু জিনিস আমি আমার সঙ্গে নিয়ে যেতে পারি নিরাপদে রাখার জন্য।”<br /> <br /> রুমী লাফ দিয়ে এসে বলল, “হ্যাঁ, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের রেকর্ডটা তুমি সঙ্গে নিয়ে যাও। আর চে গুয়েভারার এই বই দুটো।”<br /> <br /> আমি শাহনাজের গাওয়া ‘জয় বাংলা-বাংলার জয়’ রেকর্ডটাও দিলাম।<br /> <br /> রুমী বলল, “আশা করব একদিন তুমি এগুলো ঢাকায় আবার ফিরিয়ে নিয়ে আসবে।”<br /> <br /> “তাই যেন হয়।” কিটির চোখ পানিতে ভরে গেল। শরীফের সঙ্গে কিটির দেখা হল না। কিটি আসার আগেই শরীফ বাঁকার সঙ্গে সাভারে গেছে। আমরা জানতাম না যে কিটি আজই চলে যাবে। মিঃ চাইল্ডারের বাসায় ফোন নেই, কিটি আগে জানাতে পারে নি।<br /> <br /> কিটি চলে গেলে আমরা সবাই খানিকক্ষণ খুব মন খারাপ করে বসে রইলাম।<br /> <br /> তারপর হঠাৎ মাথা ঝাঁকিয়ে উঠে দাঁড়ালাম, “নাঃ এভাবে বসে বসে কষ্ট পাওয়ার কোন মানে হয় না। একটু হেঁটে আসি।”<br /> <br /> এলিফ্যান্ট রোডে উঠতেই দেখি রিকশায় মা। আমাকে দেখে নেমে বললেন, “পায়ে হেঁটে কোথায় যাচ্ছিস?”<br /> <br /> “কোথায় না। এমনিই।”<br /> <br /> মা রিকশার ভাড়া চুকিয়ে আমার সঙ্গে হাঁটতে লাগলেন, বললেন, “চল, কাঁচাবাজারে যাই।” নিউ মার্কেট কাঁচাবাজারের পোড়া জঞ্জাল এখনো সম্পূর্ণ সরানো হয় নি, তবু ওরই মধ্যে কিছু কিছু দোকানদার একটু সাফসুতরো করে পশরা নিয়ে বসেছে। একদম ভিড় নেই। নিউ মার্কেট কাঁচাবাজারে আগে কোনদিন ঢুকি নি ভিড়ের ভয়ে। আর এখন গায়ে হাওয়া লাগিয়ে ঘুরলাম। ডিম অসম্ভব সস্তা-দু’টাকা হালি। মা আর আমি মিলে একসঙ্গে পঞ্চাশটা কিনলাম। মুরগি, শাকসব্জি সবই মনে হল পানির দর। কাছাকাছি গ্রাম থেকে যে যা পেরেছে, নিয়ে এসে বসেছে। কোনমতে বিক্রি হলেই উর্ধ্বশ্বাসে দৌড়ে চলে যাবে, এমনি ভাব। ঝুড়ি হাতে মিনতি ছোকরা একটাও নেই, বয়ে নিতে পারব না বলে আর কিছু কিনলাম না।<br /> <br /> বাড়ি ঢুকে দেখি শরীফ ফিরছে সাভার থেকে। মুরগি, শাকসব্জি, মিষ্টি অনেক কিছু কিনে এনেছে। ভাগ্যিস, ডিম ছাড়া আর কিছু কিনি নি কাঁচাবাজার থেকে। মাকে একটা মুরগি, কিছু সব্জি ও মিষ্টি দিলাম। রুমীকে বললাম, “যা, নানীকে পৌছে দিয়ে আয়।”<br /> <br /> বাড়ির নাম ও গাড়ির নম্বর-প্লেট উর্দুতে লেখার কথাটা নেহাতই গুজব। সামরিক কর্তৃপক্ষ এই মর্মে কাগজে বিবৃতি দিয়েছে। শরীফ মন্তব্য করল, “ নেহাৎ ভিত্তিহীন গুজব বলে মনে হয় না। অতি উৎসাহী অবাঙালিরাই এটা প্রথম ছড়িয়েছে বলে আমার বিশ্বাস। তারপর, কানাকানি, বলাবলি, চাপা অসন্তোষ-এসব হতে হতে সরকারের টনক নড়েছে। তাই এখন কাগজে ঘোষণা দিয়ে বলছে এটা ভিত্তিহীন গুজব। যতো সব।”<br /> <br /> আমি হেসে বললাম, “তবু তো রেহাই। উর্দুতে নম্বর-প্লেট? বাড়ির সামনে উর্দু হরফে ‘কণিকা’ লেখা? উঃ মাগো। আল্লাহ বাঁচিয়েছেন।”<br /> <br /> - শহীদ জননী জাহানারা ইমামের বই থেকে</div> </div>

একাত্তরের দিনগুলি: ৪ এপ্রিল, ১৯৭১

৪ এপ্রিল, ১৯৭১, রবিবার আজ কিটি ঢাকা ছেড়ে চলে যাচ্ছে। সকালে এসেছে বিদায় নিতে। ওর রেডিওটা সঙ্গে নিয়ে এসেছে। খাবার টেবিলের ওপর রেখে বলল, “এটা তোমাদের কাছে রেখে যাচ্ছি। এখন প্রথমে তেহরানে যাব,তারপর কে…

Read more »